ETV Bharat / international

বহুপাক্ষিক সংগঠনগুলিতে অ্যামেরিকা ফিরে আসবে? - অ্যামেরিকা

হোয়াইট হাউজের ক্ষমতা দখলের লড়াইয়ের মধ্যে বিশ্ব ও আন্তর্জাতিক সংগঠনের কী স্বার্থ রয়েছে? লিখছেন স্মিতা শর্মা।

will-us-cede-leadership
বহুপাক্ষিক
author img

By

Published : Aug 31, 2020, 4:42 AM IST

দিল্লি, 31 অগাস্ট: রিপাবলিকানদের জাতীয় সম্মেলনে সরকারিভাবে প্রেসিডেন্ট পদে প্রার্থী হওয়ার প্রস্তাব আবার গ্রহণ করেছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প । তার পর সেই রাতে তিনি বলেন, "দায়িত্ব নেওয়ার কয়েকদিন পর চমকে গিয়ে দেখলাম যে ওয়াশিংটন ট্রান্স প্যাসিফিক পার্টনারশিপ থেকে নিজেদের সরিয়ে নিয়েছে । আমি তার পর কিস্টোন XL এবং ডাকোটা অ্যাকসেস পাইপলাইকে অনুমতি দিলাম । তার পর অনৈতিক ও দামি প্যারিস জলবায়ু চুক্তি থেকে নিজেদের সরিয়ে নিলাম । আমেরিকার শক্তি স্বাধীনতাকে প্রথমবার সুনিশ্চিত করলাম ।" ট্রাম্প টানা ৭১ মিনিট ধরে ভাষণ দেন । সেই ভাষণে তিনি অ্যামেরিকাকে অগ্রাধিকার দেওয়ার নীতির কথাও উদাহরণ হিসেবে তুলে আনেন । তিনি বলেন, "আমি ভয়ঙ্কর ও পক্ষপাতদুষ্ট ইরান নিউক্লিয়ার চুক্তি থেকেও সরে এসেছি ।"

হোয়াইট হাউজের ক্ষমতা দখলের লড়াইয়ের মধ্যে বিশ্ব ও আন্তর্জাতিক সংগঠনের কী স্বার্থ রয়েছে? ট্রাম্প যদি ক্ষমতায় ফিরে আসেন, তাহলে অ্যামেরিকা কি নিজেদের মধ্যে গুটিয়ে যাবে এবং বিশ্বব্যাপী কর্মকাণ্ডে যুক্ত সংগঠনগুলিতে নেতৃত্ব দেওয়া থেকে পিছিয়ে আসবে ? #BattlegroundUSA2020-এর এই পর্বে সিনিয়র সাংবাদিক স্মিতা শর্মা এই প্রশ্নই করেছেন ।

নিউ ইয়র্কে রাষ্ট্রসঙ্ঘে ভারতের তরফে প্রাক্তন স্থায়ী প্রতিনিধি অশোক মুখার্জি বলেন, "১৯৪২ সালের জানুয়ারি মাস থেকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র নেতৃত্বের যে ভূমিকা পালন করছে, তা এখন ঝুঁকির মুখে রয়েছে । ওয়াশিংটনের সম্মেলন থেকে একটা লম্বা সফরের মাধ্যমে গড়ে উঠেছিল রাষ্ট্রসঙ্ঘ । গত পাঁচ থেকে ছয় বছরে গুরুত্ব যদি না কমত, তাহলে গত কয়েক দশকে অ্যামেরিকা যে নেতৃত্ব দেওয়ার ক্ষমতা তৈরি করেছে, তা ক্ষতিগ্রস্ত হত না । এই নির্বাচনের ফলাফল ওই কেন্দ্রীয় ইশুগুলির উপর অনেক বেশি প্রভাব ফেলতে চলেছে ।"

ওই অবসরপ্রাপ্ত কূটনীতিক এর পর আরও ব্যাখ্যা করে বলেন, "বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান থেকে সরে আসা আসলে নিচের দিকে নামা, তা বুঝতে হবে । ২০০৬ সালে রাষ্ট্রসঙ্ঘের সাধারণ অধিবেশন মানবাধিকার কাউন্সিল তৈরি করেছিল । জন বোল্টন তখন ছিলেন অ্যামেরিকার রাষ্ট্রদূত । তিনি ওই কাউন্সিল তৈরির বিপক্ষে ভোট দিয়েছিলেন । তাঁর সঙ্গে আরও তিনটি দেশ ছিল, যারা বিপক্ষে ভোট দিয়েছিল । কিন্তু ১৭০টি দেশের মত থাকায়, সংখ্যা গরিষ্ঠতার ভিত্তিতে কাউন্সিল তৈরি করা হয়েছিল । এখন অ্যামেরিকা তিন বছরের জন্য বাইরে রয়েছে । তারা UNHRC –এর নির্বাচনও চায়নি । এই তিন বছরে মানবাধিকার সংগঠন তাদের কাজের পদ্ধতি নির্ধারণ করে । তার মধ্যেও ইজরায়েলের চুক্তিও ছিল । সুতরাং আপনি যদি রাষ্ট্রদূত নিকি হ্যালের সময়ে দ্রুত এগিয়ে যান, তাহলে দেখবেন যে তারা এই পদ্ধতির সমালোচনা করেছিল । কিন্তু ওই পদ্ধতির খসড়া যখন তৈরি হচ্ছিল, তখন যদি আপনি ওই ঘরে না থাকেন, তাহলে বাইরে থেকে আপনার কিছুই করার থাকে না ।"

কিছু বিতর্কিত সিদ্ধান্তের মাধ্যমে ডোনাল্ড ট্রাম্পের নেতৃত্বে থাকা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বেশ কিছু আন্তর্জাতিক চুক্তি থেকে নিজেদের সরিয়ে নিয়েছে । এর মধ্যে রয়েছে প্যারিস জলবায়ু চুক্তি, ইরানের সঙ্গে পরমাণু চুক্তি । তাছাড়া রাষ্ট্রসঙ্ঘ পরিচালিত বেশ কিছু বহু পাক্ষিক সংস্থা, যারা পরিবেশ ও বাণিজ্য নিয়ে কাজ করে, তাদের অর্থ দেওয়াও কমিয়ে দিয়েছে । এছাড়া বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থা (WTO) -র মতো বিশ্বজনীন সংস্থাকে দুর্বল করে দিয়েছে । সুতরাং, যদি জো বাইডেন নভেম্বরের লড়াইয়ে জিতে যান, তাহলে তাঁর প্রশাসন কি এই সিদ্ধান্তগুলি ফিরিয়ে নিতে চাইবেন এবং পারবেন? আর বিশ্বজনীন বহু পাক্ষিকতাকে কি শক্তিশালী করতে পারবেন ? এমন একটা সময় যখন ইরান, চিন ও রাশিয়ার মধ্যে কৌশলগত সহযোগিতা শুরু হয়ে গিয়েছে, সেই সময় বাইডেন প্রশাসন কি ইরানের সঙ্গে পরমাণু চুক্তি আবার শুরু করার পর্যায়ে নিয়ে যেতে পারবেন ?

রাষ্ট্রসঙ্ঘের প্রাক্তন প্রযুক্তিগত পরামর্শদাতা ড. রাজেশ্বরী পি রাজাগোপালন বলেন, "ওই চুক্তি নিয়ে ওবামা প্রশাসন অনেকটাই এগিয়ে গিয়েছিলেন । যে চুক্তি কিছুটা হলেই ইরানের দিকে ঝুঁকেছিল । এটা হয়তো কোনও জনপ্রিয় ধারণা নয় । কিন্তু ওই চুক্তিকে নিজেদের পক্ষে টানতে অনেকটাই দরদাম করতে সফল হয়েছিল । যে ধরনের ধারা ওই চুক্তিতে ছিল, যেমন প্রত্যাহার, পরিদর্শন ইত্যাদি৷ প্রতিটি ধারার দিকে আপনি যদি তাকান, তাহলে বুঝতে পারবেন যে ইরান কেন তাদের দরদামের কৌশলের জন্য পরিচিত । অবজার্ভার রিসার্চ ফাউন্ডেশন (ORF) -এর পরমাণু ও মহাকাশ উদ্যোগের প্রধান ও বিশিষ্ট কর্মী হলেন ড. রাজাগোপালন । আন্তর্জাতিক নিষেধাজ্ঞা অথবা বাধা থাকা সত্ত্বেও ইরান তাদের পারমাণবিক কর্মসূচি চালিয়ে যাচ্ছে । আর তেহরানের উপর চিনের ছায়ার পরিপ্রেক্ষিতে বাইডেন প্রশাসনের পক্ষে এই চুক্তি নিয়ে নতুন করে ভাবনা চিন্তা করা কঠিনই হবে ।

তিনি বলেন, "এটা বাইডেনের দলবলকে খুবই কঠিন পরিস্থিতিতে ফেলতে চলেছে । কারণ, তারা এটা প্রমাণ করতে চাইছে যে চিনের বিষয়ে তারা আরও কড়া । আপনি কীভাবে চিন সংক্রান্ত সমস্যা ও চ্যালেঞ্জের মোকাবিলা করবেন । চিন সংক্রান্ত সমস্যা গত কয়েক বছরে অনেকটাই বৃদ্ধি পেয়েছে । রাষ্ট্রসঙ্ঘের বেশ কিছু সংগঠনকে চিন কার্যত কবজা করে নিয়েছে অথবা সেখানে নেতৃত্ব দেওয়ার পর্যায়ে চল গিয়েছে । চিনের সঙ্গে কৌশলগত জায়গা থেকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র অনেকটাই সরে গিয়েছে । বাইডেন এখন ধন্দে পড়ে গিয়েছেন যে কীভাবে ইরান ও চিন যৌথ শক্তির মোকাবিলা করবেন । অথবা ইরান, চিন ও রাশিয়া, যারা একত্র হয়েছে আর গত বছরের শেষে এক সঙ্গে নৌ মহড়া দিয়েছে, তাদের মোকাবিলা কীভাবে করা হবে ।"

যোশিতা সিং, নিউ ইয়র্কে প্রেস ট্রাস্ট অফ ইন্ডিয়া (PTI) -র হয়ে কর্মরত একজন সিনিয়র সাংবাদিক । তাঁর কাছে জানতে চাওয়া হয় যে প্যারিস জলবায়ু চুক্তি থেকে সরে আসা কি নির্বাচনে ইশু হয়েছে ? উত্তরে তিনি বলেন, "জঙ্গলে আগুন লেগে যাওয়া, হ্যারিকেন ঝড়, এশিয়ার বিভিন্ন অংশে বন্যা হওয়া, জলবায়ু পরিবর্তনের কারণেই ঘটছে । আর এখন তা আমরা সকলেই দেখছি । বাস্তব জীবনে আমরা এখন সেগুলির ফল ভোগ করছি । প্যারিস চুক্তি, যা এক সপ্তাহ বা এক মাসে তৈরি হয়নি । বরং সমস্ত অংশীদারদের সংযুক্ত করে অনেক প্রচেষ্টার সাহায্যে অনেক বছর ধরে তৈরি হয়েছে । ট্রাম্প প্রশাসন, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র যারা ঐতিহাসিক ভাবে সবচেয়ে বেশি দূষণকারী হিসেবে পরিচিত, তারা এই চুক্তি থেকে বেরিয়ে গেলে সাধারণ মানুষ হিসেবে তো তার একটা প্রতিক্রিয়া তৈরি হবেই । বিশেষ করে সমাজের দুর্বল অংশ, ছোট দ্বীপ ও উন্নয়নশীল দেশের ক্ষেত্রে তা হবেই ।"

তিনি এর সঙ্গে যোগ করেন, "মানুষ যখন ভোট দেবেন, তখন জলবায়ু পরিবর্তনকে বড় ইশু বলে মনে করবেন না । ফলে এই সময়ে অর্থনীতি, চাকরি, স্বাস্থ্য ব্যবস্থা বিশেষ করে প্যানডেমিকের সময় বড় ইশু হয়ে উঠবে । কারণ, অ্যামেরিকা সম্ভবত বিশ্বের সবচেয়ে শক্তিশালী দেশ । যারা অর্থনৈতিক ভাবেই সবচেয়ে বেশি শক্তিশালী । তাদের এই প্যানডেমিক কার্যত নাজেহাল করে দিয়েছে । তাদের স্বাস্থ্য ব্যবস্থা কার্যত হামাগুড়ি দিচ্ছে । "

এদিকে আগামী নভেম্বরের নির্বাচনে তাঁরা যদি জিতে যান, তাহলে তাঁরা আবার বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থায় যোগদান করবেন বলে স্পষ্টভাবে জানিয়ে দিয়েছেন প্রেসিডেন্ট পদে ট্রাম্পের বিপক্ষ জো বাইডেন । এর আগে ডেমোক্র্যাট দলের জাতীয় সম্মেলনে তারা শপথ নিয়েছেন যে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র WHO –এর প্রধান অর্থ সাহায্যকারী ও প্রযুক্তিগত অংশীদার হিসেবে থাকবে । ট্রাম্প প্রশাসন যদিও এক বছরের একটি প্রক্রিয়ার মধ্যে রয়েছে, যার মাধ্যমে তারা ধীরে ধীরে WHO-র থেকে সরে আসছে । আর তা পুরোপুরি কার্যকর হয়ে যাবে চলতি বছরের ডিসেম্বর মাসে ।

এই বিষয়ে ড. রাজাগোপালন বলেন, "WHO থেকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সরে যাওয়া আসলে চিন ও অন্যদের জায়গা থেকে সরে আসা । তাছাড়া এটাও দেখা গিয়েছে যে বহু পাক্ষিক সংগঠনগুলি নিয়ে পর্যালোচনা করার সময় এসে গিয়েছে । দেখতে হবে যাতে এই সংগঠনগুলি একটিমাত্র শক্তির নিয়ন্ত্রণে চলে না যায় । কোনও একটি শক্তি যাতে তাদের নিজেদের কবজায় না নিতে পারে এবং এই সমস্ত বহু পাক্ষিক সংগঠনের নেতৃত্বরা যাতে কোনও দেশের হয়ে কথা না বলেন সেটাও দেখতে হবে । ভারতের নেতৃত্ব দেওয়ার ক্ষমতা রয়েছে । আর এখন দায়িত্ব হচ্ছে কিছু সম মনোভাবাপন্ন দেশকে এক জায়গায় আসতে হবে । তাদের সঙ্গী ও অংশীদারদের সঙ্গে কাজ করতে হবে । নিরপেক্ষতা, স্বচ্ছতা, দায়বদ্ধতা তৈরি করতে হবে, যাতে এই প্রতিষ্ঠানগুলি সম্মানের সঙ্গে কাজ চালিয়ে দিতে পারে ।"

যখন কোরোনা ভাইরাস ছড়িয়ে পড়ল, তখন WHO–এর বিরুদ্ধে বেজিংয়ের প্রতি পক্ষপাতমূলক আচরণ করার অভিযোগ উঠেছিল । এই গুরুতর অভিযোগ থেকে নিজেদের মুক্ত করে গ্রহণযোগ্যতা ফিরিয়ে আনতে সংস্কার ও সমস্যার সমাধানের পথ WHO-কেই খুঁজতে হবে । এমনটাই দাবি করেছেন অশোক মুখার্জি । এর সঙ্গে তিনি যোগ করেছেন যে বহু পাক্ষিকতা এবং অ্যামেরিকান নেতৃত্ব নিয়ে যে বিতর্ক চলছে, তার মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলিতে সরব হওয়ার ভূমিকা নিতে হবে ভারতকে । কারণ, ২০২১ সালে তারা রাষ্ট্রসঙ্ঘের নিরাপত্তা পরিষদে নির্বাচিত সদস্য হতে চাইছে ।

অশোক মুখার্জি বলেন, "এশিয়ায় প্রতিবেশী ও পাশাপাশি এলাকার বিভিন্ন ইশুতে ভারতকে আরও উদ্যোগী হতে হবে, যদি তারা রাজনৈতিক ভাবে UNSC -এর অভ্যন্তরে যেতে চায় । ইয়েমেন, সিরিয়ার ইশু, দক্ষিণ সুদান, যেখানে আমাদের অর্থনৈতিক বিনিয়োগ রয়েছে, সেখানে আমরা সবকিছু ঠিক করার জন্য স্থায়ী সদস্যদের হাতে সব ছেড়ে দিতে পারি না ।"

বাইডেন ও হ্যারিস যদি বহু পাক্ষিক সংগঠনগুলিতে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্ব আবার প্রতিষ্ঠা করতে সম্ভব হয়, তাহলে কী হবে ? আর ট্রাম্প যদি ক্ষমতায় ফিরে আসে তাহেল কী কী চ্যালেঞ্জ তৈরি হতে পারে ? এই প্রশ্নগুলি জানতে চাওয়া হলে যোশিতা সিং বলেন, "ডেমোক্র্যাটরা সেনেট ও হাউজ দখলে রাখবে । সুতরাং হয়তো তাদের কাছে সংখ্যা থাকবে । বাইডেন ও হোয়াইট হাউজ অ্যামেরিকাকে এই চুক্তি ও অবস্থানে আবার ফিরিয়ে আনবে । তাঁকেই এই সিদ্ধান্ত নিতে হবে ।"

তিনি আরও বলেন, "আগামী দুই বছরে UN-এর বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ সংগঠন, গুরুত্বপূর্ণ নেতৃত্ব দানকারী পদ ও সংস্থায় ১৫টি নির্বাচন রয়েছে । UN সম্বন্ধেও প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প খুব সমালোচনা করেন । শুধুমাত্র এর সংগঠনগুলি সম্বন্ধে, সামগ্রিক ভাবে UN সম্পর্কেই সমালোচনা করেন । সুতরাং যদি ট্রাম্প ফিরে আসেন, তাহলে এই পদগুলির জন্য অ্যামেরিকার কোনও প্রার্থী থাকবে না । তখন আমরা দেখব যে চিন এবং অন্য দেশগুলি যারা UN-এর উপর নিজেদের প্রভাব বৃদ্ধি করতে চায়, তারা তাদের প্রার্থীদের এগিয়ে দেবে । তার পর বিভিন্ন সংগঠনের মাথায় বসবে । আর নানা ধরনের সিদ্ধান্ত নেবে। সুতরাং অ্যামেরিকাকে দেখতে হবে, তারা যাতে এই বহু পাক্ষিকতা থেকে বেরিয়ে না যায় ।"

দিল্লি, 31 অগাস্ট: রিপাবলিকানদের জাতীয় সম্মেলনে সরকারিভাবে প্রেসিডেন্ট পদে প্রার্থী হওয়ার প্রস্তাব আবার গ্রহণ করেছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প । তার পর সেই রাতে তিনি বলেন, "দায়িত্ব নেওয়ার কয়েকদিন পর চমকে গিয়ে দেখলাম যে ওয়াশিংটন ট্রান্স প্যাসিফিক পার্টনারশিপ থেকে নিজেদের সরিয়ে নিয়েছে । আমি তার পর কিস্টোন XL এবং ডাকোটা অ্যাকসেস পাইপলাইকে অনুমতি দিলাম । তার পর অনৈতিক ও দামি প্যারিস জলবায়ু চুক্তি থেকে নিজেদের সরিয়ে নিলাম । আমেরিকার শক্তি স্বাধীনতাকে প্রথমবার সুনিশ্চিত করলাম ।" ট্রাম্প টানা ৭১ মিনিট ধরে ভাষণ দেন । সেই ভাষণে তিনি অ্যামেরিকাকে অগ্রাধিকার দেওয়ার নীতির কথাও উদাহরণ হিসেবে তুলে আনেন । তিনি বলেন, "আমি ভয়ঙ্কর ও পক্ষপাতদুষ্ট ইরান নিউক্লিয়ার চুক্তি থেকেও সরে এসেছি ।"

হোয়াইট হাউজের ক্ষমতা দখলের লড়াইয়ের মধ্যে বিশ্ব ও আন্তর্জাতিক সংগঠনের কী স্বার্থ রয়েছে? ট্রাম্প যদি ক্ষমতায় ফিরে আসেন, তাহলে অ্যামেরিকা কি নিজেদের মধ্যে গুটিয়ে যাবে এবং বিশ্বব্যাপী কর্মকাণ্ডে যুক্ত সংগঠনগুলিতে নেতৃত্ব দেওয়া থেকে পিছিয়ে আসবে ? #BattlegroundUSA2020-এর এই পর্বে সিনিয়র সাংবাদিক স্মিতা শর্মা এই প্রশ্নই করেছেন ।

নিউ ইয়র্কে রাষ্ট্রসঙ্ঘে ভারতের তরফে প্রাক্তন স্থায়ী প্রতিনিধি অশোক মুখার্জি বলেন, "১৯৪২ সালের জানুয়ারি মাস থেকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র নেতৃত্বের যে ভূমিকা পালন করছে, তা এখন ঝুঁকির মুখে রয়েছে । ওয়াশিংটনের সম্মেলন থেকে একটা লম্বা সফরের মাধ্যমে গড়ে উঠেছিল রাষ্ট্রসঙ্ঘ । গত পাঁচ থেকে ছয় বছরে গুরুত্ব যদি না কমত, তাহলে গত কয়েক দশকে অ্যামেরিকা যে নেতৃত্ব দেওয়ার ক্ষমতা তৈরি করেছে, তা ক্ষতিগ্রস্ত হত না । এই নির্বাচনের ফলাফল ওই কেন্দ্রীয় ইশুগুলির উপর অনেক বেশি প্রভাব ফেলতে চলেছে ।"

ওই অবসরপ্রাপ্ত কূটনীতিক এর পর আরও ব্যাখ্যা করে বলেন, "বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান থেকে সরে আসা আসলে নিচের দিকে নামা, তা বুঝতে হবে । ২০০৬ সালে রাষ্ট্রসঙ্ঘের সাধারণ অধিবেশন মানবাধিকার কাউন্সিল তৈরি করেছিল । জন বোল্টন তখন ছিলেন অ্যামেরিকার রাষ্ট্রদূত । তিনি ওই কাউন্সিল তৈরির বিপক্ষে ভোট দিয়েছিলেন । তাঁর সঙ্গে আরও তিনটি দেশ ছিল, যারা বিপক্ষে ভোট দিয়েছিল । কিন্তু ১৭০টি দেশের মত থাকায়, সংখ্যা গরিষ্ঠতার ভিত্তিতে কাউন্সিল তৈরি করা হয়েছিল । এখন অ্যামেরিকা তিন বছরের জন্য বাইরে রয়েছে । তারা UNHRC –এর নির্বাচনও চায়নি । এই তিন বছরে মানবাধিকার সংগঠন তাদের কাজের পদ্ধতি নির্ধারণ করে । তার মধ্যেও ইজরায়েলের চুক্তিও ছিল । সুতরাং আপনি যদি রাষ্ট্রদূত নিকি হ্যালের সময়ে দ্রুত এগিয়ে যান, তাহলে দেখবেন যে তারা এই পদ্ধতির সমালোচনা করেছিল । কিন্তু ওই পদ্ধতির খসড়া যখন তৈরি হচ্ছিল, তখন যদি আপনি ওই ঘরে না থাকেন, তাহলে বাইরে থেকে আপনার কিছুই করার থাকে না ।"

কিছু বিতর্কিত সিদ্ধান্তের মাধ্যমে ডোনাল্ড ট্রাম্পের নেতৃত্বে থাকা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বেশ কিছু আন্তর্জাতিক চুক্তি থেকে নিজেদের সরিয়ে নিয়েছে । এর মধ্যে রয়েছে প্যারিস জলবায়ু চুক্তি, ইরানের সঙ্গে পরমাণু চুক্তি । তাছাড়া রাষ্ট্রসঙ্ঘ পরিচালিত বেশ কিছু বহু পাক্ষিক সংস্থা, যারা পরিবেশ ও বাণিজ্য নিয়ে কাজ করে, তাদের অর্থ দেওয়াও কমিয়ে দিয়েছে । এছাড়া বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থা (WTO) -র মতো বিশ্বজনীন সংস্থাকে দুর্বল করে দিয়েছে । সুতরাং, যদি জো বাইডেন নভেম্বরের লড়াইয়ে জিতে যান, তাহলে তাঁর প্রশাসন কি এই সিদ্ধান্তগুলি ফিরিয়ে নিতে চাইবেন এবং পারবেন? আর বিশ্বজনীন বহু পাক্ষিকতাকে কি শক্তিশালী করতে পারবেন ? এমন একটা সময় যখন ইরান, চিন ও রাশিয়ার মধ্যে কৌশলগত সহযোগিতা শুরু হয়ে গিয়েছে, সেই সময় বাইডেন প্রশাসন কি ইরানের সঙ্গে পরমাণু চুক্তি আবার শুরু করার পর্যায়ে নিয়ে যেতে পারবেন ?

রাষ্ট্রসঙ্ঘের প্রাক্তন প্রযুক্তিগত পরামর্শদাতা ড. রাজেশ্বরী পি রাজাগোপালন বলেন, "ওই চুক্তি নিয়ে ওবামা প্রশাসন অনেকটাই এগিয়ে গিয়েছিলেন । যে চুক্তি কিছুটা হলেই ইরানের দিকে ঝুঁকেছিল । এটা হয়তো কোনও জনপ্রিয় ধারণা নয় । কিন্তু ওই চুক্তিকে নিজেদের পক্ষে টানতে অনেকটাই দরদাম করতে সফল হয়েছিল । যে ধরনের ধারা ওই চুক্তিতে ছিল, যেমন প্রত্যাহার, পরিদর্শন ইত্যাদি৷ প্রতিটি ধারার দিকে আপনি যদি তাকান, তাহলে বুঝতে পারবেন যে ইরান কেন তাদের দরদামের কৌশলের জন্য পরিচিত । অবজার্ভার রিসার্চ ফাউন্ডেশন (ORF) -এর পরমাণু ও মহাকাশ উদ্যোগের প্রধান ও বিশিষ্ট কর্মী হলেন ড. রাজাগোপালন । আন্তর্জাতিক নিষেধাজ্ঞা অথবা বাধা থাকা সত্ত্বেও ইরান তাদের পারমাণবিক কর্মসূচি চালিয়ে যাচ্ছে । আর তেহরানের উপর চিনের ছায়ার পরিপ্রেক্ষিতে বাইডেন প্রশাসনের পক্ষে এই চুক্তি নিয়ে নতুন করে ভাবনা চিন্তা করা কঠিনই হবে ।

তিনি বলেন, "এটা বাইডেনের দলবলকে খুবই কঠিন পরিস্থিতিতে ফেলতে চলেছে । কারণ, তারা এটা প্রমাণ করতে চাইছে যে চিনের বিষয়ে তারা আরও কড়া । আপনি কীভাবে চিন সংক্রান্ত সমস্যা ও চ্যালেঞ্জের মোকাবিলা করবেন । চিন সংক্রান্ত সমস্যা গত কয়েক বছরে অনেকটাই বৃদ্ধি পেয়েছে । রাষ্ট্রসঙ্ঘের বেশ কিছু সংগঠনকে চিন কার্যত কবজা করে নিয়েছে অথবা সেখানে নেতৃত্ব দেওয়ার পর্যায়ে চল গিয়েছে । চিনের সঙ্গে কৌশলগত জায়গা থেকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র অনেকটাই সরে গিয়েছে । বাইডেন এখন ধন্দে পড়ে গিয়েছেন যে কীভাবে ইরান ও চিন যৌথ শক্তির মোকাবিলা করবেন । অথবা ইরান, চিন ও রাশিয়া, যারা একত্র হয়েছে আর গত বছরের শেষে এক সঙ্গে নৌ মহড়া দিয়েছে, তাদের মোকাবিলা কীভাবে করা হবে ।"

যোশিতা সিং, নিউ ইয়র্কে প্রেস ট্রাস্ট অফ ইন্ডিয়া (PTI) -র হয়ে কর্মরত একজন সিনিয়র সাংবাদিক । তাঁর কাছে জানতে চাওয়া হয় যে প্যারিস জলবায়ু চুক্তি থেকে সরে আসা কি নির্বাচনে ইশু হয়েছে ? উত্তরে তিনি বলেন, "জঙ্গলে আগুন লেগে যাওয়া, হ্যারিকেন ঝড়, এশিয়ার বিভিন্ন অংশে বন্যা হওয়া, জলবায়ু পরিবর্তনের কারণেই ঘটছে । আর এখন তা আমরা সকলেই দেখছি । বাস্তব জীবনে আমরা এখন সেগুলির ফল ভোগ করছি । প্যারিস চুক্তি, যা এক সপ্তাহ বা এক মাসে তৈরি হয়নি । বরং সমস্ত অংশীদারদের সংযুক্ত করে অনেক প্রচেষ্টার সাহায্যে অনেক বছর ধরে তৈরি হয়েছে । ট্রাম্প প্রশাসন, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র যারা ঐতিহাসিক ভাবে সবচেয়ে বেশি দূষণকারী হিসেবে পরিচিত, তারা এই চুক্তি থেকে বেরিয়ে গেলে সাধারণ মানুষ হিসেবে তো তার একটা প্রতিক্রিয়া তৈরি হবেই । বিশেষ করে সমাজের দুর্বল অংশ, ছোট দ্বীপ ও উন্নয়নশীল দেশের ক্ষেত্রে তা হবেই ।"

তিনি এর সঙ্গে যোগ করেন, "মানুষ যখন ভোট দেবেন, তখন জলবায়ু পরিবর্তনকে বড় ইশু বলে মনে করবেন না । ফলে এই সময়ে অর্থনীতি, চাকরি, স্বাস্থ্য ব্যবস্থা বিশেষ করে প্যানডেমিকের সময় বড় ইশু হয়ে উঠবে । কারণ, অ্যামেরিকা সম্ভবত বিশ্বের সবচেয়ে শক্তিশালী দেশ । যারা অর্থনৈতিক ভাবেই সবচেয়ে বেশি শক্তিশালী । তাদের এই প্যানডেমিক কার্যত নাজেহাল করে দিয়েছে । তাদের স্বাস্থ্য ব্যবস্থা কার্যত হামাগুড়ি দিচ্ছে । "

এদিকে আগামী নভেম্বরের নির্বাচনে তাঁরা যদি জিতে যান, তাহলে তাঁরা আবার বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থায় যোগদান করবেন বলে স্পষ্টভাবে জানিয়ে দিয়েছেন প্রেসিডেন্ট পদে ট্রাম্পের বিপক্ষ জো বাইডেন । এর আগে ডেমোক্র্যাট দলের জাতীয় সম্মেলনে তারা শপথ নিয়েছেন যে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র WHO –এর প্রধান অর্থ সাহায্যকারী ও প্রযুক্তিগত অংশীদার হিসেবে থাকবে । ট্রাম্প প্রশাসন যদিও এক বছরের একটি প্রক্রিয়ার মধ্যে রয়েছে, যার মাধ্যমে তারা ধীরে ধীরে WHO-র থেকে সরে আসছে । আর তা পুরোপুরি কার্যকর হয়ে যাবে চলতি বছরের ডিসেম্বর মাসে ।

এই বিষয়ে ড. রাজাগোপালন বলেন, "WHO থেকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সরে যাওয়া আসলে চিন ও অন্যদের জায়গা থেকে সরে আসা । তাছাড়া এটাও দেখা গিয়েছে যে বহু পাক্ষিক সংগঠনগুলি নিয়ে পর্যালোচনা করার সময় এসে গিয়েছে । দেখতে হবে যাতে এই সংগঠনগুলি একটিমাত্র শক্তির নিয়ন্ত্রণে চলে না যায় । কোনও একটি শক্তি যাতে তাদের নিজেদের কবজায় না নিতে পারে এবং এই সমস্ত বহু পাক্ষিক সংগঠনের নেতৃত্বরা যাতে কোনও দেশের হয়ে কথা না বলেন সেটাও দেখতে হবে । ভারতের নেতৃত্ব দেওয়ার ক্ষমতা রয়েছে । আর এখন দায়িত্ব হচ্ছে কিছু সম মনোভাবাপন্ন দেশকে এক জায়গায় আসতে হবে । তাদের সঙ্গী ও অংশীদারদের সঙ্গে কাজ করতে হবে । নিরপেক্ষতা, স্বচ্ছতা, দায়বদ্ধতা তৈরি করতে হবে, যাতে এই প্রতিষ্ঠানগুলি সম্মানের সঙ্গে কাজ চালিয়ে দিতে পারে ।"

যখন কোরোনা ভাইরাস ছড়িয়ে পড়ল, তখন WHO–এর বিরুদ্ধে বেজিংয়ের প্রতি পক্ষপাতমূলক আচরণ করার অভিযোগ উঠেছিল । এই গুরুতর অভিযোগ থেকে নিজেদের মুক্ত করে গ্রহণযোগ্যতা ফিরিয়ে আনতে সংস্কার ও সমস্যার সমাধানের পথ WHO-কেই খুঁজতে হবে । এমনটাই দাবি করেছেন অশোক মুখার্জি । এর সঙ্গে তিনি যোগ করেছেন যে বহু পাক্ষিকতা এবং অ্যামেরিকান নেতৃত্ব নিয়ে যে বিতর্ক চলছে, তার মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলিতে সরব হওয়ার ভূমিকা নিতে হবে ভারতকে । কারণ, ২০২১ সালে তারা রাষ্ট্রসঙ্ঘের নিরাপত্তা পরিষদে নির্বাচিত সদস্য হতে চাইছে ।

অশোক মুখার্জি বলেন, "এশিয়ায় প্রতিবেশী ও পাশাপাশি এলাকার বিভিন্ন ইশুতে ভারতকে আরও উদ্যোগী হতে হবে, যদি তারা রাজনৈতিক ভাবে UNSC -এর অভ্যন্তরে যেতে চায় । ইয়েমেন, সিরিয়ার ইশু, দক্ষিণ সুদান, যেখানে আমাদের অর্থনৈতিক বিনিয়োগ রয়েছে, সেখানে আমরা সবকিছু ঠিক করার জন্য স্থায়ী সদস্যদের হাতে সব ছেড়ে দিতে পারি না ।"

বাইডেন ও হ্যারিস যদি বহু পাক্ষিক সংগঠনগুলিতে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্ব আবার প্রতিষ্ঠা করতে সম্ভব হয়, তাহলে কী হবে ? আর ট্রাম্প যদি ক্ষমতায় ফিরে আসে তাহেল কী কী চ্যালেঞ্জ তৈরি হতে পারে ? এই প্রশ্নগুলি জানতে চাওয়া হলে যোশিতা সিং বলেন, "ডেমোক্র্যাটরা সেনেট ও হাউজ দখলে রাখবে । সুতরাং হয়তো তাদের কাছে সংখ্যা থাকবে । বাইডেন ও হোয়াইট হাউজ অ্যামেরিকাকে এই চুক্তি ও অবস্থানে আবার ফিরিয়ে আনবে । তাঁকেই এই সিদ্ধান্ত নিতে হবে ।"

তিনি আরও বলেন, "আগামী দুই বছরে UN-এর বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ সংগঠন, গুরুত্বপূর্ণ নেতৃত্ব দানকারী পদ ও সংস্থায় ১৫টি নির্বাচন রয়েছে । UN সম্বন্ধেও প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প খুব সমালোচনা করেন । শুধুমাত্র এর সংগঠনগুলি সম্বন্ধে, সামগ্রিক ভাবে UN সম্পর্কেই সমালোচনা করেন । সুতরাং যদি ট্রাম্প ফিরে আসেন, তাহলে এই পদগুলির জন্য অ্যামেরিকার কোনও প্রার্থী থাকবে না । তখন আমরা দেখব যে চিন এবং অন্য দেশগুলি যারা UN-এর উপর নিজেদের প্রভাব বৃদ্ধি করতে চায়, তারা তাদের প্রার্থীদের এগিয়ে দেবে । তার পর বিভিন্ন সংগঠনের মাথায় বসবে । আর নানা ধরনের সিদ্ধান্ত নেবে। সুতরাং অ্যামেরিকাকে দেখতে হবে, তারা যাতে এই বহু পাক্ষিকতা থেকে বেরিয়ে না যায় ।"

ETV Bharat Logo

Copyright © 2025 Ushodaya Enterprises Pvt. Ltd., All Rights Reserved.