মালদা, 24 সেপ্টেম্বর: প্রকৃতির রোষের কাছে নত দেবী দুর্গাও (Durga Puja2022) ৷ নদী ভাঙন রেয়াত করেনি মৃন্ময়ীকেও ৷ গঙ্গার রোষে তলিয়ে গিয়েছে দেবীর মন্দির ৷ সন্তান-সন্ততিদের নিয়ে সঙ্গে বারবার ছিন্নমূল হয়েছেন দুর্গা ৷ পরিবর্তন করেছেন নিজের স্থান ৷ এই নিয়ে চারবার গঙ্গায় তলিয়ে গিয়েছে তাঁর মন্দির ৷ পঞ্চমবারের জন্য যেখানে ঠাঁই নিয়েছেন, সেটাও গঙ্গার ধারেই ৷ কবে যে এই মন্দির ছেড়ে তাঁকে অন্য জায়গায় চলে যেতে হবে, কেউ জানে না ৷ তবে এবার জোতপাট্টায় নির্মীয়মাণ মন্দিরে দেবীর পুজো করছেন ভক্তরা ৷
এই মাতৃবন্দনা প্রথমে শুরু হয়েছিল ডাল্লুটোলার দরবারিটোলা গ্রামে ৷ গঙ্গার গ্রাসে সেই মন্দির চলে যাওয়ার পর পুজো চলে যায় বেচুটোলায় ৷ ক’বছর পর সেই মন্দিরও চলে যায় গঙ্গাগর্ভে ৷ নতুন মন্দির তৈরি হয় হাড্ডাটোলা গ্রামে (Mobile Durga Puja)৷ এরপর সোনাপুর হয়ে জোতপাট্টায় রাস্তার ধারে চলে আসতে বাধ্য হয়েছেন জগজ্জননী ৷ সেখানে রাস্তার ধারে তৈরি হচ্ছে দুর্গার নতুন মন্দির ৷ এতবার স্থান পরিবর্তন করায় এই এই পুজো ভ্রাম্যমান পুজোয় পরিণত হয়েছে ৷ জোতপাট্টা গ্রামটি মালদা জেলার ভাঙন প্রবণিত মানিকচক ব্লকে ৷ কয়েকদিন আগেও ফুঁসে ওঠা গঙ্গার জল ঢুকে পড়েছিল নতুন এই মন্দিরে ৷ হঠাৎ করেই জল কমতে শুরু করে পুণ্যতোয়ার ৷ প্রতি ঘণ্টায় কয়েক ইঞ্চি জল কমতে কমতে ক’দিনের মধ্যে গঙ্গা ফিরে গিয়েছে তার মূল কেন্দ্রে ৷ বিপদ যে একেবারেই কেটে গিয়েছে, তা বলা যায় না ৷ তবে দুর্গাপুজোর মধ্যে সেই জল আর মন্দির পর্যন্ত ফিরে আসবে না বলে নিশ্চিত সবাই ৷
আরও পড়ুন: এবার পুজোয় দৃষ্টিহীন ও বিশেষভাবে সক্ষমদের জন্য থাকবে ব্রেইল ডিসপ্লে স্ট্যান্ড
পুজো কমিটির সভাপতি গয়ানাথ মণ্ডল বেশ প্রবীণ ৷ চোখের সামনে গঙ্গার অনেক খেলার সাক্ষী তিনি ৷ এই প্রসঙ্গেই তিনি বলেন, “আমরা 16টি মৌজার মানুষ চাঁদা দিয়ে এই পুজো করি ৷ গঙ্গার দাপটে চারবার পুজোর জায়গা সরিয়ে নিতে হয়েছে ৷ 2016 থেকে জোতপাট্টায় পুজো করছি ৷ গঙ্গার রোষ কবে কমবে তা মা গঙ্গাই জানেন ৷ এখনও এখানে ভাঙন চলছে ৷ পুজোর জন্য আমরা রাজ্য সরকারের অনুদান পাই ৷ এবারও পাচ্ছি ৷ মহাষষ্ঠী থেকে মায়ের পুজো শুরু হবে ৷ এখানে ছাগবলির প্রচলন নেই ৷ তবে কুমড়ো বলি হয় ৷’’