ওয়াশিংটন, 7 জুলাই: কোরোনা ভাইরাস সংক্রমণ রোধেগুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে মাস্ক ৷ অথচ সাধারণ মাস্কই বর্তমানে অ্যামেরিকায়রাজনৈতিক দ্বন্দ্বের কারণ হয়ে উঠেছে ৷
মাস্কনিয়ে এত বিক্ষোভ, কী এইমাস্ক, কেনই বাপ্রয়োজন মাস্কের?
কাপড়েরএকটি টুকরোর দুই প্রান্তে দুটি ইলাস্টিক ব্যান্ড লাগিয়ে মাস্ক তৈরি করা হয় ৷বাতাসে উপস্থিত জীবাণু থেকে রক্ষা করতে ব্যবহার করা হয় মাস্ক ৷ নাক ও মুখ ঢাকারসাধারণ এই জিনিসটি নিয়েই অ্যামেরিকাতে লেগেছে বিরোধ ৷ অধিকাংশ অ্যামেরিকান নাগরিকইকোরোনা সংক্রমণ থেকে রক্ষা পেতে স্বাস্থ্য দপ্তরের নির্দেশিকা মেনে মাস্ক পরলেওএকাংশ সক্রিয়ভাবে মাস্ক পরার বিরোধিতা করছেন ৷ তাদের দাবি, ব্যক্তি স্বাধীনতায় হস্তক্ষেপ করাহচ্ছে ৷
অ্যামেরিকাতে মাস্ক নিয়ে বিতর্ক কেন?
বিভিন্নগবেষণার পোলে দেখা গিয়েছে অ্যামেরিকানদের একটি বড় অংশ বাইরে বের হলেই মাস্ক পরছেন৷ তবে সরকার ও বিভিন্ন ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানগুলির মাস্ক পরার নিয়ম বাধ্যতামূলক করানিয়ে রাজনৈতিক ইশু তৈরি তৈরি হয়েছে ৷ সম্প্রতি কয়েকটি রিসার্চ সেন্টারের পোলে দেখাযায়, রিপাবলিকানদেরতুলনায় ডেমোক্রাটরা মাস্ক পরার কথা বলেছেন ৷ দুই রাজনৈতিক দলের নেতৃত্বদের তরফথেকে দেওয়া বার্তাও এই বিতর্কের সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত ৷ দেখা গিয়েছে, ডেমোক্রেটিক নেতারা মাস্ক পরারগুরুত্ব নিয়ে কথা বলেছেন ৷ বহু ডেমোক্রেটিক গভর্নর জনসমক্ষে মাস্ক পরার নিয়মকেবাধ্যতামূলক করেছেন ৷
অন্যদিকেরিপাবলিকান নেতারাও মাস্ক পরার প্রয়োজনীয়তা নিয়ে কথা বললেও বহু উচ্চপদস্থরিপাবলিকান নেতারা মাস্ক পরার নিয়মকে বাধ্যতামূলক করা নিয়ে সংশয় প্রকাশ করেছেন ৷নিজেদের রাজ্যে কোরোনা আক্রান্তের সংখ্যা বাড়লেো তারা মাস্ক পরা বাধ্যতামূলক করেননি, এর সবথেকে বড় উদাহরণ হলেন স্বয়ংঅ্যামেরিকান প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ৷ নেতাদের এই মিশ্র বার্তা পৌছেছেনাগরিকদের কাছে, যারামাস্ক পরাকে একটি ‘‘সংস্কৃতিযুদ্ধ’’-এপরিণত করেছেন ৷
অ্যামেরিকাতে কবে থেকে মাস্কেরবিরোধিতা শুরু হল?
শাটডাউনেরনির্দেশের বিরুদ্ধে মাস্ক ছাড়া যে বিক্ষোভ শুরু হয়েছিল, তা ধীরে ধীরে বৃহত্তর মাস্ক বিরোধীআবেগে পরিণত হয়েছে ৷ অর্থনীতিকে সচল করতে রাজ্যগুলির কর্মকাজ ফের শুরু করেছে ৷ বহুস্থানীয় ব্যবসা ও দেশ জুড়ে ছড়িয়ে থাকা শিল্পমহলগুলি গ্রাহকদের দোকানে প্রবেশেরজন্য মাস্ক পরার নিয়ম জারি করেছে ৷ ফলে ব্যবসাগুলি, বিশেষ করে কর্মচারীরাই মাস্ক বিতর্কেরপ্রথম সারিতে অবস্থান করছে ৷
কেন মানুষেরা বলছেন, তারা মাস্ক পরার বিরুদ্ধে?
যারামাস্ক পরার বিরোধিতা করছেন,তাদেরমধ্যে অধিকাংশই বলছেন, এটিব্যক্তি স্বাধীনতায় হস্তক্ষেপ করা হচ্ছে ৷ আদালতের শুনানিতে এক মহিলা বলেন, ‘‘আপনারা আমাদের স্বাধীনতা কেড়েনিচ্ছেন এবং কমিউনিস্ট স্বৈরশাসন বা আইনের মাধ্যমে আমাদের সাংবিধানিক অধিকারকেমাড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে ৷’’ কিছুবিশেষজ্ঞের মতে, প্যানডেমিকেরশুরুতে স্বাস্থ্য আধিকারিকদের তরফ থেকে জনসাধারণের জন্য যে বিভ্রান্তিকর বার্তাদেওয়া হয়েছিল, তারফলেইসাধারণ মানুষ মাস্ক পরার বিরুদ্ধে চলে গিয়েছে ৷
মাস্ক পরা নিয়ে বর্তমানে স্বাস্থ্যআধিকারিকেরা কী বলছেন?
কোরোনাভাইরাস সংক্রমণ রুখতে মাস্ক সাহায্য করে, এই কথাটি জনস্বাস্থ্য আধিকারিকেরাসকলেই একমত ৷ CDC এবংবিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার তরফ থেকে নির্দেশিকায় সাধারণ মানুষের উদ্দেশ্যে বলা হয়েছে, যেখানে সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখাসম্ভব নয়, সেখানেমাস্ক পরা উচিত ৷
কেবলমাত্রমাস্ক পরার মাধ্যমে ভাইরাস সংক্রমণ রোধ করা না গেলেও সম্প্রতি গবেষণায় দেখা গিয়েছে, সংক্রমণ রুখতে মাস্ক কার্যকরী ভূমিকাপালন করে ৷ ফ্যসি সম্প্রতি আলোচনায় বলেন, ‘‘বাড়ি থেকে বের হলেই সকলের মাস্ক পরাউচিত ৷ এটি কোনও রাজনৈতিক ইশু নয়, সম্পূর্ণভাবেই জনস্বাস্থ্য সম্পর্কিত বিষয় ৷’’
টেক্সাসেকোরোনা আক্রান্তের সংখ্যা প্রতিনিয়ত বৃদ্ধি করলেও টেক্সাসের গভর্নর গ্রেগ অ্যাবটএকটি স্থানীয় টেলিভিশন চ্যানেলে বলেন, ‘‘সরকারের কোনও নিয়মের দ্বারা যাতেব্যক্তি স্বাধীনতায় প্রভাব না ফেলে, সেই বিষয়টি নিশ্চিত করতে চাই ৷ তাইসরকার কোনও ব্যক্তিকে মাস্ক পরার বিষয়টি জোর করে চাপিয়ে দিতে পারে না ৷’’