পঞ্চসায়র, 17 মার্চ : কার দখলে থাকবে পঞ্চসায়রের নব দিগন্ত এলাকা, তা নিয়ে লড়াই । অভিযোগ, সেই লড়াইয়ের জেরে খুন করা হল এক যুবককে ৷ মৃতের নাম বিশ্বরূপ দাস । বাড়ি থেকে টেনে নিয়ে গিয়ে পাড়ার মধ্যেই খুন হতে হল তাঁকে । পরিবারের লোকজন তাঁকে বাঁচাতে গেলে তাঁদেরও মারধর করা হয় বলে অভিযোগ । ঘটনার তদন্তে থেমে কয়েকজনকে আটক করেছে পঞ্চসায়র থানা । পুলিশ সূত্রের খবর, "CCTV ফুটেজ পাওয়া গেছে । সেই ফুটেজের সূত্র ধরেই অভিযুক্তদের খোঁজ চলছে ।"
স্থানীয়দের অভিযোগ, এলাকায় সিন্ডিকেট ব্যবসা থেকে শুরু করে মস্তানি । সবকিছু চালায় তারক কীর্তনীয়া, ধলু এবং দলবল । তাদের সঙ্গে স্থানীয় তৃণমূল নেতৃত্বের ঘনিষ্ঠতা আছে বলে অভিযোগ । সেই দলে একটা সময় ছিল বছর পঁচিশের বিশ্বরূপও । কিন্তু নানা কারণে সেই দল থেকে বেরিয়ে যায় বিশ্বরূপ । পেশায় গাড়ির চালক হলেও বিশ্বরূপ খুব একটা কম যায় না । ইদানিং সে রীতিমত চ্যালেঞ্জের মুখে ফেলে দিয়েছিল কীর্তনীয়াদের ।
বিশ্বরূপের পরিবারের লোকজনের অভিযোগ, গতরাত বারোটা নাগাদ কীর্তনীয়া এবং তার দলবল তাদের বাড়ির অ্যাসবেসটাসের চালে ইট মারতে থাকে । কারা এই কাজ করছে তা দেখতে বাড়ির বাইরে বেরোতেই বিশ্বরূপকে ঘিরে ধরে 8-10 জনের একটি দল । সেই দলে তারক, ধলুরাও ছিল । বাড়ি থেকে কিছুটা দূরে টেনে নিয়ে গিয়ে তার গলায় এবং শরীরের বিভিন্ন জায়গায় ভাঙা বোতল, উইকেট, ব্যাট দিয়ে আঘাত করতে শুরু করে । অভিযোগ, তাদের কাছে ছিল ধারালো অস্ত্র । চিৎকারে তার পরিবারের লোকজন বাইরে বেরোতে তাদেরও মারধর করা হয় বলে অভিযোগ ।
বিশ্বরূপের বাবা দেবু দাস কিছুটা দূরেই তাদের পুরানো বাড়িতে থাকে । খবর পেয়ে ছুটে আসেন তিনি । ছেলেকে নিয়ে যান অদূরে এক নামী হাসপাতালে । সেখানে চিকিৎসকরা তাকে মৃত বলে ঘোষণা করেন । পুলিশ সূত্রে জানা যাচ্ছে, তারকরা গতরাতে বিশ্বরূপের বাড়ির সামনে কুকুরকে মারধর করছিল । তার প্রতিবাদ করে সে, সেই সূত্রেই এই খুনের ঘটনা । বিশ্বরূপের বাবা অভিযোগপত্রে লিখেছেন তেমনই । যদিও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, বাড়ির ছাদে ইট মারার বিষয়টিই । ঘটনায় ইতিমধ্যেই কয়েক জনকে আটক করা হয়েছে বলে খবর । বিশ্বরূপের দেহ পাঠানো হয়েছে নীলরতন সরকার মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে । সেখানে তার ময়নাতদন্ত হবে । আজ ঘটনাস্থলে যাবে ফরেনসিক দল । ঘটনায় পঞ্চসায়র থানাকে তদন্তে সাহায্য করছে গোয়েন্দা বিভাগের হোমিসাইড শাখা ।