দিল্লি, 12 ,সেপ্টেম্বর : দেশজুড়ে দুই দিনের ব্যাঙ্ক ধর্মঘটের ডাক দিল ব্যাঙ্ক অফিসার্স ইউনিয়ন । কেন্দ্রীয় সরকারের রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্ক সংযুক্তিকরণের প্রতিবাদে এই ধর্মঘট বলে জানায় ব্যাঙ্ক অফিসার্স ইউনিয়নের সদস্যরা । চলতি মাসের 26 ও 27 তারিখ এই ধর্মঘট ডাকা হয়েছে । দেশে ব্যাঙ্ক অফিসারদের ৯টি সংগঠনের মধ্যে চারটি বড় সংগঠনই ধর্মঘটে অংশ নেবে । ধর্মঘটের জেরে টানা চার দিন ব্যাঙ্ক বন্ধ থাকবে । কারণ, 26 ও 27 তারিখ বৃহস্পতি ও শুক্রবার 29 তারিখ মাসের চতুর্থ শনিবার । তাই সেদিনও ব্যাঙ্ক বন্ধ । পরদিন রবিবার । প্রসঙ্গত, পুজোর আগে লাগাতার চারদিন ব্যাঙ্ক বন্ধ থাকায় নাকাল হতে পারেন সাধারণ গ্রাহকরা ।
দিন কয়েক আগে কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী ঘোষণা করেছিলেন, 10টি ব্যাঙ্কের সংযুক্তিকরণ হবে ৷ 10টি ব্যাঙ্ক মিলে গিয়ে তৈরি হবে চারটি নতুন ব্যাঙ্ক ৷ পঞ্জাব ন্যাশনাল ব্যাঙ্ক, ওরিয়েন্টাল ব্যাঙ্ক অফ কমার্স ও ইউনাইটেড ব্যাঙ্ক মিলিয়ে একটি ব্যাঙ্ক করা হবে । কানাড়া ব্যাঙ্ক ও সিন্ডিকেট ব্যাঙ্ক সংযুক্ত হয়ে একটি ব্যাঙ্ক হবে । ইন্ডিয়ান ব্যাঙ্কে মিলে যাবে এলাহাবাদ ব্যাঙ্ক । এছাড়া ইউনিয়ন ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়া, অন্ধ্র ব্যাঙ্ক ও কর্পোরেশন ব্যাঙ্কের সংযুক্তিকরণ হবে ।
সংযুক্তিকরণের ফলে রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের সংখ্যা দাঁড়াবে 12 । কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রীর সেই ঘোষণার পর দেশজুড়ে আন্দোলন শুরু করেন ব্যাঙ্ককর্মীরা ৷ চাকরি হারানোর আশঙ্কায় ভুগতে থাকেন ব্যাঙ্ককর্মীরা ৷ দেশের কয়েক লাখ ব্যাঙ্ককর্মীকে অবশ্য আশ্বস্ত করার চেষ্টা করেন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারমন ৷ তিনি বলেছিলেন, "সম্পূর্ণ এক বিভ্রান্তিকর পরিস্থিতি তৈরি হচ্ছে ৷ আমি প্রত্যেকটি ব্যাঙ্ককর্মীকে নিশ্চিত করছি যে, এই সংযুক্তিকরণের ফলে একজনেরও চাকরি যাবে না ৷"
মূলত 9 দফা দাবি নিয়ে ধর্মঘটের ডাক দেওয়া হয়েছে । ফেডারেশন অফ ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়া অফিসার্স এসোসিয়েশনের সভাপতি সঞ্জয় দাস জানিয়েছেন, চলতি মাসের ধর্মঘটে যদি টনক নড়ে তাহলে অনির্দিষ্টকালের জন্য ব্যাঙ্ক ধর্মঘটের পথে যাবেন তারা । ব্যাঙ্ক সংযুক্তিকরণের তীব্র বিরোধিতা করেছেন তিনি । ব্যাঙ্ক সংযুক্তিকরণ ও দীর্ঘদিনের বেতন চুক্তি সম্পাদিত না হওয়ার প্রতিবাদে দুদিনের ব্যাঙ্ক ধর্মঘট ডেকেছে অফিসার্স ইউনিয়নগুলি ।
অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি সঞ্জয় দাস বলেন, "ধর্মঘট ডাকতে চাই না আমরা । বাধ্য হয়ে শেষ পন্থা ধর্মঘটকে অবলম্বন করতে হচ্ছে । ব্যাঙ্ক সংযুক্তিকরণ দেশের অর্থনীতিতে ভয়ঙ্কর কুপ্রভাব ফেলে । এদিকে সরকার কর্ণপাত করছে না । দশটি ব্যাংক সংযুক্তিকরণ করে চারটে ব্যাংক করা হলো। গ্রাহক পরিষেবা এর ফলে বিঘ্নিত হল । ভয়ঙ্কর ভাবে দেশের অর্থনীতিতে কালো ছায়া পড়ল । কর্মসংস্থান বন্ধ হয়ে গেল ।"