ETV Bharat / sports

Madan Lal Interview: 'ভালো কিছু করেছিলাম, তাই আজও মানুষ সমাদর করে', স্মৃতির সরণি বেয়ে তিরাশির গল্প শোনালেন মদন লাল

1983 দেশের প্রথম বিশ্বকাপ জয়ের 40তম বর্ষপূর্তি আজ ৷ বিশেষ দিনে নস্টালজিয়ার ঝাঁপি খুললেন বিশ্বজয়ী দলের গুরুত্বপূর্ণ সদস্য মদন লাল ৷ শুনলেন ইটিভি ভারতের প্রতিনিধি সঞ্জয় অধিকারী ।

author img

By

Published : Jun 25, 2023, 1:50 PM IST

Updated : Jun 25, 2023, 11:05 PM IST

Madan Lal Interview
স্মৃতির সরণি বেয়ে তিরাশির গল্প বললেন মদনলাল

কলকাতা, 25 জুন: পক্ক কেশ, কোঁচকানো চামড়া। সমাজ ওদের বৃদ্ধ বলে দাগালেও ভারতীয় ক্রিকেটের চিরতরুণ ওঁরা ৷ দলের এক গুরুত্বপূর্ণ সদস্য প্রয়াত হলেও যতদিন ভারতে ক্রিকেট থাকবে, তিরাশির বিশ্বকাপ জয়ী দল অমর হয়েই রয়ে যাবে ৷ সময় বদলালেও কিন্তু ওঁদের কীর্তি পুরনো হওয়ার নয়। সাদাকালো যুগে তৈরি ওঁদের ইতিহাস আজীবন রঙিন ফানুস ওড়াবে অনুরাগীদের হৃদয়ে।

আজ 25 জুন, চল্লিশ পূর্ণ করল কপিলদেব নেতৃত্বাধীন ভারতের প্রথম বিশ্বকাপ জয় ৷ প্রবল পরাক্রমশালী ক্লাইভ লয়েডের ওয়েস্ট ইন্ডিজকে হারিয়ে 'দুধের শিশু' ভারত যে বিশ্বকাপ জিততে পারে সেদিন, কস্মিনকালেও ভাবেনি কেউ। কিন্তু কল্পনা আর বাস্তবের যে একটা সূক্ষ্ম ফারাক রয়েছে, ক্যারিবিয়ানদের হারিয়ে তাতেই যেন সিলমোহর দিয়েছিল কপিল অ্যান্ড কোং।

রোমানিয়ার কিংবদন্তি জিমন্যাস্ট নাদিয়া কোমানিচি একবার বলেছিলেন, " আমার পরেও অনেকে পারফেক্ট টেন করবেন, কিন্তু আমার পারফেক্ট টেন মানুষের মনে গেঁথে থাকবে আজীবন।" একইভাবেই বলা যায় 25 জুন, 1983 ভারতীয় ক্রিকেটের সাবালক হওয়ার দিন। যে দিনটা গোটা একটা রাষ্ট্রকে বিশ্বাস করতে শিখিয়েছিল যে, আমরাও পারি। তিরাশির বিশ্বজয়ীরা রবিবার মুম্বইয়ের একটি অভিজাত ক্লাবে বিশ্বজয়ের চল্লিশ বছর উদযাপন করবেন। সেখানে ক্রিকেটারদের পরিবারের সদস্যরা আমন্ত্রিত। বহিরাগত, এমনকী সংবাদমাধ্যমের প্রবেশেরও অনুমতি নেই সেখানে। অনুষ্ঠানটি প্রাথমিকভাবে লর্ডসে করার কথা থাকলেও কোনও কারণে তা হয়নি ৷

অমর তিরাশির সেই দলের গুরুত্বপূর্ণ সদস্য মদনলাল স্মৃতির সরণি বেয়ে হাঁটলেন ইটিভি ভারতের প্রতিনিধির কাছে ৷ প্রাক্তন জাতীয় নির্বাচক কমিটির সদস্য বলছিলেন, "আজও বিষয়টি স্বপ্নের মত মনে হয়। শেষ উইকেটটা (পড়ুন ওয়েস্ট ইন্ডিজের) পড়ার পর তবেই বিশ্বাস হয়েছিল আমরা বিশ্বচ্যাম্পিয়ন হয়েছি। তিরাশির বিশ্বসেরা সদস্যদের মধ্যে একটি হোয়াটস অ্যাপ গ্রুপ রয়েছে। সেখানেই কাপ জয়ের চল্লিশ বছরের উদযাপনের পরিকল্পনা হয়েছে বলে জানালেন একদা সমর্থকদের আদরের 'মদ্দত লাল'।

সেবার বিশ্বকাপ ফাইনালে সবচেয়েে বিপজ্জনক ক্যারিবিয়ান ব্যাটার ভিভিয়ান রিচার্ডসকে আউট করেছিলেন মদন লালই। একশোর বেশি স্ট্রাইক রেটে ব্যাট করা রিচার্ডসকে আউট করার জন্য কী পরিকল্পনা করেছিলেন? মদন লাল বলেন, "যখন কোনও ব্যাটসম্যান স্ট্রোক বেশি নেয় তখন তাঁর ভুল করার সম্ভাবনাও বাড়ে। সেদিনও রিচার্ডসের ক্ষেত্রে সেটাই হয়েছিল। আমাদের ক্যাপ্টেন অসাধারণ ক্যাচ নিয়েছিল ৷" মাত্র 183 রানের পুঁজি নিয়ে ফাইনালে কাপ জয়ের অভিযান। কী বলেছিলেন অধিনায়ক কপিলদেব? তিরাশির বিশ্বজয়ী দলের সদস্য বলেন, "ক্যাপস এমন একজন অধিনায়ক যে সেরাটা বের করে নিতে জানত। সবার জন্য টার্গেট সেট করে দিয়েছিল। পুরো বিশ্বকাপ অভিযানটাই ছিল প্রত্যেকের অবদানের ফসল। সবাই পারফরম্যান্স করেছিল টুর্নামেন্টজুড়ে।"

আরও পড়ুন: শৃঙ্খলা বজায় রেখে নিজের সেরাটা দেওয়াই লক্ষ্য যস্বশী জয়সওয়ালের

দেশে ফিরে সেবার বিপুল সংবর্ধনা পেয়েছিল ভারতীয় দল। বম্বে (অধুনা মুম্বই) বিমানবন্দরে তিলধারণের জায়গা ছিল না সেদিন। ব্র্যাবোর্ন স্টেডিয়ামে পর্যন্ত পুরো রাস্তাজুড়ে মানুষ অপেক্ষা করছিলেন বিশ্বজয়ীদের একবার চাক্ষুষ করতে। স্টেডিয়ামেও ছিল না তিলধারণের জায়গা। সেই সংবর্ধনার স্মৃতির কথা বলতে গিয়ে মদন লাল বলেন, "সেদিন কিছু একটা করেছিলাম বলেই তো আজও মানুষ আমাদের ভালোবাসে।" পাশাপাশি বর্তমান ভারতীয় দল নিয়ে আশার কথা শোনালেন তিনি ৷ মদন লাল জানালেন, এই দলেও ভালো ক্রিকেটার রয়েছে। বিরাট কোহলি, রোহিত শর্মারা একাই যে কোনও ম্যাচ ঘোরানোর ক্ষমতা রাখে। আমি বিশ্বাস করি এবারও ফের কাপ জয়ের সুখস্মৃতি ফিরবে ৷ সবনিলিয়ে আগামীর প্রতি অতীতের বিশ্বাস ঝরে পড়ল বিশ্বকাপজয়ী সদস্যের প্রতিটি শব্দে।

কলকাতা, 25 জুন: পক্ক কেশ, কোঁচকানো চামড়া। সমাজ ওদের বৃদ্ধ বলে দাগালেও ভারতীয় ক্রিকেটের চিরতরুণ ওঁরা ৷ দলের এক গুরুত্বপূর্ণ সদস্য প্রয়াত হলেও যতদিন ভারতে ক্রিকেট থাকবে, তিরাশির বিশ্বকাপ জয়ী দল অমর হয়েই রয়ে যাবে ৷ সময় বদলালেও কিন্তু ওঁদের কীর্তি পুরনো হওয়ার নয়। সাদাকালো যুগে তৈরি ওঁদের ইতিহাস আজীবন রঙিন ফানুস ওড়াবে অনুরাগীদের হৃদয়ে।

আজ 25 জুন, চল্লিশ পূর্ণ করল কপিলদেব নেতৃত্বাধীন ভারতের প্রথম বিশ্বকাপ জয় ৷ প্রবল পরাক্রমশালী ক্লাইভ লয়েডের ওয়েস্ট ইন্ডিজকে হারিয়ে 'দুধের শিশু' ভারত যে বিশ্বকাপ জিততে পারে সেদিন, কস্মিনকালেও ভাবেনি কেউ। কিন্তু কল্পনা আর বাস্তবের যে একটা সূক্ষ্ম ফারাক রয়েছে, ক্যারিবিয়ানদের হারিয়ে তাতেই যেন সিলমোহর দিয়েছিল কপিল অ্যান্ড কোং।

রোমানিয়ার কিংবদন্তি জিমন্যাস্ট নাদিয়া কোমানিচি একবার বলেছিলেন, " আমার পরেও অনেকে পারফেক্ট টেন করবেন, কিন্তু আমার পারফেক্ট টেন মানুষের মনে গেঁথে থাকবে আজীবন।" একইভাবেই বলা যায় 25 জুন, 1983 ভারতীয় ক্রিকেটের সাবালক হওয়ার দিন। যে দিনটা গোটা একটা রাষ্ট্রকে বিশ্বাস করতে শিখিয়েছিল যে, আমরাও পারি। তিরাশির বিশ্বজয়ীরা রবিবার মুম্বইয়ের একটি অভিজাত ক্লাবে বিশ্বজয়ের চল্লিশ বছর উদযাপন করবেন। সেখানে ক্রিকেটারদের পরিবারের সদস্যরা আমন্ত্রিত। বহিরাগত, এমনকী সংবাদমাধ্যমের প্রবেশেরও অনুমতি নেই সেখানে। অনুষ্ঠানটি প্রাথমিকভাবে লর্ডসে করার কথা থাকলেও কোনও কারণে তা হয়নি ৷

অমর তিরাশির সেই দলের গুরুত্বপূর্ণ সদস্য মদনলাল স্মৃতির সরণি বেয়ে হাঁটলেন ইটিভি ভারতের প্রতিনিধির কাছে ৷ প্রাক্তন জাতীয় নির্বাচক কমিটির সদস্য বলছিলেন, "আজও বিষয়টি স্বপ্নের মত মনে হয়। শেষ উইকেটটা (পড়ুন ওয়েস্ট ইন্ডিজের) পড়ার পর তবেই বিশ্বাস হয়েছিল আমরা বিশ্বচ্যাম্পিয়ন হয়েছি। তিরাশির বিশ্বসেরা সদস্যদের মধ্যে একটি হোয়াটস অ্যাপ গ্রুপ রয়েছে। সেখানেই কাপ জয়ের চল্লিশ বছরের উদযাপনের পরিকল্পনা হয়েছে বলে জানালেন একদা সমর্থকদের আদরের 'মদ্দত লাল'।

সেবার বিশ্বকাপ ফাইনালে সবচেয়েে বিপজ্জনক ক্যারিবিয়ান ব্যাটার ভিভিয়ান রিচার্ডসকে আউট করেছিলেন মদন লালই। একশোর বেশি স্ট্রাইক রেটে ব্যাট করা রিচার্ডসকে আউট করার জন্য কী পরিকল্পনা করেছিলেন? মদন লাল বলেন, "যখন কোনও ব্যাটসম্যান স্ট্রোক বেশি নেয় তখন তাঁর ভুল করার সম্ভাবনাও বাড়ে। সেদিনও রিচার্ডসের ক্ষেত্রে সেটাই হয়েছিল। আমাদের ক্যাপ্টেন অসাধারণ ক্যাচ নিয়েছিল ৷" মাত্র 183 রানের পুঁজি নিয়ে ফাইনালে কাপ জয়ের অভিযান। কী বলেছিলেন অধিনায়ক কপিলদেব? তিরাশির বিশ্বজয়ী দলের সদস্য বলেন, "ক্যাপস এমন একজন অধিনায়ক যে সেরাটা বের করে নিতে জানত। সবার জন্য টার্গেট সেট করে দিয়েছিল। পুরো বিশ্বকাপ অভিযানটাই ছিল প্রত্যেকের অবদানের ফসল। সবাই পারফরম্যান্স করেছিল টুর্নামেন্টজুড়ে।"

আরও পড়ুন: শৃঙ্খলা বজায় রেখে নিজের সেরাটা দেওয়াই লক্ষ্য যস্বশী জয়সওয়ালের

দেশে ফিরে সেবার বিপুল সংবর্ধনা পেয়েছিল ভারতীয় দল। বম্বে (অধুনা মুম্বই) বিমানবন্দরে তিলধারণের জায়গা ছিল না সেদিন। ব্র্যাবোর্ন স্টেডিয়ামে পর্যন্ত পুরো রাস্তাজুড়ে মানুষ অপেক্ষা করছিলেন বিশ্বজয়ীদের একবার চাক্ষুষ করতে। স্টেডিয়ামেও ছিল না তিলধারণের জায়গা। সেই সংবর্ধনার স্মৃতির কথা বলতে গিয়ে মদন লাল বলেন, "সেদিন কিছু একটা করেছিলাম বলেই তো আজও মানুষ আমাদের ভালোবাসে।" পাশাপাশি বর্তমান ভারতীয় দল নিয়ে আশার কথা শোনালেন তিনি ৷ মদন লাল জানালেন, এই দলেও ভালো ক্রিকেটার রয়েছে। বিরাট কোহলি, রোহিত শর্মারা একাই যে কোনও ম্যাচ ঘোরানোর ক্ষমতা রাখে। আমি বিশ্বাস করি এবারও ফের কাপ জয়ের সুখস্মৃতি ফিরবে ৷ সবনিলিয়ে আগামীর প্রতি অতীতের বিশ্বাস ঝরে পড়ল বিশ্বকাপজয়ী সদস্যের প্রতিটি শব্দে।

Last Updated : Jun 25, 2023, 11:05 PM IST
ETV Bharat Logo

Copyright © 2024 Ushodaya Enterprises Pvt. Ltd., All Rights Reserved.