কলকাতা, 10 জুলাই : বিদায়ি বিনিয়োগ সংস্থার পাঠানো প্রস্তাবে সই করে পাঠিয়ে দিল ইস্টবেঙ্গল । বৃহস্পতিবার সন্ধেয় ইস্টবেঙ্গলের বোর্ড অফ ডিরেক্টরসের চার সদস্য- ক্লাব প্রেসিডেন্ট ডাক্তার প্রণব দাশগুপ্ত, সচিব কল্যাণ মজুমদার, শীর্ষকর্তা দেবব্রত সরকার এবং সৈকত গঙ্গোপাধ্যায় ক্লাবে গিয়ে বিদায়ি বিনিয়োগকারীর পাঠানো প্রস্তাবে সম্মতি সূচক সই করে দিয়েছেন বলে খবর । আটজন ডিরেক্টরকে নিয়ে তৈরি বোর্ড অফ ডিরেক্টরসের এই চার জন ইস্টবেঙ্গলের পক্ষ থেকে প্রতিনিধিত্ব করতেন । ফলে এবার স্পোর্টিং রাইটস ইস্টবেঙ্গল ক্লাবের কাছে ফিরে আসা সময়ের অপেক্ষা বলে মনে করা হচ্ছে । বিদায়ি বিনিয়োগকারীর চেয়ারম্যান অজিত আইজ়্যাকের সঙ্গে বুধবার ইস্টবেঙ্গলের দুই কর্তা দেবব্রত সরকার এবং সৈকত গঙ্গোপাধ্যায়ের কথা হয়েছে বলে খবর । তারপরই জট খোলার প্রক্রিয়া সহজ হয় । তবে প্রস্তাবে স্বাক্ষর করার জন্য ইস্টবেঙ্গলের কাছ থেকে বিদায়ি বিনিয়োগকারী সংস্থা কোনও অর্থ নিয়েছে কি না তা এখনও পরিষ্কার নয় । দুই পক্ষই যে দীর্ঘ আলোচনা এবং আইনি পথ দেখার পরে সমঝোতার পথ বেছেছে তা স্পষ্ট ।
বিদায়ি বিনিয়োগকারীর কাছ থেকে জট কাটার ইঙ্গিত মিলতেই বৈঠকে বসেছিলেন লাল হলুদ কর্তারা । মঙ্গলবার কর্তারা নিজেদের মধ্যে উদ্ভূত পরিস্থিতি নিয়ে সবিস্তারে কথা বলেছিলেন । সেখানে বিদায়ি বিনিয়োগকারী সংস্থার পাঠানো প্রস্তাবে আইনি প্যাঁচ খতিয়ে দেখার চেষ্টা করা হয় । প্রাথমিকভাবে সিদ্ধান্ত হয়েছিল, বিনিয়োগ সংস্থার কাছ থেকে যে বকেয়া অর্থ ক্লাব দাবি করেছিল তা ছাড়া হবে । তবে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে সবদিক দেখে নেওয়া হবে বলেও ঠিক করা হয়েছিল বৈঠকে । বিষয়টি নিয়ে আইনজীবীদের সঙ্গে কথা বলার সিদ্ধান্ত হয়েছিল । যে পদক্ষেপই নেওয়া হোক না কেন তা দ্রুত করার কথাও বলা হয়েছিল ।
প্রসঙ্গত সোমবার বিদায়ি বিনিয়োগ সংস্থার চেয়ারম্যান অজিত আইজ়্যাক বলেছেন, তাঁরা এই বিচ্ছেদ প্রক্রিয়ার দ্রুত নিষ্পত্তি চান । এই মর্মে একটি প্রস্তাব তিনি ক্লাবে পাঠিয়েছিলেন । এবার ছিল ক্লাবের তরফে সিদ্ধান্ত নেওয়ার পালা । সেক্ষেত্রে যদি ক্লাব বিনিয়োগকারী সংস্থার হাতে থাকা সত্তর শতাংশ শেয়ারের ভবিষ্যৎ নিয়ে সিদ্ধান্ত নিতে না পারে তাহলে তৃতীয় পক্ষের কাছে বিক্রি করা হবে । ক্লাবকে তখন তৃতীয় পক্ষের সঙ্গে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করতে হবে । কিন্তু বৃহস্পতিবার রাতে যাবতীয় উদ্বেগের অবসান হয়েছে বলে খবর ।
ক্লাব লাইসেন্সিং নিয়ে কারা উদ্যোগ নেবে এই নিয়ে জানতে চেয়ে ইস্টবেঙ্গল এবং বিদায়ি সংস্থার কাছে জানতে চেয়েছিল ফেডারেশন। স্পোর্টিং রাইটস যার হাতে তারাই এই ব্যাপারে ব্যাখ্যা দিতে পারবে বলে ফেডারেশন জানিয়েছিল । মে মাসের শেষে বিনিয়োগ সংস্থার সঙ্গে বিচ্ছেদ হলেও সেই কাগজ ক্লাবের হাতে আসেনি । যদিও ক্লাব বিচ্ছেদ হয়েছে বলে সবসময় দাবি করেছে এবং স্পোর্টিং রাইটস হাতে আসা সময়ের অপেক্ষা বলা হয়েছিল । কিন্তু বিনিয়োগ সংস্থার পক্ষ থেকে অজিত আইজ়্যাকের ফেডারেশনের কাছে পাঠানো সাম্প্রতিক চিঠি জটিলতার বিষয়টি সামনে নিয়ে আসে । তারপর সোমবার অজিত আইজ়্যাক ইস্টবেঙ্গলের স্পোর্টিং রাইটস ফিরিয়ে দেওয়ার কথা বলায় আশার আলো দেখা দিয়েছিল ।
পাশাপাশি একই সঙ্গে অন্য আশঙ্কাও ছিল । তাই মনে হয়েছিল সমস্যা মিটেও যেন মিটছে না । এই অবস্থায় মিনার্ভা পঞ্জাবের কর্ণধার রঞ্জিত বাজাজ বিদায়ি বিনিয়োগকারীর হাতে থাকা ইস্টবেঙ্গলের সত্তর শতাংশ শেয়ার কিনতে আগ্রহী বলেও খবর ছড়িয়ে পড়েছিল । এই নিয়ে বিতর্কও কম হয়নি । এবার দেখার নতুন স্ট্যান্স নিয়ে ইস্টবেঙ্গলের কর্তারা কীভাবে ক্লাবকে পরিচালনা করেন এবং দেশের এক নম্বর লিগে দলকে খেলাতে পারেন কি না ।