কলকাতা, 31 জুলাই: প্রতিষ্ঠা দিবস ঘিরে লেসলি ক্লডিয়াস সরণিতে মিলনমেলা । 104তম প্রতিষ্ঠা দিবসের অনুষ্ঠানে যোগ দিতে ওপার বাংলার লাল-হলুদ জার্সিতে খেলা ফুটবলার এবং তাদের পরিবারের সদস্যরা চলে এসেছেন । আটের দশকের শেষ ভাগ এবং নয়ের দশকের প্রথমভাগে বাংলাদেশ থেকে মুন্না রুমি আসলাম ঘাউস লাল-হলুদ জার্সিতে খেলেননি । লাল-হলুদ জার্সিতে সাফল্যের মশাল জ্বেলেছিলেন । 31 বছর পরে সেই ফুটবলাররা ফের ইস্টবেঙ্গলে । যাকে বলা হচ্ছে ঘরে ফেরা ।
সোমবার ইস্টবেঙ্গল মাঠে উপস্থিত হয়ে আসলাম, ঘাউস স্মৃতির সরণিতে হাঁটলেন । প্রয়াত মুন্নার স্ত্রী এবং পুত্র এসেছেন । রুমি দেশের বাইরে থাকায় এই অনুষ্ঠানে যোগ দিতে পারেননি । 1991 সালে ইস্টবেঙ্গলের অধিনায়ক ছিলেন বিকাশ পাঁজি । পুরনো সতীর্থরা তাঁদের অধিনায়ককে পেয়ে আপ্লুত । মনোরঞ্জন ভট্টাচার্য, ভাস্কর গঙ্গোপাধ্যায়, তরুণ দে, অলোক মুখোপাধ্যায়, প্রশান্ত বন্দ্যোপাধ্যায়ও ওপার বাংলার পুরনো সতীর্থদের সঙ্গে দেখা করতে সোমবার ক্লাবে উপস্থিত । আসলামের স্ত্রী জানালেন, কলকাতায় খেলতে আসার জন্য সদ্যোজাত মেয়ের মুখ 21 দিন পরে দেখেছিলেন তাঁর স্বামী । প্রথমে বিষয়টি নিয়ে মনখারাপ হয়েছিল । পরে সাফল্যের আলোর খবর পেয়ে সেই মন খারাপ দূর হয়েছিল ।
মুন্নার প্রয়াত ৷ স্ত্রী ইয়াসমিন মোনেম জানান, তাঁর স্বামী ইস্টবেঙ্গলে খেলার সময় তাঁদের বিয়ে হয়নি । তবে পরবর্তী সময়ে দেখেছেন কতটা জনপ্রিয় ছিল তাঁর স্বামী । আসলাম বলেছেন, কলকাতা লিগে খেলতে আসা যেন ছিল নিজের চেনা মাটিতেই খেলা । সেই সময় আবাহনী ক্রীড়াচক্রের ফুটবলাররা নিয়মিত এ পাড়ের ক্লাব লাল-হলুদের হয়ে খেলতে আসতেন । আবার মনোরঞ্জন ভট্টাচার্য এবং ভাস্কর গঙ্গোপাধ্যায় গিয়েছিলেন ওপার বাংলায় খেলতে । সেখানকার আতিথেয়তার স্মৃতি আজও অমলিন মনোরঞ্জন ভট্টাচার্যের কথায় । আবাহনী ক্রীড়াচক্রের প্রাক্তন হারুনুর রশিদ সেই সময়কার দুই ক্লাবের পারস্পরিক সহযোগিতার গল্প শোনালেন। স্মৃতিচারণে এল ইস্টবেঙ্গলের প্রয়াত সচিব পল্টু দাসের অবদানের কথা । প্রতিষ্ঠা দিবসের অনুষ্ঠানে গান শোনাবেন মেহেরিন মাহমুদ।
পয়লা অগস্ট মঙ্গলবার ক্ষুদিরাম অনুশীলন কেন্দ্রে ক্লাবের প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী অনুষ্ঠান । ওইদিন জীবনকৃতি সম্মান পাচ্ছেন প্রাক্তন ফুটবলার তরুণ বসু এবং ক্রিকেটার অরূপ ভট্টাচার্য । বর্ষসেরা ফুটবলার ক্লেটন সিলভা । সেরা এমার্জিং ফুটবলার হয়েছেন নাওরেম মহেশ সিং ।
এক নজরে দেখে নেওয়া যাক কোন কোন বিভাগে কারা কী কী সম্মান পাচ্ছেন :
'ভারত গৌরব' সম্মানে সম্মানিত করা হবে টাটা সন্স এর চেয়ারম্যান ইমেরিটাস শ্রী রতন টাটা মহাশয়কে ।
ব্যোমকেশ বোস মেমোরিয়াল 'জীবনকৃতি সম্মানে সম্মানিত' করা হবে প্রাক্তন গোলরক্ষক শ্রী তরুণ বোসকে ।
ডাঃ রমেশ চন্দ্র (নশা) সেন মেমোরিয়াল 'জীবনকৃতি সম্মানে সম্মানিত' করা হবে প্রাক্তন ক্রিকেটার শ্রী অরূপ ভট্টাচার্যকে ।
অজয় বোস মেমোরিয়াল 'সাংবাদিক' সম্মানে সম্মানিত করা হবে শ্রী প্রদীপ রায়কে ।
পুষ্পেন সরকার মেমোরিয়াল 'সাংবাদিক' সম্মানে সম্মানিত করা হবে শ্রী অরুণ সেনগুপ্তকে ।
প্রতুল চক্রবর্তী মেমোরিয়াল 'রেফারি' সম্মানে সম্মানিত করা হবে শ্রী অরুণাভ দাসকে ।
পঙ্কজ গুপ্ত মেমোরিয়াল 'রেফারি' সম্মানে সম্মানিত করা হবে জনাব মেহবুব হোসেনকে ।
বনোয়ারী লাল রায় মেমোরিয়াল 'বছরের সেরা ফুটবলার' সম্মানে সম্মানিত করা হবে ক্লেইটন সিলভাকে ।
জীবন চক্রবর্তী মেমোরিয়াল 'বছরের সেরা উদীয়মান খেলোয়াড়ের' সম্মানে সম্মানিত করা হবে ফুটবলার মহেশ সিং নাওরেমকে ।
গোপাল বোস মেমোরিয়াল 'বছরের সেরা ক্রিকেট খেলোয়াড়' সম্মানে সম্মানিত করা হবে অঙ্কুর পালকে ।
স্বপন বল মেমোরিয়াল 'সমর্থক' সম্মানে সম্মানিত করা হবে শ্রী সাগ্নিক বন্দ্যোপাধ্যায় ও প্রদীপ দাসকে ।
'আত্মজন স্মৃতি' সম্মানে সম্মানিত করা হবে প্রাক্তন ফুটবলার প্রয়াত মোনেম মুন্নাকে । সম্মাননা গ্রহণ করবেন প্রয়াত মুন্নার স্ত্রী ইয়াসমিন মোনেম ও পুত্র আজমান সালিদ ।
'আত্মজন প্রীতি' সম্মানে সম্মানিত করা হবে প্রাক্তন খেলোয়াড় বাংলাদেশের শেখ মহম্মদ আসলাম, রুমি রিজভি করিম ও মহম্মদ গোলাম ঘাউসকে । পাশাপাশি 'আত্মজন প্রীতি' সম্মানে সম্মানিত করা হবে বাংলাদেশের বিশিষ্ট সংগীত শিল্পী মেহরিন মাহমুদ ও বাংলাদেশের আবাহনী ক্রীড়াচক্রের প্রাক্তন সম্পাদক হারুনুর রশিদকে ।
আরও পড়ুন : আবার 5 গোল ইস্টবেঙ্গলের, লাল-হলুদ ঝড় তুলে সেরা অভিষেক