কলকাতা : আজ মুম্বইয়ের বান্দ্রায় ফ্ল্যাট থেকে উদ্ধার করা হয় সুশান্ত সিং রাজপুতের ঝুলন্ত দেহ । প্রাথমিক অনুমান আত্মঘাতী হয়েছেন তিনি । তদন্ত করেছে পুলিশ । তাঁর মৃত্যুতে শোকস্তব্ধ বলিউড । অভিনেতার এই আকস্মিক মৃত্যুতে শোকপ্রকাশ করেছেন টলিউড তারকারাও ।
ঋতুপর্ণা সেনগুপ্ত : অত্যন্ত শকিং একটা খবর । জানি না এটাতে কী বলতে পারি । অনেক নতুন স্বপ্ন নিয়ে ছেলেটা শুরু করেছিল । আমি প্রথমে ভেবেছিলাম এটা ফেক নিউজ় । তারপরে দেখলাম সত্যি । আসলে এখন রোজই এত খারাপ খবর আসছে, যে খারাপ খবরের জন্য প্রস্তুত থাকি । তারপর আবার মনে হয় সবকিছু ঠিক হবে, সব ভালো হবে । কিন্তু এই খবরটা খুবই খারাপ । বছরের শুরু থেকে এক একটা খবর আমাদের মনোবল ভেঙে দিচ্ছে । খুব প্রাণবন্ত একজন মানুষ, একটি ট্যালেন্ট...একটা বড় লস । এই পথটা ওঁ কেন অবলম্বন করল, এটা আমাদের সকলের কাছেই প্রশ্ন রেখে গেল । চলে যাওয়ার এটা কোনও পথ নয় । মানুষের জীবনে ওঠানামা থাকবেই । আমাদের লড়াই করেই বেঁচে থাকতে হয় । জীবন একটা সুন্দর উপহার । সেটাকে সুশান্ত এইভাবে নষ্ট করে ফেলল । সুশান্ত যেখানেই থাকুক, ভালো থাকুক, সেটাই চাইব । আমার কাছে এটা একটা খুব বড় লস । গোটা ইন্ডাস্ট্রির কাছেই লস ।
সুদীপ্তা চক্রবর্তী : এই ঘটনাগুলো ভীষণভাবে ভিতরটা নাড়া দেয় । আমিও টানা দশ বছর একা ছিলাম । আসলে অভিনেতারা খুব ভঙ্গুর হয় । আমার ধারণা উনি খুব ইমোশনাল ছিলেন । সেটা ওঁর সিরিয়াল অভিনয় দেখলেও বোঝা যেত । এই খবর ভীষণ শকিং । সোশাল মিডিয়াতে লক্ষ লক্ষ ভক্ত আর বন্ধু জোগাড় করতে গিয়ে আমরা আসল বন্ধু, আসল ভক্তকে আর পাশে রাখছি না । সবাই আমরা একা হয়ে যাচ্ছি । এটাই তাঁর জ্বলন্ত উদাহরণ । মেনে নিতে পারছি না । খুব কষ্ট হচ্ছে ।
অনিন্দ্য চ্যাটার্জি : এই খবরটা তো প্রথমে বিশ্বাসই করতে পারছিলাম না । খুবই শকিং । কিছু বলার নেই । সুশান্তের হতাশার বিষয়টা পুরোটাই তো অনুমান । এই ডিপ্রেশনের বিষয়টা বহুদিন ধরেই শুরু হয়েছে ইন্ডাস্ট্রির বিভিন্ন মানুষের মধ্যে ।
অঞ্জন কাঞ্জিলাল : আমাদের মানসিক স্ট্রেস ক্রমশ খারাপ পর্যায়ে পৌঁছেছে । একজন আর্টিস্ট খুব আনস্টেবল পরিস্থিতির মধ্য দিয়ে যাচ্ছে । এই ধরনের অল্পবয়সি প্রতিভাবান ছেলেমেয়েরা যদি সুইসাইড করতে শুরু করে, এবং তাঁদের যদি মনে হয় এটাই সঠিক পথ, তাহলে বুঝতে হবে খুব ভয়ঙ্কর দিন আসছে । হয়তো আমাদের জেনারেশনের সহ্যশক্তি বেশি, নয়তো এখনকার জেনারেশনের স্ট্রেস লেভেল বেড়ে গেছে ।
সায়নী ঘোষ : কিছু বলার নেই । মানুষের মস্তিষ্কের অদ্ভুত একটা স্টেট । এটা প্রত্যেকেরই রয়েছে । প্রত্যেকের ভালো থাকা খুব গুরুত্বপূর্ণ । আমরা একটা নিউক্লিয়ার স্ট্রাকচারে থাকি । সবাই ভীষণ একা । সেখানে দাঁড়িয়ে শেয়ারিংয়ের একটা বিষয় থাকে । আমাদের অভিনেতাদের পেশাতেও খুব রেষারেষি রয়েছে । তার উপর শরীর, লুক সেইগুলোর উপর ঘষামাজা, খুব মানসিক চাপ সৃষ্টি করে দেয় । তবে সুশান্ত কেন এমন করল, সেটা সুশান্তই একমাত্র জানেন । আত্মহত্যা খুব কঠিন একটা পদক্ষেপ । সেটা সুশান্ত নিয়েছে, তাও এই বয়সে । অনেককিছু পাওয়ার ছিল ওঁর । মৃত্যুর জন্য এটা খুব অল্প বয়স । আমি এতটাই শকড, যে ভাষায় প্রকাশ করতে পারছি না । ওঁর মৃত্যুর আসল কারণটা কিন্তু বোঝাই যাচ্ছে না । মানুষের একে অপরের কাছে পৌঁছান উচিত, সাহায্য চাওয়া উচিত । আমাদেরও অবজ়ারভেন্ট হতে হবে, মানুষের কাছে পৌঁছতে হবে ।
দিব্যজ্যোতি দত্ত : অসম্ভব ভালো অভিনেতা ছিলেন । এরকমভাবে মৃত্যুর পথ বেছে নিলেন, খুব ডিপ্রেসিং বিষয় । ভালো লাগছে না । এবার প্রশ্ন উঠছে সুশান্ত কি সত্যি সুইসাইড করেছেন, নাকি এর মাঝে অন্য কোনও রহস্য লুকিয়ে আছে । তদন্তের পরই তো সেটা জানা যাবে । সকলে এটাও বলছেন, সুশান্ত জীবন নিয়ে কথা বলতেন । হয়তো এমন কোনও পরিস্থিতি জীবনে এসেছে, যে তিনি আত্মহত্যাকেই বেছে নিয়েছেন । কিন্তু আমার বারবার মনে হচ্ছে, কী এমন গন্ডগোল হল যে তাঁকে সুইসাইডকেই বেছে নিতে হল ।