ETV Bharat / city

সিট বাড়ানো নয়, কমানোর আবেদন এল কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে - cu

প্রতি বছর কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের কাছে সিট বাড়ানোর আবেদন আসে । কিন্তু এইবছর হল উলটো । সিট কমানোর আবেদন এল বিশ্ববিদ্যালয়ে

কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়
author img

By

Published : May 17, 2019, 11:46 AM IST

কলকাতা, 17 মে : প্রতি বছর কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের কাছে সিট বাড়ানোর আবেদন আসে অধীনস্ত কলেজগুলোর কাছ থেকে । তবে এই বছরের ছবিটা আলাদা । সিট বাড়ানো নয়, বরং কমানোর দাবি এল কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের কাছে । একথা জানালেন কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য সোনালী চক্রবর্তী বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি জানান, জেনেরাল ও অনার্স দুই ক্ষেত্রেই সিট বাড়ানোর পরিমাণ নির্দিষ্ট করে দিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় । কলেজগুলো যতই সিট বাড়ানোর আবেদন করুক না কেন অনার্সের ক্ষেত্রে 10 শতাংশ ও জেনেরালের ক্ষেত্রে 15 শতাংশ সিটই বাড়ানো হবে । তার থেকে বেশি সিট বাড়ানোর বিষয়ে বিবেচনা করা হবে না। মূলত, ভরতি নিয়ে দুর্নীতির ঘটনা এড়াতেই এই ধরনের পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে বলে জানান উপাচার্য ।

বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য সোনালী চক্রবর্তী বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, "অনার্সে UG-র কতগুলো সিট হবে, সেই বিষয়ে আজকের সিন্ডিকেটে সিদ্ধান্ত নিয়েছি, পাশ বা জেনেরালেও আমরা কলেজগুলোকে বলব নির্দিষ্ট সংখ্যক সিটের কথা বলে দিতে। কারণ, আমাদের মনে হয়েছে, যে সংখ্যক সিট কলেজগুলোতে আছে বা তারা বাড়িয়ে করেছে সেই সংখ্যক সিটের কোনও ডিমান্ড নেই । ডিমান্ড নেই বলেই আসলে ভরতিটা হয় না। সাবজেক্ট ওয়াইজ ডিমান্ডই নেই, সাপ্লাইটা বেশি হয়ে গেছে । ভরতিটা হবে কী করে ।" অনেকগুলো কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়ের কাছে সিট কমিয়ে দেওয়ার আবেদন করেছে বলে জানান সোনালী । তিনি বলেন, "অনেকগুলো কলেজ আমাদের কাছে আবেদন করেছে যে তাদের সিটের সংখ্যা কমিয়ে দেওয়া হোক। এর বিশ্লেষণ করতে গিয়ে যে সিদ্ধান্তে এসেছি, আজকে NIRF ক্রমতালিকায় কলেজগুলোও অংশগ্রহণ করছে এবং সেখানে স্যাংশনড সিট এবং আপনার কত ছাত্র-ছাত্রী আছে এটা দেখানো হয়েছে । ধরা যাক কোনও কলেজ একটা বিশাল সংখ্যক সিট স্যাংশন করে রাখল, ভরতি হল না সেই সংখ্যক ছাত্রছাত্রী । তাহলে কলেজের উপরেই দোষারোপ হবে ।" এই কারণে প্রতিটি কলেজের সিট বাড়ানোর সংখ্যা বেঁধে দিয়েছে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়।

উপাচার্য আরও বলেন, "আমরা বলেছি কোনও কলেজ জেনেরাল কোর্সে 15 শতাংশের বেশি সিট বাড়াতে পারবে না এবং অনার্সের 10 শতাংশের বেশি বড়ানো হবে না । আমরা দেখতে পাচ্ছি কলেজগুলো সারেন্ডার করছে যে আমরা সিট কমাতে চাই । সিট বাড়ানোর ক্ষেত্রেও কড়া কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় । উপাচার্য বলেন, "যে কলেজগুলো সিট বাড়ানোর জন্য আবেদন করেছিল সেগুলো আমরা কড়াভাবে দেখছি। একটা কোনও কলেজ অ্যারাবিকে 44 থেকে 75 করেছে। অনার্সে আমরা 10 শতাংশ বাড়াব । তাহলে 44-এ 10 শতাংশ হয় 48। যারা কমাতে চেয়েছে সেটা কনসিডার করেছি।"

কতগুলো কলেজ সিট কমানোর আবেদন করেছে জানতে চাইলে সোনালী চক্রবর্তী বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, প্রায় দশটা কলেজ সিট কমানোর আবেদন করেছে । তার মধ্যে যেমন বড় কলেজের নাম রয়েছে, তেমনি কলকাতার ছোটো কলেজেরও নাম রয়েছে।

এই বছর প্রথম অনার্সের পাশাপাশি কলেজগুলোর থেকে জেনেরালের সিট সংখ্যা জানতে চাওয়া হয়েছে । এ বিষয়ে সহ-উপাচার্য দীপক কর বলেন, "আমরা আজ পর্যন্ত প্রত্যেকটি কলেজের সাবজেক্ট ওয়াইজ ইনটেক ওয়েবসাইটে আপলোড করতাম। কিন্তু, জেনেরালে সেটা করা হত না । জেনেরালে প্রতিটি কলেজ তাদের পরিকাঠামো অনুযায়ী, তাদের ক্ষমতা অনুযায়ী ভরতি নিত।"

অভিযোগ উঠছে সিট রয়েছে অথচ ভরতি হচ্ছে না পড়ুয়া । প্রশ্নের উত্তরে সোনালী চক্রবর্তী বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, "ওটার ডিমান্ড নেই ওই অঞ্চলে । বললে বুঝতে পারবেন । কলেজগুলোর নাম বলা উচিত নয় বলে বলছি না । কলকাতার বুকে এরকম কলেজ আছে। এত সিট বাড়িয়ে রেখেছে। এবার কমাতে চাইছে।"

সিট বাড়ানো নিয়ন্ত্রণের পাশাপাশি, এই বছর স্নাতকের ভরতি প্রক্রিয়া পুরোপুরি অনলাইনে হবে । উপাচার্য বলেন, "আমরা UG-তে অনলাইনে রেজিস্ট্রেশন করছি । অনলাইনে অ্যাডমিশন করছি । পুরোটাই অনলাইন প্রসেসের মধ্যে দিয়ে হবে । সিন্ডিকেট সেই সিদ্ধান্ত নিয়েছে ।"

27 মে পশ্চিমবঙ্গ উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা সংসদের ফলাফল প্রকাশের পরই বিশ্ববিদ্যালয় অধীনস্ত কলেজগুলোতে শুরু হয়ে যাবে স্নাতকের ভরতি প্রক্রিয়া । পশ্চিমবঙ্গ সরকারের উচ্চ শিক্ষা দপ্তরের নির্দেশ মেনেই কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় অধীনস্ত সব কলেজের ভরতি প্রক্রিয়া অনলাইনে হবে । যাতে কোনও পড়ুয়াকে কলেজে শারীরিকভাবে উপস্থিত হতে হবে না ক্লাস শুরু হওয়ার আগে পর্যন্ত । যেহেতু, এখন সেমিস্টার সিস্টেম । সবকিছু মাথায় রেখে জুলাই মাসের প্রথম সপ্তাহে ক্লাস শুরু করতে বলা হয়েছে । 6 জুলাই পর্যন্ত চলবে ভরতি প্রক্রিয়া । ক্লাস শুরুর এক মাসের মধ্যেই রেজিস্ট্রেশন প্রক্রিয়া সম্পন্ন করা হবে ।

কলকাতা, 17 মে : প্রতি বছর কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের কাছে সিট বাড়ানোর আবেদন আসে অধীনস্ত কলেজগুলোর কাছ থেকে । তবে এই বছরের ছবিটা আলাদা । সিট বাড়ানো নয়, বরং কমানোর দাবি এল কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের কাছে । একথা জানালেন কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য সোনালী চক্রবর্তী বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি জানান, জেনেরাল ও অনার্স দুই ক্ষেত্রেই সিট বাড়ানোর পরিমাণ নির্দিষ্ট করে দিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় । কলেজগুলো যতই সিট বাড়ানোর আবেদন করুক না কেন অনার্সের ক্ষেত্রে 10 শতাংশ ও জেনেরালের ক্ষেত্রে 15 শতাংশ সিটই বাড়ানো হবে । তার থেকে বেশি সিট বাড়ানোর বিষয়ে বিবেচনা করা হবে না। মূলত, ভরতি নিয়ে দুর্নীতির ঘটনা এড়াতেই এই ধরনের পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে বলে জানান উপাচার্য ।

বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য সোনালী চক্রবর্তী বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, "অনার্সে UG-র কতগুলো সিট হবে, সেই বিষয়ে আজকের সিন্ডিকেটে সিদ্ধান্ত নিয়েছি, পাশ বা জেনেরালেও আমরা কলেজগুলোকে বলব নির্দিষ্ট সংখ্যক সিটের কথা বলে দিতে। কারণ, আমাদের মনে হয়েছে, যে সংখ্যক সিট কলেজগুলোতে আছে বা তারা বাড়িয়ে করেছে সেই সংখ্যক সিটের কোনও ডিমান্ড নেই । ডিমান্ড নেই বলেই আসলে ভরতিটা হয় না। সাবজেক্ট ওয়াইজ ডিমান্ডই নেই, সাপ্লাইটা বেশি হয়ে গেছে । ভরতিটা হবে কী করে ।" অনেকগুলো কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়ের কাছে সিট কমিয়ে দেওয়ার আবেদন করেছে বলে জানান সোনালী । তিনি বলেন, "অনেকগুলো কলেজ আমাদের কাছে আবেদন করেছে যে তাদের সিটের সংখ্যা কমিয়ে দেওয়া হোক। এর বিশ্লেষণ করতে গিয়ে যে সিদ্ধান্তে এসেছি, আজকে NIRF ক্রমতালিকায় কলেজগুলোও অংশগ্রহণ করছে এবং সেখানে স্যাংশনড সিট এবং আপনার কত ছাত্র-ছাত্রী আছে এটা দেখানো হয়েছে । ধরা যাক কোনও কলেজ একটা বিশাল সংখ্যক সিট স্যাংশন করে রাখল, ভরতি হল না সেই সংখ্যক ছাত্রছাত্রী । তাহলে কলেজের উপরেই দোষারোপ হবে ।" এই কারণে প্রতিটি কলেজের সিট বাড়ানোর সংখ্যা বেঁধে দিয়েছে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়।

উপাচার্য আরও বলেন, "আমরা বলেছি কোনও কলেজ জেনেরাল কোর্সে 15 শতাংশের বেশি সিট বাড়াতে পারবে না এবং অনার্সের 10 শতাংশের বেশি বড়ানো হবে না । আমরা দেখতে পাচ্ছি কলেজগুলো সারেন্ডার করছে যে আমরা সিট কমাতে চাই । সিট বাড়ানোর ক্ষেত্রেও কড়া কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় । উপাচার্য বলেন, "যে কলেজগুলো সিট বাড়ানোর জন্য আবেদন করেছিল সেগুলো আমরা কড়াভাবে দেখছি। একটা কোনও কলেজ অ্যারাবিকে 44 থেকে 75 করেছে। অনার্সে আমরা 10 শতাংশ বাড়াব । তাহলে 44-এ 10 শতাংশ হয় 48। যারা কমাতে চেয়েছে সেটা কনসিডার করেছি।"

কতগুলো কলেজ সিট কমানোর আবেদন করেছে জানতে চাইলে সোনালী চক্রবর্তী বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, প্রায় দশটা কলেজ সিট কমানোর আবেদন করেছে । তার মধ্যে যেমন বড় কলেজের নাম রয়েছে, তেমনি কলকাতার ছোটো কলেজেরও নাম রয়েছে।

এই বছর প্রথম অনার্সের পাশাপাশি কলেজগুলোর থেকে জেনেরালের সিট সংখ্যা জানতে চাওয়া হয়েছে । এ বিষয়ে সহ-উপাচার্য দীপক কর বলেন, "আমরা আজ পর্যন্ত প্রত্যেকটি কলেজের সাবজেক্ট ওয়াইজ ইনটেক ওয়েবসাইটে আপলোড করতাম। কিন্তু, জেনেরালে সেটা করা হত না । জেনেরালে প্রতিটি কলেজ তাদের পরিকাঠামো অনুযায়ী, তাদের ক্ষমতা অনুযায়ী ভরতি নিত।"

অভিযোগ উঠছে সিট রয়েছে অথচ ভরতি হচ্ছে না পড়ুয়া । প্রশ্নের উত্তরে সোনালী চক্রবর্তী বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, "ওটার ডিমান্ড নেই ওই অঞ্চলে । বললে বুঝতে পারবেন । কলেজগুলোর নাম বলা উচিত নয় বলে বলছি না । কলকাতার বুকে এরকম কলেজ আছে। এত সিট বাড়িয়ে রেখেছে। এবার কমাতে চাইছে।"

সিট বাড়ানো নিয়ন্ত্রণের পাশাপাশি, এই বছর স্নাতকের ভরতি প্রক্রিয়া পুরোপুরি অনলাইনে হবে । উপাচার্য বলেন, "আমরা UG-তে অনলাইনে রেজিস্ট্রেশন করছি । অনলাইনে অ্যাডমিশন করছি । পুরোটাই অনলাইন প্রসেসের মধ্যে দিয়ে হবে । সিন্ডিকেট সেই সিদ্ধান্ত নিয়েছে ।"

27 মে পশ্চিমবঙ্গ উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা সংসদের ফলাফল প্রকাশের পরই বিশ্ববিদ্যালয় অধীনস্ত কলেজগুলোতে শুরু হয়ে যাবে স্নাতকের ভরতি প্রক্রিয়া । পশ্চিমবঙ্গ সরকারের উচ্চ শিক্ষা দপ্তরের নির্দেশ মেনেই কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় অধীনস্ত সব কলেজের ভরতি প্রক্রিয়া অনলাইনে হবে । যাতে কোনও পড়ুয়াকে কলেজে শারীরিকভাবে উপস্থিত হতে হবে না ক্লাস শুরু হওয়ার আগে পর্যন্ত । যেহেতু, এখন সেমিস্টার সিস্টেম । সবকিছু মাথায় রেখে জুলাই মাসের প্রথম সপ্তাহে ক্লাস শুরু করতে বলা হয়েছে । 6 জুলাই পর্যন্ত চলবে ভরতি প্রক্রিয়া । ক্লাস শুরুর এক মাসের মধ্যেই রেজিস্ট্রেশন প্রক্রিয়া সম্পন্ন করা হবে ।

Intro:কলকাতা, 16 মে: প্রতি বছর কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের কাছে সিট বাড়ানোর আবেদন আসে অধীনস্থ কলেজগুলোর কাছ থেকে। এই বছর দেখা গেল উল্টো ছবি। শুধু সিট বাড়ানোর নয়, সিট কমানোর আবেদন এল কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের কাছে। আজ একথা জানালেন কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য সোনালী চক্রবর্তী বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি জানান, এ বছর জেনারেল ও অনার্স দুই ক্ষেত্রেই সিট বাড়ানোর পরিমাণ নির্দিষ্ট করে দিয়েছে। যে কলেজ যত সিট বাড়ানোর আবেদন করুক না কেন অনার্সের ক্ষেত্রে 10 শতাংশ ও জেনারেলের ক্ষেত্রে 15 শতাংশ সিটই বাড়ানো হবে। তার থেকে বেশি সিট বাড়ানোর বিষয়ে বিবেচনাও করা হবে না। মূলত, ভরতি দুর্নীতির ঘটনা এড়াতেই এই ধরনের পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে বলে জানান সোনালীদেবী।


Body:কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য সোনালী চক্রবর্তী বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, "আমরা যে রকম জানিয়েছি অনার্সে UG-র কতগুলো সিট হবে, আমরা আজকের সিন্ডিকেটে সিদ্ধান্ত নিয়েছি, পাস বা জেনারেলেও আমরা কলেজগুলোকে বলব নির্দিষ্ট সংখ্যক সিটের কথা বলে দিতে। কারণ, আমাদের মনে হয়েছে যে, যে সংখ্যক সিট কলেজগুলোতে আছে বা তারা বাড়িয়ে করেছে কত সংখ্যক সিটের কোনও ডিমান্ড নেই। ডিমান্ড নেই বলেই আসলে ভর্তিটা হয় না। এই যে বেশি সংখ্যক বাড়ানো সিট থাকে তার ফলেই আসলে ভর্তিটা আসলে হয় না। সাবজেক্ট ওয়াইজ ডিমান্ডই নেই, সাপ্লাইটা বেশি হয়ে গেছে। ভর্তিটা হবে কী করে।"

অনেকগুলো কলেজ তাদের কাছে সিট কমিয়ে দেওয়ার আবেদন করেছে বলে জানান সোনালী চক্রবর্তী বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি বলেন, "অনেকগুলো কলেজ আমাদের কাছে আবেদন করেছে যে তাদের সিটের সংখ্যা কমিয়ে দেওয়া হোক। এটা কেন হল এটাও বিশ্লেষণ করতে গিয়ে যে সিদ্ধান্তে এসেছি যে, আজকে NIRF রাঙ্কিংয়ে কলেজগুলোও অংশগ্রহণ করছে এবং সেখানে আপনার স‍্যাংশনড সিট কত এবং আপনার কত স্টুডেন্ট আছে এটা দেখানো হয়েছে। ধরুন কেউ একটা বিশাল সংখক সিট স‍্যাংশন করে রাখল, ভর্তি হলো না সেই সংখ্যক ছাত্রছাত্রী। তাহলে কলেজের উপরেই তো দোষারোপ হবে।"

এই কারণে প্রতিটি কলেজের সিট বাড়ানোর সংখ্যা বেঁধে দিয়েছে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়। সোনালী চক্রবর্তী বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, "আমরা বেধে দিয়েছি, আমরা বলেছি কোন কলেজ জেনারেল কোর্সে 15 শতাংশের বেশি সিট বাড়াতে পারবে না এবং অনার্সের 10 শতাংশের বেশি ইনক্রিজ হবে না। এটা বেধে দিয়েছি। আমরা দেখতে পাচ্ছি কলেজগুলো সারেন্ডার করছে যে আমরা সিট কমাতে চাই। এই ট্রেন্ডটা কেন হল এটা বিশ্লেষণ করতে গিয়ে আমাদের মনে হয়েছে, আমরা আলোচনাও করেছি, নিশ্চয়ই এরা সবাই র্যাংকিংয়ে পার্টিসিপেট করবে এবং এত সংখ্যক সিট যে ওদেরও বাড়ানো উচিত হয়নি দেরিতে হলেও সেই বুদ্ধিটা তাদের হয়েছে।" সিট বাড়ানোর ক্ষেত্রেও কড়া কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়। উপাচার্য বলেন, "যে কলেজগুলো বাড়ানোর আবেদন করেছিল সেগুলো আমরা কড়াভাবে দেখছি। একটা কোনও কলেজ অ্যারাবিকে 44 থেকে 75 করেছে। অনার্সে আমরা 10 শতাংশ বাড়াবো। তাহলে 44-এ 10 শতাংশ হয় 48। অস্বাভাবিক বাড়ানো অনেকেই করেছেন। এগুলো হবে না। আর যারা কমাতে চেয়েছে সেটা কনসিডার করেছি।" কতগুলো কলেজ সিট কমানোর আবেদন করেছে? সোনালী চক্রবর্তী বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, প্রায় দশটা কলেজ সিট কমানোর আবেদন করেছেন। তার মধ্যে যেমন বড় কলেজের নাম রয়েছে, তেমনি কলকাতার কলেজেরও নাম রয়েছে।

এই বছরই প্রথম অনার্সের পাশাপাশি কলেজগুলোতে জেনারেলের সিট সংখ্যা জানতে চাওয়া হয়েছে অধীনস্ত কলেজগুলোর কাছ থেকে। এ বিষয়ে সহ-উপাচার্য দীপক কল বলেন, " আমরা আজ পর্যন্ত প্রত্যেকটি কলেজের সাবজেক্ট ওয়াইজ ইনটেক ওয়েবসাইটে আপলোড করতাম। কিন্তু, জেনারেলে সেটা করা হত না। জেনারেলে প্রতিটি কলেজ তাদের পরিকাঠামো অনুযায়ী, তাদের ক্ষমতা অনুযায়ী ভর্তি নিত।" উপাচার্য বলেন, " তাহলে আমাদের কাছে তো কোন তথ্য থাকবে না। টোটাল জেনারেল আমার অধীনস্ত কলেজে কতজন পরে। এবার এর ফলে আমরা যখন বলে দিচ্ছি যে জেনারেলেও তোমার কতজন, সেইটা আমরা জানতে পারছি। এই যে এত সিট ফাঁকা পড়ে থাকছে এটাও তো ধরা পড়ে যাবে। আসলে তোমায় কত সিট আছে তুমি যদি না জানো তাহলে আমি কী করে জানব।" জানুয়ারি মাসে অধীনস্থ কলেজগুলির কাছ থেকে এই তথ্য চেয়েছিল কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। মার্চ মাসে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের কাছে সেই তথ্য পাঠায় কলেজগুলি। সেই তথ্যগুলিকে আজকে সিন্ডিকেটে পেশ করা হয়।

সিট রয়েছে অথচ ভর্তি হচ্ছে না পড়ুয়া। এটা কেন হচ্ছে? সোনালী চক্রবর্তী বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, " ওটার ডিমান্ড নেই ওই অঞ্চলে। বললে বুঝতে পারবেন। কলেজ গুলোর নাম বলা উচিত নয় বলে বলছি না। সেই কলেজের এই পড়ানো সেখানে পড়ুয়ারা যাবে না পড়তে। কলকাতার বুকে এরকম কলেজ আছে। এত সিট বাড়িয়ে রেখেছে। এবার কমাতে চাইছে।" অতিরিক্ত সিট থাকলে তাতে দুর্নীতি আশঙ্কাও থাকে। সেই দুর্নীতি কমানোর উদ্দেশ্যে নিয়ন্ত্রণ করতে চলেছে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়। উপাচার্যকে এবিষয়ে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, "কলেজগুলোতে ভর্তি হচ্ছিল না। তারপর কী হচ্ছিল? কলেজগুলোতে ভর্তি হচ্ছিল না। তারপর তাদের সময়সীমা বাড়ানো হচ্ছিল। আবার সময়সীমা বাড়ানো হচ্ছিল, আবার সময়সীমা বাড়ানো হচ্ছিল। তিনবারেও কেন হল না। তার চাহিদাই নেই। দেরিতে হলেও তাদের চৈতন্য ফিরেছে। কলেজগুলো কী করত এতদিন? যে সিটগুলো বাড়ানো ছিল, ভর্তি করতে পারত না, সেগুলো কী করে ভর্তি করত? মিস ইউজ তো হয়েইছে। এটা তো কোনও টাকা তোলার জায়গা নয়। আশা করি আমরা এগিয়েছি, যে দুর্নীতিটাকে ধরতে পারব।"

সিট বাড়ানো নিয়ন্ত্রণের পাশাপাশি, এই বছর স্নাতকের ভর্তি প্রক্রিয়া পুরোপুরি অনলাইনে হবে। উপাচার্য বলেন, " আমরা UG-তে অনলাইনে রেজিস্ট্রেশন করছি। অনলাইনে অ্যাডমিশন করছি। পুরোটাই অনলাইন প্রসেসের মধ্যে দিয়ে হবে। সিন্ডিকেট সেই সিদ্ধান্ত নিয়েছে।" 27 মে পশ্চিমবঙ্গ উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা সংসদের ফলাফল প্রকাশের পরই বিশ্ববিদ্যালয় অধীনস্ত কলেজগুলোতে শুরু হয়ে যাবে স্নাতকের ভর্তি প্রক্রিয়া। পশ্চিমবঙ্গ সরকারের উচ্চ শিক্ষা দপ্তরের নির্দেশ মেনেই কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় অধীনস্থ সব কলেজে ভর্তি প্রক্রিয়া অনলাইনে হবে। যাতে কোন পড়ুয়াকে কলেজে শারীরিকভাবে উপস্থিত হতে হবে না ক্লাস শুরু হওয়ার আগে পর্যন্ত। বিশ্ববিদ্যালয় তরফ থেকে কলেজগুলিকে বলা হয়েছে, 10 জুনের মধ্যে মেধাতালিকা প্রকাশ করতে। মাঝখানে একদিন বাদ দিয়ে ভর্তি প্রক্রিয়া শুরু হবে। যেহেতু, এখন সেমিস্টার সিস্টেম। তাই ক্লাস যেন শুরু করতে কোন রকম দেরি না হয় সেই বিষয়টা মাথায় রেখে জুলাই মাসের প্রথম সপ্তাহে ক্লাস শুরু করতে বলা হয়েছে। 6 জুলাই পর্যন্ত চলবে ভর্তি প্রক্রিয়া। ক্লাস শুরুর এক মাসের মধ্যেই রেজিস্ট্রেশন প্রক্রিয়া সম্পন্ন করা হবে বলে জানাচ্ছেন সহ-উপাচার্য দীপক কর।

স্নাতকোত্তরের ক্ষেত্রে গত বছরের মতোই ইউনিফর্ম সিলেবাস, ইউনিফর্ম প্রশ্নপত্র হবে। উপাচার্য জানান, এরপরে কলেজগুলোর জন‍্য স্নাতকোত্তর কোর্সের ক্ষেত্রে অ্যাওয়ে সেন্ট্রাল করার ভাবনা চিন্তা রয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের। উপাচার্যের মতে, যদি স্নাতকের ক্ষেত্রে অন্য কলেজে গিয়ে পরীক্ষা দিতে হয়, তাহলে স্নাতকোত্তরের ক্ষেত্রেও অন্য কলেজ গিয়ে পরীক্ষা দিতে হবে। এই বিষয়টি প্রথমে ফ‍্যাকাল্টি কাউন্সিলে আলোচনা করা হবে। তারপর তা সিন্ডিকেটে পেশ করা হবে। পাশাপাশি, স্নাতকোত্তর প্রবেশিকা পরীক্ষা যা 40 শতাংশ সিটের জন্য কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় নেয় তা অনলাইন করার চেষ্টা করা হচ্ছে। ইতিমধ্যেই একবার টেন্ডার ডাকা হয়েছে পরীক্ষা নেওয়ার জন্য। কিন্তু, তাতে কাউকে না পাওয়া যাওয়ায় আবার টেন্ডার ডাকবে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়। অপেক্ষা আদর্শ আচরণবিধি ওঠার।





Conclusion:
ETV Bharat Logo

Copyright © 2024 Ushodaya Enterprises Pvt. Ltd., All Rights Reserved.