ETV Bharat / city

"মানুষের আওয়াজ আমরাই রাজপথে নিয়ে যাব", ভাঙন কবলিত এলাকা পরিদর্শনের পর বললেন সেলিম

author img

By

Published : Oct 13, 2020, 5:19 PM IST

Updated : Oct 13, 2020, 6:00 PM IST

দলীয় কর্মসূচিতে মালদা এসে আজ বৈষ্ণবনগরের ভাঙন কবলিত এলাকা পরিদর্শনে যান সেলিম । সঙ্গে ছিলেন CPI(M)-র জেলা সম্পাদক অম্বর মিত্র, আবুল হাসনাত খান, জামিল ফিরদৌস, নইমুদ্দিন শেখ, এলাকার প্রাক্তন বিধায়ক বিশ্বনাথ ঘোষ সহ অন্যরা।

mohammad selim
মহম্মদ সেলিম

মালদা, 13 অক্টোবর : "গঙ্গা ভাঙনে বিপর্যস্ত মানুষকে পুনর্বাসন দেওয়ার দায়িত্ব দুই সরকারের। রাজ্য সরকার জমি দেবে আর কেন্দ্রীয় সরকার টাকা দেবে। কিন্তু দুই সরকারই মুখে কুলুপ এঁটে রয়েছে। এই মানুষের আওয়াজ আমরাই রাজপথে নিয়ে যাব।" আজ কালিয়াচক 3 ব্লকের বীরনগর 1 গ্রাম পঞ্চায়েতের ভাঙনে বিধ্বস্ত চিনাবাজার, সরকারটোলা ও দুর্গারামটোলা গ্রাম পরিদর্শন এবং দুর্গতদের সঙ্গে কথা বলে এই মন্তব্য করলেন CPI(M) নেতা মহম্মদ সেলিম। এই এলাকার গঙ্গা ভাঙন রোধের জন্য মানুষকে সঙ্গে নিয়ে ফরাক্কা ব্যারেজ ঘেরাওয়ের হুঁশিয়ারি দেন তিনি ।

এলাকা পরিদর্শনে মহম্মদ সেলিম
দলীয় কর্মসূচিতে মালদা এসে আজ বৈষ্ণবনগরের ভাঙনে বিধ্বস্ত এলাকা পরিদর্শনে যান সেলিম । সঙ্গে ছিলেন CPI(M)-র জেলা সম্পাদক অম্বর মিত্র, আবুল হাসনাত খান, জামিল ফিরদৌস, নইমুদ্দিন শেখ, এলাকার প্রাক্তন বিধায়ক বিশ্বনাথ ঘোষ সহ অন্যরা। মহম্মদ সেলিমকে সামনে পেয়ে নিজেদের দাবি জানান ভাঙনে ক্ষতিগ্রস্তরা। নিজেদের ক্ষোভও উগরে দেন তাঁরা । পরে এলাকার একটি আমবাগানে দুর্গতদের সঙ্গে কথা বলে CPI(M) নেতৃত্ব। 30 অগাস্ট গঙ্গা প্রথম ছোবল মেরেছিল সরকারটোলা ও চিনাবাজার গ্রামে। তারপর থেকে চারবার এই এলাকায় ভাঙন হয়েছে। তলিয়ে গিয়েছে দুর্গারামটোলা ও ভিমাগ্রামের একাংশও। 380টি বাড়ি গহ্গায় তলিয়ে গেছে বলে জানা গেছে । আরও 500টি বাড়ি এলাকার বাসিন্দারা নিজেরাই ভেঙে সরিয়ে নিয়েছে। কারণ, বাড়িগুলি বিপজ্জনক অবস্থায় দাঁড়িয়েছিল । মাত্র 64টি পরিবারকে পুনর্বাসনের জমি দিয়েছে প্রশাসন। শেষ দফার ভাঙনে গৃহহীন হয়েছিলেন চিনাবাজারের জয়গন বেওয়া। তিনি বলেন, "এখনও পর্যন্ত সরকারের কাছ থেকে তেমন কিছু সাহায্য পাইনি। শুধু দুটো ত্রিপল, আর রান্না করার কিছু সরঞ্জাম পেয়েছি। জায়গা এখনও পাইনি। এখন নেতা-পার্টির যুগ। যার লাঠি আছে, তার সব আছে। আমাদের সেসব নেই। কেউ কিছু সাহায্য দিলে খেতে পাই।"

সরকারটোলার মহম্মদ আবদুল জাব্বার বলেন, "এখানে অনেকেই সরকারি জমির পাট্টা পেয়েছে। আমি পাইনি। আগে হোমগার্ডের কাজ করতাম। শরীরের ডানদিকে পক্ষাঘাত হওয়ায় এখন সেই কাজটাও নেই। আমরা এখন পুনর্বাসনের দাবি জানাচ্ছি। এবার প্রথম ভাঙনেই আমার বাড়ি নদী গিলে নিয়েছিল। প্রথমে আমার নামও ক্ষতিগ্রস্তদের তালিকায় 6 নম্বরে ছিল। কিন্তু হঠাৎ করে আমাদের আটজনের নাম কেটে দেওয়া হয়। কেন জানি না। BDO-র কাছে গিয়েছিলাম। তিনি দেখা করেননি। আমি বুঝে উঠতে পারছি না, কী করব।"

আজ ভাঙন এলাকা পরিদর্শন করে সেলিম বলেন, "গঙ্গা জাতীয় নদী। এর দেখাশোনার দায়িত্ব কেন্দ্রীয় সরকারের। এর জন্য আমরা অনেক লড়াই করেছি। গত ছয় বছরে কেন্দ্রীয় সরকার খাতায়কলমে এই নদীর নাব্যতা বাড়ানো ও বাঁধ নির্মাণের জন্য 22 হাজার কোটি টাকা খরচ করেছে। কিন্তু কোনও কাজ হয়নি। সেই টাকা লুট করা হয়েছে। এখানে 30 অগাস্টের পর থেকে একের পর এক গ্রাম ভেঙেছে। কোনও সরকার আছে নাকি ? মানুষের কাজ বন্ধ হয়ে গিয়েছে। ছেলেমেয়েদের পড়াশোনা বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। ভাঙন দুর্গতদের পুনর্বাসনের দায়িত্ব রাজ্য ও কেন্দ্রীয় সরকারের। রাজ্য জমি দেবে, কেন্দ্র টাকা দেবে। এবার আপার ক্যাচমেন্টে একটু অতিবৃষ্টি হতেই মুর্শিদাবাদ ও মালদা গঙ্গার ভাঙনের কবলে পড়েছে। মানুষ অসহায়। আমরা সরকারে থাকাকালীন নদী ভাঙন নিয়ে লাগাতার লড়াই করেছি। দুর্গতদের পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করে দিয়েছি। মোদি প্রধানমন্ত্রী হওয়ার পর জল সম্পদ দপ্তরের নাম বদলে গঙ্গা দপ্তর করে দেন। কিন্তু শুধু নামটাই পালটেছে। আর কিছু হয়নি। মানুষের কথা সরকার শোনে না। জনপ্রতিনিধিদের দায়িত্ব, মানুষের তথা সরকারের কাছে পৌঁছে দেওয়া। কিন্তু এখানে সেটা হয় না। দুর্গতদের নিয়ে আমরা ফরাক্কা ব্যারেজ ঘেরাও করব বলে ঠিক করেছি। কারণ, এই এলাকায় ভাঙন রোধের দায়িত্ব ওই দপ্তরের। ওরা ছাই দিয়ে ভাঙন রোধ করার চেষ্টা করছে। কিন্তু ছাই দিয়ে এই আগুন চাপা দেওয়া যাবে না।"

মালদা, 13 অক্টোবর : "গঙ্গা ভাঙনে বিপর্যস্ত মানুষকে পুনর্বাসন দেওয়ার দায়িত্ব দুই সরকারের। রাজ্য সরকার জমি দেবে আর কেন্দ্রীয় সরকার টাকা দেবে। কিন্তু দুই সরকারই মুখে কুলুপ এঁটে রয়েছে। এই মানুষের আওয়াজ আমরাই রাজপথে নিয়ে যাব।" আজ কালিয়াচক 3 ব্লকের বীরনগর 1 গ্রাম পঞ্চায়েতের ভাঙনে বিধ্বস্ত চিনাবাজার, সরকারটোলা ও দুর্গারামটোলা গ্রাম পরিদর্শন এবং দুর্গতদের সঙ্গে কথা বলে এই মন্তব্য করলেন CPI(M) নেতা মহম্মদ সেলিম। এই এলাকার গঙ্গা ভাঙন রোধের জন্য মানুষকে সঙ্গে নিয়ে ফরাক্কা ব্যারেজ ঘেরাওয়ের হুঁশিয়ারি দেন তিনি ।

এলাকা পরিদর্শনে মহম্মদ সেলিম
দলীয় কর্মসূচিতে মালদা এসে আজ বৈষ্ণবনগরের ভাঙনে বিধ্বস্ত এলাকা পরিদর্শনে যান সেলিম । সঙ্গে ছিলেন CPI(M)-র জেলা সম্পাদক অম্বর মিত্র, আবুল হাসনাত খান, জামিল ফিরদৌস, নইমুদ্দিন শেখ, এলাকার প্রাক্তন বিধায়ক বিশ্বনাথ ঘোষ সহ অন্যরা। মহম্মদ সেলিমকে সামনে পেয়ে নিজেদের দাবি জানান ভাঙনে ক্ষতিগ্রস্তরা। নিজেদের ক্ষোভও উগরে দেন তাঁরা । পরে এলাকার একটি আমবাগানে দুর্গতদের সঙ্গে কথা বলে CPI(M) নেতৃত্ব। 30 অগাস্ট গঙ্গা প্রথম ছোবল মেরেছিল সরকারটোলা ও চিনাবাজার গ্রামে। তারপর থেকে চারবার এই এলাকায় ভাঙন হয়েছে। তলিয়ে গিয়েছে দুর্গারামটোলা ও ভিমাগ্রামের একাংশও। 380টি বাড়ি গহ্গায় তলিয়ে গেছে বলে জানা গেছে । আরও 500টি বাড়ি এলাকার বাসিন্দারা নিজেরাই ভেঙে সরিয়ে নিয়েছে। কারণ, বাড়িগুলি বিপজ্জনক অবস্থায় দাঁড়িয়েছিল । মাত্র 64টি পরিবারকে পুনর্বাসনের জমি দিয়েছে প্রশাসন। শেষ দফার ভাঙনে গৃহহীন হয়েছিলেন চিনাবাজারের জয়গন বেওয়া। তিনি বলেন, "এখনও পর্যন্ত সরকারের কাছ থেকে তেমন কিছু সাহায্য পাইনি। শুধু দুটো ত্রিপল, আর রান্না করার কিছু সরঞ্জাম পেয়েছি। জায়গা এখনও পাইনি। এখন নেতা-পার্টির যুগ। যার লাঠি আছে, তার সব আছে। আমাদের সেসব নেই। কেউ কিছু সাহায্য দিলে খেতে পাই।"

সরকারটোলার মহম্মদ আবদুল জাব্বার বলেন, "এখানে অনেকেই সরকারি জমির পাট্টা পেয়েছে। আমি পাইনি। আগে হোমগার্ডের কাজ করতাম। শরীরের ডানদিকে পক্ষাঘাত হওয়ায় এখন সেই কাজটাও নেই। আমরা এখন পুনর্বাসনের দাবি জানাচ্ছি। এবার প্রথম ভাঙনেই আমার বাড়ি নদী গিলে নিয়েছিল। প্রথমে আমার নামও ক্ষতিগ্রস্তদের তালিকায় 6 নম্বরে ছিল। কিন্তু হঠাৎ করে আমাদের আটজনের নাম কেটে দেওয়া হয়। কেন জানি না। BDO-র কাছে গিয়েছিলাম। তিনি দেখা করেননি। আমি বুঝে উঠতে পারছি না, কী করব।"

আজ ভাঙন এলাকা পরিদর্শন করে সেলিম বলেন, "গঙ্গা জাতীয় নদী। এর দেখাশোনার দায়িত্ব কেন্দ্রীয় সরকারের। এর জন্য আমরা অনেক লড়াই করেছি। গত ছয় বছরে কেন্দ্রীয় সরকার খাতায়কলমে এই নদীর নাব্যতা বাড়ানো ও বাঁধ নির্মাণের জন্য 22 হাজার কোটি টাকা খরচ করেছে। কিন্তু কোনও কাজ হয়নি। সেই টাকা লুট করা হয়েছে। এখানে 30 অগাস্টের পর থেকে একের পর এক গ্রাম ভেঙেছে। কোনও সরকার আছে নাকি ? মানুষের কাজ বন্ধ হয়ে গিয়েছে। ছেলেমেয়েদের পড়াশোনা বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। ভাঙন দুর্গতদের পুনর্বাসনের দায়িত্ব রাজ্য ও কেন্দ্রীয় সরকারের। রাজ্য জমি দেবে, কেন্দ্র টাকা দেবে। এবার আপার ক্যাচমেন্টে একটু অতিবৃষ্টি হতেই মুর্শিদাবাদ ও মালদা গঙ্গার ভাঙনের কবলে পড়েছে। মানুষ অসহায়। আমরা সরকারে থাকাকালীন নদী ভাঙন নিয়ে লাগাতার লড়াই করেছি। দুর্গতদের পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করে দিয়েছি। মোদি প্রধানমন্ত্রী হওয়ার পর জল সম্পদ দপ্তরের নাম বদলে গঙ্গা দপ্তর করে দেন। কিন্তু শুধু নামটাই পালটেছে। আর কিছু হয়নি। মানুষের কথা সরকার শোনে না। জনপ্রতিনিধিদের দায়িত্ব, মানুষের তথা সরকারের কাছে পৌঁছে দেওয়া। কিন্তু এখানে সেটা হয় না। দুর্গতদের নিয়ে আমরা ফরাক্কা ব্যারেজ ঘেরাও করব বলে ঠিক করেছি। কারণ, এই এলাকায় ভাঙন রোধের দায়িত্ব ওই দপ্তরের। ওরা ছাই দিয়ে ভাঙন রোধ করার চেষ্টা করছে। কিন্তু ছাই দিয়ে এই আগুন চাপা দেওয়া যাবে না।"

Last Updated : Oct 13, 2020, 6:00 PM IST
ETV Bharat Logo

Copyright © 2024 Ushodaya Enterprises Pvt. Ltd., All Rights Reserved.