হায়দরাবাদ, 27 এপ্রিল: মিঠুন চক্রবর্তীর ছোট ছেলে নমশি চক্রবর্তীও পা রাখতে চলেছেন বলিউডে ৷ রাজকুমার সন্তোষীর হাত ধরে ফিল্মি দুনিয়ার যাত্রা শুরু করতে চলেছেন তিনি ৷ এর আগে মিঠুনের বড় ছেলে মিমোও বিনোদন জগতে তাঁর যাত্রা শুরু করেছিলেন ৷ তবে তাঁর ছবি খুব বেশি দর্শকের মন জয় করতে পারেনি ৷ এবার যাত্রা শুরু হতে চলেছেন নমশির ৷ রাজকুমারের 'ব্যাড বয়' ছবিতে তিনি জুটি বাঁধতে চলেছেন আমরিনের সঙ্গে ৷ ছবিটি মুক্তি পেতে চলেছে আগামী 28 এপ্রিল ৷ স্বাভাবিকভাবেই মিঠুন পুত্রের ইন্ডাস্ট্রিতে পা রাখা নিয়ে শুরু হয়েছিল স্বজনপোষণের গুঞ্জন ৷ এবার সেই সবকিছু নিয়েই তিনি মুখ খুললেন ইটিভি ভারতের কাছে ৷
প্রশ্ন: হঠাৎ ছবির জগতে আসার সিদ্ধান্ত কেন নিলেন?
উত্তর: সত্যি কথা বলতে কি, আমি কারও কোনও সাহায্য ছাড়াই এই ছবিটি পেয়েছি । একদিন আমাকে আমার বান্ধবী একটি প্রশ্ন করেছিল, তুমি আমাকে কি হিসেবে প্রপোজ করতে চাও মিঠুন চক্রবর্তীর ছেলে হিসাবে না কি নমশি চক্রবর্তী হিসেবে? সেটাই আমার চোখ খুলে দেয় ৷ আমার বয়স যখন 24 তখনই আমি ঠিক করে নিয়েছিলাম আমি শুধু মিঠুন চক্রবর্তীর ছেলে হয়ে বেঁচে থাকতে চাই না ৷ আমি 365 দিনের মধ্য়ে 364 দিন অডিশন দিয়েছি ৷ শুধু জন্মদিনটাই বাদ দিয়েছিলাম ৷ এর মাঝে আমি স্ট্যান্ডআপ কমেডি শোও করতাম ৷ কমেডি মুম্বাইয়ের জন্য তিন বছর লাইভ শো করেছি এবং তাও কোনও স্ক্রিপ্ট ছাড়াই । সেটাই আমার কমিক টাইমিং ভালো করতে সাহায্য় করেছে ৷ তবে ছবিতে কাজ পাওয়ার চেষ্টা তো চলছিলই ৷
প্রশ্ন: 'ব্যাড বয়' ছবির অফার কীভাবে এল আপনার কাছে যদি একটু বলেন?
উত্তর: এরই মধ্য়ে একদিন আমি প্রযোজক সাজিদ কুরেশির অফিসে যাই ৷ তিনি জিজ্ঞাসা করলেন এখন কী করছ? আমি বললাম, ছবিতে কাজ খুঁজছি । তিনি বললেন, তুমি কি অ্যাকশন ফিল্ম করতে চাও? আমি সঙ্গে সঙ্গে বললাম, না আমি কমেডি ছবি করতে চাই ৷ সকলেই বেশ অবাক হয়েছিলেন কারণ প্রথমেই কমেডি ছবি করা কেরিয়ারের জন্য় বেশ ঝুঁকিপূর্ণ হতে পারে ৷ অনেক অভিনেতাই প্রতিষ্ঠিত হওয়ার পর কমেডি ছবির দিকে ঝুঁকতে চান ৷ কিন্তু আমি বললাম না আমি কমেডিই করব ৷ তাতে তিনি বললেন, ঠিক আছে, আমি তোমাকে ফোন করব । কিন্তু সমস্ত দিক থেকেই এই বাক্যটি বেশ ঝুঁকিপূর্ণ ৷ কারণ ইন্ডাস্ট্রিতে 99% ক্ষেত্রে এরপর আর কোনও কলই আসেনা ৷
প্রশ্ন: শেষমেশ কবে এল এই কাঙ্খিত সুযোগ?
উত্তর: সাজিদ কুরেশির সঙ্গে দেখা করে ফেরার কয়েকদিন পরই ফোন এল ৷ তিনি জানালেন, একজন পরিচালক আমার সঙ্গে দেখা করতে চান ৷ পরে জানতে পারি তিনি রাজকুমার সন্তোষী। আমি তো প্রথমে বিশ্বাসই করিনি। পরের দিন আমার প্রথম তাঁর সঙ্গে দেখা হল। তিনি আমার স্ক্রিন টেস্ট নিলেন ৷ চুক্তিতে সই করার পর বাবা মাকে ফোন করে খবরটা দিলাম ৷ বাবা বললেন, তুমি খুব বড় পরিচালক পেয়েছ ৷ সুযোগটা কাজে লাগাও ৷ তবে বাবা কখনও নিজে থেকে কোনও পরিচালক বা প্রযোজককে আমার সুপারিশ করতে ফোন করেননি ৷
প্রশ্ন: নেপোটিজম এবং তা নিয়ে সমালোচনা তো বারবার আসে ৷ আসে বাবার সঙ্গে তুলনাও ৷ আচ্ছা এই জগতে আসার পিছনে পরিবারের সমর্থন কতখানি ছিল?
উত্তর: পরিবারের সমর্থন অবশ্য়ই আছে । তবে সেটা মানসিক ৷ আমার বাবা-মা ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রিতে বড় নাম। কিন্তু তারা কখনও আমার নাম কাউকে সুপারিশ করেনি। আমি কখনওই 'মিঠুন 2.0' হতে চাই না । আমি আমার নিজস্ব স্বতন্ত্র পরিচয় তৈরি করতে চাই ৷ তার জন্য আমি যে কোনও প্রচেষ্টা করতে তৈরি । রণবীর কাপুর আজ বিশাল তারকা ৷ আজ তিনি আর শুধু ঋষি কাপুরের ছেলে হিসেবে পরিচিত নন । আলিয়া ভাটও তাঁর বাবার নামেও পরিচিত নন। টাইগার শ্রফ নিজের একটা আলাদা পরিচয় তৈরি করেছেন। আমিও সেটাই চাই ৷
প্রশ্ন: বাবা মিঠুন চক্রবর্তী আপনাকে কতখানি অনুপ্রাণিত করে?
উত্তর: বাবা শূণ্য থেকে জীবন শুরু করেছেন। এটাই আমার অনুপ্রেরণা । আমি কলকাতায় গিয়েছিলাম বাবার পুরনো বাড়িতে বেড়াতে ৷ সেই গলিটা এত নোংরা যে বলার নয় ৷ একটা ময়লা আয়না ছিল বাড়িটায় ৷ আমি ওখানে পাঁচ মিনিটের বেশি থাকতে পারিনি । আমি বাংলোতে জন্মেছি, আমি মার্সিডিজ গাড়িতে ঘুরেছি ।
প্রশ্ন: আপনার বাবা বাংলা, হিন্দি বিভিন্ন ভাষায় কাজ করেছেন? আপনি শুরু করছেন হিন্দি দিয়ে আপনিও কি অন্য়ান্য ভাষায় কাজ করতে আগ্রহী?
উত্তর: সিনেমার একটা নিজস্ব ভাষা আছে ৷ একজন ভালো অভিনেতা যে কোনও ভাষার ছবিতে তাঁর দক্ষতাকে তুলে ধরতে পারেন ৷ আমি ভালো চরিত্রে অভিনয় করতে চাই ৷ তার জন্য ভাষা অবশ্যই কোনো বাধা হবে না । আমার বাবাও হিন্দি ও বাংলা ছবিতে অভিনয় করে জাতীয় পুরস্কার পেয়েছেন ।
আরও পড়ুন: ষষ্ঠ দিনেই বক্স অফিসে বড় ধাক্কা খেল 'কিসি কা ভাই কিসি কি জান'