কলকাতা, 29 সেপ্টেম্বর: নগরায়ন সভ্যতার একটি অবশ্যম্ভাবী অংশ ৷ শহরের আকার ও আয়তন যেমন আরও বাড়ছে, তেমনই শহর লাগোয়া এলাকারও ধীরে ধীরে বিকাশ ঘটছে সভ্যতারই নিয়মে ৷ এতদিন শহর লাগোয়া এলাকাকে শহরতলি হিসাবেই চিনত মানুষ ৷ কিন্তু, ইদানীং শহরতলির সীমা ছাড়িয়ে শহুরে উন্নয়নের ছোঁয়া পৌঁছে যাচ্ছে পঞ্চায়েত এলাকাগুলিতেও ৷ এবার তাই এই এলাকাগুলিকে আলাদাভাবে চিহ্নিত করে তার একটা পৃথক প্রশাসনিক পরিচয় গড়ে তোলার কথা ভাবছে রাজ্য সরকার (State Government) ৷
রাজ্য প্রশাসন সূত্রে এর ব্যাখ্য়ায় বলা হচ্ছে, এতদিন উন্নয়নের নিরিখে শহর থেকে গ্রাম পর্যন্ত এলাকাকে মোটামুটিভাবে শহরাঞ্চল (Urban Area), উপশহরাঞ্চল (Sub-urban Area) এবং গ্রামীণ অঞ্চল (Rural Area) হিসাবে ভাগ করা হত ৷ এবার থেকে পঞ্চায়েতের আওতাধীন অপেক্ষাকৃত উন্নত সুযোগ-সুবিধাযুক্ত এলাকাকে বলা হবে আংশিক শহরাঞ্চল (Semi Urban Area) ৷ তবে, এখনও পর্যন্ত পুরো বিষয়টি ভাবনা, চিন্তা বা পরিকল্পনার স্তরেই রয়েছে ৷ তাতে কোনও সরকারি সিলমোহর পড়েনি ৷
আরও পড়ুন: নভেম্বরের শুরুতেই রাজ্যে ফের দুয়ারে সরকার, বুধের বিজ্ঞপ্তিতে জানাল নবান্ন
সূত্রের দাবি, প্রাথমিকভাবে আংশিক শহরাঞ্চল হিসাবে চিহ্নিত করার জন্য যে এলাকাগুলিকে বেছে নেওয়া হয়েছে, সেগুলির অধিকাংশই বিভিন্ন পঞ্চায়েতের অধীনে রয়েছে ৷ কিন্তু ধীরে ধীরে সেখানে শহুরে সুযোগ, সুবিধা পৌঁছে যাচ্ছে ৷ ফলে জীবনযাপনেও বদল আসছে ৷ সমস্য়া হল, এইসব জায়গায় ফাঁকা জমির অভাব নেই ৷ ফলে ব্যাঙের ছাতার মতো বাড়ি, আবাসন, বহুতল ও ফ্ল্যাট তৈরি হচ্ছে ৷ অথচ, এত বড় আকারে বসত গড়ার জন্য জঞ্জাল সাফাই-সহ অন্য যেসব ব্যবস্থাপনা থাকা দরকার, সেগুলি নেই ৷ এতে আখেরে বাসিন্দাদেরই সমস্য়া বাড়ছে ৷ এবার এই এলাকাগুলিকে চিহ্নিত করে শুধুমাত্র এখানকার জন্যই পঞ্চায়েত এবং পৌর ও নগরোন্নয়ন দফতর একসঙ্গে নতুন নীতি তৈরি করার কথা ভাবছে ৷
এই 'সেমি আরবান এরিয়া'-র উদাহরণ হিসাবে সোনারপুর-রাজপুর পৌরসভা লাগোয়া পঞ্চায়েতের একটি বিস্তীর্ণ এলাকার কথা বলা হচ্ছে ৷ এই এলাকা এখনও পর্যন্ত পঞ্চায়েতের অন্তর্ভুক্ত হলেও এখানে আধুনিক নগর জীবনের সবকিছুই ধীরে ধীরে গড়ে উঠছে ৷ একই ছবি দেখা যাচ্ছে ভাঙ্গড় লাগোয়া বিস্তীর্ণ এলাকা কিংবা রাজারহাটের লাগোয়া পঞ্চায়েতগুলিতেও ৷ প্রায় একই চরিত্র ধরা পড়েছে চন্দননগর পৌরনিগম, বিধাননগর পৌরনিগম, শিলিগুড়ি পৌরনিগম ও আসানসোল পুরনিগম লাগোয়া বেশ কিছু পঞ্চায়েত এলাকাতেও ৷ মূলত, এইসব এলাকার বাসিন্দাদের সুষ্ঠু নাগরিক পরিষেবা দিতেই নয়া নীতি গঠনের কথা ভাবছে রাজ্য সরকার ৷ আগামী বছরের প্রথম দিকেই এই নীতি কার্যকর করা হতে পারে ৷