ETV Bharat / city

রাজ্যপাল-রাজ্য সংঘাত : শুক্রবার ইতিহাস তৈরি হতে পারে বঙ্গ বিধানসভায়

এবারের বিধানসভা নির্বাচনের পর আগামী 2 জুলাই প্রথম অধিবেশন বসছে বিধানসভায় ৷ সেদিন রাজ্যপাল জগদীপ ধনকড়ের ভাষণ দিয়ে অধিবেশন শুরু হওয়ার কথা ৷ প্রশ্ন উঠছে, সেদিন রাজ্যপাল বিধানসভায় উপস্থিত হবেন তো ?

will conflict between mamata banerjee government and governor jagdeep dhankhar create new histrory
রাজ্য-রাজ্যপালের সংঘাত : ২ জুলাই ইতিহাস তৈরি হতে পারে বঙ্গ বিধানসভায়
author img

By

Published : Jun 30, 2021, 9:30 PM IST

কলকাতা, 30 জুন : রাজ্যপাল হলেন রাজ্যের সাংবিধানিক প্রধান । নিয়ম অনুযায়ী, কোনও ভোটের পর বিধানসভার প্রথম অধিবেশন শুরু হয় রাজ্যপালের ভাষণের মাধ্যমে ৷ শুক্রবার অর্থাৎ 2 জুলাই এবারের বিধানসভা নির্বাচনের (West Bengal Assembly Election) পর প্রথম অধিবেশন বসতে চলেছে পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভায় (West Bengal Assembly) ৷ প্রথামাফিক ওইদিন রাজ্যপাল জগদীপ ধনকড়ের (Jagdeep Dhankhar) ভাষণ দিয়ে শুরু হওয়ার কথা অধিবেশন ৷ কিন্তু এবার সেই রীতি বজায় থাকবে তো, উঠছে প্রশ্ন ৷

রাজনৈতিক মহল অবশ্য বলছে যেকোনও অধিবেশনের শুরুতে অধ্যক্ষ এবং রাজ্য সরকারের তরফ থেকে রাজ্যপালকে অধিবেশন শুরুর জন্য আমন্ত্রণ জানাতে হয় । এটাই সাংবিধানিক রীতি । একইভাবে যেহেতু রাজ্য সরকার রাজ্যপালের দ্বারাই নিযুক্ত হয়, তাই কখনোই রাজ্য সরকারের এই আমন্ত্রণ উপেক্ষা করেননি কোনও রাজ্যপাল । তাহলে এবার কী হতে পারে ?

কারণ, গত কয়েকদিনে রাজ্যপালের সঙ্গে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee) ও বিধানসভার অধ্যক্ষ বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়ের (Biman Banerjee) সংঘাত চরমে পৌঁছেছে ৷ তার উপর এবারও বিধানসভায় রাজ্যপালের ভাষণ সরাসরি সম্প্রচারিত হবে না বলে খবর ৷ তাই প্রশ্ন উঠছে, রাজ্যপাল কি সরকারের আমন্ত্রণ গ্রহণ করবেন ?

আরও পড়ুন : Jagdeep Dhankhar : এবার রাজ্যপালের নিশানায় স্পিকার, কড়া চিঠি ধনকড়ের

রাজ্যের প্রাক্তন বাম পরিষদীয় দলনেতা সুজন চক্রবর্তী বলছেন, ‘‘এই মুহূর্তে রাজ্যে একটা অতিনাটকীয় পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে । এবং এই অতিনাটকীয় পরিস্থিতির জন্য রাজ্য সরকার এবং রাজ্যপাল উভয়েই দায়ী । এমতাবস্তায় রাজ্যপাল আসবেন কি আসবেন না, সেটা স্পষ্ট করে বলা যাচ্ছে না ।’’ তবে তিনি যদি বাজেট অধিবেশনে আসেন সরকারের লিখে দেওয়া বক্তব্য তাঁকে পাঠ করতে হবে । এটাই সাংবিধান বলছে বলে জানিয়েছেন যাদবপুরের প্রাক্তন বিধায়ক ।

একইসঙ্গে তিনি জানাচ্ছেন, অতীতে এমনও দেখা গিয়েছে অধিবেশন শুরুর ক্ষেত্রে রাজ্যপালকে ডাকা হয়নি । এক্ষেত্রে রাজ্য সরকার একে নতুন অধিবেশন হিসাবে না দেখিয়ে আগের অধিবেশনের বর্ধিত রূপ হিসেবে দেখিয়েছে । তবে এবার তেমন দেখানোর সুযোগ নেই । কাজেই এখানে কী হবে কেউ বলতে পারছেন না ।

রাজ্য সরকারও যে রাজ্যপালের অবস্থান নিয়ে সংশয়ী, তা স্পষ্ট বিধানসভায় শাসকদলের মুখ্য সচেতক নির্মল ঘোষের কথায় ৷ তিনি জানান, যদি রাজ্যপাল অসুস্থ থাকেন, তাহলে তিনি অবশ্যই বিধানসভায় আসা থেকে অব্যাহতি পেতে পারেন । সে ক্ষেত্রে বিধানসভার অধিবেশন পিছিয়ে দিতে হবে । কারণ, এটা রাজ্য সরকারের প্রথম অধিবেশন । রাজ্যপালের মাধ্যমেই এই অধিবেশনের সূচনা হয় । তিনি না এলে তা শুরু করা কিভাবে সম্ভব ?

আরও পড়ুন : Mamata-Suvendu : লোকসভার প্রচারে পুষ্পক রথে চড়বেন মমতা, কটাক্ষ শুভেন্দুর ; জবাব কুণালের

একইসঙ্গে নির্মল ঘোষ আরও জানিয়েছেন, একটা কথা মনে রাখতে হবে যে রাজ্যপাল বা রাষ্ট্রপতি নিজের ইচ্ছা খুশিমতো চলতে পারেন না । এক্ষেত্রে তাঁকে মন্ত্রিসভার পরামর্শ মেনে চলতে হয় । বাজেট অধিবেশনের ক্ষেত্রে তিনি চাইলেই ইচ্ছা খুশিমতো আচরণ করতে পারেন না । এক্ষেত্রে রাজ্য মন্ত্রিসভার তৈরি করে দেওয়া ভাষণই তাঁকে পাঠ করতে হবে । কাজেই তিনি যদি বিধানসভায় আসেন ৷ তাঁকে সেটাই পাঠ করতে হবে । তাঁর এর বাইরে যাওয়ার কোনও সুযোগ নেই ।

তবে তিনি শঙ্কিত আদৌ রাজ্যপাল এক্ষেত্রে সংবিধানের দেখানো পথ অনুসরণ করবেন কি না । তাঁর মতে, পশ্চিমবঙ্গের বর্তমান রাজ্যপাল বিজেপি নেতার মতো আচরণ করছেন । ফলে তাঁর অবস্থান কী হবে, তা এখনই বলা যাচ্ছে না ।

আরও পড়ুন : Fake Vaccination Case : বিচ্ছিন্ন ঘটনা, রাজ্য সরকারের সঙ্গে যোগ ওড়ালেন মমতা

কোনও সন্দেহ নেই গোটা রাজ্য এই মুহূর্তে রাজভবনের দিকে তাকিয়ে আছে । জৈন হাওয়ালা কেলেঙ্কারিতে জগদীপ ধনকড় যুক্ত বলে রাজ্যের শাসক দল এবং রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায় যে অভিযোগ তুলেছেন, তারপরে রাজ্যপালের অবস্থান নিয়ে সন্দিহান অনেকেই । যদিও এদিন সাংবাদিক সম্মেলনে বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে প্রশ্ন করা হয়, বিধানসভার অধিবেশনের জন্য তিনি কি রাজ্যপাল জগদীপ ধনকড়কে আমন্ত্রণ জানাতে যাবেন । মুখ্যমন্ত্রী কিন্তু এই বিষয়ে সাংবাদিকদের কোনও জবাব দেননি ।

এই অবস্থায় সংবিধান বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, এটা রাজ্যের জন্য একটা সাংবিধানিক সংকট হতেই পারে । কারণ, যদি রাজ্যপাল আমন্ত্রণ সত্ত্বেও বাজেট অধিবেশনে উপস্থিত না হন, তবে তা হবে নজিরবিহীন । এখানেই শেষ নয় সে ক্ষেত্রে রাজ্য সরকারের হাতেও অধিবেশন পিছিয়ে দেওয়া ছাড়া কোনও উপায় থাকবে না । প্রেসিডেন্সি কলেজের প্রাক্তন অধ্যক্ষ ড. অমল মুখোপাধ্যায়ের কথায়, এমন পরিস্থিতি কাঙ্ক্ষিত ছিল না । অতীতে কখনোই এমন ঘটনা ঘটেনি । রাজ্যপাল আসুন অথবা না আসুন, যাই ঘটুক পরিষদীয় রাজনীতিতে তা একটা নতুন ইতিহাসের জন্ম দেবে বলে মনে করছেন তিনি ।

আরও পড়ুন : Narada Case : মুখ্যমন্ত্রী-আইনমন্ত্রীর হলফনামা গ্রহণ কলকাতা হাইকোর্টের

কলকাতা, 30 জুন : রাজ্যপাল হলেন রাজ্যের সাংবিধানিক প্রধান । নিয়ম অনুযায়ী, কোনও ভোটের পর বিধানসভার প্রথম অধিবেশন শুরু হয় রাজ্যপালের ভাষণের মাধ্যমে ৷ শুক্রবার অর্থাৎ 2 জুলাই এবারের বিধানসভা নির্বাচনের (West Bengal Assembly Election) পর প্রথম অধিবেশন বসতে চলেছে পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভায় (West Bengal Assembly) ৷ প্রথামাফিক ওইদিন রাজ্যপাল জগদীপ ধনকড়ের (Jagdeep Dhankhar) ভাষণ দিয়ে শুরু হওয়ার কথা অধিবেশন ৷ কিন্তু এবার সেই রীতি বজায় থাকবে তো, উঠছে প্রশ্ন ৷

রাজনৈতিক মহল অবশ্য বলছে যেকোনও অধিবেশনের শুরুতে অধ্যক্ষ এবং রাজ্য সরকারের তরফ থেকে রাজ্যপালকে অধিবেশন শুরুর জন্য আমন্ত্রণ জানাতে হয় । এটাই সাংবিধানিক রীতি । একইভাবে যেহেতু রাজ্য সরকার রাজ্যপালের দ্বারাই নিযুক্ত হয়, তাই কখনোই রাজ্য সরকারের এই আমন্ত্রণ উপেক্ষা করেননি কোনও রাজ্যপাল । তাহলে এবার কী হতে পারে ?

কারণ, গত কয়েকদিনে রাজ্যপালের সঙ্গে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee) ও বিধানসভার অধ্যক্ষ বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়ের (Biman Banerjee) সংঘাত চরমে পৌঁছেছে ৷ তার উপর এবারও বিধানসভায় রাজ্যপালের ভাষণ সরাসরি সম্প্রচারিত হবে না বলে খবর ৷ তাই প্রশ্ন উঠছে, রাজ্যপাল কি সরকারের আমন্ত্রণ গ্রহণ করবেন ?

আরও পড়ুন : Jagdeep Dhankhar : এবার রাজ্যপালের নিশানায় স্পিকার, কড়া চিঠি ধনকড়ের

রাজ্যের প্রাক্তন বাম পরিষদীয় দলনেতা সুজন চক্রবর্তী বলছেন, ‘‘এই মুহূর্তে রাজ্যে একটা অতিনাটকীয় পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে । এবং এই অতিনাটকীয় পরিস্থিতির জন্য রাজ্য সরকার এবং রাজ্যপাল উভয়েই দায়ী । এমতাবস্তায় রাজ্যপাল আসবেন কি আসবেন না, সেটা স্পষ্ট করে বলা যাচ্ছে না ।’’ তবে তিনি যদি বাজেট অধিবেশনে আসেন সরকারের লিখে দেওয়া বক্তব্য তাঁকে পাঠ করতে হবে । এটাই সাংবিধান বলছে বলে জানিয়েছেন যাদবপুরের প্রাক্তন বিধায়ক ।

একইসঙ্গে তিনি জানাচ্ছেন, অতীতে এমনও দেখা গিয়েছে অধিবেশন শুরুর ক্ষেত্রে রাজ্যপালকে ডাকা হয়নি । এক্ষেত্রে রাজ্য সরকার একে নতুন অধিবেশন হিসাবে না দেখিয়ে আগের অধিবেশনের বর্ধিত রূপ হিসেবে দেখিয়েছে । তবে এবার তেমন দেখানোর সুযোগ নেই । কাজেই এখানে কী হবে কেউ বলতে পারছেন না ।

রাজ্য সরকারও যে রাজ্যপালের অবস্থান নিয়ে সংশয়ী, তা স্পষ্ট বিধানসভায় শাসকদলের মুখ্য সচেতক নির্মল ঘোষের কথায় ৷ তিনি জানান, যদি রাজ্যপাল অসুস্থ থাকেন, তাহলে তিনি অবশ্যই বিধানসভায় আসা থেকে অব্যাহতি পেতে পারেন । সে ক্ষেত্রে বিধানসভার অধিবেশন পিছিয়ে দিতে হবে । কারণ, এটা রাজ্য সরকারের প্রথম অধিবেশন । রাজ্যপালের মাধ্যমেই এই অধিবেশনের সূচনা হয় । তিনি না এলে তা শুরু করা কিভাবে সম্ভব ?

আরও পড়ুন : Mamata-Suvendu : লোকসভার প্রচারে পুষ্পক রথে চড়বেন মমতা, কটাক্ষ শুভেন্দুর ; জবাব কুণালের

একইসঙ্গে নির্মল ঘোষ আরও জানিয়েছেন, একটা কথা মনে রাখতে হবে যে রাজ্যপাল বা রাষ্ট্রপতি নিজের ইচ্ছা খুশিমতো চলতে পারেন না । এক্ষেত্রে তাঁকে মন্ত্রিসভার পরামর্শ মেনে চলতে হয় । বাজেট অধিবেশনের ক্ষেত্রে তিনি চাইলেই ইচ্ছা খুশিমতো আচরণ করতে পারেন না । এক্ষেত্রে রাজ্য মন্ত্রিসভার তৈরি করে দেওয়া ভাষণই তাঁকে পাঠ করতে হবে । কাজেই তিনি যদি বিধানসভায় আসেন ৷ তাঁকে সেটাই পাঠ করতে হবে । তাঁর এর বাইরে যাওয়ার কোনও সুযোগ নেই ।

তবে তিনি শঙ্কিত আদৌ রাজ্যপাল এক্ষেত্রে সংবিধানের দেখানো পথ অনুসরণ করবেন কি না । তাঁর মতে, পশ্চিমবঙ্গের বর্তমান রাজ্যপাল বিজেপি নেতার মতো আচরণ করছেন । ফলে তাঁর অবস্থান কী হবে, তা এখনই বলা যাচ্ছে না ।

আরও পড়ুন : Fake Vaccination Case : বিচ্ছিন্ন ঘটনা, রাজ্য সরকারের সঙ্গে যোগ ওড়ালেন মমতা

কোনও সন্দেহ নেই গোটা রাজ্য এই মুহূর্তে রাজভবনের দিকে তাকিয়ে আছে । জৈন হাওয়ালা কেলেঙ্কারিতে জগদীপ ধনকড় যুক্ত বলে রাজ্যের শাসক দল এবং রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায় যে অভিযোগ তুলেছেন, তারপরে রাজ্যপালের অবস্থান নিয়ে সন্দিহান অনেকেই । যদিও এদিন সাংবাদিক সম্মেলনে বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে প্রশ্ন করা হয়, বিধানসভার অধিবেশনের জন্য তিনি কি রাজ্যপাল জগদীপ ধনকড়কে আমন্ত্রণ জানাতে যাবেন । মুখ্যমন্ত্রী কিন্তু এই বিষয়ে সাংবাদিকদের কোনও জবাব দেননি ।

এই অবস্থায় সংবিধান বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, এটা রাজ্যের জন্য একটা সাংবিধানিক সংকট হতেই পারে । কারণ, যদি রাজ্যপাল আমন্ত্রণ সত্ত্বেও বাজেট অধিবেশনে উপস্থিত না হন, তবে তা হবে নজিরবিহীন । এখানেই শেষ নয় সে ক্ষেত্রে রাজ্য সরকারের হাতেও অধিবেশন পিছিয়ে দেওয়া ছাড়া কোনও উপায় থাকবে না । প্রেসিডেন্সি কলেজের প্রাক্তন অধ্যক্ষ ড. অমল মুখোপাধ্যায়ের কথায়, এমন পরিস্থিতি কাঙ্ক্ষিত ছিল না । অতীতে কখনোই এমন ঘটনা ঘটেনি । রাজ্যপাল আসুন অথবা না আসুন, যাই ঘটুক পরিষদীয় রাজনীতিতে তা একটা নতুন ইতিহাসের জন্ম দেবে বলে মনে করছেন তিনি ।

আরও পড়ুন : Narada Case : মুখ্যমন্ত্রী-আইনমন্ত্রীর হলফনামা গ্রহণ কলকাতা হাইকোর্টের

ETV Bharat Logo

Copyright © 2024 Ushodaya Enterprises Pvt. Ltd., All Rights Reserved.