কলকাতা, 24 জুন : শরীরে জীর্ণতার ছাপ স্পষ্ট । বয়স হয়েছে 56 । জীর্ণ সেই শরীর আজও বহন করে চলেছে লাখ লাখ গাড়ির ভার । কিন্তু অবস্থা মোটেও ভালো নয় । একাধিকবার এই ঢাকুরিয়া ব্রিজের বেহাল দশা শিরোনামে এলেও পরিবর্তন হয়নি কিছুই । সাময়িক মেরামতি হলেও ফেরেনি হাল । ক্ষতিগ্রস্ত পরিকাঠামো । আর তাই সময় এসেছে নতুন করে ব্রিজ তৈরির । সূত্রের খবর, নবান্নকে এমনই রিপোর্ট দিল রাইটার্স । এখন অপেক্ষা মুখ্যমন্ত্রীর সম্মতির । দপ্তরের সবুজ সংকেত পেলেই নেওয়া হবে পরবর্তী পদক্ষেপ ।
বছর পাঁচেক আগে ঢাকুরিয়া ব্রিজে একাধিক গর্ত দেখা যায় । পরীক্ষা করে জানা যায় ইঁদুরের তান্ডবে এই গর্ত । ঢাকুরিয়া ব্রিজের পেটে দাপাদাপি করছে তারা । আর তার জেরেই আলগা হয়ে যাচ্ছে মাটি । সেই নিয়ে বিভিন্ন মহলে চর্চা হলে পরে এক-দু'বার সারাইয়ের কাজ হয় । অভিযোগ, সমস্যার স্থায়ী সমাধান না করে জোড়াতালি দিয়ে মেরামতি হয় ব্রিজ । শরীরে পরে নীল সাদার প্রলেপ । সেই নীল সাদা প্রলেপের ফাঁক দিয়ে মাঝেমধ্যে দেখা যায় ফাটল । ফের হয় সারাই । রাস্তা খুললে সব আতঙ্ক কাটিয়ে নিশ্চিন্তে শুরু হয় যান চলাচল । তবে, মাঝেরহাট ব্রিজ ভাঙলেই ফের টনক করে প্রশাসনের । শুরু হয় পরীক্ষা-নিরীক্ষা ।
ইঁদুরের বড় বড় গর্ত খুঁজে পাওয়ার পর কলকাতা পৌরনিগমের পক্ষ থেকে রাইটার্সকে দায়িত্ব দেওয়া হয় মেরামতির । তখন থেকেই ভারী যান চলাচলে কিছুটা নিয়ন্ত্রণ করা হয় সেখানে । রাইটার্স সূত্রে খবর, সে সময় ওইসব ইঁদুরের গর্ত সিমেন্ট-বালি দিয়ে ভরাট করে দেওয়া হয়েছিল । সেবিষয়ে, রাইটার্সের এক কর্তা জানাচ্ছেন, সেই সময় ব্রিজের নকশা চাওয়া হয়েছিল । চাওয়া হয়েছিল কনস্ট্রাকশনের বিভিন্ন নথি । কিন্তু সে সব আর পাওয়া যায়নি ।
মাঝেরহাট সেতু বিপর্যয়ের পর শহরের সবকটি ব্রিজের স্বাস্থ্য পরীক্ষা হয় । তখনও রিপোর্ট এসেছিল ঢাকুরিয়া ব্রিজের অবস্থা খুব একটা ভালো নয় । সূত্রের খবর, সম্প্রতি রাইটার্সকে বেশ কয়েকটি ব্রিজের স্বাস্থ্য পরীক্ষা করে সমীক্ষা রিপোর্ট দিতে বলা হয়েছিল । সেই রিপোর্টই নবান্নকে জানিয়ে দিয়েছে রাইটার্স, পুরোনো ব্রিজে আর চলার মতো জায়গায় নেই । তৈরি করতে হবে নতুন ব্রিজ । চাই মুখ্যমন্ত্রীর সম্মতি ।