মালদা, 2 মে : রাজস্থানের কোটা থেকে ঘরে ফিরল মালদার পড়ুয়ারা ৷ আজ ভোর থেকে দফায় দফায় জেলায় ঢুকতে শুরু করেছে তাঁরা ৷ তবে ঘরে ফেরার জন্য এখনও তাঁদের কৃচ্ছসাধন শেষ হয়নি ৷ বর্তমানে মালদা শহরের গৌড়কন্যা বাস টার্মিনাসে তাদের সবার শারীরিক পরীক্ষা চলছে ৷ চলছে লালারসের নমুনা সংগ্রহের কাজও ৷ শুধু পড়ুয়ারাই নয়, লালারস সংগ্রহ করা হচ্ছে তাঁদের সঙ্গে থাকা অভিভাবকদের থেকেও ৷ নিজে বসে থেকে সেই কাজের তদারকি করছেন অতিরিক্ত জেলাশাসক (উন্নয়ন) সহ একাধিক প্রশাসনিক কর্তা ৷
কোরোনা মোকাবিলায় দেশ জুড়ে লকডাউন ঘোষণার পর রাজস্থানের কোটায় পড়াশোনা করা রাজ্যের কয়েক হাজার পড়ুয়া প্রবল সমস্যায় পড়ে গিয়েছিলেন ৷ পড়ুয়রা বিভিন্ন প্রবেশিকা পরীক্ষার ট্রেনিং নিতে ভিনরাজ্যে গিয়েছিলেন ৷ লকডাউনে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যাওয়ায় তাঁরা সেখানেই আটকে পড়েন ৷ একইসঙ্গে আটকে পড়েন অভিভাবকদের একাংশও ৷ ঘরে ফেরার জন্য পড়ুয়ারা মুখ্যমন্ত্রীকে আবেদন জানান ৷ তাঁদের আবেদনে সাড়া দেন মুখ্যমন্ত্রী ৷ রাজস্থান থেকে সড়কপথে এই রাজ্যের পড়ুয়াদের ঘরে ফেরানোর ব্যবস্থা করে রাজ্য সরকার ৷ গতকাল থেকেই এই পড়ুয়ারা রাজ্যে ফিরতে শুরু করেছে ৷ শিলিগুড়ি হয়ে আজ ভোর থেকে মালদার পড়ুয়াদের নিয়ে ফিরতে শুরু করেছে নয়টি বাস ৷ ইতিমধ্যে সাতটি বাস গৌড়কন্যা বাস টার্মিনাসে এসে পৌঁছেছে ৷ বাকি দুটি বাসও খুব তাড়াতাড়ি শহরে ঢুকে যাবে বলে জানা যাচ্ছে ৷ ভোর থেকেই এই পড়ুয়া ও তাঁদের অভিভাবকদের শারীরিক পরীক্ষা করা হচ্ছে ৷ চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মীরা সবার লালারসের নমুনাও সংগ্রহ করছেন ৷ খাবার দেওয়ার ব্যবস্থাও করেছে প্রশাসন ৷
ঘরে ফেরা মালদা শহরের রেল কলোনির বাসিন্দা আশুতোষ ঝা বলেন, “লকডাউনের মধ্যে ভিনরাজ্যে আটকে পড়ে সমস্যায় ছিলাম ৷ হস্টেলে থাকতে পারলেও ঠিকমতো খাবার পাচ্ছিলাম না ৷ তাই আমরা মুখ্যমন্ত্রীর কাছে ঘরে ফেরার আবেদন জানাই ৷ তিনি আমাদের আবেদনে সাড়া দিয়েছেন ৷ আমরা খুশি ৷” আশুতোষের সঙ্গে সহমত অঙ্কিত তিওয়ারি , কালিয়াচকের শাহবাজপুরের ডলি মণ্ডল, হরিশচন্দ্রপুরের মিলকান করিমরা ৷ বিষয়টি নিয়ে গাজোলের রবীন্দ্রপল্লির অনুপম চৌধুরী বলেন, “তিনদিন বাসে আসতে মাথা খারাপ হয়ে গিয়েছে ৷ দুপুরের খাবার ভোরে মিলেছে ৷ বৃষ্টির জল বাসের ছাদ চুঁইয়ে পড়েছে ৷ ভিজে গেছে আমাদের ব্যাগ-পত্র ৷ তবে, সব বাধাকে ছাপিয়ে গেছে শুধু বাড়ি ফেরার আনন্দ ৷ রাজ্য সরকারকে এই ব্যবস্থা করার জন্য ধন্যবাদ ৷”
উল্লেখ্য, বাস টার্মিনাসে উপস্থিত অতিরিক্ত জেলাশাসক (উন্নয়ন) পালদেন শেরপা বলেন, “পড়ুয়া ও অভিভাবক মিলে এই জেলার ২৬৮ জন আজ জেলায় ফিরে এসেছে ৷ নয়টি বাসে সবাইকে ফিরিয়ে আনা হয়েছে ৷ বাসগুলি বিহার হয়ে পূর্ণিয়া রুট ধরে প্রথমে শিলিগুড়ি গিয়েছিল ৷ সেখান থেকে জেলায় আসছে ৷ এখানে রাজস্থান থেকে ফিরে আসা সবার লালারসের নমুনা সংগ্রহ করা হচ্ছে ৷ প্রত্যেককে বাধ্যতামূলকভাবে ১৪ দিন হোম কোয়ারানটিনে থাকতে হবে ৷”