মাদকের অন্ধকার দুনিয়া বর্তমানে দুর্বার গতিতে প্রসারিত হচ্ছে । এক সময়ে শুধুমাত্র মাদক পাচার চক্রের কারবারিদেরই এই অন্ধকার দুনিয়ার সঙ্গে যোগাযোগ থাকত । কিন্তু এখন মনে হচ্ছে, মাদকাসক্তরাও অন্ধকার দুনিয়ার সঙ্গে সরাসরি সম্পর্ক রেখে চলছে । সম্প্রতি জানা গিয়েছে যে, বৃহত্তর হায়দরাবাদের বহু মাদকাসক্ত তাদের নেশার দ্রবে্যর চাহিদা পূরণ করতে গিয়ে এই ‘ডার্ক ওয়েব’-এ জড়িয়ে পড়ছেন । আধিকারিকরা তদন্ত করে দেখেছেন, এই গোটা প্রক্রিয়াটি অত্যন্ত মহার্ঘ এবং যাঁরা প্রচুর অর্থ ব্যয় করার ক্ষমতা রাখেন, কেবলমাত্র তাঁরাই এই কাজ করতে পারছেন । আবগারি সূত্রের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, বেশ কিছু মাদকাসক্ত গ্রাহক বর্তমানে এই ‘ডার্ক ওয়েব’—এর দিকে ঝুঁকছেন কারণ যে নাইজ়িরিয় গ্যাং আগে তাঁদের মাদক সরবরাহ করত, তারা এখন অন্য শহরে চলে গিয়েছে ।
কুরিয়র সার্ভিসের মাধ্যমে আমদানি
‘ডার্ক ওয়েব’ হল এক অন্ধকার দুনিয়া । যাঁরা কমপিউটার ব্যবহার করেন, তাঁরা মূলত ওয়েব সার্ফিং করেন গুগল ক্রোম, মোজিলা ফায়ারফক্স এবং ইন্টারনেট এক্সপ্লোরারের মতো ব্রাউজ়ারের মাধ্যমে । কিন্তু ‘ডার্ক ওয়েব’—এর দুনিয়া এর থেকে আলাদা । TOR ব্রাউজ়াররা এই অন্ধকার দুনিয়ার সদস্য । নির্দিষ্ট পরিমাণ টাকা আগাম খরচ করে এগুলি ব্যবহার করা যায় । মাদক, বেআইনি অস্ত্রশস্ত্র, মানব পাচার এবং আরও কিছু অবৈধ কার্যকলাপ এই ব্রাউজ়ারগুলির মাধ্যমে হয় । যে ধরনের লেনদেন হয়, তা ‘প্রক্সি’ তথা ছদ্ম সার্ভারগুলি থেকে হয়, যাতে পরে কোনও তদন্ত হলে কেউ ধরা না পড়ে । সমস্ত আর্থিক লেনদেন এখানে বিটকয়েন কারেন্সিতে হয় । কোনও দেশের স্থানীয় মুদ্রার পরিবর্তে বিটকয়েনের ব্যবহার অনলাইনে আরও আগে চালু হওয়া উচিত ছিল ।
অতীতে কেলভিন ঘটনার ক্ষেত্রে দেখা গিয়েছে, এই অন্ধকার দুনিয়ায় হায়দরাবাদের মাদক ক্রেতাদের অবাধ বিচরণ রয়েছে । আবগারি বিভাগের একটি দল, টলিউডে মাদক পাচার চক্রের এক অন্যতম অভিযুক্তকে জেরা করে । সেই সময় এই ঘটনা প্রকাশ্যে আসে । তখনই জানা যায় যে, ‘ডার্ক ওয়েব’—এ অর্ডার দিয়ে বিদেশ থেকে কুরিয়রে মাদক আনা হচ্ছে আর তার খরচ মেটানো হচ্ছে বিটকয়েনে । শুল্ক বিভাগের আধিকারিকরা বিমানবন্দরে কুরিয়রে পার্সেলগুলি পরীক্ষা করেন । তাঁরা জানতে পারেন যে, সেগুলি নিয়ে কোনও সন্দেহ না করেই ছেড়ে দেওয়া হয় কারণ, পার্সেলের উপর LCDগুলি পোস্ট্যাল স্ট্যাম্পের আদলে প্যাক করা হয়েছিল । মনে করা হচ্ছে, মাদক পাচারকারীদের গতিবিধি কমে আসার কারণেই গ্রাহকরা ‘ডার্ক ওয়েব’—এ সরাসরি মাদক অর্ডার করছেন । তদন্তকারী একজন অফিসারের দাবি, এই পথ এই কারণেই বেছে নেওয়া হয়েছে, কারণ আন্তর্জাতিক যাত্রীবাহী বিমান চলাচল বর্তমানে বন্ধ । কিন্তু কার্গো পরিষেবা কোনওরকম ব্যাঘাত ছাড়াই চলছে ।