ETV Bharat / city

উন্নয়নের চাকায় পিষ্ট ইতিহাস, ধ্বংসের মুখে প্রাচীন সমাধিক্ষেত্র - নীলকর সাহেবদের সমাধিস্থান

মালদা মেডিকেলে রয়েছে নীলকর সাহেবদের সমাধিস্থান । এই সমাধিস্থান 200 বছরেরও বেশি পুরোনো । জেলা হাসপাতালে তকমা ছেড়ে মালদা মেডিকেল তৈরির সময় থেকেই উন্নয়ন গ্রাস করেছে এই সমাধিস্থানটি । বর্তমানে এর অবস্থা অত্যন্ত করুণ । খুলে পড়ছে প্রাচীন ইটের তৈরি সমাধিক্ষেত্র ।

নীলকর সাহেবদের সমাধি
author img

By

Published : Aug 1, 2019, 11:37 PM IST

মালদা, 1 অগাস্ট : উন্নয়নের চাকায় পিষ্ট হচ্ছে ইতিহাস । সেই ছবি ধরা পড়েছে মালদা মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল চত্বরে । যদিও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, ইতিহাসকে সুরক্ষিত রাখতে সমস্ত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে । তবে আদৌ সেখানে ইতিহাস সুরক্ষিত থাকবে কি না তা নিয়ে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে ।

ইতিহাস সমৃদ্ধ জেলা মালদা । মালদা শহর অন্যতম প্রাচীন শহর হিসাবেই রাজ্যে পরিচিত । এই শহরের বিভিন্ন জায়গায় ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে ইতিহাসের একাধিক নিদর্শন । মালদা মেডিকেলেও তার নিদর্শন রয়েছে । এখানে রয়েছে নীলকর সাহেবদের সমাধিস্থান । এই সমাধিস্থান 200 বছরেরও বেশি পুরোনো । জেলা হাসপাতালে তকমা ছেড়ে মালদা মেডিকেল তৈরির সময় থেকেই উন্নয়ন গ্রাস করেছে এই সমাধিস্থানটি । বর্তমানে এর অবস্থা অত্যন্ত করুণ । খুলে পড়ছে প্রাচীন ইটের তৈরি সমাধিক্ষেত্র । ঝাঁ চকচকে মেডিকেল কলেজ চত্বরে এমন একটি পুরোনো স্থাপত্য হয়তো বেমানান মনে হয়েছে কর্তৃপক্ষের । তাই সেই সমাধিস্থানটিকে আড়াল করার চেষ্টা হয়েছে পুরোদমে । সমাধিস্থানটির সামনেই তৈরি করা হয়েছে রোগীর পরিবারের লোকজনদের বসার জায়গা । তবে সেখানে শুধু বসাই নয়, রান্নাও চলছে পুরোদমে ।
জেলার ইতিহাস থেকে জানা যাচ্ছে, 1800 শতকে ইংরেজবাজারকে নীল ব্যবসার অন্যতম কেন্দ্র হিসাবে গড়ে তুলে ছিল ব্রিটিশ বণিকরা । বর্তমানে ইংরেজবাজার থানা ছিল সেই সময়ের নীলকুঠি । তখন নীলকর সাহেবদের বাসস্থান ছিল অধুনা ফোয়ারা মোড়ের কাছে । সেই সময় শহর এলাকায় ম্যালেরিয়ার উপদ্রব ছিল । ম্যালেরিয়ায় আক্রান্ত হয়েছিলেন অনেক নীলকর সাহেব ও তাঁদের পরিবারের লোকজন । তাঁদের অনেকের মৃত্যুও হয়েছিল ম্যালেরিয়ায় । তাঁদের মৃতদেহের সমাধিস্থান হিসেবে বেছে নেওয়া হয়েছিল বর্তমান মেডিকেল চত্বর । এখানে এখনও চারজন সাহেবের সমাধি কিছুটা অক্ষত রয়েছে । এর মধ্যে উইলিয়াম ব্রাউনের সমাধিটি 1800 সালের । এর ফলকটি সবচেয়ে পুরোনো । বাকি তিনটির মধ্যে দুটি ফলকের লেখা এখনও পরিষ্কার পড়া যায় । সেই দুটি সমাধি হল 1819 সালে মৃত ডেভিড ব্রাউন ও 1834 সালে প্রয়াত রোনাল্ড টেলর । চতুর্থ সমাধিটির কার সেটা জানা যায়নি । সংস্কারের অভাবে এখন সেই সমাধিক্ষেত্রে গজিয়ে উঠেছে গাছপালা । কোনও এক সময় সমাধিক্ষেত্রটি বাঁধিয়ে দেওয়া হলেও দীর্ঘদিন ধরে তার কোনও সাফাই হয়নি ।

এনিয়ে প্রশ্ন করা হলে মালদা মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের ডেপুটি সুপার জ্যোতিষচন্দ্র দাস বলেন, "ওই সমাধিক্ষেত্রটি দেখাশোনার দায়িত্বে রয়েছে কলকাতার পৌর বিষয়ক বিভাগ । সমাধিক্ষেত্রটি 200 বছরেরও বেশি পুরোনো । তার একটি ঐতিহাসিক মূল্য রয়েছে । তাই আমরা সমাধিক্ষেত্রটিকে ঘিরে সৌন্দর্যায়ন প্রকল্পে বসার জায়গা তৈরি করেছি । সংশ্লিষ্ট বিভাগ যদি সমাধিক্ষেত্রটি রক্ষা করতে কোনও উদ্যোগ না নেয় তবে আমরাই ওই ইতিহাসকে বাঁচানোর ব্যবস্থা করব । রোগী কল্যাণ সমিতির আগামী বৈঠকে আমরা সমাধিক্ষেত্রটি নিয়ে আলোচনা করব ।"

মালদা, 1 অগাস্ট : উন্নয়নের চাকায় পিষ্ট হচ্ছে ইতিহাস । সেই ছবি ধরা পড়েছে মালদা মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল চত্বরে । যদিও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, ইতিহাসকে সুরক্ষিত রাখতে সমস্ত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে । তবে আদৌ সেখানে ইতিহাস সুরক্ষিত থাকবে কি না তা নিয়ে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে ।

ইতিহাস সমৃদ্ধ জেলা মালদা । মালদা শহর অন্যতম প্রাচীন শহর হিসাবেই রাজ্যে পরিচিত । এই শহরের বিভিন্ন জায়গায় ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে ইতিহাসের একাধিক নিদর্শন । মালদা মেডিকেলেও তার নিদর্শন রয়েছে । এখানে রয়েছে নীলকর সাহেবদের সমাধিস্থান । এই সমাধিস্থান 200 বছরেরও বেশি পুরোনো । জেলা হাসপাতালে তকমা ছেড়ে মালদা মেডিকেল তৈরির সময় থেকেই উন্নয়ন গ্রাস করেছে এই সমাধিস্থানটি । বর্তমানে এর অবস্থা অত্যন্ত করুণ । খুলে পড়ছে প্রাচীন ইটের তৈরি সমাধিক্ষেত্র । ঝাঁ চকচকে মেডিকেল কলেজ চত্বরে এমন একটি পুরোনো স্থাপত্য হয়তো বেমানান মনে হয়েছে কর্তৃপক্ষের । তাই সেই সমাধিস্থানটিকে আড়াল করার চেষ্টা হয়েছে পুরোদমে । সমাধিস্থানটির সামনেই তৈরি করা হয়েছে রোগীর পরিবারের লোকজনদের বসার জায়গা । তবে সেখানে শুধু বসাই নয়, রান্নাও চলছে পুরোদমে ।
জেলার ইতিহাস থেকে জানা যাচ্ছে, 1800 শতকে ইংরেজবাজারকে নীল ব্যবসার অন্যতম কেন্দ্র হিসাবে গড়ে তুলে ছিল ব্রিটিশ বণিকরা । বর্তমানে ইংরেজবাজার থানা ছিল সেই সময়ের নীলকুঠি । তখন নীলকর সাহেবদের বাসস্থান ছিল অধুনা ফোয়ারা মোড়ের কাছে । সেই সময় শহর এলাকায় ম্যালেরিয়ার উপদ্রব ছিল । ম্যালেরিয়ায় আক্রান্ত হয়েছিলেন অনেক নীলকর সাহেব ও তাঁদের পরিবারের লোকজন । তাঁদের অনেকের মৃত্যুও হয়েছিল ম্যালেরিয়ায় । তাঁদের মৃতদেহের সমাধিস্থান হিসেবে বেছে নেওয়া হয়েছিল বর্তমান মেডিকেল চত্বর । এখানে এখনও চারজন সাহেবের সমাধি কিছুটা অক্ষত রয়েছে । এর মধ্যে উইলিয়াম ব্রাউনের সমাধিটি 1800 সালের । এর ফলকটি সবচেয়ে পুরোনো । বাকি তিনটির মধ্যে দুটি ফলকের লেখা এখনও পরিষ্কার পড়া যায় । সেই দুটি সমাধি হল 1819 সালে মৃত ডেভিড ব্রাউন ও 1834 সালে প্রয়াত রোনাল্ড টেলর । চতুর্থ সমাধিটির কার সেটা জানা যায়নি । সংস্কারের অভাবে এখন সেই সমাধিক্ষেত্রে গজিয়ে উঠেছে গাছপালা । কোনও এক সময় সমাধিক্ষেত্রটি বাঁধিয়ে দেওয়া হলেও দীর্ঘদিন ধরে তার কোনও সাফাই হয়নি ।

এনিয়ে প্রশ্ন করা হলে মালদা মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের ডেপুটি সুপার জ্যোতিষচন্দ্র দাস বলেন, "ওই সমাধিক্ষেত্রটি দেখাশোনার দায়িত্বে রয়েছে কলকাতার পৌর বিষয়ক বিভাগ । সমাধিক্ষেত্রটি 200 বছরেরও বেশি পুরোনো । তার একটি ঐতিহাসিক মূল্য রয়েছে । তাই আমরা সমাধিক্ষেত্রটিকে ঘিরে সৌন্দর্যায়ন প্রকল্পে বসার জায়গা তৈরি করেছি । সংশ্লিষ্ট বিভাগ যদি সমাধিক্ষেত্রটি রক্ষা করতে কোনও উদ্যোগ না নেয় তবে আমরাই ওই ইতিহাসকে বাঁচানোর ব্যবস্থা করব । রোগী কল্যাণ সমিতির আগামী বৈঠকে আমরা সমাধিক্ষেত্রটি নিয়ে আলোচনা করব ।"

Intro:মালদা, 31 জুলাই : উন্নয়নের চাকায় পিষ্ট হচ্ছে ইতিহাস। সেই ছবি ধরা পড়েছে মালদা মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল চত্বরে। যদিও মেডিকেল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, ইতিহাসকে সুরক্ষিত রাখতে সমস্ত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে। তবে আদৌ সেখানে ইতিহাস সুরক্ষিত থাকবে কিনা তা নিয়ে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে।


Body:ইতিহাসের জেলা মালদা। মালদা শহর অন্যতম প্রাচীন শহর হিসাবেই রাজ্যে পরিচিত। এই শহরের বিভিন্ন জায়গায় ছড়িয়ে রয়েছে ইতিহাসের একাধিক নিদর্শন। মালদা মেডিকেলেও তার নিদর্শন রয়েছে। এখানে রয়েছে নীলকর সাহেবদের সমাধিস্থল। এই সমাধিস্থল 200 বছরেরও বেশি পুরোনো। জেলা হাসপাতালে তকমা ছেড়ে মালদা মেডিকেল তৈরির সময় থেকেই উন্নয়ন গ্রাস করেছে এই সমাধিস্থলটিকে। বর্তমানে এর অবস্থা অত্যন্ত করুণ। খুলে পড়ছে প্রাচীন ইটের তৈরি সমাধিক্ষেত্র। ঝাঁ চকচকে মেডিকেল চত্বরে এমন একটি পুরোনো স্থাপত্য হয়তো বেমানান মনে হয়েছে কর্তৃপক্ষের। তাই সেই সমাধিস্থলটিকে আড়াল করার চেষ্টা হয়েছে পুরোদমে। সমাধিস্থলটির সামনেই তৈরি করা হয়েছে রোগীর পরিবারের লোকজনের বসার জায়গা। তবে সেখানে শুধু বসাই নয়, রান্নাও চলছে পুরোদমে।
জেলার ইতিহাস থেকে জানা যাচ্ছে, 1800 শতকে ইংরেজবাজারকে নীল ব্যবসার অন্যতম কেন্দ্র হিসাবে গড়ে তুলেছিল ব্রিটিশ বণিকরা। বর্তমানে ইংরেজবাজার থানা ছিল সেই সময়ের নীলকুঠি। তখন নীলকর সাহেবদের বাসস্থান ছিল অধুনা ফোয়ারা মোড়ের কাছে। সেই সময় শহর এলাকায় ম্যালেরিয়ার উপদ্রব ছিল। ওই রোগে আক্রান্ত হয়েছিলেন অনেক নীলকর সাহেব ও তাঁদের পরিবারের লোকজন। তাঁদের অনেকের মৃত্যুও হয়েছিল ম্যালেরিয়ায়। তাঁদের মৃতদেহের সমাধিস্থল হিসেবে বেছে নেওয়া হয়েছিল বর্তমান মেডিকেল চত্বর। এখানে এখনও চারজন সাহেবের সমাধি কিছুটা অক্ষত রয়েছে। এর মধ্যে উইলিয়াম ব্রাউনের সমাধিটি 1800 সালের। এর ফলকটি সবচেয়ে পুরোনো। বাকি তিনটির মধ্যে দুটি ফলকের লেখা এখনও পরিষ্কার পড়া যায়। সেই দুটি সমাধি হল 1819 সালে মৃত ডেভিড ব্রাউন ও 1834 সালে প্রয়াত রোনাল্ড টেলর। চতুর্থ সমাধিতে জনৈক জনের। সংস্কারের অভাবে এখন সেই সমাধিক্ষেত্রে গজিয়ে উঠেছে গাছপালা। কোনও এক সময় সমাধিক্ষেত্রটি বাঁধিয়ে দেওয়া হলেও দীর্ঘদিন ধরে তার কোনও সাফাই হয়নি।


Conclusion:এনিয়ে প্রশ্ন করা হলে মালদা মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে ডেপুটি সুপার জ্যোতিষচন্দ্র দাস বলেন, "ওই সমাধিক্ষেত্রটি দেখাশোনার দায়িত্বে রয়েছে কলকাতার পৌর বিষয়ক বিভাগ। সমাধিক্ষেত্রটি 200 বছরেরও বেশি পুরোনো। তার একটি ঐতিহাসিক মূল্য রয়েছে। তাই আমরা সমাধিক্ষেত্রটিকে ঘিরে সৌন্দর্যায়ন প্রকল্পে বসার জায়গা তৈরি করেছি। সংশ্লিষ্ট বিভাগ যদি সমাধিক্ষেত্রটি রক্ষা করতে কোনও উদ্যোগ না নেয়, তবে আমরাই ওই ইতিহাসকে বাঁচানোর ব্যবস্থা করব। রোগী কল্যাণ সমিতির আগামী বৈঠকে আমরা সমাধিক্ষেত্রটিকে নিয়ে আলোচনা করব।"
ETV Bharat Logo

Copyright © 2024 Ushodaya Enterprises Pvt. Ltd., All Rights Reserved.