রাজারহাট, 5 এপ্রিল : নারায়ণপুর থানা এলাকার ছোটো গাঁথি ও দোননগরে বেআইনি অস্ত্র কারখানার হদিশ পেল পুলিশ। STF(স্পেশাল টাস্ক ফোর্স) এবং নারায়ণপুর থানার পুলিশ যৌথভাবে তল্লাশি চালায়।
ছোটো গাঁথির গাজিপাড়াতে বেআইনি অস্ত্র কারখানার মালিক শেখ আলি হোসেন বলে জানা গেছে। এদিকে দোননগরে লেড কারখানার আড়ালে অস্ত্র তৈরি করা হত। সেই কারখানা থেকে দু'জন কর্মচারীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তাদের বাড়ি বিহারের মুঙ্গেরে। ওই বাড়ি থেকে 60টির মতো আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধার হয়। পাশাপাশি কারখানা থেকে প্রচুর পরিমাণে অস্ত্র তৈরির সরঞ্জাম এবং প্রচুর পরিমাণে যন্ত্রাংশ উদ্ধার করেছে পুলিশ।
পুলিশ সূত্রে খবর, কারখানাতে আগ্নেয়াস্ত্রের যন্ত্রাংশ তৈরি করে বাড়িতে ফিটিংস করা হত।
জানা গেছে, ছয় বছর আগে মুন্নার সঙ্গে বিয়ে হয় ছোটো গাঁথি এলাকার এক মহিলার। প্রথমে মুন্না জোগাড়ের কাজ করত বলেই দাবি করেছিল মেয়েটির পরিবারের কাছে। কিন্তু বিয়ের কিছুদিনের মধ্যে সে কাজ ছেড়ে দিয়ে ব্যবসা করবে বলে কারখানা গড়ে তোলে শ্বশুরবাড়ির এলাকাতেই। প্রথমে এলাকার বাসিন্দারা কিছুই বুঝতে পারেনি। এদিকে পুলিশের একটি দল সীমান্ত এলাকা থেকে জানতে পারে রাজারহাট এলাকার অস্ত্র তৈরির কারখানার কথা। পরে কলকাতা এবং বিধাননগর সিটি পুলিশের যৌথ উদ্যোগে আজ সন্ধ্যায় রাজারহাটের ছোটো গাঁথি এলাকায় ওই বাড়িতে হানা দেয়। সেখানেই মুন্নাকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। তারপরই মুন্নাকে নিয়ে পুলিশ হানা দেয় ওই অস্ত্র তৈরির কারখানাতে। সেখান থেকেও বিপুল পরিমাণ অস্ত্র উদ্ধার করা হয়। পুলিশের বক্তব্য, কারখানা থেকে ৩০টি এবং মুন্নার বাড়ি থেকে ৩০টি অস্ত্র উদ্ধার করা হয়েছে। তবে সে কার কাছে ওই অস্ত্র বিক্রি করত তা জানার চেষ্টা শুরু করেছে পুলিশ।
প্রাথমিক জেরাতে জানা গেছে, সব অস্ত্রই তারা সীমান্ত এলাকায় পাচার করে দিত। তবে এখন যে অস্ত্র তৈরি হচ্ছিল তা ভোটে ব্যবহার করার চোখ ছিল। তবে কাদের এবং কোথায় বিক্রি করার ছক ছিল তা জানার জন্য মুন্নাকে দফায় দফায় জেরা করা হচ্ছে। প্রাথমিক জেরায় মুন্না স্বীকার করেছে, এর আগে সে একটি কারখানাতে কাজ করত। সেখান থেকেই সে অস্ত্র তৈরির প্রশিক্ষণ পেয়েছিল। পরে কারখানার সূত্র ধরেই মুন্না অস্ত্র পাচারকারীদের সঙ্গে পৃথক ভাবে ব্যবসা করবে বলে রাজারহাট এলাকাতে ঘর ভাড়া নিয়ে কারখানা তৈরি করে। ছোটো গাঁথি এলাকাটি গ্রামীণ এলাকা হওয়ার জন্য সেখানে এই ধরনের কারখানা গড়ে তুললে কেউ কিছু বুঝতে পারবে না বলেই মনে করেছিল মুন্না। আর সেই কারণে সে ওই গ্রামের মেয়েকেই বিয়ে করে। এদিকে এই অস্ত্র পাচারকারীদের সঙ্গে আর কে কে যুক্ত আছে তা জানার চেষ্টা শুরু করেছে পুলিশ।