ETV Bharat / international

কানাডায় ফের ট্রুডো, ভারতের কাছে কেন অশনি সংকেত ? - India

সমস্ত বুথ ফেরত সমীক্ষাকে ভুল প্রমাণ করে কানাডায় ফের একবার ক্ষমতায় এলেন জাস্টিন ট্রুডো এবং তাঁর নেতৃত্বাধীন লিবারাল পার্টি । বুথফেরত সমীক্ষা অবশ্য কানাডার সুদর্শন নেতার হারের ইঙ্গিত দিয়েছিল । গত বারের চেয়ে 20টি আসন কম পেলেও কোনও মতে সরকার গড়লেন ট্রুডো ।

জাস্টিন ট্রুডো
author img

By

Published : Nov 2, 2019, 1:16 PM IST

Updated : Nov 2, 2019, 5:43 PM IST

সমস্ত বুথ ফেরত সমীক্ষাকে ভুল প্রমাণ করে কানাডায় ফের একবার ক্ষমতায় এলেন জাস্টিন ট্রুডো এবং তাঁর নেতৃত্বাধীন লিবারাল পার্টি । গত 21 অক্টোবরের নির্বাচনে মোট 338 আসনের মধ্যে 157টি আসন পেয়ে সংখ্যালঘু সরকার গড়লেন ট্রুডো । বুথফেরত সমীক্ষা অবশ্য কানাডার সুদর্শন নেতার হারের ইঙ্গিত দিয়েছিল । গত বারের চেয়ে 20টি আসন কম পেলেও কোনও মতে সরকার গড়লেন ট্রুডো । দু’নম্বরে থাকা কনজারভেটিভরা পেল 121টি আসন । তবে আসন কম পেলেও শতাংশের হিসাবে ট্রুডোর দলের চেয়ে বেশি ভোট পেয়েছেন কনজারভেটিভরা ।

বলিষ্ঠ সরকার গঠনের সংখ্যা না থাকায় অনেকে ধরে নিয়েছিলেন, কিংমেকার হয়ে আসরে হাজির হবে ইন্দো-কানাডীয় দল ন্যাশনাল ডেমোক্রেটিক পার্টি (NDP)। 24টি আসন নিয়ে এ বারের ভোটে তাঁরা চতুর্থ বৃহত্তম দল । যা অবস্থা, তাতে সংখ্যালঘু ট্রুডো সরকারকে NDP বা তৃতীয় বৃহত্তম দল ব্লক কিউবিকোইসের কাছ থেকে ইশুভিত্তিক সমর্থন নিতেই হবে। বাম দল NDP-র প্রধান জগমিৎ সিং কিন্তু এক জন ঘোষিত খলিস্তানপন্থী । এর আগে বহু বার ভরত বিরোধী বক্তব্যও রেখেছেন তিনি । ট্রুডো সরকার যদি NDP-র সমর্থন নেয়, তবে তা নয়াদিল্লির চিন্তার কারণ হতে বাধ্য। অনেক বিশেষজ্ঞই মনে করছেন, এর সরাসরি প্রভাব পড়বে ইন্দো-কানাডীয় সম্পর্কের উপরেও।

অথচ স্বাভাবিক মিত্র দেশ হওয়ার সব রকম সম্ভাবনা ছিল ভারত এবং কানাডার । বহু মাত্রিক ও বহু সংস্কৃতির দুই দেশের মধ্যে গণতন্ত্রের মিলও রয়েছে প্রবল । রয়েছে দুই দেশের সমগোত্রীয় মানুষের মধ্যে পারস্পরিক সম্পর্ক, অর্থনীতি এবং শিক্ষার মেলবন্ধন। কিন্তু এত মিল থাকা সত্ত্বেও দুই দেশের মধ্যে মিত্রতার সম্পর্ক যেন বেশির ভাগ সময় উলটো কথাই বলে আসছে ।

শুনতে খুব অদ্ভুত লাগলেও নরেন্দ্র মোদিই 42 বছরের মধ্যে প্রথম ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী যিনি কানাডা সফর করেছিলেন । 2015 সালের এপ্রিল মাসের সেই সফর ইন্দো-কানাডীয় সম্পর্কের ক্ষেত্রে অনেক দিক থেকেই ছিল উল্লেখযোগ্য । এই সফরে দুই দেশের মধ্যে পরমাণু চুক্তির মেঘ অনেকটাই কেটে গিয়েছিল । সফরে দুই দেশের সম্পর্ককে নতুন দিশা দেখানোর প্রতিশ্রুতিবদ্ধ হন নরেন্দ্র মোদি এবং কানাডার তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী কনজারভেটিভ পার্টির স্টিফেন হার্পার । মনে করা হয়েছিল, এই সফর দুই দেশের সম্পর্কে নতুন মাইল ফলক হিসাবে চিহ্নিত হয়ে থাকবে ।

পরিস্থিতি পাল্টাতে শুরু করে অক্টোবর 2015-এর পর থেকে। সেই সময় বিপুল ভোটে জিতে ক্ষমতায় আসেন তরুণ ট্রুডো। তাঁকে অভিনন্দন জানিয়ে যে সব রাষ্ট্রনেতা ফোন করেছিলেন, তাঁদের মধ্যে একেবারে প্রথম সারিতে ছিলেন নরেন্দ্র মোদি। কিন্তু খালিস্তানপন্থী নেতাদের প্রভাবে প্রভাবিত ট্রুডোর ভারত নিয়ে বোধহয় অন্য পরিকল্পনা ছিল ।

আর্থিক-সহ নির্বাচনে সব দিক থেকে ট্রুডোকে সমর্থন জানান কানাডার শিখরা । জেতার পর প্রতিদান স্বরূপ মন্ত্রিসভার অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের দায়িত্ব পান হরজিত সিং সজ্জন। শিখ ভোট ব্যাঙ্ক সুরক্ষিত করতে নিজেকে ‘জাস্টিন সিং’ বলতে শুরু করেন ট্রুডো । ট্রুডোর প্রচারপর্ব থেকে শুরু করে এঁরা বিভিন্ন সময়ে একাধিক রাজনৈতিক নেতাদেরও অর্থ সাহায্য করেন। এঁদের হাতে সে দেশের বিত্তবান গুরুদ্বারগুলোর প্রশাসনিক ও আর্থিক ক্ষমতা রয়েছে। গুরুদ্বারের অর্থ তাঁরা বিচ্ছিন্নতাবাদি সংগঠনের কাজে ব্যবহার করতেও পিছপা হন না। কিছুটা ইচ্ছাকৃত ভাবেই কানাডার সরকার এই বিষয় থেকে মুখ ঘুরিয়ে রেখেছে ।

কানাডার নির্বাচনী ইতিহাসে কিন্তু শিখরা প্রথম থেকেই বিপুল ভাবে লিবারাল পার্টিকে ভোট দিয়ে এসেছেন । 1970-1980 নাগাদ, ভারতে যখন পঞ্জাব সমস্যা বড় আকার ধারণ করেছে, তখন কানাডায় বসবাসকারি শিখদের আশ্বস্ত করতেন বর্তমান প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডোর বাবা, তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী পিয়েরে ট্রুডো । পঞ্জাবের রাজনৈতিক অস্থিরতার সময় বহু সংখ্যক শিখ কানাডায় চলে আসেন ।

1970-1980-এর দশকের পর বিংশ শতকের শুরু থেকে পঞ্জাবি, মূলত শিখদের একটা বড় অংশ কানাডায় আসতে শুরু করেন । এঁদের বেশির ভাগ সে দেশের পশ্চিম প্রান্তে বসবাস শুরু করেন। এই মুহূর্তে কানাডায় মোট জনসংখ্যার ৪ শতাংশ ইন্দো-কানাডীয়। এঁদের মধ্যে কিছু সংখ্যক পূর্ব আফ্রিকা থেকেও এসেছেন। এঁদের মধ্যে 10 লক্ষ হিন্দু এবং পাঁচ লক্ষ শিখ । এই বিপুল সংখ্যক হিন্দুরা দেশের সব প্রান্তে আছেন এবং তাঁরা মূলত অভিজ্ঞতার ভিত্তিতে তাঁরা ভোট দেন । শিখরা কিন্তু বেশির ভাগ থাকেন টরোন্টো এবং ভ্যাঙ্কুবারের মফঃসল এলাকায়, মূলত মিসিসাউগা, ব্রাম্পটন, সারে, ক্যালগারি এলাকায় ।

এক জায়গায় থাকায় প্রত্যক্ষ ভাবে 8-10টি এবং পরোক্ষ ভাবে আরও গোটা দশেক আসনের সরাসরি ভাগ্য নির্ধারণ করেন এঁরা। ভারতে যেখানে লোকসভায় 13 জন শিখ সাংসদ রয়েছেন, কানাডায় সেখানে রয়েছেন 18 জন ! বর্তমানে পঞ্জাবি কানাডার চতুর্থ সবচেয়ে বেশি ব্যবহৃত ভাষা ।

সে দেশে শিখদের গুরুত্ব ঠিক কতটা?

2018 সালে কনাডার সরকারি একটি রিপোর্টে দাবি করা হয়েছিল, ‘কানাডার বেশ কিছু শিখ এখনও খলিস্তানি চরমপন্থাকে সমর্থন করেন।’ শিখদের তীব্র প্রতিবাদের জেরে পরের বছর এপ্রিলে নতুন রিপোর্ট প্রকাশ করতে বাধ্য হয় ট্রুডো সরকার । সেই রিপোর্টে শিখ চরমপন্থার বিষয়টি সম্পূর্ণ রূপে বাদ দেওয়া হয় । সরকারি রিপোর্টের ভোলবদলের পর পঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রী অমরেন্দ্র সিং বলেছিলেন, “স্রেফ রাজনৈতিক চাপে এই সিদ্ধান্ত নিল ট্রুডো সরকার । কানাডার প্রধানমন্ত্রী আগুন নিয়ে খেলছেন । তাঁর এই সিদ্ধান্ত ইন্দো-কানাডীয় সম্পর্কে প্রভাব তো ফেলবেই, ভারতের জাতীয় নিরাপত্তাকেও বিপন্ন করে তুলবে ।”

তবে সংখ্যালঘু সরকার তৈরি করে ফেললেও এখনও পূর্ণাঙ্গ মন্ত্রিসভার ঘোষণা করেননি ট্রুডো । মনে করা হচ্ছে, NDP এবং ব্লক কিউবিকোইসের সঙ্গে ইশুভিত্তিক সমর্থনের বিষয়টি চূড়ান্ত না হওয়াতেই এই বিলম্ব । ওয়াকিবহাল মহলের ধারণা, গত বারের মতো এ বারও অন্তত চার জন শিখ ক্যাবিনেট মন্ত্রী হতে পারেন ।

চলতি বছরের শুরুর দিকে কানাডা গোয়েন্দা বিভাগের একটি গোপন রিপোর্ট ফাঁস হয় । রিপোর্টে দাবি করা হয়, ভারত ও চিন কানাডার ভারতীয় ও চিনাদের সাহায্যে 21 অক্টোবরের নির্বাচনে প্রভাব খাটাতে চাইছে । যদিও এই রিপোর্ট বা প্রামাণ্য কোনও নথি কখনও প্রকাশ্যে আসেনি । এই বিষয়টি থেকেই ভারত ও কানাডার সম্পর্কের অবস্থার বিষয়ে কিছুটা আঁচ পাওয়া যায় । দুই দেশের মধ্যে কিছুটা উত্তপ্ত পরিস্থিতি থাকলেও দুই দেশের বাসিন্দাদের মধ্যে সম্পর্কটা বেশ ভালই ।

রাষ্ট্রদূত বিষ্ণু প্রকাশ

সমস্ত বুথ ফেরত সমীক্ষাকে ভুল প্রমাণ করে কানাডায় ফের একবার ক্ষমতায় এলেন জাস্টিন ট্রুডো এবং তাঁর নেতৃত্বাধীন লিবারাল পার্টি । গত 21 অক্টোবরের নির্বাচনে মোট 338 আসনের মধ্যে 157টি আসন পেয়ে সংখ্যালঘু সরকার গড়লেন ট্রুডো । বুথফেরত সমীক্ষা অবশ্য কানাডার সুদর্শন নেতার হারের ইঙ্গিত দিয়েছিল । গত বারের চেয়ে 20টি আসন কম পেলেও কোনও মতে সরকার গড়লেন ট্রুডো । দু’নম্বরে থাকা কনজারভেটিভরা পেল 121টি আসন । তবে আসন কম পেলেও শতাংশের হিসাবে ট্রুডোর দলের চেয়ে বেশি ভোট পেয়েছেন কনজারভেটিভরা ।

বলিষ্ঠ সরকার গঠনের সংখ্যা না থাকায় অনেকে ধরে নিয়েছিলেন, কিংমেকার হয়ে আসরে হাজির হবে ইন্দো-কানাডীয় দল ন্যাশনাল ডেমোক্রেটিক পার্টি (NDP)। 24টি আসন নিয়ে এ বারের ভোটে তাঁরা চতুর্থ বৃহত্তম দল । যা অবস্থা, তাতে সংখ্যালঘু ট্রুডো সরকারকে NDP বা তৃতীয় বৃহত্তম দল ব্লক কিউবিকোইসের কাছ থেকে ইশুভিত্তিক সমর্থন নিতেই হবে। বাম দল NDP-র প্রধান জগমিৎ সিং কিন্তু এক জন ঘোষিত খলিস্তানপন্থী । এর আগে বহু বার ভরত বিরোধী বক্তব্যও রেখেছেন তিনি । ট্রুডো সরকার যদি NDP-র সমর্থন নেয়, তবে তা নয়াদিল্লির চিন্তার কারণ হতে বাধ্য। অনেক বিশেষজ্ঞই মনে করছেন, এর সরাসরি প্রভাব পড়বে ইন্দো-কানাডীয় সম্পর্কের উপরেও।

অথচ স্বাভাবিক মিত্র দেশ হওয়ার সব রকম সম্ভাবনা ছিল ভারত এবং কানাডার । বহু মাত্রিক ও বহু সংস্কৃতির দুই দেশের মধ্যে গণতন্ত্রের মিলও রয়েছে প্রবল । রয়েছে দুই দেশের সমগোত্রীয় মানুষের মধ্যে পারস্পরিক সম্পর্ক, অর্থনীতি এবং শিক্ষার মেলবন্ধন। কিন্তু এত মিল থাকা সত্ত্বেও দুই দেশের মধ্যে মিত্রতার সম্পর্ক যেন বেশির ভাগ সময় উলটো কথাই বলে আসছে ।

শুনতে খুব অদ্ভুত লাগলেও নরেন্দ্র মোদিই 42 বছরের মধ্যে প্রথম ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী যিনি কানাডা সফর করেছিলেন । 2015 সালের এপ্রিল মাসের সেই সফর ইন্দো-কানাডীয় সম্পর্কের ক্ষেত্রে অনেক দিক থেকেই ছিল উল্লেখযোগ্য । এই সফরে দুই দেশের মধ্যে পরমাণু চুক্তির মেঘ অনেকটাই কেটে গিয়েছিল । সফরে দুই দেশের সম্পর্ককে নতুন দিশা দেখানোর প্রতিশ্রুতিবদ্ধ হন নরেন্দ্র মোদি এবং কানাডার তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী কনজারভেটিভ পার্টির স্টিফেন হার্পার । মনে করা হয়েছিল, এই সফর দুই দেশের সম্পর্কে নতুন মাইল ফলক হিসাবে চিহ্নিত হয়ে থাকবে ।

পরিস্থিতি পাল্টাতে শুরু করে অক্টোবর 2015-এর পর থেকে। সেই সময় বিপুল ভোটে জিতে ক্ষমতায় আসেন তরুণ ট্রুডো। তাঁকে অভিনন্দন জানিয়ে যে সব রাষ্ট্রনেতা ফোন করেছিলেন, তাঁদের মধ্যে একেবারে প্রথম সারিতে ছিলেন নরেন্দ্র মোদি। কিন্তু খালিস্তানপন্থী নেতাদের প্রভাবে প্রভাবিত ট্রুডোর ভারত নিয়ে বোধহয় অন্য পরিকল্পনা ছিল ।

আর্থিক-সহ নির্বাচনে সব দিক থেকে ট্রুডোকে সমর্থন জানান কানাডার শিখরা । জেতার পর প্রতিদান স্বরূপ মন্ত্রিসভার অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের দায়িত্ব পান হরজিত সিং সজ্জন। শিখ ভোট ব্যাঙ্ক সুরক্ষিত করতে নিজেকে ‘জাস্টিন সিং’ বলতে শুরু করেন ট্রুডো । ট্রুডোর প্রচারপর্ব থেকে শুরু করে এঁরা বিভিন্ন সময়ে একাধিক রাজনৈতিক নেতাদেরও অর্থ সাহায্য করেন। এঁদের হাতে সে দেশের বিত্তবান গুরুদ্বারগুলোর প্রশাসনিক ও আর্থিক ক্ষমতা রয়েছে। গুরুদ্বারের অর্থ তাঁরা বিচ্ছিন্নতাবাদি সংগঠনের কাজে ব্যবহার করতেও পিছপা হন না। কিছুটা ইচ্ছাকৃত ভাবেই কানাডার সরকার এই বিষয় থেকে মুখ ঘুরিয়ে রেখেছে ।

কানাডার নির্বাচনী ইতিহাসে কিন্তু শিখরা প্রথম থেকেই বিপুল ভাবে লিবারাল পার্টিকে ভোট দিয়ে এসেছেন । 1970-1980 নাগাদ, ভারতে যখন পঞ্জাব সমস্যা বড় আকার ধারণ করেছে, তখন কানাডায় বসবাসকারি শিখদের আশ্বস্ত করতেন বর্তমান প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডোর বাবা, তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী পিয়েরে ট্রুডো । পঞ্জাবের রাজনৈতিক অস্থিরতার সময় বহু সংখ্যক শিখ কানাডায় চলে আসেন ।

1970-1980-এর দশকের পর বিংশ শতকের শুরু থেকে পঞ্জাবি, মূলত শিখদের একটা বড় অংশ কানাডায় আসতে শুরু করেন । এঁদের বেশির ভাগ সে দেশের পশ্চিম প্রান্তে বসবাস শুরু করেন। এই মুহূর্তে কানাডায় মোট জনসংখ্যার ৪ শতাংশ ইন্দো-কানাডীয়। এঁদের মধ্যে কিছু সংখ্যক পূর্ব আফ্রিকা থেকেও এসেছেন। এঁদের মধ্যে 10 লক্ষ হিন্দু এবং পাঁচ লক্ষ শিখ । এই বিপুল সংখ্যক হিন্দুরা দেশের সব প্রান্তে আছেন এবং তাঁরা মূলত অভিজ্ঞতার ভিত্তিতে তাঁরা ভোট দেন । শিখরা কিন্তু বেশির ভাগ থাকেন টরোন্টো এবং ভ্যাঙ্কুবারের মফঃসল এলাকায়, মূলত মিসিসাউগা, ব্রাম্পটন, সারে, ক্যালগারি এলাকায় ।

এক জায়গায় থাকায় প্রত্যক্ষ ভাবে 8-10টি এবং পরোক্ষ ভাবে আরও গোটা দশেক আসনের সরাসরি ভাগ্য নির্ধারণ করেন এঁরা। ভারতে যেখানে লোকসভায় 13 জন শিখ সাংসদ রয়েছেন, কানাডায় সেখানে রয়েছেন 18 জন ! বর্তমানে পঞ্জাবি কানাডার চতুর্থ সবচেয়ে বেশি ব্যবহৃত ভাষা ।

সে দেশে শিখদের গুরুত্ব ঠিক কতটা?

2018 সালে কনাডার সরকারি একটি রিপোর্টে দাবি করা হয়েছিল, ‘কানাডার বেশ কিছু শিখ এখনও খলিস্তানি চরমপন্থাকে সমর্থন করেন।’ শিখদের তীব্র প্রতিবাদের জেরে পরের বছর এপ্রিলে নতুন রিপোর্ট প্রকাশ করতে বাধ্য হয় ট্রুডো সরকার । সেই রিপোর্টে শিখ চরমপন্থার বিষয়টি সম্পূর্ণ রূপে বাদ দেওয়া হয় । সরকারি রিপোর্টের ভোলবদলের পর পঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রী অমরেন্দ্র সিং বলেছিলেন, “স্রেফ রাজনৈতিক চাপে এই সিদ্ধান্ত নিল ট্রুডো সরকার । কানাডার প্রধানমন্ত্রী আগুন নিয়ে খেলছেন । তাঁর এই সিদ্ধান্ত ইন্দো-কানাডীয় সম্পর্কে প্রভাব তো ফেলবেই, ভারতের জাতীয় নিরাপত্তাকেও বিপন্ন করে তুলবে ।”

তবে সংখ্যালঘু সরকার তৈরি করে ফেললেও এখনও পূর্ণাঙ্গ মন্ত্রিসভার ঘোষণা করেননি ট্রুডো । মনে করা হচ্ছে, NDP এবং ব্লক কিউবিকোইসের সঙ্গে ইশুভিত্তিক সমর্থনের বিষয়টি চূড়ান্ত না হওয়াতেই এই বিলম্ব । ওয়াকিবহাল মহলের ধারণা, গত বারের মতো এ বারও অন্তত চার জন শিখ ক্যাবিনেট মন্ত্রী হতে পারেন ।

চলতি বছরের শুরুর দিকে কানাডা গোয়েন্দা বিভাগের একটি গোপন রিপোর্ট ফাঁস হয় । রিপোর্টে দাবি করা হয়, ভারত ও চিন কানাডার ভারতীয় ও চিনাদের সাহায্যে 21 অক্টোবরের নির্বাচনে প্রভাব খাটাতে চাইছে । যদিও এই রিপোর্ট বা প্রামাণ্য কোনও নথি কখনও প্রকাশ্যে আসেনি । এই বিষয়টি থেকেই ভারত ও কানাডার সম্পর্কের অবস্থার বিষয়ে কিছুটা আঁচ পাওয়া যায় । দুই দেশের মধ্যে কিছুটা উত্তপ্ত পরিস্থিতি থাকলেও দুই দেশের বাসিন্দাদের মধ্যে সম্পর্কটা বেশ ভালই ।

রাষ্ট্রদূত বিষ্ণু প্রকাশ

Tashkent (Uzbekistan), Nov 02 (ANI): Defence Minister Rajnath Singh attended the meeting of Council of Heads of Government (CHG), of Shanghai Cooperation Organisation (SCO). The meeting was held in Uzbekistan's Tashkent on November 02. It is the third CHG meeting of the SCO since India became the member in 2017.

Last Updated : Nov 2, 2019, 5:43 PM IST
ETV Bharat Logo

Copyright © 2025 Ushodaya Enterprises Pvt. Ltd., All Rights Reserved.