কল্যাণী, 16 সেপ্টেম্বর : জমজমাট কলকাতা লিগ । আজ কল্যাণী স্টেডিয়ামে ইস্টবেঙ্গল বনাম ভবানীপুর ক্লাবের গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচ ড্র । ফল 2-2 । ইস্টবেঙ্গলের পক্ষে গোল করেছেন পিন্টু মাহাতা ও বোরহা ফার্নান্ডেজ় । ভবানীপুরের হয়ে গোল কামো বায়ো ও জগন্নাথ সানার । ম্যাচের সেরা অ্যান্টো রশিদ সাগারাজ়ের । শংকরলাল বলছেন, খালি হাতে ফিরতে না হওয়ার লক্ষ্যে তাঁরা সফল । আলেয়ান্দ্রো বলছেন, ছোটো ভুলে বড় বিপর্যয় ।
এদিকে আজকের ম্যাচ ড্রয়ের পর কলকাতা লিগ খেতাব জয়ের ম্যাজিক ফিগার কী হতে পারে এই প্রশ্নে ভিন্ন মেরুতে দুই দলের কোচ । ভবানীপুরের কোচ শংকরলাল চক্রবর্তী বলছেন, খেতাব এনে দিতে পারে 22 কিংবা 23 পয়েন্ট । ইস্টবেঙ্গল কোচ বলছেন প্রতি ম্যাচে অঙ্ক বদল হচ্ছে । ফলে 11 পয়েন্ট নষ্ট করার পরেও তাঁদের আশা শেষ বলা যাবে না । ম্যাজিক ফিগার নিয়ে সরাসরি কোনও মন্তব্যে তিনি রাজি নন । কোনও সন্দেহ নেই চলতি মরশুমের মতো কোনও বছরে লিগে এত পট পরিবর্তন দেখা যায়নি ।
ম্যাচের শুরুতে সাত মিনিটের মাথায় নওরেমের পাশ থেকে পিন্টু মাহাতার গোল । সেই সময় মনে হয়েছিল কল্যাণী স্টেডিয়ামের মখমলের মতো মাঠে হয়ত দৃষ্টিনন্দন ফুটবল উপহার দেবে ইস্টবেঙ্গল । কিন্তু সময় যত এগিয়েছে ইস্টবেঙ্গলের ফুটবল বিবর্ণ হয়েছে । জুয়ান মেরে গঞ্জালেসের বিরক্তিকর পারফরমেন্স, লালরিনডিকা রালতের মিস পাসের প্রদর্শনীর জেরে ম্যাচ থেকে ছিটকে যেতে থাকে ইস্টবেঙ্গল । তবে প্রতিপক্ষের এই অগোছালো ফুটবলের সুযোগ নিতে ভবানীপুর ব্যর্থ । এসময় কামো বায়ো ও ডো ডজ লাল হলুদ রক্ষণের ছায়ায় বিশ্রাম নিচ্ছিলেন । এর সঙ্গে কর্নার থেকে কিংশুক দেবনাথের গোল করতে না পারা ও ডো ডজের পাস থেকে সরণ সিংয়ের সহজ সুযোগ নষ্ট ভবানীপুরের কাজটা কঠিন করে দেয় ।
অবনমন বাঁচানো নিশ্চিত হয়েছে ।এবার লড়াই চ্যাম্পিয়ন হওয়ার । তাই শূন্য হাতে ফিরতে রাজি ছিলেন না শংকরলাল চক্রবর্তী । ফুটবলারদের সেই টোটকায় উদ্বুদ্ধ করে দ্বিতীয়ার্ধে বাজিমাত করলেন তিনি । ম্যাচে ইস্টবেঙ্গলের পয়েন্ট নষ্টের অন্যতম দোষী লালরিনডিকা রালতে । মিস পাসের প্রদর্শনী ছাড়াও ভবানীপুরের সমতাসূচক গোলের প্রথম ভুলটা তিনিই করেন । লালরিনডিকা রালতের পা থেকে বল কেড়ে ভবানীপুরের সুপ্রিয় তা কামো বায়োকে বাড়িয়ে দেন । প্রায় পঁচিশ গজ দৌড়ে কামো বায়ো বক্সের বাইরে থেকে দুরন্ত সোয়ার্ভিং শটে ভবানীপুরকে সমতায় ফেরান । সর্বোচ্চ গোলদাতার দৌড়ে থাকা কামোর গোল চলতি লিগের অন্যতম সেরা ।
নিশ্চিত তিন পয়েন্ট হাতছাড়া হওয়ার আশঙ্কায় ইস্টবেঙ্গল চাপ বাড়ায় । এসময় জুয়ান গঞ্জালেসকে তুলে নিয়ে মার্কোসকে মাঠে নামান আলেয়ান্দ্রো । চলতি লিগে সেভাবে নজর টানতে ব্যর্থ । সোমবার গুরুত্বপূর্ণ সময়ে ফাঁকা গোলে বল ঠেলতে ব্যর্থ হন । একই দোষে দোষী হাইমে স্যান্টোস কোলাডো ।
জোড়া সহজ সুযোগ নষ্ট করেও ইস্টবেঙ্গল ভেঙে পড়েনি । 82 মিনিটে কোলাডোর ফ্রিকিকে মাথা ছুঁইয়ে বোরহার গোল জয়ের আশা জাগালেও তার রেশ মিনিটের ব্যবধানে শেষ । ফ্রান্সিস জ়েভিয়ারের পরিবর্তে মাঠে নামা জগন্নাথ সানা ভবানীপুরকে সমতায় ফেরান । লাল হলুদ রক্ষণের হঠাৎ দাঁড়িয়ে পড়ার সুবিধা নিয়ে বাজিমাত করেন তিনি ।
এদিকে স্বভাববিরুদ্ধ ভাবে ম্যাচের দিন সকালে ইস্টবেঙ্গলের চেয়ারম্যান অজিত আইজ়্যাকের প্রতি প্রশস্তিসূচক টুইট করেন আলেয়ান্দ্রো । আগামীতে ভালো কাজ করার আশ্বাস । গত একবছরে স্প্যানিশ কোচের কোচিংয়ে আই লিগ রানার্স হওয়া ছাড়া নতুন মরশুমে শুরুটা ব্যর্থতার অন্ধকার ।