কলকাতা, 28 জানুয়ারি: এমবাপের দেশ থেকে ফুটবল কোচিংয়ের প্রস্তাব এল বারুইপুরে ৷ ফুটবল বিশ্বে তৃতীয় সারির দেশের একজন কোচের কাছে বিশ্বকাপ রানার-আপ দেশে কোচিং করানোর প্রস্তাব এসেছে ৷ অবিশ্বাস্য হলেও বাস্তব ৷ ফ্রান্সের মার্সেইয়ের একটি ক্লাবের বয়সভিত্তিক দলকে কোচিং করানোর অফার পেলেন বাংলার মলয় সেনগুপ্ত (Coaching Proposal from French Club for Malay Sengupta) ৷
বারুইপুরের লোক হলেও এখন মুম্বইয়ে গত 20 বছর ধরে মলয় সেনগুপ্তর স্থায়ী ঠিকানা ৷ কলকাতা ময়দানে তথাকথিত ছোট ক্লাব ওয়াইএমসিএ ও গোয়ার ক্লাবে খেলার পরে কোচিংয়ে মনোনিবেশ করেন মলয় ৷ মাঠে পড়ে থেকে প্রশিক্ষণের পাঠ নেওয়ার পাশাপাশি কোচিং ডিগ্রিও নিয়েছেন ৷ এমনকি প্রথম বাঙালি হিসেবে ‘উয়েফা এ’ লাইসেন্স কোচিং ডিগ্রি রয়েছে ৷ মহমেডান স্পোর্টিং ক্লাবের অনূর্ধ্ব-19 দলকে জাতীয় লিগে কোচিং করিয়েছেন ৷ টালিগঞ্জ অগ্রগামীর কোচ হিসেবে কাজ করার অভিজ্ঞতা রয়েছে তাঁর ৷ মুম্বইয়ে নিজের এএফএ অ্যাকাডেমিতে ক্ষুদে ফুটবলারদের প্রশিক্ষণ দেওয়ার কাজ করে চলেছেন মলয় ৷ এখন সেই কাজ দেশের গণ্ডি পেরিয়ে বিদেশেও যেতে চলেছে ৷
মলয় সেনগুপ্ত বলেন, “ফ্রান্সের মার্সেই বি ফুটবল ক্লাবে কোচিং করানোর জন্য আমাকে বলা হয়েছে ৷ ওই ক্লাবের অনুর্ধ্ব-10, অনুর্ধ্ব-14 বয়সীদের কোচিং করাতে হবে ৷ মার্চ মাসে ওদেশে যাব ৷” বাংলার ফুটবলে বিদেশি কোচের রমরমার সময়ে একজন বাঙালি কোচ বিদেশের ক্লাবে কোচিং করতে যাওয়ার খবর চমকপ্রদ ৷ তবে, মলয় সেনগুপ্তর বিদেশে কোচিং করতে যাওয়া নতুন নয় ৷ এর আগেও তিনি বাংলাদেশ, শ্রীলঙ্কায় কোচিং করিয়েছেন ৷ প্রতিবেশী দ্বীপরাষ্ট্রে মলয় সেনগুপ্তর অ্যাকাডেমি রয়েছে ৷
ইউরোপের মাটিতেও নিয়মিত কোচিং করিয়ে আসছেন ৷ করোনা অতিমারির আগে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ক্লাবের অ্যাকাডেমিতে কোচিং করানোর কথা থাকলেও তা হয়নি ৷ মুম্বই নিবাসী বাঙালি কোচ বলেন, “ইংল্যান্ড, ডেনমার্ক, লিথুওনিয়াতে আমি বয়স ভিত্তিক ফুটবলে কোচিং করিয়েছি ৷ ইংল্যান্ডে এফ এ লাইসেন্স রয়েছে ৷ এফ এ-র পেশাদার কোচিং ক্লাবের আমি প্রথম বাঙালি সদস্য ৷ উয়েফার ইয়ুথ ডেভলপমেন্ট ফুটবলের সঙ্গে জড়িত রয়েছি ৷ তার ফলে ইউরোপে নিয়মিত কাজ করতে যেতেই হয় ৷ আমি এই দেশ থেকে ইউরোপে যাচ্ছি ৷ প্রবাসী ভারতীয়রাও ওখানে কাজ করেন ৷”
আরও পড়ুন: অবশেষে সই করলেন জার্ভিস, এখনও আশা দিচ্ছেন কনস্ট্যান্টাইন
সাগরপাড়ে নিয়মিত ফুটবল কোচিং করাচ্ছেন ৷ অথচ দেশের ফুটবলার তৈরির কাজে পরিচিত নন ৷ প্রশ্নটা শুনেই বাধা দিলেন মলয় সেনগুপ্ত ৷ বলছেন, “আমি দেশের ছয়টি রাজ্যে বয়সভিত্তিক দলের কোচিং করিয়েছি ৷ বাংলার কোচিং করিয়েছি ৷ মহারাষ্ট্র, মধ্যপ্রদেশ, ছত্তিশগড়, মুম্বইয়ের কোচ হিসেবে কাজ করেছি আমি ৷ বাঙালি কোচেরা সব পারে ৷ এখানেও ভালো কাজ করছেন কোচেরা ৷ তবে, ছোটদের নিয়ে কাজটা কম হয় ৷ আমাদের এখানে 12 বছর বয়সে ফুটবল শিক্ষা শুরু হয় ৷ বিদেশে অনুর্ধ্ব-4, , অনুর্ধ্ব-6 থেকে ফুটবলের পাঠ শুরু হয় ৷’’
ভারতীয় ফুটবলে পিছিয়ে ৷ তাকে টেনে তোলার কাজ শুরু হয়েছে ৷ পরিকল্পনা সাজাচ্ছে সর্বভারতীয় ফুটবল ফেডারেশন ৷ ক্লাব ফুটবলেও চেষ্টা চলছে ৷ মলয় সেনগুপ্তের মতো কোচেদের ফুটবল বিশ্বের প্রথম সারির দেশ থেকে কাজ করার প্রস্তাব তাই আশা জাগায় ৷