কলকাতা, 3 সেপ্টেম্বর : ঘেরা মাঠে কলকাতা লিগের ম্যাচগুলো যখন শেষ তখন ময়দানে কনে দেখা আলো । অস্তাচলে যাওয়ার আগে সূর্যের নরম আলো মন ভরিয়ে দেয় । এসময় ফুটবল মাঠে ভালো গোল, খেলা দেখতে আসা মানুষের কাছে তৃপ্তির । কলকাতা লিগে মহামেডান বনাম কাস্টমস ম্যাচে রাজন বর্মণ এবং আমিরুলের গোল গোধূলি বেলায় সেরকমই মন ভালো করে দেওয়া এক মুহূর্ত।
কাঁচড়াপাড়ার ছেলে রাজন বর্মণ । বাবা আগে মাছ বিক্রি করতেন ৷ এখন এলাকায় টোটো চালান । মা ও আরও দুই ভাই রয়েছে পরিবারে। পাঠচক্র আকাডেমি থেকে কলকাতা ময়দানে । গত তিন বছর ধরে কাস্টমসের হয়ে খেলছেন । এবারই ম্যাচের সেরা ৷ গতকাল 29 মিনিটে ফিলিপ আর্জার পাস থেকে বল পেয়ে শরীরের দোলায় মহামেডানের দুই ডিফেন্ডারকে টলিয়ে গোল করেন তিনি ।
চলতি লিগে বড় দলের বিরুদ্ধে মরিয়া লড়াই দিচ্ছে কাস্টমস । শুল্ক দপ্তরের ফুটবলারদের মরিয়া ফুটবলের সামনে মোহনবাগান আটকে গেছে ৷ এবার সেই তালিকায় যোগ হল মহামেডান । পাঁচ ম্যাচে চার পয়েন্ট নিয়ে অবনমনের মুখে দাঁড়িয়ে থাকলেও কাস্টমস আক্রমণাত্মক ফুটবলে বাজিমাতের রাস্তায় হাঁটতে চায় । গতকালও মহামেডান আক্রমণকে থামিয়ে দিয়ে বেশ কয়েকবার গোল করার মতো জায়গায় পৌঁছে গিয়েছিল তারা।
মহামেডান মাঠে বৃষ্টি হলে একরকম, বৃষ্টি না হলে আরেক রকম। বৃষ্টিতে কাদা ভরা মহামেডান মাঠে দাঁড়িয়ে থাকা কঠিন। বৃষ্টি না হলে মাঠ যেন শুকিয়ে যাওয়া ধানক্ষেত । ফলে অসমান বাউন্সের সঙ্গে মানিয়ে নিয়ে ভালো ফুটবল খেলা অসম্ভব হয়ে দাঁড়ায় । ফলে খেলার মান ভালো হয়নি । হওয়া সম্ভবও ছিল না । ম্যাচ শেষে কাস্টমস কোচ মাঠ ও রেফারিং নিয়ে মুখ খুলতে চাননি । মহামেডান টিডি বলছেন, তাঁরা সমর্থকদের কথা চিন্তা করে নিজেদের মাঠে খেলতে চান । তবে দুটো মিনি ডার্বি কল্যাণী স্টেডিয়ামের বদলে যুবভারতী ক্রীড়াঙ্গনে করার জন্য আর্জি জানাবেন।
কাস্টমসের বিরুদ্ধে মহামেডান খারাপ রেফারিংয়ের শিকার । বিরতির আগে দু'বার ন্যায্য পেনাল্টি থেকে বঞ্চিত হয়েছে তারা । কাস্টমসের অমিত চক্রবর্তী ও সৌরভ দাশগুপ্তের হাতে বল লাগলেও রেফারি পেনাল্টি দেননি । যা দীপেন্দু বিশ্বাসকে বিস্মিত করেছে।
75 মিনিটে মুদ্দে মুসার সেন্টার থেকে শরীর ছুড়ে আমিরুলের গোল । সমতা ফেরায় মহামেডান ৷ ইটভাটার শ্রমিকের ছেলের লড়াইয়ের অভিজ্ঞান এই গোলটি । রেইনবো স্পোর্টিংয়ের বিরুদ্ধে ম্যাচের সেরা হওয়ার পর কাস্টমস-এর বিরুদ্ধেও দলকে বাঁচালেন ।