কলকাতা, 2 অক্টোবর : গ্যালারিতে ইস্টবেঙ্গল ও মোহনবাগানের সমর্থকরা উপস্থিত হয়ে মহমেডানের ডুরান্ড যাত্রাকে সমর্থন করেছেন। কলকাতার দলের পাশে বাকি দুই প্রধানের সমর্থনের এমন বিরল ছবিতে শনিবার অন্যমাত্রা যোগ করলেন লাল-হলুদ কর্তারা। এসসি ইস্টবেঙ্গলের শীর্ষকর্তা দেবব্রত সরকার ও সহ-সচিব রূপক সাহা মহমেডান স্পোর্টিংয়ের অনুশীলনে উপস্থিত হয়ে শুধু উৎসাহ দিলেন না, শুভেচ্ছাও জানালেন।
শতাব্দী প্রাচীন ডুরান্ড কাপ ফুটবল টুর্নামেন্টে এটিকে মোহনবাগান ও এসসি ইস্টবেঙ্গল এবার অংশ নেয়নি। লাল-হলুদ শিবিরের না-খেলার যথার্থ কারণ ছিল। কিন্তু দল গড়েও সবুজ-মেরুন শুধু ডুরান্ড কাপ নয়, কলকাতা লিগেও মাঠে নামেনি। দুই প্রধানের অনুপস্থিতিতে বাংলার ফুটবলের মানরক্ষার দায়িত্ব এখন ময়দানের আর এক শতাব্দী প্রাচীন ক্লাব মহমেডান স্পোর্টিংয়ের হাতে ৷ গত কয়েক বছরে রেড রোডের ধারের ক্লাবটির সদস্য সংখ্যা তলানিতে, প্রশাসনিক স্তরেও নানা সমস্যায় জর্জরিত ৷ কিন্তু তাতে সাদা-কালো সমর্থকদের তাঁদের ক্লাবের প্রতি সমর্থনে কোনও খামতি পড়েনি। ইতিমধ্যে ডুরান্ড ফাইনালের টিকিট নিঃশেষিত।
ক্লাবের গেটে 'সোল্ড আউট' লিখতে হয়েছে। এ দৃশ্য শেষ কবে ময়দান দেখেছে, তা মনে করা কঠিন ৷ ট্রফির ছবি উঁকি দিতেই সাদা-কালো ফুটবলাররা একজোট। মরশুমটা দারুণভাবে শুরু করেও মাঝের তিন ম্যাচে পরাজয়ে গেল গেল রব উঠে ছিল 'ব্ল্যাক প্যান্থার'-দের নিয়ে। সেই হাহাকারকে উল্লাসে বদলে দিয়েছেন শেখ ফৈয়াজ, আজহারউদ্দিন মল্লিক, নিকোলাস, মার্কাস জোসেফরা। শনিবার অনুশীলনে দলের খেলার ভুল ত্রুটি নিয়ে আলোচনার শেষে ফুটবলারদের ট্রফি জয় নিয়ে বাড়তি চাপ না-নিতে বলেছেন কোচ আন্দ্রে।
আরও পড়ুন : এফসি গোয়াকে হারিয়ে বাংলার সম্মান রক্ষা করতে চায় মহমেডান
পাশাপাশি প্রতিপক্ষ এফসি গোয়াকে হালকাভাবে না-নেওয়ার কথা শুনিয়েছেন সাদা-কালো কোচ ৷ সাজঘরে আত্মতুষ্ট হওয়ার জায়গা নেই, সেটাও মনে করিয়ে দিয়েছেন মহমেডানের রাশিয়ান কোচ। সবকিছু ভুলে ছেলেদের শূন্য থেকে শুরু করার কথা বলেছেন তিনি ৷ গোলের মধ্যে রয়েছেন মার্কাস জোসেফ। গোকুলাম কেরালাকে প্রথম ডুরান্ড কাপ জয়ের স্বাদ দেওয়া জোসেফ এবার কলকাতার ঐতিহ্যবাহী ক্লাবটিকে ট্রফির স্বাদ দিতে চান। মহমেডান অবশ্য গোল পাওয়ার জন্য মার্কাসের ওপর নির্ভরশীল হতে নারাজ। নিকোলাসকে নিউক্লিয়াস করে শেখ ফৈয়াজ, আজহার, মিলন সিংদের গোলের জন্য ঝাঁপাতে বলেছেন কোচ। একই সঙ্গে রক্ষণ ও আক্রমণের মধ্যে ভারসাম্যের কথা বলেছেন। গ্যালারিতে ফিরেছেন সমর্থকরা। তবে ফাইনালে যুবভারতী ক্রীড়াঙ্গনের মোট দর্শকাসনের অর্ধেক সমর্থক প্রবেশ করতে পারবেন। তাদের সিংহভাগ সাদা-কালোর ট্রফি জয় দেখতে চায় বলাই বাহুল্য। তাই মহমেডান স্পোর্টিংয়ে হার নয়, শুধুই জয়ের শপথ।