কলকাতা, ১ মার্চ : কোরোনা ভাইরাসের আতঙ্কে এখন কাঁপুনি ইতালি থেকে সিঙ্গাপুরে । এশিয়ান ক্রিকেট কাউন্সিলের জরুরি বৈঠক দুবাইয়ে হওয়ার কথা থাকলেও, কোরোনা ভাইরাসের আতঙ্কে তা বাতিল হয়েছে । ভারতীয় ক্রিকেট কন্ট্রোল বোর্ডের প্রেসিডেন্ট সৌরভ গাঙ্গুলি তাই ইডেনে । মাঠে বসে বাংলা বনাম কর্নাটকের ম্যাচ অল্প সময় দেখলেন ।
ঈশান পোড়েলের 39 রানে পাঁচ উইকেট শিকার দেখে ইডেন ছাড়লেন । 190 রানের লিড নিয়ে খেলতে নেমে বাংলা দ্বিতীয় দিনের শেষে চার উইকেটে 72 । এগিয়ে 262 রানে । ব্যাট করছেন সুদীপ চট্টোপাধ্যায় 40 এবং অনুষ্টুপ মজুমদার এক রানে । দিনের শুরুতে দলের হয়ে ব্যাট করেছিলেন তিনি । দিনের শেষ ওভারেও অনুষ্টুপ ফের ব্যাট হাতে মাঠের মাঝখানে । এবং প্রথম ইনিংসের মতো দ্বিতীয় ইনিংসেও তাঁকে ত্রাতার ভূমিকা পালন করতে হবে । এবার তাঁর সঙ্গী সুদীপ। অপেক্ষায় শাহবাজ আহমেদ সহ বাকিরা । কর্নাটকের মতো শক্তিশালী প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে 190 রানের লিড নিয়েও বাংলার ফাইনালের টিকিট RAC-তে, কারণ ফের দলের টপ অর্ডারের ব্যর্থতা । অভিষেক রামণ, অধিনায়ক অভিমন্যু ঈশ্বরণের ব্যর্থতার কাহিনী এখন মেগা সিরিয়ালের আকার নিয়েছে । মনোজ তিওয়ারি চোট পাওয়া আঙুলের যন্ত্রণার অস্বস্তি ছাপিয়ে ব্যাট করতে নেমে ব্যর্থ । প্রসিধ কৃষ্ণার বলে 13 রান করে ফিরে গিয়েছেন ।
দিনের শেষে বাংলার সাজঘরের সামনে রোহন গাভাস্কারের সঙ্গে হাসিমুখে আড্ডায় বাংলার কোচ অরুণলাল। দলের কোচিং ব্রিগেডের বাকিরাও দীপ দাশগুপ্তের সঙ্গে আড্ডায় ব্যস্ত। ফাইনালের টিকিট পাওয়ার সম্ভাবনা তৈরি হতেই অল্প হলেও খুশির রেশ বাংলার প্রাক্তন এবং বর্তমানের । কিন্তু অস্বস্তির কাঁটাও রয়েছে । কর্নাটককে থামাতে অন্তত 400 প্লাস রানের চ্যালেঞ্জ ছুড়তে হবে বলে মনে করা হচ্ছে । সুদীপ এবং অনুষ্টুপ তৃতীয় দিনের প্রথম একঘণ্টা সামলে দিলে বিষয়টি সম্ভব বলছেন সবাই । প্রথম ইনিংসে কে এল রাহুল 26 রানে মুকেশ কুমারের বলে ফিরে গিয়েছেন । তাঁর ব্যাটিং করার সময় অত্যুৎসাহী এক দর্শক মাঠে ঢুকে জড়িয়ে ধরেন । বিষয়টি উপভোগ করেছেন তিনি । তবে বঙ্গ পেসারদের নিয়ন্ত্রিত বোলিং না সামলাতে পারার ব্যর্থতার কাঁটা তার রয়েছে । শুধু তিনি নন, দ্বিতীয় ইনিংসে বাংলার পেসারদের জবাব দেওয়ার চ্যালেঞ্জ নিতে অপেক্ষায় করুণ নায়ার, মণীশ পান্ডেরাও । তাই বাংলাকে ফাইনালের টিকিট কনফার্ম করতে অন্তত চারশো করতে হবে । সতীর্থদের উপর আস্থা রয়েছে দিনের নায়ক ঈশান পোড়েলের । বলছেন, দলের টপ অর্ডার ব্যর্থ । অভিমন্যু ঈশ্বরণ, অভিষেক রামণদের দায়িত্ব নিয়ে ব্যাট করা উচিত ছিল বলে মনে করেন । তবে অনুষ্টুপ এবং সুদীপে আস্থা রাখছেন ।
রঞ্জি ট্রফিতে তৃতীয়বার পাঁচ উইকেট নেওয়ার কৃতিত্ব দেখালেন ঈশান পোড়েল । অশোক দিন্দার সঙ্গে নিয়মিত কথা হয় তাঁর । ইডেনের এই উইকেটে কীভাবে বল করতে হবে তার পরামর্শ পেয়েছিলেন বলে জানিয়েছেন ঈশান পোড়েল । ব্যাটসম্যানকে আউট করার পরে সেলিব্রেশনের নিত্যনতুন ভঙ্গি রয়েছে তাঁর । শনিবারের পাঁচ শিকারের সেলিব্রেশনে তিনি ফুটবলার ফিরমিনোকে নকল করলেন । বিদেশি ফুটবল ক্লাবের মধ্যে বার্সেলোনার সমর্থক চন্দননগরের পেসার । গতবছরের তুলনায় নিজেকে বদলে ফেলেছেন । মানসিক এবং শারীরিক কাঠিন্য তাঁকে ইন্ডিয়া প্রসপেক্ট করে তুলেছে । বাংলা দলের বোলিং আক্রমণের নেতৃত্ব দিচ্ছেন । পাশাপাশি বাকি দুই পেসারের সঙ্গে পরিকল্পনা করে দায়িত্ব ভাগ করছেন ৷
দলের একনম্বর পেসারের মানসিকতা বদলের ছোঁয়া কেন টপ অর্ডার ব্যাটসম্যানদের মধ্যে আসছে না তা চিন্তার । মাঝে তিনদিন । গতির দাপটে বাংলার ঈশান কোণের জয়ের আলো দেখা গেলেও ফের ব্যাটিং ব্যর্থতায় অস্বস্তিও রয়েছে ।