কলকাতা : ১৯৭৬ সালে প্রথম নাটক মঞ্চস্থ হয় 'অজৈব'। নাটকের রচয়িতা শ্যামল দাস। আজও শ্যামল দাস বুকে করে আগলে রেখেছেন কসবা অশনীকে। 'আলিবাবা'-র নাটকের মহড়ায় হাজির ছিল ETV Bharat। সেই নাটক নিয়ে শ্যামল দাস এবং নির্দেশক কাশীনাথ চক্রবর্তী কথা বললেন ETV Bharat'এর সঙ্গে। কথা বললেন দলের সম্পর্কেও।
শ্যামল দাস বলেন, " আমাদের এই অশনী আজ থেকে ৪২ বছর আগে প্রথম শুরু হয়। আমারই লেখা নাটক 'অজৈব' দলের প্রথম মঞ্চস্থ নাটক। তারপর থেকে আমরা বিভিন্ন নাটক মঞ্চস্থ করেছি এতদিন। বর্তমানে আমরা আলিবাবার নাটক মঞ্চস্থ করতে চলেছি আগামী মাসে, ২০ জুন। মধুসূদন মঞ্চে মঞ্চস্থ হবে। সেই নাটক সম্পর্কে বলবেন আমাদের দলের নির্দেশক কাশীনাথ চক্রবর্তী।"
কাশীনাথ চক্রবর্তী বলেন, "এই নাটকটি রচনা করেছিলেন ক্ষীরোদপ্রসাদ বিদ্যাবিনোদ। ১৮৯৭ সালে, যতদূর মনে পড়ছে, ২০ নভেম্বর এই নাটকটি প্রথম অভিনীত হয়। এটিকে ক্লাসিক থিয়েটার বলা যেতে। এই নাটকটি ক্লাসিক থিয়েটারে যে দুঃসময় চলছিল, সেই দুঃসময় কাটিয়ে সুসময়ে এনে দেয়। প্রচুর অর্থ তাঁরা উপার্জন করেন। তারপর এই আলিবাবা নাটক দশকের পর দশক ধরে বিভিন্ন দল অভিনয় করে এসেছে। আজকেও এই নাটকের অভিনয় হচ্ছে। এবং আগামীদিনেও এই নাটকের অভিনয় হবে।"
এই সময় দাঁড়িয়ে কেন এই নাটক প্রাসঙ্গিক, প্রশ্ন করায় তিনি বলেন, "প্রথমত, আমাদের চারদিকে বর্তমানে যা পরিস্থিতি - দারিদ্র, অভাব, হিংসার ঘটনার কথা আমরা শুনতে পাই। বিশেষ করে মানুষের রুজি রোজগারের জন্য তাঁকে প্রায় ২৪ ঘণ্টাই পরিশ্রম করতে হচ্ছে। এখনকার কাজের পরিকাঠামোই এই ধরনের হয়ে গেছে। সেখানে মানুষ চায়, এমন একটা কিছু দেখুক, যাতে তাঁর ভালো লাগবে। উপভোগ করতে পারবে। যে হাসতে পারবে, কাঁদতে পারবে। সে দিক দিয়ে এই আলিবাবা নাটক ভীষণ ভীষণভাবে উপযুক্ত। আর বিশেষভাবে এই আলিবাবা নাটকে আকর্ষণ অসংখ্য গান এবং নাচ। বাংলা নাটকের মঞ্চে আলিবাবা নাটকের মর্জিনা আবদুল্লা, আলিবাবা এবং ডাকাত সর্দার - এই চারটি চরিত্র খুব আকর্ষণীয়। যখনই নাটকের অভিনয় চলতে থাকে, দর্শক উন্মুখ হয়ে থাকে, কখন এই চরিত্রগুলো আসবে। আর বর্তমান পরিস্থিতির সঙ্গেও এই আলিবাবার নাটকের অনেক মিল আছে। যেমন আলিবাবা একজন দরিদ্র কাঠুরে। সে সারাদিন যা পরিশ্রম করে, সেই তুলনায় সে কাঠের দাম পায় না। তাই তার মনের মধ্যেও কিন্তু একটা তকমা আছে, যে তার অবস্থা ফিরে আসবে। সেও চন্দন কাঠ কাটবে। আবার পাশাপাশি দেখা যায়, তার ভাই কাসেম ক্ষমতালোভী। কার আকাঙ্ক্ষা, যে সে বাগদাদের সম্রাটকেও ছাড়িয়ে চলে যাবে। এই নাটকের গুরুত্বপূর্ণ অংশ গুপ্তধনের সন্ধান। এখানে চিচিংফাঁক শব্দটা যুগ যুগ ধরে মানুষের খুব প্রিয়। মানুষ দু'ঘণ্টার জন্য গান শুনে তাল ঠুকবে, বিভিন্ন চরিত্রের সংলাপ শুনে আনন্দ পাবে, করতালি দিয়ে অভিনন্দন জানাবে। এটাই আমাদের একমাত্র উদ্দেশ্য।"