ETV Bharat / headlines

মাদ্রাসাকে ব্যবহার করে জঙ্গি তৈরির ছক ছিল মোমিনের

author img

By

Published : Nov 2, 2020, 9:57 PM IST

আজ NIA-র হাতে গ্রেপ্তার হওয়া আবদুল মোমিন মণ্ডলের বাড়ি থেকে বেশ কিছু কাগজপত্র এবং ডিভাইস উদ্ধার করেছেন তদন্তকারীরা। তার বাড়ি রানিনগর থানা এলাকার নাজরানা গ্রামে। 32 বছরের এই জঙ্গি রায়পুর দারুর হুদা ইসলামিয়া মাদ্রাসায় শিক্ষকতার কাজ করত।

nia_arrest_a_al_kaida_terrorist_from_murshidabad
গ্রেপ্তার জঙ্গি মোমিন

কলকাতা, 2 নভেম্বর : জামাতুল মুজাহিদিন ইন্ডিয়া এবং আল-কায়েদা যোগ ক্রমশ স্পষ্ট হচ্ছে। পশ্চিমবঙ্গের মাটিতে জঙ্গি কার্যকলাপ ছড়িয়ে দিতে জামাত কায়দাতুল উপমহাদেশ বেছে নিয়েছে জামাতুল মুজাহিদিন ইন্ডিয়ার পথ। অর্থাৎ ছাত্রাবস্থাতেই কিশোরদের মগজ ধোলাই। তার জন্য টার্গেট মাদ্রাসা।


আজ NIA-র হাতে গ্রেপ্তার হওয়া আবদুল মোমিন মণ্ডলের বাড়ি থেকে বেশ কিছু কাগজপত্র এবং ডিভাইস উদ্ধার করেছেন তদন্তকারীরা। তার বাড়ি রানিনগর থানা এলাকার নাজরানা গ্রামে। 32 বছরের এই জঙ্গি রায়পুর দারুর হুদা ইসলামিয়া মাদ্রাসায় শিক্ষকতার কাজ করত। মুর্শিদাবাদের আল-কায়দা মডিউলের সদস্যরা এই মাদ্রাসাতে বৈঠক করেছে বলে জানতে পেরেছে তদন্তকারীরা। আবদুল মোমিন এই জঙ্গি সংগঠনের জন্য ফান্ড জোগাড়ের কাজ করত। তবে তার মূল কাজ ছিল মাদ্রাসাকে ব্যবহার করে নতুন নিয়োগ করা।

সালটা 2014। সে বছর 2 অক্টোবর বর্ধমানের খাগড়াগড়ে একটি বাড়িতে ভয়াবহ বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। বিস্ফোরণের ঠিক আগে শাকিল আহমেদ, সুবহান সেখ এবং আব্দুল হাকিম হাসান চৌধুরীর বাড়ির দোতলায় বসে আইইডি তৈরি করছিল। হঠাৎ ঘটে ভয়াবহ বিস্ফোরণ। শাকিল এবং সুবহান ঘটনাস্থলেই মারা যায়। ঘটনার সময় ওই বাড়িতে ছিল দুজন মহিলা হালিমা বিবি ও রাজিয়া বিবি। তাদের সঙ্গেই ছিল দুই শিশু। সেই ঘটনায় রীতিমতো হইচই পড়ে যায়। ঘটনার পরেই গা ঢাকা দেয় সালাউদ্দিন ওরফে সালেহীন। জামাতুল মুজাহিদিন আমের সালাউদ্দিন এখনো পর্যন্ত অধরা। অনেকের সন্দেহ তিনি ঢাকা দিয়েছেন কাশ্মীরে। লক্ষ্যণীয়ভাবে সে বছরই আল কায়েদা প্রধান আল জাওয়াহিরি ভারতীয় উপমহাদেশে আল-কায়েদার উপস্থিতির কথা ঘোষণা করেন। তার পরের বছর অর্থাৎ 2015 সালে জাওয়াহিরি ঘোষণা করেন আল-কায়েদার উপমহাদেশ শাখার নতুন সংগঠনের নাম। সে বছরই তৈরি হয় কায়দাতুল জিহাদ।

2005 সালের 17 অগাস্ট। সিরিয়াল বিস্ফোরণে উঠে আসে সালাউদ্দিন ওরফে সালেহীন। পরে বাংলাদেশ পুলিশের হাতে ধরা পড়ে সে। দীর্ঘ বিচারপ্রক্রিয়ায় তিনটি মামলায় তার মৃত্যুদণ্ডের নির্দেশ দিয়েছিল বাংলাদেশ আদালত। 2014 সালের 23 ফেব্রুয়ারি ময়মনসিংহের ত্রিশালে পুলিশের প্রিজন ভ্যানে তাকে এবং কওসরকে নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল অন্য জেলে। সেই প্রিজনভ্যানে পুরোপুরি সিনেমার কায়দায় ঘিরে ধরে করা হয় আক্রমণ। জঙ্গিদের গুলিতে মৃত্যু হয় এক পুলিশকর্মীর। সালাউদ্দিন, কওসর এবং রাকিবুল হাসানকে ছিনিয়ে নিয়ে যায় জামাত জঙ্গিরা। পরে অবশ্য বাংলাদেশের মির্জাপুরে পুলিশের এনকাউন্টারে মৃত্যু হয় রাকিবুল হাসানের। কিন্তু সালাউদ্দিন এবং কওসর পালিয়ে আসে ভারতে। তারপরেই পশ্চিমবঙ্গের জঙ্গিবাদের ইতিহাস বইতে শুরু করে অন্য খাতে।

মুর্শিদাবাদে জামাত যোগের কথা প্রথম সামনে আসে খাগড়াগড় বিস্ফোরণের পর। জানা যায়, মুর্শিদাবাদ সীমান্ত দিয়েই বাংলাদেশের কুখ্যাত জঙ্গি সংগঠন জামাতুল মুজাহিদিন বাংলাদেশের সদস্যরা প্রথমবার ভারতে ঢোকে। হলি আর্টিজন মামলায় বাংলাদেশের ফাঁসির সাজা প্রাপ্ত হাত কাটা নাসিরুল্লাহ ঢুকেছিল লালগোলা সীমান্ত দিয়ে। তারপর সীমান্ত লাগোয়া মোকিমনগরে তৈরি করে ঘাঁটি। একটু একটু করে দখল করে নেয় মোকিমনগর মাদ্রাসা। সেখান থেকেই শুরু করে মগজধোলাইয়ের কাজ। আবার বেলডাঙ্গার বোরখা ঘর নামে পোশাকের দোকানের আড়ালে বোমা সরবরাহের ডেরাও তৈরি করা হয়েছিল। তার আড়ালে ছিল শাকিল গাজি। সেখানে যাতায়াত ছিল হাত কাটা নাসিরুল্লাহের। খাগড়াগড়কাণ্ড নিয়ে NIA র তদন্তে উঠে এসেছিল মুর্শিদাবাদের উমরপুরে জামাতুল মুজাহিদিন বাংলাদেশের সাইবার সেল তৈরির পরিকল্পনা করেছিল নাসিরুল্লাহ। তার জন্য অসম সরকারের তরফে ছাত্রদের দেওয়া ল্যাপটপ জোগাড় করেছিল সে। জোগাড় করেছিল বেশকয়েকজন সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ার কেও। খাগরাগড় বিস্ফোরণের পরেই ফের সামনে আসে সালাউদ্দিন এবং কওসরের নাম। জানা যায়, ফেব্রুয়ারি মাসে ভারতে ঢুকেই মাত্র আট মাসের মধ্যে মুর্শিদাবাদ, মালদা, বীরভূম নদিয়া, বর্ধমানে জঙ্গি জাল বিস্তার করে ফেলেছে সালাউদ্দিন। তখনো পর্যন্ত সে জামাতুল মুজাহিদিন বাংলাদেশের আমের(শীর্ষ নেতা)।

খাগড়াগড় বিস্ফোরণে প্রচুর ধরপাকড় হলেও সালাউদ্দিন ও কওসর ওরফে বোমারু মিজানদের টিকিটিও ছুঁতে পারেনি গোয়েন্দারা। এর মাঝে ওই জঙ্গি সংগঠনের হয়ে যায় আড়াআড়ি বিভাজন। রাগচটা স্বভাবের কওসর এবং হাতকাটা নাসিরুল্লাহ অন্তর্দ্বন্দ্ব এক্ষেত্রে অনুঘটকের ভূমিকা নিয়েছিল। পরে মতাদর্শের পার্থক্য দেখা যায়। হাত কাটা নাসিরুল্লা বিশ্বাস করত ধীরেসুস্থে নয়, জেহাদ করতে হবে দুরন্ত গতিতে। সালাউদ্দিনের বিশ্বাস আবার ছিল অন্য। এই সময় নাসিরুল্লাহর সঙ্গে বাংলাদেশের আরো কিছু জঙ্গি নেতার মিলে যায়। সে দেশে তৈরি হয়ে যায় নব্য জামাত বা নিও JMB। তারা ISIS এর মতাদর্শে বিশ্বাসী হয়ে পড়ে। শোনা যায়, আল-কায়দার হয়ে আফগান যুদ্ধ লড়ে আসা সালাউদ্দিন আঁকড়ে ধরেছিল লাদেনের পথ। আর সেই পথেই আল-কায়দার উপমহাদেশের সংগঠন কায়দাতুল জিহাদের ছত্রছায়ায় নিয়ে আসে জামাতুল মুজাহিদিনকে। এনআইএর হাতে মুর্শিদাবাদের গ্রেপ্তার হওয়া নাজমুস সাকিব, আবু সুফিয়ান, মইনুল মন্ডল, লিউইয়ান আহমেদ, আল মামুন কামাল, আতিউর রহমান আদতে জামাত জঙ্গি হিসেবেই প্রাথমিকভাবে মনে করা হচ্ছে। গোয়েন্দাদের ধারণা, তারা সালাউদ্দিনের হাত ধরেই কায়দা তুল জিহাদের খাতায় নাম লিখিয়েছে।

কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা বিভাগের রিপোর্ট বলছে, মুর্শিদাবাদের কিছু মাদ্রাসাকে ব্যবহার করছে জঙ্গি সংগঠন জামাতুল মুজাহিদিন ইন্ডিয়া। কিছুদিন আগে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র রাষ্ট্রমন্ত্রী জি কিষাণ রেড্ডি সংসদে দাঁড়িয়ে বলেন, মুর্শিদাবাদের বেশকিছু মাদ্রাসা হয়ে উঠেছে জঙ্গিদের আখড়া। তারা যুবকদের মগজ ধোলাই করছে। নতুন সদস্য নিয়োগ করছে। এমনকী এই বিষয়ে সুনির্দিষ্ট তথ্য দেওয়া হয় রাজ্য সরকারকেও। আজ মোমিনকে গ্রেপ্তারের পর সেই বিষয়টাই প্রতিষ্ঠিত হল।

কলকাতা, 2 নভেম্বর : জামাতুল মুজাহিদিন ইন্ডিয়া এবং আল-কায়েদা যোগ ক্রমশ স্পষ্ট হচ্ছে। পশ্চিমবঙ্গের মাটিতে জঙ্গি কার্যকলাপ ছড়িয়ে দিতে জামাত কায়দাতুল উপমহাদেশ বেছে নিয়েছে জামাতুল মুজাহিদিন ইন্ডিয়ার পথ। অর্থাৎ ছাত্রাবস্থাতেই কিশোরদের মগজ ধোলাই। তার জন্য টার্গেট মাদ্রাসা।


আজ NIA-র হাতে গ্রেপ্তার হওয়া আবদুল মোমিন মণ্ডলের বাড়ি থেকে বেশ কিছু কাগজপত্র এবং ডিভাইস উদ্ধার করেছেন তদন্তকারীরা। তার বাড়ি রানিনগর থানা এলাকার নাজরানা গ্রামে। 32 বছরের এই জঙ্গি রায়পুর দারুর হুদা ইসলামিয়া মাদ্রাসায় শিক্ষকতার কাজ করত। মুর্শিদাবাদের আল-কায়দা মডিউলের সদস্যরা এই মাদ্রাসাতে বৈঠক করেছে বলে জানতে পেরেছে তদন্তকারীরা। আবদুল মোমিন এই জঙ্গি সংগঠনের জন্য ফান্ড জোগাড়ের কাজ করত। তবে তার মূল কাজ ছিল মাদ্রাসাকে ব্যবহার করে নতুন নিয়োগ করা।

সালটা 2014। সে বছর 2 অক্টোবর বর্ধমানের খাগড়াগড়ে একটি বাড়িতে ভয়াবহ বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। বিস্ফোরণের ঠিক আগে শাকিল আহমেদ, সুবহান সেখ এবং আব্দুল হাকিম হাসান চৌধুরীর বাড়ির দোতলায় বসে আইইডি তৈরি করছিল। হঠাৎ ঘটে ভয়াবহ বিস্ফোরণ। শাকিল এবং সুবহান ঘটনাস্থলেই মারা যায়। ঘটনার সময় ওই বাড়িতে ছিল দুজন মহিলা হালিমা বিবি ও রাজিয়া বিবি। তাদের সঙ্গেই ছিল দুই শিশু। সেই ঘটনায় রীতিমতো হইচই পড়ে যায়। ঘটনার পরেই গা ঢাকা দেয় সালাউদ্দিন ওরফে সালেহীন। জামাতুল মুজাহিদিন আমের সালাউদ্দিন এখনো পর্যন্ত অধরা। অনেকের সন্দেহ তিনি ঢাকা দিয়েছেন কাশ্মীরে। লক্ষ্যণীয়ভাবে সে বছরই আল কায়েদা প্রধান আল জাওয়াহিরি ভারতীয় উপমহাদেশে আল-কায়েদার উপস্থিতির কথা ঘোষণা করেন। তার পরের বছর অর্থাৎ 2015 সালে জাওয়াহিরি ঘোষণা করেন আল-কায়েদার উপমহাদেশ শাখার নতুন সংগঠনের নাম। সে বছরই তৈরি হয় কায়দাতুল জিহাদ।

2005 সালের 17 অগাস্ট। সিরিয়াল বিস্ফোরণে উঠে আসে সালাউদ্দিন ওরফে সালেহীন। পরে বাংলাদেশ পুলিশের হাতে ধরা পড়ে সে। দীর্ঘ বিচারপ্রক্রিয়ায় তিনটি মামলায় তার মৃত্যুদণ্ডের নির্দেশ দিয়েছিল বাংলাদেশ আদালত। 2014 সালের 23 ফেব্রুয়ারি ময়মনসিংহের ত্রিশালে পুলিশের প্রিজন ভ্যানে তাকে এবং কওসরকে নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল অন্য জেলে। সেই প্রিজনভ্যানে পুরোপুরি সিনেমার কায়দায় ঘিরে ধরে করা হয় আক্রমণ। জঙ্গিদের গুলিতে মৃত্যু হয় এক পুলিশকর্মীর। সালাউদ্দিন, কওসর এবং রাকিবুল হাসানকে ছিনিয়ে নিয়ে যায় জামাত জঙ্গিরা। পরে অবশ্য বাংলাদেশের মির্জাপুরে পুলিশের এনকাউন্টারে মৃত্যু হয় রাকিবুল হাসানের। কিন্তু সালাউদ্দিন এবং কওসর পালিয়ে আসে ভারতে। তারপরেই পশ্চিমবঙ্গের জঙ্গিবাদের ইতিহাস বইতে শুরু করে অন্য খাতে।

মুর্শিদাবাদে জামাত যোগের কথা প্রথম সামনে আসে খাগড়াগড় বিস্ফোরণের পর। জানা যায়, মুর্শিদাবাদ সীমান্ত দিয়েই বাংলাদেশের কুখ্যাত জঙ্গি সংগঠন জামাতুল মুজাহিদিন বাংলাদেশের সদস্যরা প্রথমবার ভারতে ঢোকে। হলি আর্টিজন মামলায় বাংলাদেশের ফাঁসির সাজা প্রাপ্ত হাত কাটা নাসিরুল্লাহ ঢুকেছিল লালগোলা সীমান্ত দিয়ে। তারপর সীমান্ত লাগোয়া মোকিমনগরে তৈরি করে ঘাঁটি। একটু একটু করে দখল করে নেয় মোকিমনগর মাদ্রাসা। সেখান থেকেই শুরু করে মগজধোলাইয়ের কাজ। আবার বেলডাঙ্গার বোরখা ঘর নামে পোশাকের দোকানের আড়ালে বোমা সরবরাহের ডেরাও তৈরি করা হয়েছিল। তার আড়ালে ছিল শাকিল গাজি। সেখানে যাতায়াত ছিল হাত কাটা নাসিরুল্লাহের। খাগড়াগড়কাণ্ড নিয়ে NIA র তদন্তে উঠে এসেছিল মুর্শিদাবাদের উমরপুরে জামাতুল মুজাহিদিন বাংলাদেশের সাইবার সেল তৈরির পরিকল্পনা করেছিল নাসিরুল্লাহ। তার জন্য অসম সরকারের তরফে ছাত্রদের দেওয়া ল্যাপটপ জোগাড় করেছিল সে। জোগাড় করেছিল বেশকয়েকজন সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ার কেও। খাগরাগড় বিস্ফোরণের পরেই ফের সামনে আসে সালাউদ্দিন এবং কওসরের নাম। জানা যায়, ফেব্রুয়ারি মাসে ভারতে ঢুকেই মাত্র আট মাসের মধ্যে মুর্শিদাবাদ, মালদা, বীরভূম নদিয়া, বর্ধমানে জঙ্গি জাল বিস্তার করে ফেলেছে সালাউদ্দিন। তখনো পর্যন্ত সে জামাতুল মুজাহিদিন বাংলাদেশের আমের(শীর্ষ নেতা)।

খাগড়াগড় বিস্ফোরণে প্রচুর ধরপাকড় হলেও সালাউদ্দিন ও কওসর ওরফে বোমারু মিজানদের টিকিটিও ছুঁতে পারেনি গোয়েন্দারা। এর মাঝে ওই জঙ্গি সংগঠনের হয়ে যায় আড়াআড়ি বিভাজন। রাগচটা স্বভাবের কওসর এবং হাতকাটা নাসিরুল্লাহ অন্তর্দ্বন্দ্ব এক্ষেত্রে অনুঘটকের ভূমিকা নিয়েছিল। পরে মতাদর্শের পার্থক্য দেখা যায়। হাত কাটা নাসিরুল্লা বিশ্বাস করত ধীরেসুস্থে নয়, জেহাদ করতে হবে দুরন্ত গতিতে। সালাউদ্দিনের বিশ্বাস আবার ছিল অন্য। এই সময় নাসিরুল্লাহর সঙ্গে বাংলাদেশের আরো কিছু জঙ্গি নেতার মিলে যায়। সে দেশে তৈরি হয়ে যায় নব্য জামাত বা নিও JMB। তারা ISIS এর মতাদর্শে বিশ্বাসী হয়ে পড়ে। শোনা যায়, আল-কায়দার হয়ে আফগান যুদ্ধ লড়ে আসা সালাউদ্দিন আঁকড়ে ধরেছিল লাদেনের পথ। আর সেই পথেই আল-কায়দার উপমহাদেশের সংগঠন কায়দাতুল জিহাদের ছত্রছায়ায় নিয়ে আসে জামাতুল মুজাহিদিনকে। এনআইএর হাতে মুর্শিদাবাদের গ্রেপ্তার হওয়া নাজমুস সাকিব, আবু সুফিয়ান, মইনুল মন্ডল, লিউইয়ান আহমেদ, আল মামুন কামাল, আতিউর রহমান আদতে জামাত জঙ্গি হিসেবেই প্রাথমিকভাবে মনে করা হচ্ছে। গোয়েন্দাদের ধারণা, তারা সালাউদ্দিনের হাত ধরেই কায়দা তুল জিহাদের খাতায় নাম লিখিয়েছে।

কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা বিভাগের রিপোর্ট বলছে, মুর্শিদাবাদের কিছু মাদ্রাসাকে ব্যবহার করছে জঙ্গি সংগঠন জামাতুল মুজাহিদিন ইন্ডিয়া। কিছুদিন আগে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র রাষ্ট্রমন্ত্রী জি কিষাণ রেড্ডি সংসদে দাঁড়িয়ে বলেন, মুর্শিদাবাদের বেশকিছু মাদ্রাসা হয়ে উঠেছে জঙ্গিদের আখড়া। তারা যুবকদের মগজ ধোলাই করছে। নতুন সদস্য নিয়োগ করছে। এমনকী এই বিষয়ে সুনির্দিষ্ট তথ্য দেওয়া হয় রাজ্য সরকারকেও। আজ মোমিনকে গ্রেপ্তারের পর সেই বিষয়টাই প্রতিষ্ঠিত হল।

ETV Bharat Logo

Copyright © 2024 Ushodaya Enterprises Pvt. Ltd., All Rights Reserved.