কলকাতা, 7 অক্টোবর: একসময় কলকাতার পরিচিতির অংশ ছিল ট্রাম। ছিল পরিবহণের অন্যতম প্রধান মাধ্যম। এখন সব অতীত। অচিরেই তিলোত্তমা থেকেই চিরতরে অতীত হতে পারে ট্রাম। এমনই আশঙ্কার মধ্যে ট্রামের ভিতর পূজিত হবেন মা দুর্গা।
রাজ্য সরকারের পুজো পরিক্রমাতেও দুয়োরানি ট্রাম। কিন্তু এখনও কিছু মানুষ আছেন যাঁদের মন আটকে থাকে ট্রামে। তাঁদের উদ্যোগেই শুরু হয়েছে এই দুর্গাপুজো। এবার দ্বিতীয় বছরে পা দিল শহর কলকাতার এই অতিবিশেষ পুজো । শহরের এক স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের অন্যতম কর্ণধার অমৃতা সিংয়ের উদ্যোগে গতবছর থেকে ধর্মতলার ট্রাম ডিপোর ভিতরে আস্ত একটি ট্রামের মধ্যে শুরু হয়েছে দুর্গাপুজো ।
নিয়ম মেনে এবছরও ট্রামের ভেতরেই হচ্ছে মায়ের আরাধনা । তবে বেশ কাকতালীয়ভাবে পুজোর এবছরের থিম 'বৃদ্ধাশ্রম '। আগের বছর পুজোর থিম ছিল 'রিফিউজি দুর্গা '। চতুর্থীতে হল পুজোর উদ্বোধন। কামারহাটির তৃণমূল মদন মিত্রের উদ্বোধন করার কথা থাকলেও তিনি সময় মতো না এসে পৌঁছনোয় 'সোনাঝুরি ' বৃদ্ধাশ্রমের আবাসিকদের হাত ধরেই হল উদ্বোধন ।
লাল হলুদ ছাপা শাড়ি, শোলার সাজ থেকে শুরু করে পুরোনো বাড়িতে যে লোহার ঘোরানো সিঁড়ি থাকত তা দিয়ে সাজিয়ে তোলা হয়েছে মণ্ডপ । এখানে মা দুর্গা সাবেকি । ট্রাম সাজানো হয়েছে পুরনো রাজবাড়ির আদলে। প্রতিমার সাজও সাবেকী। প্রতিমা তৈরি করেছেন কুমারটুলির শিল্পীরা । দুর্গাপুজোর অঞ্জলী, প্রসাদ বিতরণ এবং সিঁদুর খেলা সব কিছুই হবে ট্রামে। সন্ধ্যায় থাকছে বিভিন্ন সংকৃতিক অনুষ্ঠান ।
আয়োজকরা এবছরও ট্রামে পুজো করতে চান জানিয়ে বেশ কিছু দিন আগেই প্রশাসনের কাছে আবেদন করেন। ট্রাম বন্ধ হয়ে যেতে পারে শুনে কিছুটা সংশয়ের মধ্যেই পড়ে যান। শেষমেশ যে তারা ট্রামের মধ্যে পুজো করতে পেরেছেন সেই বিষয়টিতে সন্তোষ প্রকাশ করেন অমৃতা। সংশয় অবশ্য এখনও আছে। আগামী বছর আবার পুজো হবে। উমা আসবেন পিতৃগৃহে। কিন্তু প্রশাসন শহরে ট্রাম না রাখলে ট্রামে পজো হবে কী করে? সেই প্রশ্নই ভাবাচ্ছে তাঁদের।