কলকাতা, 17 ডিসেম্বর: ছোটদের বড় ম্যাচ আর বিতর্ক হবে না, তা আবার হয় নাকি? সমর্থকদের ঝামেলা, তা থামাতে পুলিশি হস্তক্ষেপ। ছোটদের ডার্বিতে এই সবকিছুই নিয়ম মেনে হয়ে থাকে। তবে শনিবার অনূর্ধ্ব-17 ইয়ুথ লিগে মোহনবাগান বনাম ইস্টবেঙ্গল ম্যাচের আগে সমর্থকরা পরস্পরের বিরুদ্ধে বাকযুদ্ধে জড়িয়েছেন ওই পর্যন্তই। কিন্তু ম্যাচের পরদিন সদস্য-সমর্থকদের গণ্ডি পেরিয়ে বিতর্ক ঢুকে পড়ল ক্লাবের অন্দরমহলে। শনিবার অনুর্ধ্ব-17 ইয়ুথ লিগে ইস্টবেঙ্গল 4-0 গোলে মোহনবাগানকে পরাজিত করে। বিতর্কের সূত্রপাত এরপরই ৷
ছোটদের ডার্বিতে লাল-হলুদের বড় জয়ের পর ম্যাচ শেষে মোহনবাগান সুপার জায়ান্ট কোচ বাস্তব রায় অভিযোগ করেন, প্রতিপক্ষ আইএসএলের ফুটবলার খেলিয়েছে। তুলনায় তাঁরা শারীরিকভাবে অনেক বেশি সক্ষম ৷ এককথায় বাগান পরোক্ষে লাল-হলুদেক দিকে বয়স ভাঁড়িয়ে ফুটবলার খেলানোর অভিযোগ করেছে ৷ সবুজ-মেরুনের অভিযোগের আঙুল গুরনাজ সিং গ্রেওয়াল এবং আলফ্রেড লালরিনপুইয়ার দিকে। শনিবার এই অভিযোগ নিয়ে কেউ মাথা ঘামায়নি। কিন্তু সেটা যে নেহাতই অভিযোগ ছিল না, তা প্রকাশ পেল ম্যাচের 24 ঘণ্টা পরে।
মোহনবাগান ক্লাবের তরফে অভিযোগ, এক ফুটবলারকে খেলাতে নাকি জাল কাগজপত্র ব্যবহার করেছে ইস্টবেঙ্গল। তবে শুধু একজন নয়, আরও কয়েকজন ফুটবলারের বয়সও সতেরোর বেশি বলে অভিযোগ তাঁদের। এই মর্মে সামগ্রিক ভাবে গোটা ব্যাপারটা খতিয়ে দেখার দাবি জানিয়েছে বাগান। যদিও কার বিরুদ্ধে তাঁদের অভিযোগ, তা খোলসা করেননি বাগান কর্তারা।
ভারতীয় ফুটবলে বয়স ভাড়ানোর অভিযোগ নতুন নয়। এই অভিযোগ বহু ব্যবহারে ক্লিশে। একই অভিযোগ ফেডারেশনের কাছে প্রত্যেক বছর কোনও না কোনও ক্লাব করে থাকে। তার কিছু প্রমাণ হলেও বেশিরভাগই ভিত্তিহীন বলে বাতিল হয়। তবে আগের তুলনায় ভারতীয় ফুটবলে বয়স জালিয়াতি অনেক কমেছে। প্রায় সব ক্লাবই এখন সতর্ক। সেদিক থেকে লাল-হলুদের বিরুদ্ধে সবুজ-মেরুনের এই অভিযোগ মারাত্মক। এখন বয়স প্রমাণের নথি হিসেবে আধার কার্ড জমা দিতে হয়। আর আধার কার্ড যদি সত্যিই জাল হয়ে থাকে, তবে তা ফৌজদারি মামলার মত অপরাধ। সেক্ষেত্রে বয়স ভাঁড়ানোর অভিযোগ প্রমাণিত হলে সাসপেন্ড হতে পারে গোটা দল। দুই প্রধানের বয়সভিত্তিক জাতীয় পর্যায়ের টুর্নামেন্টে এভাবে বয়স ভাঁড়ানোর মতো অভিযোগ ওঠেনি। তাই অভিযোগ প্রমাণিত হলে শাস্তি বিতর্কও একইসঙ্গে ফিরবে বাংলা ফুটবলে। যা খুব একটা স্বস্তির হবে না।
আরও পড়ুন: