লন্ডন, 1 ফেব্রুয়ারি : চার দশকেরও বেশি সময়ের অর্থনৈতিক, রাজনৈতিক সম্পর্কের অবসান ৷ ইউরোপীয় ইউনিয়ন (EU) থেকে আজ বেরিয়ে এল ব্রিটেন ৷
ঘটনার সূত্রপাত হয়েছিল চার বছর আগে ৷ 2016 সালের জুনে ব্রিটেনে এক গণভোটের মাধ্যমে ইউরোপীয় ইউনিয়ন থেকে বেরিয়ে আসার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় ৷ প্রায় 43 মাস পরে বিচ্ছেদের সিদ্ধান্ত আনুষ্ঠানিকভাবে কার্যকর হয় আজ ৷ ভারতীয় সময় অনুসারে আজ ভোর সাড়ে 4টের সময় ব্রেক্সিট কার্যকর হয় ৷ 1973 সাল থেকে ইউরোপীয় ইউনিয়নের সদস্য ছিল ব্রিটেন ৷
ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন গতরাতের ঘটনাকে ঐতিহাসিক বলে ব্যাখ্যা করেছেন ৷ পাশাপাশি গতরাত থেকে ব্রিটেনের এক নতুন অধ্যায় শুরু হল বলেও আজ এক ভিডিয়ো বার্তায় জানান তিনি ৷ ব্রিটেনের নির্বাচনী প্রচারের সময়েও ব্রেক্সিট কার্যকর করাকেই মূল হাতিয়ার করে জয়ী হয়েছিলেন বরিস ৷
আরও পড়ুন : বরিস জনসনের ব্রেক্সিটের পক্ষে মত ব্রিটেনের, স্কটল্যান্ডের দাবি দ্বিতীয় গণভোট
ব্রেক্সিটের আনুষ্ঠানিক ঘোষণার পর থেকেই মানুষের ঢল নেমেছে ব্রিটেনের রাজপথে ৷ আতসবাজি আর আলিঙ্গনে মেতে উঠেছে ব্রেক্সিটের সমর্থকেরা ৷ রাজপথে গান উঠছে 'গড সেভ দা কুইন' ৷ নাইজেল ফ্যারাগে নামে ব্রেক্সিটের দাবিতে এক আন্দোলনকারী বলেন, " যুদ্ধ শেষ, আমাদের জয় হয়েছে ৷"
আরও পড়ুন : EU-র সঙ্গে দ্রুত বিচ্ছেদের পক্ষেই মত দিল ব্রিটেনের নির্বাচন
আনুষ্ঠানিকভাবে ব্রেক্সিট কার্যকর হলেও সম্পূর্ণভাবে সম্পর্ক ছিন্ন হবে 2020 সালের 31 ডিসেম্বর ৷ ব্রিটেন চাইলে সময়সীমা বাড়ানোর জন্য 1 জুলাইয়ের মধ্যে আবেদন জানাতে পারে ৷ তবে এইরকম কোনও আবেদন করা হবে না বলেই আজ জানিয়ে দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী বরিস ৷ ফলে 31 ডিসেম্বরই সমস্ত সম্পর্ক ছিন্ন হয়ে যাচ্ছে বলে ধরে নেওয়া যেতে পারে ৷ এই সিদ্ধান্তের ফলে ইউরোপীয় ইউনিয়নের পার্লামেন্টে ব্রিটেনের কোনও প্রতিনিধিত্ব থাকবে না ৷ ইউরোপীয় ইউনিয়নের কোনও শাখা সংগঠনেও ব্রিটেন প্রতিনিধিত্ব বা ভোটাধিকার দাবি করতে পারবে না ৷
ফেব্রুয়ারিতে ব্রিটেনের তরফে জানানো হয়েছিল, ব্রিটেন ইউরোপীয় ইউনিয়নের সদস্য থাকবে না, তবে EU সদস্যদের সঙ্গে বাণিজ্যিক সম্পর্ক বজায় রাখতে চায় ৷ EU জানিয়েছিল এই বিষয়ে 25 ফেব্রুয়ারি সিদ্ধান্ত জানাবে ৷ ফলে যদি EU রাজি হয় তবে মার্চের শুরুর দিকে বাণিজ্য বিষয়ক চুক্তিতে আলোচনা হওয়ার কথা ৷ একইসঙ্গে অ্যামেরিকা ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের বাইরের অন্য দেশগুলির সঙ্গেও বাণিজ্যিক বিষয়ে আলোচনা শুরু করবে ব্রিটেন ৷
ইউরোপীয় ইউনিয়নের দুই শক্তিধর দেশ জার্মানি ও ফ্রান্স ব্রেক্সিটের ঘটনায় দুঃখপ্রকাশ করলেও অ্যামেরিকার সমর্থন থাকছে ব্রিটেনের সঙ্গে ৷