কলকাতা, 31 জানুয়ারি: বিশ্ববিদ্যালয়ে উপাচার্য নিয়োগের নিয়ম বদল নিয়ে ইউজিসি'র খসড়া খতিয়ে দেখে রিপোর্ট জামা দিল রাজ্যের 8 সদস্যের বিশেষজ্ঞ কমিটি ৷ এই রিপোর্টে ইউজিসি'র 10টি বিষয় নিয়ে আপত্তি জানিয়েছে বিশেষজ্ঞ কমিটি। একই সঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয়ে উপাচার্য নিয়োগের ক্ষেত্রে 3 সদস্যের পরিবর্তে 5 সদস্যের কমিটি সুপারিশ করা হয়েছে এই রিপোর্টে ৷ তার মধ্যে অবশ্যই মুখ্যমন্ত্রীর প্রতিনিধিও থাকবেন ৷ পাশাপাশি আরও বেশ কিছু বিষয় তুলে ধরেছে বিশেষজ্ঞ কমিটি ৷
বৃহস্পতিবার বিকাশ ভবনে শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসুর কাছে রিপোর্ট জমা দিয়েছে রাজ্যের তৈরি এই বিশেষজ্ঞ কমিটি ৷ খসড়া জমা দেওয়ার পর তাঁরা বলেন, "উপাচার্য নিয়োগের জন্য এলিজিবিলিটি ও সিলেকশন কমিটি গঠনের খসড়া জমা দেওয়া হয়েছে ৷ সেখানে রাজ্য বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্ষেত্রে মুখ্যমন্ত্রী প্রতিনিধিত্বের প্রয়োজন রয়েছে ৷ আবার কেন্দ্রীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্ষেত্রে যেমন এলাহাবাদ ইউনিভার্সিটিতে উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথের প্রতিনিধি প্রয়োজন রয়েছে, তেমনই বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়েও মুখ্যমন্ত্রীর প্রতিনিধিত্ব থাকতে হবে। একইভাবে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্ষেত্রে ইউজিসি ও রাজ্যপালের প্রতিনিধিত্ব থাকতে হবে।" বিশেষজ্ঞ কমিটির রিপোর্ট হাতে পাওয়ার পর শিক্ষামন্ত্রী জানান, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে আলোচনা করার পরেই এ বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে ৷
পাঁচ সদস্যের কমিটিতে ইউজিসি'র প্রতিনিধির পাশাপাশি থাকবে আচার্য তথা রাজ্যপালের প্রতিনিধি। যে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য নিয়োগ হচ্ছে, তার প্রতিনিধি থাকবেন কমিটিতে। তবে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য নিয়োগ কমিটির শীর্ষে থাকেন না । কিন্তু ইউজিসি তার খসড়ায় প্রস্তাব করেছে যে, উপাচার্য নিজেই হবেন কমিটির চেয়ারম্যান ৷ কিন্তু এই রাজ্যের বিশেষজ্ঞ কমিটির খসড়ায় উপাচার্যের প্রতিনিধি থাকার কথা উল্লেখ করা হয়েছে ৷ ইউজিসি তার খসড়ায় উল্লেখ করেছে, আইন মানা না-হলে ইউজিসি কমিটি গঠন করে ব্যবস্থা গ্রহণ করবে ৷ কিন্তু রাজ্যের কমিটির তৈরি খসড়ায় একে মান্যতা দেওয়া হয়নি ৷
এই খসড়া প্রসঙ্গে ওমপ্রকাশ মিশ্র বলেন, "পাঁচ সদস্যের কমিটিতে যদি তারা সহমত না-দেয়, তাহলে বিকল্প হিসেবে বিশ্ববিদ্যালয়ের যে আইন রয়েছে তাকে মান্যতা দিতে হবে উপাচার্যের নিয়োগের ক্ষেত্রে ৷ আজকের জমা দেওয়া খসড়ায় তা উল্লেখ করা হয়েছে ৷"
এই বিষয়ে শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু বলেন, "ইউজিসি'র খসড়ায় যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামোকে অবমাননা করা হয়েছে ৷ শিক্ষা যুগ্ম তালিকাভুক্ত ৷ মুখ্যমন্ত্রী এক জন নির্বাচিত জনপ্রতিনিধি। তাঁর প্রতিনিধিকে সরিয়ে দেওয়ার চেষ্টা হচ্ছে ৷ ইচ্ছে করে কতগুলি রাজ্যকে নিশানা করছে কেন্দ্রীয় সরকার। রাজ্য সরকারের এই বিশেষজ্ঞ কমিটি উপাচার্য নিয়োগের ক্ষেত্রে যে পাঁচ সদস্যের কমিটি গঠন করার কথা বলা হচ্ছে, তাতে আচার্য, ইউজিসি এবং সংশ্লিষ্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিনিধি থাকবেন। রাজ্যের বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্ষেত্রে মুখ্যমন্ত্রীর প্রতিনিধিও থাকবেন। কারণ জমি দেওয়া থেকে বিশ্ববিদ্যালয় নির্মাণ সবটাই রাজ্যের তত্ত্বাবধানে হয়ে থাকে ।"