কলকাতা : কলকাতা ও ঢাকার দুই প্রযোজনা সংস্থা টিভিওয়ালা মিডিয়া ও প্রেক্ষাগৃহ ভিজ়ুয়াল ফ্যাক্টরি প্রোডাকশনের যৌথ উদ্যোগে তৈরি করা হয়েছে একটি শর্টফিল্ম 'দূরে থেকে কাছের মানুষ'। অভিনয় করেছেন রাফিয়াথ রশিদ মিথিলা ও বিক্রম চট্টোপাধ্যায় । ছবিটি পরিচালনা করেছেন শাহরিয়ার পলক । ছবিটির গল্প অভ্র চক্রবর্তীর ।
দীপ্ত (বিক্রম) একমাস হল কলকাতায় এসেছে ভাইরাস ও ব্যাকটেরিয়া নিয়ে গবেষণা করতে । আর এদিকে বন্যা (মিথিলা) ঢাকার সাংবাদিক ও গায়িকা । দীপ্ত ভালোবাসে বন্যাকে । বন্যার খোঁজ নেয় সে । দু'জনের কথা হয় 14 বছর পর । তারপর কী হয়, তাই নিয়েই তৈরি গল্প ।
টিভিওয়ালা মিডিয়ার কর্ণধার অমিত গাঙ্গুলি ও পরিচালক শাহরিয়ার পলক খুব ভালো বন্ধু । এ প্রসঙ্গে শাহরিয়ার বলেন, "এই লকডাউনের সময় বাড়িতে বসে আমাকে কিছু একটা বানানোর পরামর্শ দিয়েছিল অমিত । এমন কিছু বানাতে বলেছিল, যেটা দুই বাংলার সাম্প্রতিক পরিস্থিতি তুলে ধরবে । অভ্রর গল্প 'দূরে থাকা কাছের মানুষ' পড়ে মনে হল এই পরিস্থিতিতে এটা উপযুক্ত গল্প । গল্পটা পাওয়ার পর আমি তার চিত্রনাট্য শেয়ার করি মিথিলা ও বিক্রমের সঙ্গে । তাঁদেরকে বুঝিয়ে দিলাম যে বাড়িতে বসেই মোবাইল ফোনে শুটিং করতে হবে আমার ডিরেকশন মতো । ওঁরা দু'জনেই রাজি হয়ে যায় । ঢাকা ও কলকাতার দুটি প্রযোজনা সংস্থা প্রেক্ষাগৃহ ভিজ়ুয়াল ফ্যাক্টরি প্রোডাকশন ও টিভিওয়ালা মিডিয়া দু'জনেই আমার পাশে দাঁড়ায় । তারপর দু'দিন মিথিলা ও দু'দিন বিক্রমের সঙ্গে শুট করলাম । শুটিং শেষে শুরু হল ফুটেজ ট্রান্সফারের পদ্ধতি এবং এডিটিং । পোস্ট প্রোডাকশন এবং সাউন্ডের কাজ করেছে প্রেক্ষাগৃহ ভিজ়ুয়াল ফ্যাক্টরি প্রোডাকশন । ছবি থেকে উপার্জিত অর্থ তুলে দেওয়া হবে দুই দেশের সেইসব কর্মীদের হাতে যাঁরা রুট লেভেলে কাজ করেন ।"
এদিকে প্রায় দু'মাস হতে চলল মুম্বইতে গিয়ে আটকে পড়েছেন বিক্রম । এই গল্প সম্পর্কে বিক্রম বলেন, "অভ্রর গল্পটি অত্যন্ত সংবেদনশীল । দুটি আলাদা দেশের দুটি মানুষ দীপ্ত এবং বন্যা । তাঁরা অনেক বছর পর একে অপরের সঙ্গে কথা বলছে । গোটা স্ক্রিপ্টে ছড়িয়ে রয়েছে প্রেমের গন্ধ । 'এলার চার অধ্যায়' থেকে আমি অভ্রকে চিনি । ওঁর সঙ্গে আবার কাজ করতে পেরে ভালো লাগছে । আমার বন্ধু অভিনব এবং আমি শুটিং করেছি । ক্যামেরা, আর্ট, মেকআপ সবকিছুই দু'জন মিলে সামলেছি । বাড়িতে বসেই শুটিং করেছি আমরা । এই কাজটি অত্যন্ত কঠিন ছিল । তবে টিমের সকলের সহযোগিতা পেয়েছি । এই শর্টফিল্মের জন্য কোনও পারিশ্রমিক নিইনি । আমাদের আশা মানুষের এই শর্টফিল্ম ভালো লাগবে ।"
অন্যদিকে ছবি সম্পর্কে রাফিয়াথ রশিদ মিথিলা বলেন, "এই সময় সিনেমার সঙ্গে জড়িয়ে থাকা অসহায় মানুষদের জন্য তহবিল তৈরি করাই খুব ভালো উদ্যোগ । এই লকডাউনে দুই বাংলারই সিনেমা-প্রযুক্তিবিদরা কাজ হারিয়েছেন । এই ছবির মাধ্যমে তাঁদের পাশে থাকা আমাদের কেবলই একটি প্রয়াস । তবে মোবাইলে শুট করার অভিজ্ঞতাটা একেবারেই অন্যরকম । এরকমভাবে আগে তো কোনওদিন শুট করিনি । প্রথমদিকে ভেবেছিলাম, পুরো পদ্ধতিটা বোধহয় খুব কঠিন হবে । তারপর সেটাকে আমি উপভোগ করতে শুরু করি । এবার যদি সকলের ছবিটি পছন্দ হয়, তাহলেই আমরা সফল হব ।"
শুটিং সম্পর্কে মিথিলা বলেন, "আমার ভাই মাইমুন ক্যামেরার কাজে আমাকে সাহায্য করেছে । আমার পরিচালক স্টোরি বোর্ড এবং প্রয়োজনীয় শটগুলি ছবিসহ এঁকে বুঝিয়ে দেন আমায় । তাতে আমার খুব সাহায্য হয়েছে । শুটিং করে খুব আনন্দ পেয়েছি ।"
ছবিতে সহযোগী পরিচালক হিসেবে কাজ করেছেন মুস্তাফি শিমুল । ছবির সংগীতের দায়িত্বে ছিল বিটকল মিউজ়িক । মিউজ়িক অ্যারেঞ্জমেন্ট ও ভয়েস দিয়েছেন গৌরব মণ্ডল জন । গান গেয়েছেন সিথি সাহা । টাইটেল মিউজ়িক করেছেন শাহরিয়ার আলম মার্শেল । ছবি তৈরিতে বিশেষ সহায়তা করেছেন ইমন চৌধুরি । ছবির পোস্টার ডিজ়াইন করেছেন শুভব্রত ।