কলকাতা ও ঢাকা, 12 সেপ্টেম্বর: দুর্গাপুজোর (Durga Puja 2022) আগে হাতে রয়েছে আর মাত্র কয়েকটা দিন ৷ তাই ব্যস্ততা বেড়েছে বাংলাদেশের (Bangladesh) কুমোরপাড়ায় ৷ দিন-রাত এক করে প্রতিমা গড়ে চলেছেন মৃৎশিল্পীরা ৷ অন্যদিকে, ব্যস্ততা বেড়েছে পুজো উদ্য়োক্তা এবং প্রশাসনিক কর্তাব্যক্তিদের মধ্য়েও ৷ একুশের ভয়াবহ স্মৃতি এখনও টাটকা ৷ বাইশে তার পুনরাবৃত্তি ঠেকাতে তাই বেশ কিছু সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে ৷ রবিবার ঢাকায় এ নিয়ে বৈঠকে বসেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান (Asaduzzaman Khan) ৷ সেই বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন সেনাবাহিনী, পুলিশ, গোয়েন্দা বিভাগ-সহ সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের প্রতিনিধিরা ৷ একইসঙ্গে, 'বাংলাদেশ পুজো উদযাপন পরিষদ'-এর তরফ থেকে বৈঠকে যোগ দিয়েছিলেন উপদেষ্টা কাজল দেবনাথ ৷ ইটিভি ভারতকে দেওয়া একান্ত সাক্ষাৎকারে বৈঠকে গৃহীত সিদ্ধান্তগুলি সম্পর্কে বিশদে আলোচনা করেন তিনি ৷
কাজল জানিয়েছেন, পুজোমণ্ডপগুলিতে কট্টরপন্থীদের হামলা ঠেকাতে সর্বক্ষণ নিরাপত্তার ব্যবস্থা করা হবে ৷ এক্ষেত্রে প্রশাসনের তরফে যেমন প্রয়োজনে পুলিশ মোতায়েন করা হবে তেমনই পুজো কমিটির কয়েকজন সদস্য 24 ঘণ্টা মণ্ডপে উপস্থিত থাকবেন ৷ দফায় দফায় ছোট ছোট দলে ভাগ হয়ে মণ্ডপ পাহারা দেবেন তাঁরা ৷ এছাড়াও, মোবাইল ভ্যানে পুলিশের লাগাতার টহল চলবে ৷ কোনও অঘটনের ইঙ্গিত পেলেই বিশেষ নম্বরে ফোন করে তাঁদের সাহায্য়ের জন্য ডাকা যাবে ৷ উদ্য়োক্তাদের কাছে স্থানীয় থানার ওসি ও জেলার পুলিশ সুপারদের নম্বর থাকবে ৷ প্রয়োজনে সেই নম্বরে ফোন করেও সাহায্য পাওয়া মিলবে ৷ প্রত্য়েকটি মণ্ডপে সিসিটিভি ক্য়ামেরা লাগাতে হবে ৷ সেইসঙ্গে, পুজোর দিনগুলিতে সমস্ত পুজোমণ্ডপে বিদ্যুতের সংযোগ অটুট রাখারও নিশ্চয়তা দেওয়া হয়েছে সরকারের তরফে ৷ এছাড়াও, 'বাংলাদেশ পুজো উদযাপন পরিষদ'-এর বর্ধিত সভায় যে 21 দফা নির্দেশিকা পাশ করানো হয়েছিল, তা প্রত্য়েক পুজোকমিটিকে মেনে চলতে বলা হয়েছে ৷
আরও পড়ুন: পুজোর আগে শঙ্কায় বাংলাদেশের উদ্যোক্তারা, নজরে রবিবাসরীয় বৈঠক
সব মিলিয়ে আশা-আশঙ্কার দোলাচলেই পুজোর অপেক্ষায় দিন গুণছেন ওপার বাংলা (Bangladesh Durga Puja) ৷ চট্টগ্রামের মৃৎশিল্পী উত্তম পাল জানালেন, করোনাকালে তাঁদের কাজ লাটে উঠেছিল ৷ কিন্তু, এবছর ঠাকুর গড়ার বরাত ভালোই মিলেছে ৷ তাই আপাতত চরম ব্যস্ততায় দিন কাটছে তাঁর ৷ একই ছবি ধরা পড়েছে কুমোরপাড়ার অন্য়ান্য স্টুডিয়োতেও ৷
পুজোর আনন্দে সামিল হতে প্রস্তুত বাংলাদেশের সমস্ত স্তরের মানুষ ৷ তবে, আশঙ্কা কিছুতেই তাঁদের পিছু ছাড়ছে না যেন ! নাট্যকর্মী সুনীল ধর যেমন জানালেন, মুক্তিযুদ্ধের আদর্শ নিয়ে বাংলাদেশ গঠিত হয়েছিল ৷ কিন্তু, যাঁরা বাংলাদেশের এই স্বাতন্ত্র চায়নি, তারা আবারও মাথাচাড়া দিয়ে ওঠার চেষ্টা করছে ৷ সেই কারণেই একুশের দুর্গাষ্টমীতে ঘটেছিল বেশ কিছু অপ্রীতিকর ঘটনা । তবে, সুনীলের আশা, সেই ভয়ঙ্কর অতীত পিছনে ফেলে আবারও ধর্মীয় সহাবস্থান এবং সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি স্বমহিমায় প্রতিষ্ঠা পাবে বাংলাদেশে ৷ দুর্গতিনাশিনী প্রকৃত অর্থেই দুষ্টের দমন করবেন । অন্যদিকে, বাংলাদেশের সর্বজনীন দুর্গাপুজোর সঙ্গে যুক্ত শ্যামল দাশগুপ্ত ইটিভি ভারতের মাধ্যমে আপামর বাঙালি সমাজকে দুর্গোৎসবের আগাম শুভেচ্ছা জানিয়েছেন ৷