মালদা, 30 মার্চ : মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশের পর নড়েচড়ে বসেছে গোটা রাজ্যের পুলিশ । প্রতিদিনই একাধিক থানা এলাকা থেকে উদ্ধার হচ্ছে আগ্নেয়াস্ত্র এবং বোমা । পুলিশের হাতে ধরাও পড়ছে দুষ্কৃতীরা । মালদাও তার ব্যতিক্রম নয় । কিন্তু কেঁচো খুঁড়তে যে কেউটে বেরিয়ে আসবে, তা ভাবতে পারেনি কেউ । এর আগে কালিয়াচক, বৈষ্ণবনগর এলাকায় বেআইনি অস্ত্র তৈরির কারখানার খোঁজ মেলে ৷ এবার হদিস মিলল কার্তুজ কারখানার (1 Arrested in Malda Arms Recovery Case) । চাঁচল 1 নম্বর ব্লকের অলিহণ্ডা গ্রাম পঞ্চায়েতের দেবীগঞ্জ গ্রামে সেই কার্তুজ কারখানা থেকে একাধিক সামগ্রী বাজেয়াপ্ত করেছে পুলিশ । গ্রেফতার করা হয়েছে সন্তোষ কর্মকার (51) নামে এক কার্তুজ তৈরির কারিগরকেও । সাতদিনের পুলিশি হেফাজতের আবেদন জানিয়ে তাকে বুধবার চাঁচল মহকুমা আদালতে পেশ করা হয়েছে ।
জানা গিয়েছে, ধৃত সন্তোষ কর্মকারের বাড়ি দেবীগঞ্জ গ্রামেই ৷ পেশায় ভিনরাজ্যের শ্রমিক । মাস তিনেক আগে ভিনরাজ্য থেকে ঘরে ফিরে এসেছে । বাড়িতেই সে কার্তুজ তৈরি করা শুরু করেছিল । গোপন সূত্রে খবর পেয়ে চাঁচল থানার পুলিশ মঙ্গলবার রাতেই তার বাড়িতে হানা দেয় । বাজেয়াপ্ত করা হয় 38টি কার্তুজের খোল, দু'টি কার্তুজ, একটি পাইপগান-সহ কার্তুজ তৈরির বিভিন্ন সরঞ্জাম । এরপরই গ্রেফতার করা হয় সন্তোষকে । রাতভর তাকে জেরা করেন পুলিশকর্তারা ।
সন্তোষের দাদা ভরত কর্মকার পাশেই থাকেন । তিনি বলেন, "গতকাল রাতে পুলিশ এসেছিল । পুলিশকর্মীরা আমাকে কিছু বলেননি । তাঁরা ভাইয়ের বাড়িতে ঢুকে তল্লাশি চালান। পরে শুনি ওর বাড়ি থেকে কার্তুজ তৈরির সব জিনিসপত্র পাওয়া গিয়েছে । ভাইকে দেখে আমার আগে কোনও সন্দেহও হয়নি । বাড়িতে তেমন লোকজনও আসত না । বাড়ি থেকে কোনও শব্দও শুনতে পাওয়া যেত না । ভাই ভিনরাজ্যে শ্রমিকের কাজ করে । প্রায় আড়াই মাস আগে বাড়ি ফিরে এসেছিল ।"
চাঁচল মহকুমা পুলিশ আধিকারিক শুভেন্দু মণ্ডল বলেন, "কিছুদিন ধরেই সন্তোষ কর্মকারের সন্দেহজনক গতিবিধির খবর পাচ্ছিলাম । অবশেষে গতকাল রাতে তার বাড়িতে অভিযান চালানো হয় । তার বাড়ি থেকে বেশ কিছু কার্তুজের মাথার অংশ পাওয়া যায় । আমাদের সন্দেহ, এসব দিয়ে বুলেট তৈরি করা হত । সঙ্গে দু'টি তাজা কার্তুজ এবং একটি পাইপগানও পাওয়া গিয়েছে । তার থেকে কামারের কিছু যন্ত্রপাতিও বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে । ওর সঙ্গে যে অস্ত্র কারবারের যোগাযোগ রয়েছে তা নিয়ে আমরা নিশ্চিত । সন্তোষের সঙ্গে এই চক্রে আর কারা জড়িত রয়েছে, তা দেখা হচ্ছে । পুলিশি হেফাজতের আবেদন জানিয়ে আজ আদালতে পেশ করা হয়েছে । এই ঘটনায় আমাদের তদন্ত জারি রয়েছে ।"