কলকাতা, 8 নভেম্বর : বারবার চারবার। আবারও টি-20 বিশ্বকাপে ব্যর্থ ভারতীয় ক্রিকেট দল। ফেভারিট হিসেবে মরুশহরে পা দিয়ে ব্যর্থতার অন্ধকারে হারিয়ে যাওয়া। কোহলিদের এই ব্যর্থতার কারণ হিসেবে নানা বিষয় সামনে আসছে । এর মধ্যে প্রধান তিনটি কারণ 1) গত ছয়মাস ধরে অসহ্য জৈব বলয়ের মধ্যে বাধ্যতামূলক অবস্থান। 2) পরিবারের সঙ্গে থাকতে না পারার মানসিক ক্লান্তি। 3) আইপিএলের ধকলের জেরে বিশ্বকাপে মুখ থুবড়ে পড়া। বিশ্লেষণ করলে আরও কিছু কারণ নিশ্চয় বেরোবে, তবে পরিসংখ্যান বলছে আইপিএলের ধকল সামলে টি-20 বিশ্বকাপে মাঠে নামা ভারতীয় দল বারংবার ব্যর্থতার সম্মুখীন হয়েছে ৷ এই প্রথম নয়, এর আগেও একাধিকবার টি-20 বিশ্বকাপের শেষ চারে উঠতে ব্যর্থ হয়েছে 'মেন ইন ব্লু' ৷ একনজরে দেখে নেওয়া যাক বিগত টি-20 বিশ্বকাপগুলোর ব্যর্থতায় আইপিএলের কেমন প্রভাব ফেলেছিল।
2009 : দক্ষিণ আফ্রিকার মাটিতে 18এপ্রিল-24মে পর্যন্ত আইপিএলের আসর বসেছিল। সেই বছর 5 জুন থেকে ইংল্যান্ডের মাটিতে শুরু হয়েছিল টি-20 বিশ্বকাপ। দু'মাস ধরে দক্ষিণ আফ্রিকার মাটিতে বিশ্বকাপ খেলার পরে ইংল্যান্ডের আবহে মানিয়ে নিতে ব্যর্থ হয়েছিল ভারত। অধিনায়ক মহেন্দ্র সিং ধোনির নেতৃত্বাধীন ভারত সুপার এইটের তিনটি ম্যাচে ওয়েষ্ট ইন্ডিজ, দক্ষিণ আফ্রিকা, ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে হেরে ছিটকে গিয়েছিল। কোচ গ্যারি কার্স্টেন আইপিএলের ক্লান্তিকেই কাঠগড়ায় তুলেছিলেন।
2010 : 25এপ্রিল আইপিএল ফাইনালে খেলার পরে ভারতীয় দল ওয়েষ্ট ইন্ডিজের মাটিতে টি-20 বিশ্বকাপ খেলতে পা দিয়েছিল 30 এপ্রিল। সেবার সুপার এইটে অস্ট্রেলিয়া, শ্রীলঙ্কা, ওয়েষ্ট ইন্ডিজের বিরুদ্ধে হেরে বিদায় নিয়েছিল ভারতীয় দল। ব্যাটসম্যানরা ক্যারিবিয়ান দ্বীপপুঞ্জের ধীরগতির বাইশগজের সঙ্গে মানিয়ে নিতে ব্যর্থ হয়েছিলেন। সেবারও দু'মাস ধরে আইপিএল খেলার ধাক্কা সামলাতে পারেনি 'মেন ইন ব্লু'র সদস্যরা।
2012 : আইপিএল খেলে দু'মাস পরে শ্রীলঙ্কার মাটিতে টি টোয়েন্টি বিশ্বকাপ খেলতে গিয়েছিল ভারত। এক্ষেত্রে আইপিএলের ক্লান্তি কারণ নয়। কিন্তু বিশেষজ্ঞরা বলছেন সেবার আইপিএলের সময় ভারতীয় ক্রিকেটাররা ফর্মের শীর্ষে পৌঁছে গিয়েছিলেন। ফলে ক্রিকেটারদের ধারাবাহিকতার গ্রাফ উপর-নীচ হওয়ায় তার শিকার হয়েছিল ভারতীয় দল। সেবার সুপার এইটে অস্ট্রেলিয়া এবং পাকিস্তানের কাছে রান-রেটে পিছিয়ে পড়ে ছিটকে গিয়েছিল ভারত।
আরও পড়ুন : স্বপ্নভঙ্গ কোহলিদের, আফগানদের হারিয়ে বিশ্বকাপের শেষ চারে নিউজিল্যান্ড
2021সাল: বোলিং কোচ ভরত অরুণ বলছেন বিশ্বকাপের আগে পর্যাপ্ত বিশ্রাম না পাওয়াতেই ব্যর্থতা। যশপ্রীত বুমরা ইতিমধ্যে জৈব বলয়ে থাকার ক্লান্তি নিয়ে সরব হয়েছেন। ইংল্যান্ড সিরিজ থেকে মরুদেশে আইপিএলের দ্বিতীয় ভাগ খেলতে নেমে ফের জৈব বলয়ে থাকার বিষয়টিও মানসিকভাবে বিধ্বস্ত করে দিয়েছিল। ফলস্বরূপ এই ব্যর্থতা।
প্রাক্তন ক্রিকেটার তথা বাংলার কোচ অরুণলাল বলছেন: "ভীষণ কঠিন এই জৈব বলয়ে থাকা। আমি ভারতীয় দলের খেলা দেখছি না। বাংলা দল নিয়ে ব্যস্ত। কিন্তু জৈব বলয়ে থাকার ধকল দেখে অনুমান করতে পারছি। মানসিক এবং শারীরিক ভাবে ক্লান্ত করে দেয়। সেটাই হয়তো ব্যর্থতা ডেকে নিয়ে এসেছে।"