মালদা, 1 অক্টোবর : কোনও কাজ নেই ৷ অথচ প্রতি মাসে সরকারের ঘর থেকে বেতন দিতে হচ্ছে তাঁদের । শুধু তাই নয়, তাঁদের কাজ এখন PPP মডেলে এক বেসরকারি সংস্থার হাতে তুলে দেওয়ায় সেই সংস্থাকেও প্রচুর টাকা দিতে হচ্ছে সরকারকে । এই ছবি ধরা পড়েছে মালদা মেডিকেলের রেডিয়োলজি বিভাগে । জানা গেছে, শুধু মালদাই নয়, রাজ্যের প্রতিটি মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালেই এক ছবি । যদিও এই বিষয় নিয়ে মুখ খুলতে রাজি হয়নি মালদা মেডিকেল কর্তৃপক্ষ ।
রাজ্যের প্রতিটি মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালসহ সাধারণ সরকারি হাসপাতালগুলিতেও মেডিকেল টেকনিশিয়ান পদ রয়েছে । রোগীদের এক্স-রে, সিটি স্ক্যান, প্যাথোলজিসহ বিভিন্ন কাজ সেই কর্মীদেরই করার কথা । তবে এখন রাজ্যের প্রতিটি মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে ডিজিটাল এক্স-রে চালু হয়ে যাওয়ায় পুরানো এক্স-রে মেশিনগুলি নষ্ট হওয়ার মুখে, খবর এমনই ।
রাজ্য স্বাস্থ্য দপ্তরের পক্ষ থেকে ডিজিটাল এক্স-রে করার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে বিভিন্ন বেসরকারি সংস্থাকে । মালদা মেডিকেলে সেই দায়িত্বে রয়েছে মেদিনীপুর ডায়াগনস্টিক প্রাইভেট লিমিটেড নামে একটি বেসরকারি সংস্থা । মেডিকেল সূত্রে খবর, প্রতিটি এক্স-রে করার জন্য রাজ্য সরকার এই সংস্থাগুলিকে 100 টাকা করে দেয় । মালদা মেডিকেলে প্রতিদিন কমপক্ষে 100 রোগীর ডিজিটাল এক্স-রে করা হয় । সেই হিসাবে শুধুমাত্র মালদা মেডিকেলের দায়িত্বপ্রাপ্ত বেসরকারি সংস্থাকেই প্রতিদিন রাজ্য সরকার অন্তত 10 হাজার টাকা প্রদান করে । অর্থাৎ প্রতি মাসে সেই অঙ্ক কমপক্ষে 3 লাখ টাকা ।
মালদা মেডিকেল সূত্রে আরও জানা যাচ্ছে, এই মুহূর্তে মেডিকেলের রেডিয়োলজি বিভাগে মেডিকেল টেকনিশিয়ান পদে রয়েছেন 14 জন কর্মী । মূলত এক্স-রে করাই তাঁদের কাজ । প্রত্যেকের মাসিক বেতন 50 হাজার টাকার উপর । কিন্তু এই মুহূর্তে তাঁদের কোনও কাজ নেই । কারণ, সেই কাজের দায়িত্ব এখন ডিজিটাল এক্স-রে'র দায়িত্বপ্রাপ্ত বেসরকারি সংস্থাটির । কোনও কাজ না করলেও রাজ্য সরকারকে এই 14 জন কর্মীর বেতন বাবদ প্রতি মাসে অন্তত 7 লাখ টাকা দিতে হচ্ছে । ফলে শুধুমাত্র এক্স-রে বাবদ সরকারের কোষাগার থেকে প্রতিমাসে বেরিয়ে যাচ্ছে অন্তত 10 লাখ টাকা । প্রশ্ন উঠেছে, এভাবেই কি রাজ্য সরকারের ভাঁড়ে মা ভবানী দশা?
গোটা রাজ্যের পরিসংখ্যান বিবেচনা করলে টাকার অঙ্কটা কোথায় দাঁড়ায় তা সহজেই অনুমেয় । তবে এই কর্মীদের নাকি কাজে রাখতেই হবে। তা না হলে নাকি MCI-এর অনুমোদন পাওয়া সমস্যা হয়ে দাঁড়াতে পারে । বিষয়টি নিয়ে জানতে চাওয়া হয়েছিল মালদা মেডিকেলের সহকারী অধ্যক্ষ অমিত দাঁ'র কাছে । কিন্তু এই বিষয় নিয়ে তিনি কোনও কথা বলতে রাজি হননি ।