চন্দননগর, 10 নভেম্বর: পোষ্য সারমেয় নিয়ে পুজো দেখতে যাওয়া ঘিরে আপত্তি ৷ সোশাল মিডিয়ায় কটূক্তি যুবতীকে। এরপরই তাঁর মৃত্যু হয়। পরিবারের দাবি কটূক্তির ঘটনায় মানসিক অবসাদে ভুগছিলেন তরুণী। তাঁর জেরেই এই ঘটনা ঘটে থাকতে পারে। যদিও অভিযোগ মানতে নারাজ চন্দননগর ফটকগোড়া পুজো কমিটি। তাদের দাবি, ব্যক্তিগত কারণেই তরুণী এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। এর সঙ্গে পুজো কমিটি যুক্ত নয়। পরিবারের তরফে চন্দননগর থানায় লিখিত অভিযোগ হয়েছে।
ঘটনাটি ঠিক কী?
চন্দননগর ফটক গোড়ার পুজো কমিটির সাধারণ সদস্য ছিলেন সুশ্রিকা দত্ত (23)। কয়েক বছর ধরেই এই বারোয়ারি পুজোর সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। জগদ্ধাত্রী পুজোর ষষ্ঠীর দিন ফটক গোড়ার মন্দিরে তিনি ও তাঁর মা ও দুই পোষ্য সারমেয়কে নিয়ে গিয়েছিলেন। মন্দিরে পুজো দেখতে যাওয়ার সময় পুজোর এক প্রবীণ সদস্য তাঁকে এভাবে প্রবেশ করতে বারণ করেন। সেই সময় সেখান থেকে চলে এলেও পরে সোশাল মিডিয়ায় একটি পোস্ট করেন সুশ্রিকা ৷ এরপরই তাঁর দিকে নানা মন্তব্য ধেয়ে আসে।
পরে পোস্টটি ডিলিট করে দেওয়া হয়। আরও পরে পুজো কমিটিও ঘটনার বিবরণ দিয়ে তাদের সোশাল মিডিয়ায় পেজে পোস্ট করে। যুবতীর বাবার দাবি, বারোয়ারি সদস্যরাই কটূক্তি করেছেন। তারপর থেকেই মানসিক অবসাদে ভুগছিলেন। তার জেরেই তিনি কোনও চরম সিদ্ধান্ত নিয়ে থাকতে পারেন। চুঁচুড়া ইমামবাড়া হাসপাতালে দেহের ময়নাতদন্ত হয়েছে।
ঘটনা নিয়ে ফটকগোড়া পুজো কমিটির সম্পাদক বিপ্লব দাস বলেন, "খুবই মর্মাহত আমরা। ওঁর বাবা যে অভিযোগ করছেন, তা হয়তো ঘটনার আকস্মিকতায় করেছেন। পুজো এই ঘটনার সঙ্গে সরাসরি যুক্ত নয়। সেদিনকার ঘটনাটা খুবই সামান্য। ষষ্ঠীর রাতে খুব বেশি ভিড় ছিল। তরুণী সারমেয় নিয়ে প্রবেশ করেছিলেন। অনেক দর্শনার্থী সরাসরি পুজো কমিটির দিকেই আঙুল তুলেছিলেন। তখন তাঁকে কুকুর নিয়ে বেরিয়ে যেতে অনুরোধ করা হয়। ভিড় হওয়ায় কুকুর কামড়ে দিতে পারে সেই ভয়েই বারণ করা হয়েছিল। এর সঙ্গে অন্য কোনও বিষয় ছিল না। ব্যক্তিগতভাবে সোশাল মিডিয়ায় কে কী পোস্ট করেছেন সে বিষয়ে পুজো কমিটির কিছু জানে না। কেউ কিছু মন্তব্য করে থাকলে তার দায়িত্বও পুজো কমিটির নয়।
যুবতীর বাবা সুমন দত্তর অভিযোগ, ষষ্ঠীর দিন তাঁদের দুটি পোষ্য কুকুর নিয়ে মন্দিরে গিয়েছিলেন তরুণী। সঙ্গে তাঁর মা-ও ছিলেন। কমিটির এক প্রবীণ সদস্য তাঁকে কুকুর নিয়ে মন্দিরে ঢোকায় ভর্ৎসনা করেন। এরপর তিনি বাড়ি চলে আসেন। যুবতী ফেসবুকে এই ঘটনা লেখেন। তারপরই নানা কটূক্তি করা হয় তাঁকে। যুবতীর বাবার আরও অভিযোগ কমিটি থেকে ফোন করেও নানা কথা বলা হয়। অবসাদগ্রস্ত হয়ে পড়েন মেয়ে। তাঁর জেরেই এই ঘটনা। আপাতত ঘটনাটি তদন্ত করে দেখছে পুলিশ।