হলদিয়া, 7 ফেব্রুয়ারি : বিজেপি কর্মী সমর্থকদের প্রত্যাশা মেটালেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি৷ প্রায় আধণ্টারও বেশি সময়ের ভাষণে সরাসরি আক্রমণ করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে৷ তৃণমূল কংগ্রেসের বিরুদ্ধে একাধিক দুর্নীতির অভিযোগ তোলেন৷ আর সেই কারণে এবার বিধানসভা নির্বাচনে তৃণমূল জিততে পারবে না বলে জানিয়ে দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী৷
রবিবার হলদিয়ায় একটি সরকারি কর্মসূচিতে যোগদান করতে এসেছিলেন প্রধানমন্ত্রী৷ সেই কর্মসূচিতে যোগদানের আগে তিনি বঙ্গ-বিজেপি আয়োজিত সভায় হাজির তৃণমূলের সমালোচনা করেন৷ আর তা করতে গিয়ে তিনি টেনে আনেন বাঙালির ফুটবল প্রীতির কথা৷ তৃণমূলের দুর্নীতিগুলিকে তিনি ফুটবলের পরিভাষায় ‘ফাউল’ বলে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘‘বাংলা এবার তৃণমূলকে রাম কার্ড দেখাতে যাচ্ছে৷’’
এদিন সভার শুরুতে বাংলায় ভাষণ শুরু করেন প্রধানমন্ত্রী সেখানে মেদিনীপুরের মাটিকে ‘পবিত্র’ বলে উল্লেখ করে তাঁর ভাষণে শহিদ মাতঙ্গিনী, হাজরা, শহিদ ক্ষুদিরাম বোস, ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগররের নাম উল্লেখ করেন৷ একই সঙ্গে উল্লেখ করেছেন তাম্রলিপ্ত জাতীয় সরকার, বিপ্লবী সতীশ সামন্তর নামও৷
আর তার পরই তাঁর দাবি, ব্রিটিশ আমলেও বাংলা এগিয়েছিল৷ কিন্তু স্বাধীনতার পর থেকে কংগ্রেস, বাম ও তৃণমূলের দুর্নীতি-অত্যাচারের জন্য বাংলা ক্রমশ পিছিয়ে গিয়েছে৷ মমতার আমলে গত দশ বছরে রাজ্যে নতুন কোনও শিল্প আসেনি বলেও তিনি অভিযোগ করেন৷ তাই তাঁর দাবি, ‘‘বাংলা দশ বছর ধরে নির্মমতা পেয়েছে৷ অথচ মমতার অপেক্ষা ছিল৷’’ মমতার সরকার আসলে বাম সরকারের পুনর্জীবন করেছে বলেও তিনি অভিযোগ করেছেন৷
প্রধানমন্ত্রী কিষান সম্মাননিধি, আয়ুষ্মান ভারত প্রকল্পের কথাও এদিন মোদির ভাষণে উঠে এসেছে৷ এই প্রকল্পগুলির সুবিধা পেতে বাংলার মানুষকে মমতার সরকার বঞ্চিত করেছে বলেও তাঁর অভিযোগ৷ তবে বাংলায় বিজেপির সরকার এলে এই সব সুবিধা পাওয়া যাবে বলে তিনি জানিয়েছেন৷
কয়েকদিন আগে বিজেপির সমালোচনা করতে গিয়ে ত্রিপুরার প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী মানিক সরকার ওই রাজ্যের সরকারের প্রসঙ্গ তুলেছিলেন৷ সেই প্রসঙ্গ টেনে বিজেপির সমালোচনা করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও৷ রবিবার হলদিয়া থেকে প্রধানমন্ত্রীর বক্তৃতাতেও উঠে আসে ত্রিপুরার কথা৷ ত্রিপুরার বিজেপি সত্যিকারের পরিবর্তন এনেছে বলেও তিনি দাবি করেন৷ সেই ধরনের ‘আসল’ পরিবর্তন এবার বাংলাতেও দরকার বলে মোদি দাবি করেছেন৷
আরও পড়ুন : আন্তর্জাতিক চক্র ভারতের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করছে, সরব মোদি
তাই তৃণমূলের বিরুদ্ধে বাম ও কংগ্রেসের সঙ্গে আড়ালে যোগাযোগ রাখার অভিযোগ তুলেছেন৷ সেই কারণে দলীয় কর্মীদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেছেন, ‘‘তৃণমূলের লুকিয়ে থাকা বন্ধুদের থেকেও সাবধানে থাকতে হবে৷’’