আলিপুরদুয়ার, 20 সেপ্টেম্বর : নাগরিকপঞ্জি প্রকাশিত হয়েছে অসমে ৷ বাদ পড়েছে প্রায় 19 লাখ মানুষের নাম ৷ তার প্রভাব রাজ্যের মৃৎশিল্পে ৷ নাগরিকপঞ্জির জেরে অসম থেকে এরাজ্যে দুর্গা প্রতিমার বরাত এক ধাক্কায় অনেকটাই কমেছে ৷ ফলে পুজোর আগে লাভের মুখ দেখতে না পেয়ে সমস্যায় আলিপুরদুয়ারের মৃৎশিল্পীরা ৷
অসমের উপর নির্ভর করে ঋণ নিয়ে দুর্গাপ্রতিমা বানিয়ে বিপাকে পড়েছে আলিপুরদুয়ারের নোনাইপাড়, পালপাড়ার 40টি মৃৎশিল্পী পরিবার ৷ অসমের পুজো কমিটিগুলো থেকে পালপাড়ার কুমোরটুলি ফি-বছর গড়ে 25-30টি দুর্গা প্রতিমার বরাত পায় ৷ কিন্তু চলতি বছর নাগরিকপঞ্জির জেরে পালপাড়ার কুমোরটুলি বরাত পেয়েছে 8 থেকে 10টি প্রতিমার ৷
মৃৎশিল্পী মিত্র পাল জানান, "নাগরিকপঞ্জির জেরে অসমের পুজো কমিটিগুলোর থেকে এবার আমি একটিও প্রতিমার বরাত পাইনি ৷ প্রতি বছরই অসম থেকে 5-6টি প্রতিমার বরাত পেতাম ৷ অসমের পুজো কমিটিগুলো প্রতিমার ভালো দাম দেয় । লাভের মুখ দেখা যায় । চলতি বছর অসমের বরাত না পাওয়ার জেরে প্রতিমা তৈরির জন্য অনেক কম লোক রেখেছি ৷ "
আরেক শিল্পী গৌতম পাল জানান, " অসমের নাগরিকপঞ্জির জেরে এবার (আলিপুরদুয়ার জেলার) মৃৎশিল্পে ব্যাপক প্রভাব পড়েছে ৷ অন্যান্য বছর অসম থেকে 8-10টি প্রতিমার বায়না পেতাম ৷ এবার মাত্র তিনটি প্রতিমার বরাত পেয়েছি ৷ অসমের ওপর নির্ভর করে যে প্রতিমাগুলো বানিয়েছিলাম সেগুলো কম দামে বিক্রি করে দিতে হচ্ছে । নতুন করে প্রতিমা বানানো হচ্ছে না ৷ "
আলিপুরদুয়ার 2 নম্বর ব্লক পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি অনুপ দাস বলেন, "এবার অসমে নাগরিকপঞ্জির জেরে পালপাড়ার কুমোরটুলিতে অসম থেকে তেমন বরাত না পেয়ে বিপাকে পড়েছেন মৃৎশিল্পীরা । পঞ্চায়েত সমিতির পক্ষ থেকে প্রশাসনের কাছে শিল্পীদের আর্থিক সহযোগিতার জন্য আবেদন করা হবে ৷ "
আরও পড়ুন : আলিপুরদুয়ারে দুর্গাপুজোয় মাইক বাজবে না !
যদিও আলিপুরদুয়ার জেলা BJP-র সভাপতি গঙ্গাপ্রসাদ শর্মা বলেন, " গোটা এলাকাটিই তৃণমূল প্রভাবিত ৷ যেসব মৃৎশিল্পীরা দাবি করছেন অসম থেকে ঠাকুরের বরাত পাননি, তাঁরা তৃণমূলের ক্যাডার ৷ বিগত বছরগুলোতে তাদের কাছে অসম থেকে প্রতিমার যে বরাত এসেছিল তার কোনও প্রমাণ নেই ৷ "
অসমে NRC প্রসঙ্গে তিনি আরও বলেন, "দিদি দিল্লি গিয়ে NRC নিয়ে মোদিজি, অমিতজির সঙ্গে দেখা করলেন ৷ অথচ বাংলায় নাগরিকপঞ্জি নিয়ে একটি কথাও বলছেন না ৷ আবার বাংলায় এসে NRC নিয়ে আন্দোলন করছেন ৷ তৃণমূলের এই দু-মুখো চরিত্র মানুষ বুঝে গেছে । অসম-বাংলা কেন, সারা দেশে NRC হলেও একজন হিন্দুর নাম তালিকা থেকে বাদ যাবে না ৷ আমরা সিটিজেন অ্যামেন্ডমেন্ট বিল (নাগরিকত্ব সংশোধনী বিল) করে বাদ যাওয়া হিন্দুদের নাম তালিকাভুক্ত করব ৷ "