কলকাতা, 26 মে : এই বয়সে প্রিয় মানুষগুলোর মৃত্যুর খবরে আরও ভেঙে পড়ছেন বলেই জানালেন কিংবদন্তি ভারতীয় ফুটবলার তুলসীদাস বলরাম । তিনি বলেন, "প্রদীপ, চুনীর পর বলবীর পাজির মৃত্যুর খবরটা আমার কাছে কতটা মর্মান্তিক তা বলে বোঝাতে পারব না । এমনিতেই দূর্যোগের মধ্যে রয়েছি । এই অবস্থায় প্রিয় মানুষগুলোর মৃত্যুর খবর আমাকে আরও ভেঙে দিচ্ছে । এই 84 বছর বয়সে আর কত সহ্য করব বলত ।" কিছুটা বিষন্ন গলাতেই কথাগুলো বললেন তিনি ।
কিংবদন্তি ভারতীয় ফুটবলারের সঙ্গে সদ্য প্রয়াত হকি কিংবদন্তির সখ্যতার খবর অনেকেরই অজানা । অর্ধ শতাব্দীর পুরোনো তাঁদের পরিচয় ও সখ্যতা । তাই বলবীর সিং সিনিয়রের মৃত্যুর পর হাজারো স্মৃতির পাতা খুলে বসলেন তুলসীদাস বলরাম । তিনি বলেন, "1956 সালের অলিম্পিকে ভারতীয় হকি এবং ফুটবল দল একসঙ্গে থাকত । অনেকটা একান্নবর্তী পরিবারের মতো ছিলাম আমরা । পাশাপাশি মাঠে আমাদের অনুশীলনও হত । শিডিউলের ফারাক না হলে আমরা একসঙ্গে অনুশীলন করতাম ।" ছোটবেলা থেকে হকি খেলাটি ভালো লাগত । তাই গেমস ভিলেজে বলবীর সিং, লেসলি ক্লডিয়াস, শংকর লক্ষণ, রঙ্গনাথন ফ্রান্সিস, আমির কুমারদের দেখা বলরামের কাছে ছিল স্বপ্নপূরনের সমান । নেদারল্যান্ডসের বিরুদ্ধে বলবীর সিংয়ের পাঁচ গোল আজও বর্ষীয়ান প্রাক্তনের কাছে রূপকথার মত মনে হয় ।
স্মৃতিচারণ করতে করতে বলরাম বলেন, "কোনও সন্দেহ নেই সেই সময় হকি দলের অসাধারণ পারফরম্যান্স ফুটবল দলকে অনুপ্রাণিত করেছিল । নেভিলডিসুজ়ার অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে হ্যাটট্রিক সেই অনুপ্রানিত ফুটবলের ফসল । সেদিন পুরো হকি দল আমাদের অভিনন্দন জানাতে এসেছিল । দু'দিন পর হকি দল জার্মানির বিরুদ্ধে মেলবোর্ন ক্রিকেট মাঠে খেলতে নেমেছিল । চোট সারিয়ে মাঠে ফিরে ম্যাচের একমাত্র গোল করেছিলেন বলবীর সিং । ফাইনালে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে জয়সূচক গোল এসেছিল বলবীর সিংয়ের স্টিক থেকে ।"
তিনি আরও বলেন, "মেলবোর্ন অলিম্পিকে আমাদের পারফরম্যান্স যথেষ্ট ভালো ছিল । যুগস্লোভাকিয়া, বুলগেরিয়ার বিরুদ্ধে ভালো খেলেছিলাম আমরা । তবুও হকি দলের দাপুটে পারফরম্যান্স, জাতীয় সঙ্গীত বেজে ওঠা আজও নাড়া দেয় আমাকে । বলবীর পাজির খেলা যেন একটা ছবি । যা দেখে মনে হয় শিল্পী ছবি আঁকছেন । সবার উপরে ছিলেন পাজি ।"