কলকাতা, 2 অক্টোবর : 2 কোটি 28 লক্ষ ভোট ৷ বিধায়কের সংখ্যা 3 থেকে 77 হওয়া ৷ আর বাংলার 37 শতাংশ মানুষের সমর্থন পাওয়া ৷ গত কয়েক মাসে বঙ্গ-রাজনীতিতে নিজেদের ভিত্তি বোঝাতে এই তথ্যগুলি বারবার ফিরে এসেছে বিজেপির (BJP) ছোট-বড়-মেজো নেতাদের মুখে ৷
গেরুয়া শিবিরের গর্বের সেই বেলুন ফুটো হয়ে গেল পশ্চিমবঙ্গের চার রাজ্যের উপনির্বাচনের (West Bengal Bye Election) ফলাফলে ৷ চার আসনে সুকান্ত-শুভেন্দুদের দলের ভরাডুবি তো হয়েছেই ৷ সঙ্গে লজ্জা আরও বাড়িয়েছে তিন আসনে জামানত বাজেয়াপ্ত হওয়ার ঘটনা ৷
আরও পড়ুন : Trinamool Congress : উপনির্বাচনেও বাংলা সবুজ
দিনহাটা, গোসাবা ও খড়দা - এই তিন বিধানসভা আসনে বিজেপি প্রার্থীদের জামানত বাজেয়াপ্ত হয়েছে ৷ দিনহাটায় অশোক মণ্ডল পেয়েছেন 11.31 শতাংশ ভোট ৷ পলাশ রানা গোসাবায় বিজেপির হয়ে লড়াইয়ে নেমেছিলেন ৷ তিনি পেয়েছেন 9.95 শতাংশ ভোট ৷ আর খড়দার বিজেপি প্রার্থী জয় সাহার প্রাপ্ত ভোটের হার 13.07 শতাংশ ৷
ভারতের জনপ্রতিনিধিত্ব আইন অনুয়ায়ী, 16.66 শতাংশ ভোট না পেলে জামানত বাজেয়াপ্ত হয় ৷ সেক্ষেত্রে মনোনয়নের সময় নির্বাচন কমিশনের কাছে জমা দেওয়া হয় নির্দিষ্ট পরিমাণ অর্থ ফেরত দেওয়া হয় না সংশ্লিষ্ট প্রার্থীকে ৷
আরও পড়ুন : Abhishek Banerjee: উপনির্বাচনে ধুলিসাৎ বিজেপিকে দীপাবলির শুভেচ্ছা জানিয়ে কটাক্ষ অভিষেকের
আপাতত মুখরক্ষা করেছেন শান্তিপুরের প্রার্থী নিরঞ্জন বিশ্বাস ৷ তিনি 23.22 শতাংশ ভোট পেয়েছেন ৷ তাঁর জামানত বাজেয়াপ্ত হয়নি ৷ যা দেখে রাজনৈতিক বিশ্লেষক তথা কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন রেজিস্ট্রার রাজাগোপাল ধরচক্রবর্তীর বক্তব্য, ‘‘এই রেজাল্টের প্রভাব অবশ্যই আগামী ভোটে পড়বে । এই ভোটের ফল বলে দিচ্ছে স্থানীয় বিজেপি পায়ের তলার মাটি শক্ত নয় ৷’’
যদিও বিজেপি এই নিয়ে বিন্দুমাত্র চিন্তিত নয় ৷ এদিন দলের তরফে সাংবাদিক বৈঠকে হাজির হয়ে বিজেপির জাতীয় সহ-সভাপতি দিলীপ ঘোষ এই নিয়ে পালটা প্রশ্ন তুলেছেন ৷ জানতে চেয়েছেন, ভোট আদৌ হয়েছে কি ? একই কথা বলেছেন শান্তিপুরের গেরুয়া প্রার্থী নিরঞ্জন বিশ্বাসও ৷ তাঁর আবার দাবি, তৃণমূলের ভয়ে মানুষ ভোট দিতে পারেননি ৷
আরও পড়ুন : Victory Processions Banned: বিজয় মিছিল নিষিদ্ধ, চিঠি পাঠিয়ে মনে করিয়ে দিল কমিশন
তবে বিজেপির এই ‘সর্বনাশে’ নিজেদের ‘পৌষমাস’ দেখছে বামেরা ৷ তাদের যদিও সবক’টি আসনেই জামানত বাজেয়াপ্ত হয়েছে ৷ তবে আগের থেকে সামান্য ভোট বেড়েছে ৷ আর তাতেই তারা মনে করছে যে হাওয়া ঘুরছে ৷
সামনেই রাজ্যে একের পর এক পৌর নির্বাচন রয়েছে ৷ তার পর 2023-এ পঞ্চায়েত ভোট ৷ এই দু’টি ভোটই বলে দেবে হাওয়া কোন দিকে ঘুরছে ? মানুষকে বিজেপিকে ছেড়ে বামেদের দিকে চলে যাচ্ছেন ? নাকি শক্তি শুধু তৃণমূলেরই বৃদ্ধি হচ্ছে, বাকিরা ক্রমশ বঙ্গ-রাজনীতিতে অপ্রাসঙ্গিক হয়ে যাচ্ছেন ?
আরও পড়ুন : Dinhata Bypoll : দিনহাটায় 57 ভোটে হারের জবাব দেড় লক্ষে দিলেন উদয়ন