কোচি, 16 অক্টোবর: 34 হাজার দর্শকের সিংহভাগ কেরালা ব্লাস্টার্সের (KBFC) হয়ে গলা ফাটাচ্ছেন। মুষলধারে না-হলেও সারা ম্যাচজুড়ে অবিরাম বারিধারা। তার ওপর ছ'মিনিটের মাথায় পিছিয়ে পড়ার ধাক্কা। সামগ্রিক প্রতিকূল পরিস্থিতিতেও সাহসী মেরিনার্স। আর ভাগ্য তো সাহসীদেরই সহায় হয়। অন্যথা হল না এটিকে মোহনবাগানের ক্ষেত্রেও । প্রথম ম্যাচে হার ভুলে কেরালা ব্লাস্টার্সের বিরুদ্ধে জোরালো প্রত্যাবর্তন সবুজ-মেরুনের । 'মানজাপ্পারা'-দের বিরুদ্ধে 5-2 গোলে দুরন্ত জয় এটিকে মোহনবাগানের (ATK MB Beat KBFC by 5-2) ৷ হ্যাটট্রিকে নায়ক দিমিত্রি পেত্রাতোস ।
ম্যাচে এটিকে মোহনবাগানের হয়ে হ্যাটট্রিক দিমিত্রি পেত্রাতোসের। একটি গোল জনি কাউকোর। অন্যটি লেনি রডরিগেজের । কেরালা ব্লাস্টার্সের হয়ে গোল ইভানের। শুরুর দিকে কেরালার আক্রমণের সামনে সবুজ-মেরুন ডিফেন্ডারদের কার্যত অসহায় দেখাচ্ছিল ৷ বলা যায়, খানিকটা আত্মসমর্পণ করে ফেলেছিলেন। ছয় মিনিটে সাহালের পাস থেকে ইভানের গোল (1-0) দেখে মনে হয়েছিল এটিকে মোহনবাগান ভেঙে পড়বে। কিন্তু ভেঙে পড়া দলকে টেনে তুললেন হুগো বুমোস।
ফরাসি মিডফিল্ডার দলের আক্রমণকে কেবল নেতৃত্বই দিলেন না, মাঠজুড়ে যেন ছবি আঁকলেন। তার স্কিলের সামনে কেরালা ক্রমেই ব্যাকফুটে চলে যেতে থাকে। 26 মিনিটে দিমিত্রি পেত্রোতাসের গোলের কারিগর হুগো বুমোস। যেভাবে প্রতিপক্ষ রক্ষণকে হেলায় নড়িয়ে বল সাজিয়ে দিয়েছিলেন তার থেকে গোল (১-১) না করা ছাড়া দিমিত্রির কোনও উপায় ছিল না। এর আগেই এটিকে মোহনবাগান সমতায় ফিরতে পারত। কিন্তু রেফারির ভুল অফসাইডের সিদ্ধান্ত মেরিনার্সদের অপেক্ষায় রেখে দেয়।
আরও পড়ুন: ভবানীপুরকে হারিয়ে কলকাতা লিগ জয়ের আরও কাছে মহামেডান
হুগো বুমোস যদি কম্পোজার হন তাহলে যোগ্য সহায়তা করলেন লিস্টন কোলাসো। অনেকদিন পরে চেনা ছন্দে কেরালিয়ন উইংগার। 39 মিনিটে তাঁর পাস থেকেই দলের দ্বিতীয় গোল করে যান জনি কাউকো। দ্বিতীয়ার্ধে এটিকে মোহনবাগান একইভাবে খেলার রাশ নিজেদের পায়ে রেখে দেয়। নিয়ন্ত্রক সেই হুগো বুমোস। মেরিনার্সদের তিন নম্বর গোল বুমোস, লিস্টন কোলাসো, দিমিত্রি এই ত্রয়ীর অবদান।
আশি মিনিটে ব্যবধান কমায় কেরালা ব্লাস্টার্স। পরিবর্ত হিসেবে মাঠে নেমে রাহুল কেপির জোরালো শট বিশাল কাইথের পায়ের তলা দিয়ে গোলে চলে যায়। এরপর চাপ বাড়ায় কেরালা ব্লাস্টার্স। এই সময় হুগো বুমোসকে তুলে নিয়ে কেরালার চাপ কমিয়ে দিয়েছিলেন সবুজ-মেরুন কোচ। কিন্তু রবিবারের সন্ধ্যায় মেরিনার্সরা আলো ফোটাতেই যেন মাঠে নেমেছিলেন।
আক্রমণে ঝাঁঝ বাড়াতেই রক্ষণ আলগা হয়ে যায় ইয়েলো ব্রিগেডের । সেই সুযোগে দিমিত্রিসের পাস থেকে দলের চতুর্থ গোল করেন পরিবর্ত লেনি রডরিগেজ। অজি তারকা আইএসএলের প্রথম হ্যাটট্রিক সারলেন ম্যাচের শেষ কয়েক মিনিট আগে। লিস্টন কোলাসোর বাড়ানো বল ধরে দলের পাঁচ নম্বর এবং নিজের হ্যাটট্রিক গোলটি করেন ম্যাচের সেরা দিমিত্রি (5-2)। ডার্বির আগে দলগত সংহতিতে বড় জয় জুয়ান ফেরান্দো এবং তাঁর দলকে যে বাড়তি সাহস যোগাবে, তা নিশ্চিত ।
আরও পড়ুন: নর্থ-ইস্ট ইউনাইটেড ম্যাচের প্রস্তুতির ফাঁকে জন্মদিন পালন কনস্ট্যানটাইনের