কলকাতা, 30 ডিসেম্বর: বাবার কাছেই ফুটবলের হাতেখড়ি ৷ সেইসময় দারিদ্র এতটাই প্রবল যে একটা বল কেনার সামর্থ্যও ছিল না ৷ কাপড় এবং কাগজ দিয়ে বল বানিয়ে ফুটবল চর্চা চলত বাবা এবং ছেলের ৷ পরিবারের প্রয়োজনে সেই সময় চায়ের দোকানেও কাজ করতে হয়েছে ভবিষ্যতের ফুটবল সম্রাটকে ৷ এভাবেই খেলতে খেলতে 15 বছর বয়সে সাও পাওলোর স্যান্টোস ক্লাবে সুযোগ পান ফুটবল সম্রাট পেলের ৷ আর এখান থেকেই উত্থানের শুরু (Football Journey of King Pele) ৷
মাত্র 17 বছর বয়সে জাতীয় দলে জায়গা করে নিয়েছিলেন পেলে ৷ 1958 সালে ব্রাজিলের হয়ে বিশ্বকাপে আবির্ভাব ৷ তিনি এলেন দেখলেন এবং জয় করলেন ৷ গ্যারিঞ্চা এবং তাঁর জুটি বিশ্বফুটবলকে নাড়িয়ে দিয়েছিল ৷ 1958 সালেই প্রথমবার বিশ্বকাপ জয়ের কৃতিত্ব দেখান ৷ আয়োজক সুইডেনকে 5-2 গোলে হারায় ব্রাজিল ৷ ফাইনালে দুটো গোল করেছিলেন পেলে ৷ চারবছর পরে ফের বিশ্বকাপ চ্যাম্পিয়ন ব্রাজিল ৷ এবার জয়ের ভরকেন্দ্রে পেলে ৷ ফাইনালে চেকস্লোভাকিয়াকে 3-1 গোলে পরাজিত করে পেলের ব্রাজিল ৷ ফাইনালে গোল না করলেও পেলের ফুটবল শৈলি মুগ্ধ করে বিশ্বকে ৷ তবে, এই বিশ্বকাপটি গ্যারিঞ্চার বিশ্বকাপ নামেই পরিচিত ৷
1966 সালে ইংল্যাণ্ডের মাটিতে প্রতিপক্ষ ডিফেন্ডারদের কড়া ট্যাকেলে খেলতেই পারেননি পেলে ৷ ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে তাঁকে চোট পেয়ে মাঠের বাইরে চলে যেতে হয় ৷ চারটে বিশ্বকাপ খেলেছেন ফুটবল সম্রাট ৷ তারমধ্যে 1970 সালে মেক্সিকো বিশ্বকাপে তিনি ছিলেন অপ্রতিরোধ্য ৷ ফাইনালে ইতালিকে 4-1 গোলে পরাজিত করে তিনবার জুলেরিমে কাপ বা বিশ্বকাপ জিতে ট্রফি নিয়ে দেশে চলে যান তাঁরা ৷ 6 ম্যাচে 23টি গোল করেছিল ব্রাজিল ৷ 1957 থেকে 1970 সাল পর্যন্ত ব্রাজিলের জার্সিতে খেলেছেন এডসন আরান্তেস দো নাশ্চিমেন্ত (Edson Arantes do Nascimento) । 1970 বিশ্বকাপে সেরা ফুটবলারের সম্মান পেয়েছিলেন তিনি ৷
আরও পড়ুন: বিদায় মহাজীবন ! মুকুট পড়ে আছে রাজাই শুধু নেই, প্রয়াত ফুটবল সম্রাট পেলে
ফুটবল সম্রাট পেলে দেশের জার্সিতে ৭৭ টি ম্যাচে ৯২টি গোল করেছেন ৷ ক্লাব এবং দেশের জার্সিতে মোট 1282টি গোল করেছেন তিনি ৷ সাও পাওলো ছেড়ে 1977 সালের মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের কসমস ক্লাবে খেলতে আসেন ৷ সেই বছরই তিনি সেপ্টেম্বর মাসে কলকাতায় এসেছিলেন খেলতে । মুখোমুখি হয়েছিলেন মোহনবাগানের বিরুদ্ধে ৷ বিশ্বকাপ ছাড়াও কোপা লিবারদাস, নর্থ আমেরিকান সকার লিগ, ইন্টারন্যাশনাল কাপ জয় ছাড়াও একাধিক ট্রফি জয়ের নায়ক ব্রাজিলিয়ান এই কিংবদন্তী ৷ 2000 সালে ফিফার বিচারে শতাব্দীর সেরা ফুটবলারের সম্মান পেয়েছেন ৷ তবে, সম্মান ও পুরস্কার দিয়ে পেলের ফুটবলের প্রতি অবদান পরিমাপ করা যাবে না ৷ তাঁর প্রয়াণ ফুটবলের সবচেয়ে বড় শুভেচ্ছা দূতের দৌড় থেমে যাওয়ার গল্প ৷