হায়দরাবাদ, 4 অক্টোবর: রাত পোহালেই সেই সোনালি মুহূর্ত ৷ আগামিকাল আমেদাবাদে নরেন্দ্র মোদি স্টেডিয়ামে ম্যাচ শুরুর মধ্যে দিয়ে দামামা বাজবে 2023-এর ক্রিকেট বিশ্বকাপের ৷ 1996 সালে বিশ্বজয় করেছিল শ্রীলঙ্কা। 2011 সালের রানার্স আপ দল। অথচ এবারের বিশ্বকাপের আগে যোগ্যতা অর্জন পর্বের ম্যাচ খেলে মূলপর্বের টিকিট আদায় করতে হয়েছে তাদের। 1996 সালে প্রাক্তন অধিনায়ক অর্জুন রণতুঙ্গা এবং তাঁর ছেলেরা যা অর্জন করেছিলেন সেই খেতাব ধরে রাখতে মরিয়া দ্বীপরাষ্ট্রের দলটি ৷ তবে তার জন্য তাকিয়ে থাকতে হবে 19 নভেম্বরের দিকে ৷
একটা ছোট্ট দ্বীপরাষ্ট্র। সেখানে ক্রিকেট নিয়ে রয়েছে উন্মাদনা। দেশটার নাম শ্রীলঙ্কা। এশিয়ার ক্রিকেটীয় দেশগুলোর মধ্যে অন্য়তম গুরুত্বপূর্ণ একটি দেশ। শুধুমাত্র মাঠে নেমে লড়াই করাই নয়, এই দেশ জন্ম দিয়েছে অর্জুন রণতুঙ্গা, সনৎ জয়সূর্য, চামিন্ডা ভাস, মুত্থাইয়া মুরলিধরন, কুমার সাঙ্গাকার, মাহেলা জয়বর্ধনের মতো বিশ্ব বিখ্যাত ক্রিকেট তারকাদের। রণতুঙ্গার নেতৃত্বে 1996 সালে বিশ্বজয়ও করেছিল শ্রীলঙ্কা। ওয়ান-ডে বিশ্বকাপের ইতিহাসে শ্রীলঙ্কা মোট 83টি ম্যাচ খেলেছে। 38টি ম্যাচে জয় ও 39টি ম্যাচে হারতে হয়েছে তাদের। 1টি ম্যাচ টাই ও 5টি ম্যাচের কোনও ফল নির্ধারিত হয়নি। এখানে আমরা শ্রীলঙ্কা দলের শক্তি, দুর্বলতা, সুযোগ এবং পিছিয়ে পড়ার দিকগুলো নিয়ে আলোচনা করব ৷
- সাম্প্রতিক ফর্ম
এশিয়া কাপের ফাইনালে 50 ওভারের ম্য়াচে গোটা দল মাত্র 50 রানে অল আউট। শ্রীলঙ্কার ক্রিকেট ইতিহাসে অন্য়তম লজ্জার একটি ছিল সেটি। তবে সবকিছু ভুলে বিশ্বকাপের লড়াইয়ে নামতে চলেছে এই দ্বীপরাষ্ট্র। দাসুন শনাকার নেতৃত্বে এবারের টুর্নামেন্টে খেলতে নামবে শ্রীলঙ্কা। 7 অক্টোবর নয়াদিল্লির অরুণ জেটলি স্টেডিয়ামে দক্ষিণ আফ্রিকার বিরুদ্ধে শ্রীলঙ্কা অভিযান শুরু করবে। প্রস্তুতি ম্যাচে শ্রীলঙ্কা হতাশাজনক ছিল। ফলে তারা প্রথমে বাংলাদেশের কাছে সাত উইকেটে পরাজিত হয় এবং তারপর মঙ্গলবার আফগানিস্তানের কাছে হেরে যায়।
- শক্তি
শ্রীলঙ্কার স্পিন বোলিং বিকল্প রয়েছে প্রচুর। উপমহাদেশের পিচে যা ভীষণ কার্যকরী হতে পারে। মাহিস থিকসানার মতো স্পিনার যিনি সিএসকের হয়ে আইপিএল জিতেছেন। এছাড়া ধনঞ্জয় ডি সিলভা রয়েছেন যিনি স্পিনের সঙ্গে সঙ্গে ব্যাট হাতেও দলের জন্য অবদান রাখতে পারেন। তবে আলাদা করে উল্লেখ করতে হবে দুনিথ ওয়ালালাগের কথা। এশিয়া কাপের মঞ্চে ভারতের বিরুদ্ধে দুরন্ত পারফরম্যান্সই মূলত তাঁর জন্য বিশ্বকাপের দরজা খুলে দিয়েছিল। লোয়ার অর্ডারে চাপের মুখে ব্যাট হাতেও অনবদ্য লড়াই করেছিলেন ওয়ালালাগে। অলরাউন্ডার বিসেবে অধিনাক দাসুন শনাকা ও চারিথ আসালাঙ্কা রয়েছেন দলে। ব্যাটিং বিভাগে অবশ্য় কুশল মেন্ডিসের ফর্ম দলকে ভরসা জোগাবে। কুশল মেন্ডিস ওডিআইতে 112 ইনিংসে 32.1 গড় দুইটি সেঞ্চুরি এবং 25টি হাফ সেঞ্চুরি সহ 3 হাজার 215 রান করেছেন। দিমুথ কার্নুরত্নে একটি কঠিন কৌশলের একজন শক্তিশালী খেলোয়াড় যার ওয়ানডেতে ভালো রেকর্ড রয়েছে। তিনি 44 ম্যাচে একটি সেঞ্চুরি এবং 11টি হাফ সেঞ্চুরি করে 1 হাজার 301 রান করেছেন।
- দুর্বলতা
ভারতে, যেখানে স্পিন সহায়ক পিচ, সেখান ওয়ানিন্দু হাসারাঙ্গার অনুপস্থিতি অবশ্যই অনুভব করবে শ্রীলঙ্কা শিবির। চোটের জন্য গোটা টুর্নামেন্ট থেকেই ছিটকে গিয়েছেন হাসারাঙ্গা। ব্য়াটিং, বোলিং 2 বিভাগেই ধারাবাহিকতার অভাব। 2-3 জন প্লেয়ারের ওপরই দল বেশি করে নির্ভরশীল। তরুণ প্লেয়াররা কতটা বিশ্বমঞ্চে জ্বলে উঠতে পারবেন তা নিয়ে সন্দেহ রয়েছে।
- সুযোগ
2023 ক্রিকেট বিশ্বকাপ পাথুম নিসাঙ্কা এবং চারিথ আসালাঙ্কার মতো উদীয়মান প্রতিভাদের জন্য একটি চমৎকার প্ল্যাটফর্ম ৷ এই বিশ্বমঞ্চে তাঁরা নিজেদের দক্ষতা মেলে ধরলে শ্রীলঙ্কার ভবিষ্যতের তারকা হয়ে উঠতে পারে।
সংক্ষেপে, শ্রীলঙ্কার বিশ্বকাপ দলে অভিজ্ঞ খেলোয়াড় এবং প্রতিশ্রুতিশীল প্রতিভাবানরাও রয়েছেন ৷ সফল হওয়ার জন্য, তাঁদের শক্তিকে একজোট করতে হবে ৷ পাশাপাশি তাঁদের দুর্বলতাগুলোকে সরিয়ে ফেলতে হবে ৷ সুযোগের সদ্ব্যবহার করতে হবে ৷ সেইসঙ্গে শক্তিশালীর দলগুলির বিরুদ্ধে দাপিয়ে খেলতে হবে ৷
আরও পড়ুন: বিশ্বকাপের মঞ্চে সেরা পাঁচ ফিল্ডার কারা, জেনে নিন বিস্তারিত