ETV Bharat / international

সোলেইমানির মৃত্যু, ট্রাম্পের পদক্ষেপের উত্তর আগামীতে - Iraq

বরাবরই বিতর্কের নাম কাসেম সোলেইমানি । গ্যাসের দাম 200 শতাংশ বৃদ্ধির প্রতিবাদে পথে নেমেছিলেন ইরানের বহু মানুষ । প্রতিবাদে গর্জে উঠেছিল গোটা দেশ । কড়া হাতে সেই প্রতিবাদ-প্রতিরোধ বন্ধ করেছিলেন সোলেইমানি । বহু প্রতিবাদী নভেম্বরের সেই প্রতিবাদে সামিল হয়ে প্রাণ হারিয়েছিলেন । সেই সোলেইমানির মৃত্যুকে ট্রাম্প প্রশাসনের অগ্নি পরীক্ষা বলে উল্লেখ করেছেন প্রাক্তন মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামার প্রতিরক্ষা সচিব লিয়ন পানেত্রা ।

সোলেইমানি
সোলেইমানি
author img

By

Published : Jan 9, 2020, 2:38 PM IST

ওয়াশিংটন, 9 জানুয়ারি : প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এক বড় পদক্ষেপ করেছেন । কাদ্স বাহিনীর সামরিক কমান্ডার জেনেরাল কাসেম সোলেইমানি মার্কিন ড্রোন হামলায় নিহত হয়েছেন । এই ঘটনা শুধু পশ্চিম এশিয়া নয়, বর্তমান মার্কিন রাজনীতির ক্ষেত্রেও বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ এবং এই ঘটনা সামগ্রিক এলাকার অনেক সমীকরণ বদলে দিতে শুরু করেছে ।

এই শুধু মার্কিন সংবাদমাধ্যম নয়, বিশ্বজুড়ে বিষয়টির প্রতিঘাত নিয়ে আলোচনা শুরু হয়েছে । এর আগেও মার্কিন প্রেসিডেন্টরা সোলেইমানিকে টার্গেট করেছিলেন, কিন্তু কোনও ক্ষেত্রেই তাঁরা সফল হননি । সোলেইমানের মৃত্যু নতুন করে ইরান-আমেরিকার সম্পর্ক তপ্ত করল । আবার একটা যুদ্ধের পরিস্থিতি তৈরি করল ।

সন্দেহ নেই ট্রাম্প একটা ভয়াবহ ঝুঁকি নিয়েছেন । আগামী কয়েক মাসের মধ্যেই বোঝা যাবে এই ঝুঁকির ফল কী হতে পারে । ড্রোন হামলায় সোলেইমানির মৃত্যুর পর মার্কিন পররাষ্ট্র সচিব মাইক পম্পেয়ো সে দেশের অবস্থান স্পষ্ট করেছেন, তিনি বলেছেন আমেরিকা কোনও যুদ্ধ বা ইরানের ক্ষমতা পরিবর্তন চেয়ে এই হামলা চালায়নি ।

ইরানও আমেরিকার সঙ্গে পুরোপুরিভাবে সম্মুখসমরে যেতে চায় না । কারণ তারা জানে, আমেরিকার সঙ্গে যুদ্ধে পেরে ওঠা তাদের পক্ষে সম্ভব নয় । ইরান অবশ্যই আমেরিকার বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ করতে চায়, বিশেষ করে পশ্চিম এশিয়ায় মার্কিন সেনার পদক্ষেপের বদলা নিতে ইরান সর্বদা সচেষ্ট । বেশ কিছুদিন ধরে দুই রাষ্ট্রের মধ্যে চলতে থাকা তপ্ত বাকবিতণ্ডা ক্রমেই তাদের সম্পর্ককে জটিল করে তুলেছে ।

মঙ্গলবার ইরাকে মার্কিন সেনা ঘাঁটি লক্ষ্য করে মিজ়াইল হামলা চালায় ইরান । সন্দেহ নেই এটাই প্রথম প্রতিশোধ । এটা আমেরিকা সঠিক শিক্ষা দেওয়ার জন্য ইরানের পদক্ষেপ । শেষ গ্রীষ্মকাল থেকে যে ছায়াযুদ্ধের সূচনা হয়েছিল এবং ইরানে মার্কিন ড্রোন হামলা চলছিল, তারই চূড়ান্ত রূপ ছিল সোলেইমানিকে আক্রমণ । ট্রাম্প আগেই বদলা নেওয়ার জন্য হামলার কথা বলেছিলেন, কিন্তু পুরোটাই তিনি শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত চেপে ছিলেন । একদম অন্তিম মুহূর্তে সব কিছু ঘোষণা করেছিলেন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প ।

গত সেপ্টেম্বরে ইরান সৌদির তৈল উৎপাদন কেন্দ্রে হামলা চালিয়েছিল, আবার অতি সম্প্রতি 27 ডিসেম্বর কিরকুকে মার্কিন সেনা ঘাঁটির কাছে মিসাইল হামলা চালায় । এই হামলায় প্রাণ হারান একজন মার্কিন কনট্রাকটর । এর বদলা নিতেই ট্রাম্প যুদ্ধ বিমান পাঠান কাতাইব হিজবুল্লাহকে খতম করতে । মার্কিন বিমান হামলায় 25 জন নিহত হন । সেনা বাহিনীর নেতা মাহদি আল-মুহানদিসও নিহত হন সোলেইমানির সঙ্গে । ইরানের মদতপুষ্ট ইরাকের ভাড়াটে সৈন্যবাহিনীর নেতা আবু মাহদি আল-মুহানদিসও ছিলেন একটি গাড়িতে । তার কিছু ক্ষণের মধ্যেই মার্কিন প্রতিরক্ষা সচিব মার্ক এস্পার বলেন, "ইরান ও তার আশপাশের এলাকায় থাকা মার্কিন নাগরিক, মার্কিন সেনা ও মার্কিন সম্পত্তির উপরে লাগাতার হামলা চালানো বন্ধ করতেই এই পদক্ষেপ ।"

পেন্টাগনের তরফ থেকেও স্বীকার করে নেওয়া হয়, ‘জঙ্গি’ সোলেইমানিকে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের নির্দেশেই হত্যা করা হয়েছে । অ্যামেরিকা-বিরোধী বিক্ষোভ হয়েছে প্রতিবেশী ইরাক-সহ পশ্চিম এশিয়ার বিভিন্ন দেশেও । এই পরিস্থিতিতে পশ্চিম এশিয়ায় আরও তিন হাজার সেনা পাঠানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে আমেরিকা । তাছাড়া, বাগদাদের মার্কিন দূতাবাস এক বিবৃতি জারি করে মার্কিন পর্যটকদের ইরাক ছেড়ে চলে যেতে বলেছে । ট্রাম্প ঘোষণা করেছিলেন, "আমেরিকা ইরানের শাসনে পরিবর্তন চায় না । হামলার উদ্দেশ্য ছিল যুদ্ধ থামানো, যুদ্ধ শুরু নয় । সোলেইমানি মার্কিন কূটনীতিকদের উপরে হামলার ছক কষছিলেন ।" এরপরই হোয়াইট হাউজ় সূত্রে দাবি করা হয়েছে, বর্ষবরণের দিন বহু মার্কিন কূটনীতিককে বাগদাদের আমেরিকার দূতাবাসে আটকে রেখেছিল ইরান । পরিকল্পনা ছিল খুন করার । কোনওক্রমে তাঁরা প্রাণ হাতে করে পালাতে পারেন । সেদি সোলেইমানির সেনার হাত থেকে বাঁচতে দরজা ভেঙে পালাতে হয় তাদের । ট্রাম্প ঘোষণা করেন, সেই ঘটনার বদলা নিতেই সোলেইমানিকে খতম করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় ।

হামলার পর হোয়াইট হাউজ়ের তরফে যে সরকারি বিবৃতি দেওয়া হয়, তাতে বলা হয়েছিল আগামীদিন যুদ্ধের আশঙ্কার কথা মাথায় রেখেই এই আক্রমণ । যদিও আসল সত্যটা তা নয় । দূতাবাসে হামলার বদলা নিতেই পালটা অভিযান চালিয়েছিল মার্কিন সেনা ।

ইরাকের সংসদে ইরাকে অবস্থিত মার্কিন সেনাকে অব্যাহতি দেওয়ার বিষয়টি নিয়ে একটি প্রস্তাব আসে, কিন্তু সেদিন সুন্নি এবং কাদ্স প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন না । কিছু ইরাক এবং সিরিয়ার নাগরিক সোলেইমানির মৃত্যুতে স্বস্তি ফেলেছেন, সোলেইমানির অত্যাচারে হাত থেকে রেহাই পেয়ে খুশি অনেকেই ।

সিরিয়া-লেবানন সংশ্লিষ্ট এলাকায় গত দুই শতক ধরে একচ্ছত্র প্রাধান্য স্থাপন করেছিলেন সোলেইমানি । পশ্চিম এশিয়ার রাজনীতিতে অন্যতম চর্চিত নাম সোলেইমানি । অ্যামেরিকা সোলেইমানিকে ‘জঙ্গি’ আখ্যা দিলেও আদতে তিনি ইরানি সেনাবাহিনীর অন্যতম শীর্ষকর্তা এবং পশ্চিম এশিয়ার অন্যতম শক্তিশালী ব্যক্তি ছিলেন । ইরানের সর্বোচ্চ নেতা ও সে দেশের ধর্মগুরু আলি খামেনেইয়ের পরেই তাঁর স্থান ছিল । 1998 সাল থেকে তিনি কাদ্স বাহিনীর নেতৃত্ব দিচ্ছিলেন । বিদেশের মাটিতে ইরানপন্থী ভাড়াটে সৈন্যদের পরিচালনা করাই ছিল তাঁর কাজ । তাঁর মদতেই সিরিয়ার বাশার আল আসাদ সরকার IS দমনে সফল হয়েছিল । তা ছাড়া, তালিবানদের নিয়ন্ত্রণে রাখতেও সোলেইমানির সক্রিয় ভূমিকা ছিল । 2012 সালে ইজ়রায়েলের কূটনীতিকদের গাড়িতে হামলার পিছনেও তাঁর নাম জড়িত ছিল বলে সন্দেহ । সেদিন গাড়ি বোমা হামলায় চার জন আহত হয়েছিলেন । এহেন সেনাকর্তার নিধনে ইরানের সরকারি স্তরে তো বটেই, সাধারণ মানুষের মধ্যেও অ্যামেরিকা-বিরোধী মনোভাবে ঘি পড়েছে ।

বরাবরই বিতর্কের নাম কাসেম সোলেইমানি । গ্যাসের দাম 200 শতাংশ বৃদ্ধির প্রতিবাদে পথে নেমেছিলেন ইরানের বহু মানুষ । প্রতিবাদে গর্জে উঠেছিল গোটা দেশ । কড়া হাতে সেই প্রতিবাদ-প্রতিরোধ বন্ধ করেছিলেন সোলেইমানি । বহু প্রতিবাদী নভেম্বরের সেই প্রতিবাদে শামিল হয়ে প্রাণ হারিয়েছিলেন । সংবাদ সংস্থা রয়টার্সের হিসেব বলছে, সেবার হাজারের বেশি প্রতিবাদীর মৃত্যু হয়েছিল ।

আবার বহু ইরানি তাঁকে শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করেন । অ্যামেরিকার চোখে তিনি জেহাদের কারবারি । পশ্চিম এশিয়ার একটা বড় অংশ জুড়ে সন্ত্রাসের মদতদাতা । পশ্চিম এশিয়ার শিয়াদের কাছে আবার এই লোকটাই একাধারে জেমস বন্ড, জার্মান জেনেরাল এরউইন রমেল আর মার্কিন পপ তারকা লেডি গাগা । 2017-য় টাইমস পত্রিকার একশো প্রভাবশালীর তালিকায় ইরানের শ্যাডো কমান্ডার কাসেম সোলেইমানির নাম ছিল । কাদ্স বাহিনী যত দিন ইরাকে IS-এর বিরুদ্ধে লড়ছিল, তত দিন সোলেইমানির বিরুদ্ধে কিছুই বলতে শোনা যায়নি অ্যামেরিকাকে । কিন্তু অ্যামেরিকা ইরান পরমাণু-চুক্তি ছেড়ে বেরিয়ে আসার পর-পরই সোলেইমানির বাহিনী বার বার মাথাচাড়া দিচ্ছে দেখে ইরানের শ্যাডো কমান্ডারকে নিকেশের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় বলে ধারণা অনেকের । এ সপ্তাহে ইরানপন্থী বিক্ষোভকারীরা বাগদাদের মার্কিন দূতাবাস ঘেরাওয়ের পরেই হামলার ছক কষা হয়, দাবি একাধিক সূত্রের ।

1998 থেকে কাদ্স বাহিনীর নেতৃত্ব দিচ্ছিলেন সোলেইমানি । আর আড়ালে থেকে ইরানের শক্তি বাড়াচ্ছিলেন পশ্চিম এশিয়ার একটা বড় অংশ জুড়ে । অ্যামেরিকার অভিযোগ, লেবাননে হেজবুল্লা আর প্যালেস্তাইনে হামাস জঙ্গিদের দীর্ঘদিন ধরে মদত দিয়ে আসছে কাদ্স । পরমাণু চুক্তি থেকে বেরিয়ে এসে ইরানের উপর একাধিক নিষেধাজ্ঞা চাপানোর পরে গত এপ্রিলে ইসলামিক রেভোলিউশনারি গার্ড ও কাদ্স বাহিনীকে জঙ্গি সংগঠন আখ্যা দিয়ে কালো তালিকাভুক্ত করে অ্যামেরিকা । ইরানের সাধারণ মানুষের কন্ঠরোধ করেছিলেন বলেও অ্যামেরিকার তরফে দাবি করা হয় বার বার ।

ইরানে মার্কিন সেনার মৃত্যুর জন্য কাঠগড়ায় তোলা হয়েছে সোলেইমানিকেই । ডেমোক্র্যাটরা বিশ্বাস করেছে, সমর্থন জানিয়েছে, সোলেইমানির অবর্তমানে বিশ্বের বিন্দুমাত্র কোনও ক্ষতি হবে না, বরং বিশ্ব আরও সুন্দর হবে বলেই মনে করেন ট্রাম্পপন্থীরা । সোলেইমানিকে লক্ষ্য করে হামলা চালানোর বিষয় নয়, পদক্ষেপের পরবর্তী অভিঘাত নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিলেন । তাঁদের প্রশ্ন ছিল, মার্কিন হামলার পরই ইরান পালটা হামলা চালাবে না তো ।

মার্কিন জুডিশিয়ারি কমিটির চেয়ারম্যান জেরি নাডলার বলেন, সোলেইমানি সবর্দাই সমস্যা তৈরি করেন । তাঁর উপস্থিতি হিংসা-সমস্যা-ভয়াবহতার কারণ । কিন্তু, মার্কিন কংগ্রেস কোনও ভাবেই ট্রাম্পের যুদ্ধের প্রস্তাবে সায় দিতে পারে না । অ্যামেরিকা যুদ্ধে বিশ্বাস করে না । যুদ্ধের প্ররোচনা দিতেও নয় । ট্রাম্পের প্রস্তাব যুদ্ধের পরিস্থিতি তৈরি করবে বলে সন্দেহ প্রকাশ করে মার্কিন কংগ্রেস ।

সোলেইমানিকে হত্যার বিষয়টি আরও একটি দিক থেকে সংকট তৈরি করেছে । গণতান্ত্রিক কাঠামোতে অন্য কোনও দেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে আর একটি দেশের হস্তক্ষেপ কূটনৈতিক ভাবে পরিস্থিতি জটিল করবে বলে আশঙ্কা । খাতায়-কলমে রেভোলিউশনারি গার্ড কোরের কাদ্স ফোর্সের কমান্ডার ছিলেন জেনেরাল সোলেইমানি । কিন্তু আদতে ছিলেন ইরানের সেনাপ্রধানই । সাতের দশকের শেষে রেভলিউশনারি গার্ডের সাধারণ সিপাহি হিসেবে যোগ দেওয়া বছর 62 সোলেইমানি শুধু খামেনেইকেই রিপোর্ট করতেন । আর কার্যত চষে বেড়াতেন ইরাক-ইজ়রায়েল-প্যালেস্তাইন-আরব-প্রায় পুরো পশ্চিম এশিয়া । ইরানের ভূমিকা কোথায়-কেমন হবে, এত দিন না কি সব ঠিক করে দিতেন তিনিই । এই সোলেইমানি মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকেও বলতে ছাড়েননি, "আপনি যুদ্ধ শুরু করলে, আমরা তা শেষ করে ছাড়ব ।" 2018-য় প্রকাশ্যে তাঁকে বলতে শোনা যায়, ইরাকের সরকার গঠনে উচ্চ পর্যায়ের সব বৈঠক তাঁর উপস্থিতিতেই হয়েছে । গত বছর মার্চে তাঁকে ইরানের সর্বোচ্চ সামরিক সম্মান অর্ডার অফ জ়ুলফিকার তুলে দিয়েছিলেন ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতোল্লা আলি খামেনেই । মঞ্চে তাঁকে বিপ্লবের জীবন্ত শহিদ বলে উল্লেখও করেছিলেন । এতকিছু কারণে, সব বিবেচনা করেই সোলেইমানির মৃত্যুকে হত্যা বলে উল্লেখ করতে একটু সময় নেওয়া হয় । মার্কিন প্রেসিডেন্ট পদপ্রার্থী এলিজ়াবেথ ওয়ার্নার টুইট করে জানিয়েছিলেন সোলেইমানিকে খুন করা হয়েছে, এবং তাঁকে একজন সরকারি অফিসার বলেও টুইটে উল্লেখ করা হয় ।

সোলেইমানির মৃত্যুকে ট্রাম্প প্রশাসনের অগ্নিপরীক্ষা বলে উল্লেখ করেছেন প্রাক্তন মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামার প্রতিরক্ষা সচিব লিয়ন পানেত্রা । প্রথম তিন বছর ডোনান্ড ট্রাম্প বেশ কিছুটা সংযমের মধ্যেই ছিলেন । বিরোধীদের মতকে গুরুত্ব দিতে চলতে বাধ্য হয়েছেন অনেক ক্ষেত্রে । কিন্তু, ট্রাম্পের নিজস্ব কিছু ভাবনাচিন্তা আছে । তাঁর কিছু সমর্থক আছেন । যাঁরা ট্রাম্পের কাছে ভোটের আগে দেওয়া প্রতিশ্রুতিগুলি বুঝে নিতে চান । যুদ্ধ-সন্ত্রাসকে নির্মূল করতে ট্রাম্পের প্রতিশ্রুতি ভোটের আগে ঝড় তুলেছিল । স্বাভাবিকভাবেই সময় এসেছে সে সব প্রতিশ্রুতি পূরণ করার ।

ট্রাম্প একটা জুয়া খেলেছেন । এখন এটাই বড় প্রশ্ন, এটা কি ছায়া যুদ্ধের সূত্রপাত ঘটাল ? না কি যুদ্ধের পরিসমাপ্তি ঘটাল ?

ওয়াশিংটন, 9 জানুয়ারি : প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এক বড় পদক্ষেপ করেছেন । কাদ্স বাহিনীর সামরিক কমান্ডার জেনেরাল কাসেম সোলেইমানি মার্কিন ড্রোন হামলায় নিহত হয়েছেন । এই ঘটনা শুধু পশ্চিম এশিয়া নয়, বর্তমান মার্কিন রাজনীতির ক্ষেত্রেও বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ এবং এই ঘটনা সামগ্রিক এলাকার অনেক সমীকরণ বদলে দিতে শুরু করেছে ।

এই শুধু মার্কিন সংবাদমাধ্যম নয়, বিশ্বজুড়ে বিষয়টির প্রতিঘাত নিয়ে আলোচনা শুরু হয়েছে । এর আগেও মার্কিন প্রেসিডেন্টরা সোলেইমানিকে টার্গেট করেছিলেন, কিন্তু কোনও ক্ষেত্রেই তাঁরা সফল হননি । সোলেইমানের মৃত্যু নতুন করে ইরান-আমেরিকার সম্পর্ক তপ্ত করল । আবার একটা যুদ্ধের পরিস্থিতি তৈরি করল ।

সন্দেহ নেই ট্রাম্প একটা ভয়াবহ ঝুঁকি নিয়েছেন । আগামী কয়েক মাসের মধ্যেই বোঝা যাবে এই ঝুঁকির ফল কী হতে পারে । ড্রোন হামলায় সোলেইমানির মৃত্যুর পর মার্কিন পররাষ্ট্র সচিব মাইক পম্পেয়ো সে দেশের অবস্থান স্পষ্ট করেছেন, তিনি বলেছেন আমেরিকা কোনও যুদ্ধ বা ইরানের ক্ষমতা পরিবর্তন চেয়ে এই হামলা চালায়নি ।

ইরানও আমেরিকার সঙ্গে পুরোপুরিভাবে সম্মুখসমরে যেতে চায় না । কারণ তারা জানে, আমেরিকার সঙ্গে যুদ্ধে পেরে ওঠা তাদের পক্ষে সম্ভব নয় । ইরান অবশ্যই আমেরিকার বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ করতে চায়, বিশেষ করে পশ্চিম এশিয়ায় মার্কিন সেনার পদক্ষেপের বদলা নিতে ইরান সর্বদা সচেষ্ট । বেশ কিছুদিন ধরে দুই রাষ্ট্রের মধ্যে চলতে থাকা তপ্ত বাকবিতণ্ডা ক্রমেই তাদের সম্পর্ককে জটিল করে তুলেছে ।

মঙ্গলবার ইরাকে মার্কিন সেনা ঘাঁটি লক্ষ্য করে মিজ়াইল হামলা চালায় ইরান । সন্দেহ নেই এটাই প্রথম প্রতিশোধ । এটা আমেরিকা সঠিক শিক্ষা দেওয়ার জন্য ইরানের পদক্ষেপ । শেষ গ্রীষ্মকাল থেকে যে ছায়াযুদ্ধের সূচনা হয়েছিল এবং ইরানে মার্কিন ড্রোন হামলা চলছিল, তারই চূড়ান্ত রূপ ছিল সোলেইমানিকে আক্রমণ । ট্রাম্প আগেই বদলা নেওয়ার জন্য হামলার কথা বলেছিলেন, কিন্তু পুরোটাই তিনি শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত চেপে ছিলেন । একদম অন্তিম মুহূর্তে সব কিছু ঘোষণা করেছিলেন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প ।

গত সেপ্টেম্বরে ইরান সৌদির তৈল উৎপাদন কেন্দ্রে হামলা চালিয়েছিল, আবার অতি সম্প্রতি 27 ডিসেম্বর কিরকুকে মার্কিন সেনা ঘাঁটির কাছে মিসাইল হামলা চালায় । এই হামলায় প্রাণ হারান একজন মার্কিন কনট্রাকটর । এর বদলা নিতেই ট্রাম্প যুদ্ধ বিমান পাঠান কাতাইব হিজবুল্লাহকে খতম করতে । মার্কিন বিমান হামলায় 25 জন নিহত হন । সেনা বাহিনীর নেতা মাহদি আল-মুহানদিসও নিহত হন সোলেইমানির সঙ্গে । ইরানের মদতপুষ্ট ইরাকের ভাড়াটে সৈন্যবাহিনীর নেতা আবু মাহদি আল-মুহানদিসও ছিলেন একটি গাড়িতে । তার কিছু ক্ষণের মধ্যেই মার্কিন প্রতিরক্ষা সচিব মার্ক এস্পার বলেন, "ইরান ও তার আশপাশের এলাকায় থাকা মার্কিন নাগরিক, মার্কিন সেনা ও মার্কিন সম্পত্তির উপরে লাগাতার হামলা চালানো বন্ধ করতেই এই পদক্ষেপ ।"

পেন্টাগনের তরফ থেকেও স্বীকার করে নেওয়া হয়, ‘জঙ্গি’ সোলেইমানিকে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের নির্দেশেই হত্যা করা হয়েছে । অ্যামেরিকা-বিরোধী বিক্ষোভ হয়েছে প্রতিবেশী ইরাক-সহ পশ্চিম এশিয়ার বিভিন্ন দেশেও । এই পরিস্থিতিতে পশ্চিম এশিয়ায় আরও তিন হাজার সেনা পাঠানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে আমেরিকা । তাছাড়া, বাগদাদের মার্কিন দূতাবাস এক বিবৃতি জারি করে মার্কিন পর্যটকদের ইরাক ছেড়ে চলে যেতে বলেছে । ট্রাম্প ঘোষণা করেছিলেন, "আমেরিকা ইরানের শাসনে পরিবর্তন চায় না । হামলার উদ্দেশ্য ছিল যুদ্ধ থামানো, যুদ্ধ শুরু নয় । সোলেইমানি মার্কিন কূটনীতিকদের উপরে হামলার ছক কষছিলেন ।" এরপরই হোয়াইট হাউজ় সূত্রে দাবি করা হয়েছে, বর্ষবরণের দিন বহু মার্কিন কূটনীতিককে বাগদাদের আমেরিকার দূতাবাসে আটকে রেখেছিল ইরান । পরিকল্পনা ছিল খুন করার । কোনওক্রমে তাঁরা প্রাণ হাতে করে পালাতে পারেন । সেদি সোলেইমানির সেনার হাত থেকে বাঁচতে দরজা ভেঙে পালাতে হয় তাদের । ট্রাম্প ঘোষণা করেন, সেই ঘটনার বদলা নিতেই সোলেইমানিকে খতম করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় ।

হামলার পর হোয়াইট হাউজ়ের তরফে যে সরকারি বিবৃতি দেওয়া হয়, তাতে বলা হয়েছিল আগামীদিন যুদ্ধের আশঙ্কার কথা মাথায় রেখেই এই আক্রমণ । যদিও আসল সত্যটা তা নয় । দূতাবাসে হামলার বদলা নিতেই পালটা অভিযান চালিয়েছিল মার্কিন সেনা ।

ইরাকের সংসদে ইরাকে অবস্থিত মার্কিন সেনাকে অব্যাহতি দেওয়ার বিষয়টি নিয়ে একটি প্রস্তাব আসে, কিন্তু সেদিন সুন্নি এবং কাদ্স প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন না । কিছু ইরাক এবং সিরিয়ার নাগরিক সোলেইমানির মৃত্যুতে স্বস্তি ফেলেছেন, সোলেইমানির অত্যাচারে হাত থেকে রেহাই পেয়ে খুশি অনেকেই ।

সিরিয়া-লেবানন সংশ্লিষ্ট এলাকায় গত দুই শতক ধরে একচ্ছত্র প্রাধান্য স্থাপন করেছিলেন সোলেইমানি । পশ্চিম এশিয়ার রাজনীতিতে অন্যতম চর্চিত নাম সোলেইমানি । অ্যামেরিকা সোলেইমানিকে ‘জঙ্গি’ আখ্যা দিলেও আদতে তিনি ইরানি সেনাবাহিনীর অন্যতম শীর্ষকর্তা এবং পশ্চিম এশিয়ার অন্যতম শক্তিশালী ব্যক্তি ছিলেন । ইরানের সর্বোচ্চ নেতা ও সে দেশের ধর্মগুরু আলি খামেনেইয়ের পরেই তাঁর স্থান ছিল । 1998 সাল থেকে তিনি কাদ্স বাহিনীর নেতৃত্ব দিচ্ছিলেন । বিদেশের মাটিতে ইরানপন্থী ভাড়াটে সৈন্যদের পরিচালনা করাই ছিল তাঁর কাজ । তাঁর মদতেই সিরিয়ার বাশার আল আসাদ সরকার IS দমনে সফল হয়েছিল । তা ছাড়া, তালিবানদের নিয়ন্ত্রণে রাখতেও সোলেইমানির সক্রিয় ভূমিকা ছিল । 2012 সালে ইজ়রায়েলের কূটনীতিকদের গাড়িতে হামলার পিছনেও তাঁর নাম জড়িত ছিল বলে সন্দেহ । সেদিন গাড়ি বোমা হামলায় চার জন আহত হয়েছিলেন । এহেন সেনাকর্তার নিধনে ইরানের সরকারি স্তরে তো বটেই, সাধারণ মানুষের মধ্যেও অ্যামেরিকা-বিরোধী মনোভাবে ঘি পড়েছে ।

বরাবরই বিতর্কের নাম কাসেম সোলেইমানি । গ্যাসের দাম 200 শতাংশ বৃদ্ধির প্রতিবাদে পথে নেমেছিলেন ইরানের বহু মানুষ । প্রতিবাদে গর্জে উঠেছিল গোটা দেশ । কড়া হাতে সেই প্রতিবাদ-প্রতিরোধ বন্ধ করেছিলেন সোলেইমানি । বহু প্রতিবাদী নভেম্বরের সেই প্রতিবাদে শামিল হয়ে প্রাণ হারিয়েছিলেন । সংবাদ সংস্থা রয়টার্সের হিসেব বলছে, সেবার হাজারের বেশি প্রতিবাদীর মৃত্যু হয়েছিল ।

আবার বহু ইরানি তাঁকে শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করেন । অ্যামেরিকার চোখে তিনি জেহাদের কারবারি । পশ্চিম এশিয়ার একটা বড় অংশ জুড়ে সন্ত্রাসের মদতদাতা । পশ্চিম এশিয়ার শিয়াদের কাছে আবার এই লোকটাই একাধারে জেমস বন্ড, জার্মান জেনেরাল এরউইন রমেল আর মার্কিন পপ তারকা লেডি গাগা । 2017-য় টাইমস পত্রিকার একশো প্রভাবশালীর তালিকায় ইরানের শ্যাডো কমান্ডার কাসেম সোলেইমানির নাম ছিল । কাদ্স বাহিনী যত দিন ইরাকে IS-এর বিরুদ্ধে লড়ছিল, তত দিন সোলেইমানির বিরুদ্ধে কিছুই বলতে শোনা যায়নি অ্যামেরিকাকে । কিন্তু অ্যামেরিকা ইরান পরমাণু-চুক্তি ছেড়ে বেরিয়ে আসার পর-পরই সোলেইমানির বাহিনী বার বার মাথাচাড়া দিচ্ছে দেখে ইরানের শ্যাডো কমান্ডারকে নিকেশের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় বলে ধারণা অনেকের । এ সপ্তাহে ইরানপন্থী বিক্ষোভকারীরা বাগদাদের মার্কিন দূতাবাস ঘেরাওয়ের পরেই হামলার ছক কষা হয়, দাবি একাধিক সূত্রের ।

1998 থেকে কাদ্স বাহিনীর নেতৃত্ব দিচ্ছিলেন সোলেইমানি । আর আড়ালে থেকে ইরানের শক্তি বাড়াচ্ছিলেন পশ্চিম এশিয়ার একটা বড় অংশ জুড়ে । অ্যামেরিকার অভিযোগ, লেবাননে হেজবুল্লা আর প্যালেস্তাইনে হামাস জঙ্গিদের দীর্ঘদিন ধরে মদত দিয়ে আসছে কাদ্স । পরমাণু চুক্তি থেকে বেরিয়ে এসে ইরানের উপর একাধিক নিষেধাজ্ঞা চাপানোর পরে গত এপ্রিলে ইসলামিক রেভোলিউশনারি গার্ড ও কাদ্স বাহিনীকে জঙ্গি সংগঠন আখ্যা দিয়ে কালো তালিকাভুক্ত করে অ্যামেরিকা । ইরানের সাধারণ মানুষের কন্ঠরোধ করেছিলেন বলেও অ্যামেরিকার তরফে দাবি করা হয় বার বার ।

ইরানে মার্কিন সেনার মৃত্যুর জন্য কাঠগড়ায় তোলা হয়েছে সোলেইমানিকেই । ডেমোক্র্যাটরা বিশ্বাস করেছে, সমর্থন জানিয়েছে, সোলেইমানির অবর্তমানে বিশ্বের বিন্দুমাত্র কোনও ক্ষতি হবে না, বরং বিশ্ব আরও সুন্দর হবে বলেই মনে করেন ট্রাম্পপন্থীরা । সোলেইমানিকে লক্ষ্য করে হামলা চালানোর বিষয় নয়, পদক্ষেপের পরবর্তী অভিঘাত নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিলেন । তাঁদের প্রশ্ন ছিল, মার্কিন হামলার পরই ইরান পালটা হামলা চালাবে না তো ।

মার্কিন জুডিশিয়ারি কমিটির চেয়ারম্যান জেরি নাডলার বলেন, সোলেইমানি সবর্দাই সমস্যা তৈরি করেন । তাঁর উপস্থিতি হিংসা-সমস্যা-ভয়াবহতার কারণ । কিন্তু, মার্কিন কংগ্রেস কোনও ভাবেই ট্রাম্পের যুদ্ধের প্রস্তাবে সায় দিতে পারে না । অ্যামেরিকা যুদ্ধে বিশ্বাস করে না । যুদ্ধের প্ররোচনা দিতেও নয় । ট্রাম্পের প্রস্তাব যুদ্ধের পরিস্থিতি তৈরি করবে বলে সন্দেহ প্রকাশ করে মার্কিন কংগ্রেস ।

সোলেইমানিকে হত্যার বিষয়টি আরও একটি দিক থেকে সংকট তৈরি করেছে । গণতান্ত্রিক কাঠামোতে অন্য কোনও দেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে আর একটি দেশের হস্তক্ষেপ কূটনৈতিক ভাবে পরিস্থিতি জটিল করবে বলে আশঙ্কা । খাতায়-কলমে রেভোলিউশনারি গার্ড কোরের কাদ্স ফোর্সের কমান্ডার ছিলেন জেনেরাল সোলেইমানি । কিন্তু আদতে ছিলেন ইরানের সেনাপ্রধানই । সাতের দশকের শেষে রেভলিউশনারি গার্ডের সাধারণ সিপাহি হিসেবে যোগ দেওয়া বছর 62 সোলেইমানি শুধু খামেনেইকেই রিপোর্ট করতেন । আর কার্যত চষে বেড়াতেন ইরাক-ইজ়রায়েল-প্যালেস্তাইন-আরব-প্রায় পুরো পশ্চিম এশিয়া । ইরানের ভূমিকা কোথায়-কেমন হবে, এত দিন না কি সব ঠিক করে দিতেন তিনিই । এই সোলেইমানি মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকেও বলতে ছাড়েননি, "আপনি যুদ্ধ শুরু করলে, আমরা তা শেষ করে ছাড়ব ।" 2018-য় প্রকাশ্যে তাঁকে বলতে শোনা যায়, ইরাকের সরকার গঠনে উচ্চ পর্যায়ের সব বৈঠক তাঁর উপস্থিতিতেই হয়েছে । গত বছর মার্চে তাঁকে ইরানের সর্বোচ্চ সামরিক সম্মান অর্ডার অফ জ়ুলফিকার তুলে দিয়েছিলেন ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতোল্লা আলি খামেনেই । মঞ্চে তাঁকে বিপ্লবের জীবন্ত শহিদ বলে উল্লেখও করেছিলেন । এতকিছু কারণে, সব বিবেচনা করেই সোলেইমানির মৃত্যুকে হত্যা বলে উল্লেখ করতে একটু সময় নেওয়া হয় । মার্কিন প্রেসিডেন্ট পদপ্রার্থী এলিজ়াবেথ ওয়ার্নার টুইট করে জানিয়েছিলেন সোলেইমানিকে খুন করা হয়েছে, এবং তাঁকে একজন সরকারি অফিসার বলেও টুইটে উল্লেখ করা হয় ।

সোলেইমানির মৃত্যুকে ট্রাম্প প্রশাসনের অগ্নিপরীক্ষা বলে উল্লেখ করেছেন প্রাক্তন মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামার প্রতিরক্ষা সচিব লিয়ন পানেত্রা । প্রথম তিন বছর ডোনান্ড ট্রাম্প বেশ কিছুটা সংযমের মধ্যেই ছিলেন । বিরোধীদের মতকে গুরুত্ব দিতে চলতে বাধ্য হয়েছেন অনেক ক্ষেত্রে । কিন্তু, ট্রাম্পের নিজস্ব কিছু ভাবনাচিন্তা আছে । তাঁর কিছু সমর্থক আছেন । যাঁরা ট্রাম্পের কাছে ভোটের আগে দেওয়া প্রতিশ্রুতিগুলি বুঝে নিতে চান । যুদ্ধ-সন্ত্রাসকে নির্মূল করতে ট্রাম্পের প্রতিশ্রুতি ভোটের আগে ঝড় তুলেছিল । স্বাভাবিকভাবেই সময় এসেছে সে সব প্রতিশ্রুতি পূরণ করার ।

ট্রাম্প একটা জুয়া খেলেছেন । এখন এটাই বড় প্রশ্ন, এটা কি ছায়া যুদ্ধের সূত্রপাত ঘটাল ? না কি যুদ্ধের পরিসমাপ্তি ঘটাল ?

Mumbai, Jan 09 (ANI): NCP Chief Sharad Pawar, former Union Minister Yashwant Sinha, Vanchit Bahujan Aaghadi's Prakash Ambedkar and other leaders gathered during 'Gandhi Shanti Yatra'. They gathered at Gateway of India. They are protesting against Citizenship (Amendment) Act (CAA) and National Register of Citizens (NRC).
ETV Bharat Logo

Copyright © 2024 Ushodaya Enterprises Pvt. Ltd., All Rights Reserved.