রংপুর, 10 ফেব্রুয়ারি : এই সেদিনই জিম্বাবোয়ের বিরুদ্ধে বাংলাদেশের 9 উইকেটে জয়ের ম্যাচটা দেখলেন ৷ টিভির সামনে বসে ভাইকে জাতীয় দলের হয়ে নেতৃত্ব দিতে দেখে গর্বে বুক ভরে উঠেছিল খাদিজা খাতুনের ৷ রবিবার পোচেস্ট্রুমে সেই ভাইয়ের হাতেই উঠেছে বিশ্বকাপ ট্রফি ৷ তা অবশ্য দেখে যেতে পারলেন না বাংলাদেশ অধিনায়ক আকবর আলির দিদি খাদিজা ৷ তখন যে বড্ড দূরে তিনি ৷
আন্ডারডগ টিম হিসেবে অনূর্ধ্ব-19 বিশ্বকাপ খেলতে গেছিল বাংলাদেশ ৷ সেই দলকে ফাইনালে তোলেন অধিনায়ক আকবর আলি ৷ বয়সের তুলনায় আকবর যে একটু বেশিই পরিণত তা ভারতের বিরুদ্ধে ফাইনাল ম্যাচে প্রকাশ পেয়েছে বারবার ৷ কঠিন সময়ে ঠান্ডা মাথায় দলকে নেতৃত্ব দিলেন ৷ ব্যাট হাতে অবদান রাখলেন ৷ ম্যাচের পর পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে উঠলে ক্রিকেটারদের শান্ত করার চেষ্টা করলেন ৷ সর্বোপরি বাংলাদেশি ক্রিকেটারদের হাতাহাতিতে জড়ানোর ঘটনায় দোষ স্বীকার করে ক্ষমাও চেয়ে নেন তিনি ৷ তখনও বোঝা যায়নি বছর আঠারোর আপাত শান্ত ছেলেটার বুকে কী ঝড় চলছে ৷ বাংলাদেশের বিশ্বকাপ জয়ের পর প্রকাশ্যে এল, বিশ্বকাপ চলাকালীন মৃত্যু হয়েছে আকবরের দিদি খাদিজা খাতুনের ৷ চোখের জল মুছে, প্রিয়জনের মৃত্যুর শোক চেপেই ইতিহাস গড়েছেন আকবর ৷
চার ভাই-বোনের মধ্যে আকবর সবার ছোটো ৷ দিদিদের চোখের মণি আকবর বিশ্বকাপে নেতৃত্ব দিচ্ছে বাংলাদেশকে ৷ 18 জানুয়ারি জিম্বাবোয়ের বিরুদ্ধে ম্যাচে টিভির সামনে বসে ভাইকে নেতৃত্ব দিতে দেখেছেন খাদিজা খাতুন ৷ সেই ম্যাচ 9 উইকেটে জিতেছিল বাংলাদেশ ৷ কিন্তু পরের ম্যাচগুলি আর দেখা হয়নি খাদিজার ৷ 22 জানুয়ারি যমজ সন্তানের জন্ম দিতে গিয়ে মারা যান তিনি ৷ বাড়ির লোক চেপে গেলেও কোনওভাবে খবরটা আকবরের কানে পৌঁছে যায় ৷ দিদির মৃত্যুশোক বুকে চেপে দলকে ফাইনালে তোলেন তিনি ৷
ফাইনালে সেই শোকই যেন শক্তিতে পরিণত হয়েছিল ৷ কঠিন সময় বুক চিতিয়ে লড়াই করেছেন ৷ দেশকে প্রথম বিশ্বকাপ জিতিয়ে ইতিহাস গড়েছেন ৷