কলকাতা, 15 অক্টোবর: আলোর উৎসবের প্রস্তুতি এখন নৈহাটি জুড়ে । শুধু আলো নেই ঋষি বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় স্টেডিয়ামে ইস্টবেঙ্গলের খেলায় ৷ কার্যত একটি পাড়ার মধ্যে এই স্টেডিয়াম। স্টেডিয়াম সংলগ্ন বাড়িগুলোর বাসিন্দারা বারান্দায় বসেই খেলা উপভোগ করতে পারেন । কিন্তু বিনো জর্জের দলের পারফরম্যান্স এতটাই নিষ্প্রভ যে শনিবারের বিকেলে বাড়ির বাসিন্দারা জানালা খোলার আগ্রহটুকু বোধ করলেন না। থমকে থাকা লিগ শনিবার শুরু হল। পুজোর আগে বৃষ্টিতে ভেস্তে যাওয়া ইস্টবেঙ্গল বনাম এরিয়ান ম্যাচ দিয়ে সুপার সিক্সের দৌড় শুরু হল। কিন্তু নৈহাটি স্টেডিয়ামে মেরেকেটে হাজার দেড়েক দর্শকের উপস্থিতিতে এরিয়ানের বিরুদ্ধে পয়েন্ট ভাগ করে মাঠ ছাড়ল লাল-হলুদ।
আইএসএলের পাশাপাশি কলকাতা লিগের প্রথম দু'ম্যাচেও জয়হীন ইস্টববেঙ্গল ৷ এরিয়ানের বিরুদ্ধে এদিন ম্যাচের ফল 1-1 (EB vs Aryan match ends to a draw)। ইস্টবেঙ্গলের পক্ষে গোল জেসিন টিকে-র (Jesin TK scored for EB)। উলটোদিকে এরিয়ানের গোল অমরনাথ বাস্কের। চলতি মরশুমে লাল-হলুদ ব্রিগেড ডুরান্ড কাপ, কলকাতা লিগ, আইএসএল মিলিয়ে এখনও পর্যন্ত 8টি ম্যাচ খেলেছে। পরিসংখ্যান বলছে 8 ম্যাচে 1টি ম্যাচে জয় এসেছে। 4টে ড্র হয়েছে। বাকি 3টি ম্যাচে পরাজয়। একটি দল ততটাই শক্তিশালী যতটা তার রিজার্ভ বেঞ্চ শক্তিশালী। ইস্টবেঙ্গলের মূল দলের হতশ্রী দশার কারণ রিজার্ভ বেঞ্চের করুন পারফরম্যান্সে প্রকাশ পায়। খেলা দেখতে শনিবার ভিআইপি বক্সে উপস্থিত ছিলেন স্টিফেন কনস্ট্যান্টাইন (Stephen Constantine)। শনিবারের ম্যাচের জন্য কনস্ট্যানটাইনের দল থেকে আট ফুটবলারকে পাঠানো হয়েছিল বিনো জর্জের (Bino George) দলে ৷ অমরজিৎ কিয়াম, সেম্বই হাওকিপ, প্রীতম সিংদের যোগদানে ইস্টবেঙ্গল জ্বলে ওঠার বদলে ম্রিয়মান।
স্টিফেন কনস্ট্যানটাইনকে স্টেডিয়ামে উপস্থিত দর্শকরা আইএসএলে সুমিত পাসিকে খেলানোর জন্য ব্যারাকিং করলেন। কিন্তু দলের সকল ফুটবলার যখন ভালো খেলার পথ হাতড়াচ্ছেন তখন একজন ফুটবলারকে কটাক্ষ করে লাভ কী? এগারোজনের মধ্যে আটজন আইএসএল খেলে কলকাতা লিগে এসেছিলেন। কিন্তু তাদের খেলায় প্রত্যাশিত বোঝাপড়া দেখা গেল না। ফলে ইস্টবেঙ্গলের খেলা দাপটহীন। প্রতিপক্ষ এরিয়ান মাত্র দু'দিনের অনুশীলনে দল নামিয়েছিল। কোচ রাজদীপ নন্দী বলছিলেন দলের ফুটবলাররা খেপ খেলতে ব্যস্ত ছিলেন। তাদের কোনওরকমে জোগাড় করে দল নামানো হয়েছে। এই অবস্থায় এক পয়েন্ট পেয়ে তারা খুশি।
অন্যদিকে পরপর দু'টো ম্যাচ ড্র করে খেতাব জয়ের দৌড় থেকে কার্যত ছিটকেই গেল ইস্টবেঙ্গল। পরের দু'টো ম্যাচ মহামেডান স্পোর্টিং এবং ভবানীপুর ক্লাবের বিরুদ্ধে। ইস্টবেঙ্গল কোচ বিনো জর্জ বলছেন, "তাদের বোঝাপড়া গড়তে সময় দরকার।" লিগ খেতাব দৌড় থেকে দল ছিটকে গিয়েছেন কি না এই প্রশ্নে তার উত্তর ট্রফির চেয়ে তাদের লক্ষ্য ভালো ফুটবল। মাঝমাঠে বোঝাপড়ার অভাবে এদিন ইস্টবেঙ্গলের খেলা কখনোই জমাট বাঁধেনি। এর সঙ্গে মিস পাসের প্রদর্শনী প্রতিপক্ষএরিয়ানের কাজ সহজ করে দিয়েছিল।
আরও পড়ুন: মিশন কেরালার আগে ফুটবলারদের 'পেপ টক' ফেরান্দোর
দুই স্ট্রাইকার হাওকিপ এবং জেসিন টিকে বলের অভাবে ভুগলেন। তবুও 39 মিনিটে ইস্টবেঙ্গল এগিয়ে গিয়েছিল। আঙ্গৌসানার সেন্টার থেকে জেসিন টিকে-র গোল দেখে মনে হয়েছিল ইস্টবেঙ্গল এবার দাপট দেখাবে। কিন্তু পরিবর্তে পাওনা শুধুই হতশ্রী ফুটবল। 52 মিনিটে সমতায় ফেরে এরিয়ান। লাল-হলুদ রক্ষণের ভুল কাজে লাগিয়ে এরিয়ানের হয়ে গোল অমরনাথের। ম্যাচের বাকি সময় শুধুই দিগভ্রান্ত ফুটবল। তবুও শেষ বাঁশি বাজার আগে সহজ সুযোগ নষ্ট করে জয়ের শেষ সুযোগটুকু উড়িয়ে দেন পরিবর্ত হিসেবে নামা সঞ্জীব ঘোষ।