কলকাতা, 10 জানুয়ারি: বক্সা ব্যাঘ্র সংরক্ষণ বনাঞ্চল বাণিজ্যিক জায়গা হয়ে উঠল কীভাবে ? শুক্রবার এমনটাই জানতে চাইল কলকাতা হাইকোর্ট । সংরক্ষিত বনাঞ্চল নিয়ে পরিবেশবিদ সুভাষ দত্তের ভূমিকা নিয়েও বিরক্ত হাইকোর্ট । আপাতত বক্সা টাইগার রিজার্ভ ফরেস্ট এলাকায় 28 জানুয়ারি পর্যন্ত সব হোটেল রিসর্ট ও হোম স্টে, রেস্তোরাঁ বন্ধ থাকবে। শুক্রবার এই সংক্রান্ত মামলার শুনানিতে বিচারপতি বিশ্বজিৎ বসু পরিবেশবিদ সুভাষ দত্তকে বলেন "একসময়ে আপনি এই নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন । অথচ এখন ওই বনাঞ্চলকে বাঁচাতে আপনার দেখা মিলছে না। আপনার ইমেজের সঙ্গে মিল পাচ্ছি না ।"
এদিন রাজ্যের ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন তোলেন বিচারপতি । তাঁর বক্তব্য, "বাঘ সংরক্ষণের জঙ্গল কীভাবে রাজ্যের একটি বিজ্ঞপ্তিতে রেভিনিউ ভিলেজ হল ? এই বিষয়ে কেন্দ্র এবং রাজ্যের কাছে জানতে চান । সরকারি আইনজীবীকে বিচারপতি বলেন, "ওখানে পাথর ভাঙা হচ্ছে । এখন বালির বদলে পাথর মাফিয়া হয়েছে । পাথর কেটে ইঁট বানাচ্ছে । আপনারা কি জানেন সে বিষয়ে ?"
মামলায় তিস্তার প্রসঙ্গ ওঠায় আপত্তি জানান সরকারি আইনজীবী বিশ্বব্রত বসু মল্লিক । তাঁকে বিচারপতি বলেন, "তিস্তাটাও ফেলে রেখেছেন কেন ওখানেও নির্মাণ করে ফেলুন । কোর এলাকায় কিছু থাকলে এখনই সরিয়ে ফেলুন । "
সেই মামলার শুনানিতে সুভাষ দত্ত বলেন, "জলপাইগুড়িতে যাওয়া সম্ভব হচ্ছে না । তবে যতদূর জানি কোর এলাকায় সাংসদদের জন্য গেস্ট হাউস হয়েছিল ৷ পরে আদালতের নির্দেশে সব ভাঙা হয় ।" এই বিষয়ে রাজ্যের বক্তব্য,"বনাঞ্চলের একদিক ব্যবহার হলেও সংরক্ষিত এলাকা বাণিজ্যিকভাবে ব্যবহার হয়নি । 2013 সালে কেন্দ্র বিজ্ঞপ্তি দিয়ে জানায় বনাঞ্চলকে রেভিনিউ ভিলেজ করা যাবে । তাই রাজ্য এটি রেভিনিউ ভিলেজ করে ।" এই মামলায় কেন্দ্রকে যুক্ত করে তাদের বক্তব্য শোনার প্রয়োজন রয়েছে বলে অভিমত বিচারপতি বসুর । আগামী 28 জানুয়ারি ফের শুনানি হবে বলে জানান তিনি ।
প্রসঙ্গত, 2015 সালে বক্সা ব্র্যাঘ্র প্রকল্পে সমস্ত বেআইনি হোটেল ও রেস্তোরাঁ বন্ধ করার দাবি জানিয়ে জাতীয় পরিবেশ আদালতে মামলা করেন পরিবেশকর্মী সুভাষ দত্ত । সেই মামলার পরিপ্রেক্ষিতে 2022 সালের মে মাসে জাতীয় পরিবেশ আদালত সমস্ত বেআইনি হোটেল-রেস্তোরাঁ
বন্ধ করতে নির্দেশ দিয়েছিল ।