কলকাতা, 5 জানুয়ারি: এভাবেও ফিরে আসা যায় । 8 বছর পর জাতীয় জিমন্যাস্টিক্স প্রতিযোগিতায় নামতে পেরে আপ্লুত দীপা কর্মকার । রিও অলিম্পিকে চতুর্থ হওয়া দীপা ভুবনেশ্বরে জাতীয় জিমন্যাস্টের আসরে উওমেন্স অল অ্যারাউন্ড প্রতিযোগিতায় সোনা জিতেছেন । ভারতীয় খেলাধূলায় কামব্যাকের যদি একটা তালিকা করা যায় তাহলে অনেক তাবড় নাম থাকবে । এবার সেই তালিকায় কামব্যাক উওম্যান হিসেবে থাকবে দীপা কর্মকারের নাম ।
সোনা ছাড়াও আরও দুটো রূপো জিতেছেন তিনি । একটা আনইভেন বার, অন্যটা ভল্ট প্রতিযোগিতায় । মোট 49.55 পয়েন্ট অর্জন করেছেন দীপা । এই বিভাগে প্রণতি নায়েক সোনা জিতে নেন । তবে প্রণতি জাতীয় জিমন্যাস্টিক্সে ভালো পারফর্ম করেছেন । তবে বাংলার মেয়েরা এই প্রতিযোগিতায় দলগত বিভাগে তৃতীয় স্থান পেয়েছে । বাংলার মোট সংগৃহীত পয়েন্ট 166.80 । প্রথম ও দ্বিতীয় হয়েছেন যথাক্রমে রেলওয়েজ ও মহারাষ্ট্র । পুরুষ বিভাগে সেরা হয়েছে সেই রেল দল । তবে দীপার উপস্থিতি নিঃসন্দেহে এই প্রতিযোগিতার মান অনেকটা বাড়িয়ে দেয় । তাই আকর্ষণের কেন্দ্রেও ছিলেন তিনি । নিরাশ করেননি । বরং প্রত্যাবর্তনের মঞ্চকে সাজালেন সোনা জয় দিয়ে ।
2015 সালের পর তিনি কোনও জাতীয় আসরে নামলেন । স্বভাবতই উচ্ছ্বসিত দীপা । বলছেন, "আট বছর পর জাতীয় সিনিয়র প্রতিযোগিতায় যোগ দিলাম । নিজস্ব পারফরম্যান্সে আমি খুশি ।" দীপা মানেই স্বপ্নের পরিধি বেড়ে যাওয়া । ত্রিপুরার তারকা জিমন্যাস্ট এই মুহূর্তে অন্য কোনও দিকে নজর দিতে নারাজ । "আট বছর পরে নেমেছি । সাফল্য পেলাম । এখন লক্ষ্যগুলো ছোট ছোট করে সাজাতে চাই । ভারতীয় দলে খেলার স্বপ্ন সবার থাকে । প্রত্যাবর্তনের স্বপ্ন তো এই সাফল্য উসকে দেবে । তবে আবেগ নয় বাস্তবের মাটিতে দাঁড়িয়ে ভাবতে চাই । তাই খুশি হয়েছি অবশ্যই বলব । কিন্তু আত্মতৃপ্ত নই । খিদেটা জ্বালিয়ে রাখতে চাই," বলছিলেন অলিম্পিয়ান জিমন্যাস্ট ।
চোট এবং ডোপিং কেলেঙ্কারিতে জড়িয়ে পড়ায় একবছর বাইরে থাকতে হয়েছিল দীপাকে । সেই কালো দিন নিয়ে কথা বলতে চান না তিনি । জাতীয় চ্যাম্পিয়নশিপে সফল হওয়ার পরে প্যারিস অলিম্পিকে সুযোগ পাওয়ার বিষয়টি ফের সামনে আসছে । সামনে বেশ কয়েকটি চ্যাম্পিয়নশিপ রয়েছে । যেখানে পারফরম্যান্সের গ্রাফটা উপরের দিকে রাখতে পারলে প্যারিসের বিমানে ওঠা অসম্ভব নয় । প্রোদুনোভা ভল্ট আর দেন না দীপা । জাতীয় চ্যাম্পিয়নশিপে সুখহারা 720 এবং ফ্রন্ট 360 ভল্ট দিয়েছেন । নিজের পারফরম্যান্সের ধরনটা বদলেছেন । ভুবনেশ্বরে খুব কাছ থেকে দীপাকে দেখেছেন বাংলার কোচ মীনারা বেগম । তিনিও বলছেন দীপাকে নিয়ে স্বপ্ন দেখা যায় । কারণ জিমন্যাস্টদের জীবন এখন আর কুড়িতে শেষ নয় । 30 বছরেও যেভাবে ফিটনেস ধরে রেখেছে তা আশাপ্রদ । সামনে এশিয়ান গেমস, বিশ্বচ্যাম্পিয়নশিপ রয়েছে । ভালো ফল করতে পারলে জাতীয় দলের হয়ে দীপাকে নামতে দেখা যেতেই পারে ।
আরও পড়ুন:
1. অজান্তে নিষিদ্ধ পদার্থ সেবন করেছেন, নির্বাসনের কথা স্বীকার দীপার
2. জল্পনাই সত্যি হল! নিষিদ্ধ ড্রাগ নেওয়ায় 21 মাসের জন্য নির্বাসিত দীপা
3. ক্যান্সারকে হারিয়ে ক্যারম বোর্ডেই বাঁচার রসদ খুঁজছেন দীপা