কলকাতা, 30 মার্চ : আগামীকাল রাজ্যে আসছেন নির্বাচন কমিশন নিযুক্ত স্পেশাল পুলিশ অবজ়ারভার। নির্বাচন আধিকারিকের দপ্তর সূত্রে খবর, সোমবার থেকেই তিনি শুরু করে দেবেন কাজ। বসবেন মুখ্য নির্বাচন আধিকারিকের দপ্তরে। তাঁর জন্য তড়িঘড়ি তৈরি করা হচ্ছে চেম্বার। কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েনসহ নির্বাচনে রাজ্যের আইনশৃঙ্খলার বিষয়টির উপরও নজরদারি চালাবেন তিনি। দেবেন প্রয়োজনীয় নির্দেশ এবং পরামর্শ।
প্রথমে ঠিক হয়, পাঠানো হবে কে কে শর্মাকে। তাঁর নাম ঘোষণা হওয়ার পর তৃণমূলের তরফে ডেরেক ও ব্রায়েন টুইটার হ্যান্ডেলে একটি ছবি প্রকাশ করেন। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও ইস্তাহার প্রকাশের সময় সেই ছবি তুলে প্রশ্ন তোলেন কে কে শর্মাকে নিয়ে। অভিযোগ ওঠে, তাঁর সঙ্গে RSS-এর ঘনিষ্ঠতার। সূত্র জানাচ্ছে, তৈরি হওয়া বিতর্কের জেরেই সরানো হয় তাঁকে। তাঁর জায়গায় স্পেশাল পুলিশ অবজ়ারভার করে পাঠানো হচ্ছে বিবেক দুবেকে।
কে এই বিবেক দুবে?
1981 ব্যাচের এই অবসরপ্রাপ্ত IPS চাকরি জীবনে পালন করেছেন বহু গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব। বহুদিন তিনি ছিলেন কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা CBI-তে। তাঁর জীবনের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ কাজ গুজরাতের একটি গণধর্ষণের ঘটনায় দোষীদের চিহ্নিতকরণ ও যাবতীয় তথ্যপ্রমাণ সংগ্রহ করে আদালতে পেশ করা। তাঁর তদন্তের জেরেই সাজা হয় অপরাধীদের। যে 14 জনের সেই মামলায় সাজা হয়েছিল তার মধ্যে ছিলেন পাঁচজন পুলিশ কর্মী এবং দু'জন ডাক্তার। এমনিতে বেশ কড়া অফিসার হিসেবেই পরিচিত তিনি। এবার তাঁর হাতেই দায়িত্ব পড়েছে পুলিশ অবজ়ারভারের।
রাজ্যে ইতিমধ্যে এসে গেছে 10 কম্পানি কেন্দ্রীয় বাহিনী। কলকাতাসহ বেশ কয়েকটি জেলায় শুরু হয়ে গেছে রুটমার্চ। তারপরেও কেন্দ্রীয় বাহিনী নিয়ে উঠছে অভিযোগ। যেমন রাজ্যের শাসকদলের তরফে, তেমন বিরোধীদের তরফেও। বিরোধীদের বক্তব্য, কেন্দ্রীয় বাহিনীর সঠিক ব্যবহার হচ্ছে না। রাজ্যের মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিকের দপ্তরে এসে CPI(M) নেতা রবীন দেব অভিযোগ করেন, "কথা ছিল মুখ্য নির্বাচন আধিকারিক আরিজ় আফতাব দেখবেন কেন্দ্রীয় বাহিনীর বিষয়টি। অথচ দেখা যাচ্ছে রাজ্য পুলিশই কেন্দ্রীয় বাহিনীর যাবতীয় গতিবিধি নিয়ন্ত্রণ করছে।" মোটের উপর বিরোধীদের অভিযোগ ছিল তেমনটাই। অভিযোগ জমা পড়ে দিল্লির নির্বাচন সদনেও। অন্যদিকে, আবার তৃণমূলের অভিযোগ ছিল, অতি সক্রিয়তা দেখাচ্ছে কেন্দ্রীয় বাহিনী। সেই অভিযোগ নিয়ে রাজ্যের মুখ্য নির্বাচন আধিকারিকের দপ্তর উত্তর কলকাতার জেলা ইলেকশন অফিসারের কাছে রিপোর্ট তলব করে। এরপর সব ঠিক থাকলে রাজ্যের স্পেশাল পুলিশ অবজ়ারভার সোমবার থেকেই শুরু করে দেবেন কাজ। তিনি দেখবেন কেন্দ্রীয় বাহিনী সংক্রান্ত পুরো বিষয়টি।